বাইসাইকেল যেভাবে বদলে দিয়েছে পৃথিবী
১৮৬৫
সালের শরৎকাল। যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের ছোট্ট এক শহর আনসোনিয়া। একটি
সরাইখানায় বসে দুজন লোক পান করছেন। একটু আগের এক পিলে চমকানো অভিজ্ঞতার পর
নিজেদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন তারা।
কাছের এক পাহাড় থেকে ঘোড়া চালিত ওয়াগন চালিয়ে আনসোনিয়ার দিকে আসছিলেন তারা। পাহাড়ের ঢালু পথ বেয়ে যখন নামছেন, তখন হঠাৎ পেছন থেকে এক তীব্র চিৎকারে তারা চমকে গিয়েছিলেন। পেছন ফিরে তারা যা দেখেছিলেন, তাতে তাদের রক্ত হিম হয়ে গিয়েছিল।
মনে হয়েছিল স্বয়ং শয়তান বুঝি তাদের পেছনে ধাওয়া করছে। পাহাড় থেকে দ্রুতবেগে নেমে আসছে কিছু। মাথাটি দেখতে মানুষের মতই, কিন্তু শরীরটি যেন কোন অজানা প্রাণীর।
ভয়ে তারা আরও জোরে চাবুক চালালেন ঘোড়ার পিঠে। আর পেছনের সেই অদ্ভূত প্রাণী তীব্র বেগে এসে রাস্তার ধারের খাদে গিয়ে পড়লো।
কাছের এক পাহাড় থেকে ঘোড়া চালিত ওয়াগন চালিয়ে আনসোনিয়ার দিকে আসছিলেন তারা। পাহাড়ের ঢালু পথ বেয়ে যখন নামছেন, তখন হঠাৎ পেছন থেকে এক তীব্র চিৎকারে তারা চমকে গিয়েছিলেন। পেছন ফিরে তারা যা দেখেছিলেন, তাতে তাদের রক্ত হিম হয়ে গিয়েছিল।
মনে হয়েছিল স্বয়ং শয়তান বুঝি তাদের পেছনে ধাওয়া করছে। পাহাড় থেকে দ্রুতবেগে নেমে আসছে কিছু। মাথাটি দেখতে মানুষের মতই, কিন্তু শরীরটি যেন কোন অজানা প্রাণীর।
ভয়ে তারা আরও জোরে চাবুক চালালেন ঘোড়ার পিঠে। আর পেছনের সেই অদ্ভূত প্রাণী তীব্র বেগে এসে রাস্তার ধারের খাদে গিয়ে পড়লো।
কল্পনা
করুন তো সেই অদ্ভূত প্রাণী সেখান থেকে উঠে এসে এই দুজনের কাছে যখন নিজের
পরিচয় দিলেন, তাদের কী অবস্থা দাঁড়িয়েছিল। কালো চুলের সেই ফরাসী লোকটির
শরীর কেটেকুটে গেছে, রক্ত ঝরছে। সমস্ত শরীর কাদা-পানিতে মাখামাখি। তার নাম
পিয়ের লেলমো।
এই
তরুণ ফরাসী মেকানিক যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন মাত্র কয়েক মাস আগে। তিনি
ফ্রান্স থেকে বয়ে নিয়ে এসেছেন নিজের তৈরি এক যন্ত্র। দুই চাকার পেডাল
চালিত এই যন্ত্রটির তিনি নাম দিয়েছেন 'ভেলোসিপেডে।' এখন আমরা একে বলি
বাইসাইকেল।
মঁশিয়ে লেলমো এর কিছুদিন পরেই তার এই আবিস্কার পেটেন্ট করেন। তবে তার সেই সাইকেলে তখনো কোন গিয়ার নেই। নেই কোন চেইন। ব্রেকও তখনো লাগানো হয়নি, যে কারণে সাইকেল নিয়ে পড়লেন রাস্তার ধারের খাদে।
তবে পিয়ের লেলমোর এই বাইসাইকেল মডেলটিকে কিছুদিনের মধ্যে ছাড়িয়ে গেলে নতুন এক বাইসাইকেল 'পেনি ফার্দিং'। এটির সামনের চাকাটি বিশাল বড়। পেছনেরটি ছোট। মঁশিয়ে লেলমোর ভেলোসিপেডের তুলনায় এটি চলে দ্বিগুণ গতিতে।
তখনকার দিনে কেবল কিছু দুরন্ত ছেলেই এই সাইকেল চালানোর সাহস করতো। পাঁচ ফুট উঁচু একটা দুই চাকার জিনিসে চড়ে দ্রুতবেগে চলার বিপদ ছিল অনেক। সামান্য বাধাতেই তারা সাইকেল থেকে ছিটকে পড়তো।
কিন্তু এর পর যে ধরনের 'নিরাপদ বাইসাইকেল' বাজারে এলো, সেটি বেশ জনপ্রিয় হলো। প্রযুক্তির দিক থেকে এটি আগেরগুলোর চেয়ে উন্নত। অনেকটা আজকের যুগের বাইসাইকেলের মতোই। দুটি চাকাই সমান, চেইন আছে, ডায়মন্ড আকৃতির ফ্রেম।
মঁশিয়ে লেলমো এর কিছুদিন পরেই তার এই আবিস্কার পেটেন্ট করেন। তবে তার সেই সাইকেলে তখনো কোন গিয়ার নেই। নেই কোন চেইন। ব্রেকও তখনো লাগানো হয়নি, যে কারণে সাইকেল নিয়ে পড়লেন রাস্তার ধারের খাদে।
তবে পিয়ের লেলমোর এই বাইসাইকেল মডেলটিকে কিছুদিনের মধ্যে ছাড়িয়ে গেলে নতুন এক বাইসাইকেল 'পেনি ফার্দিং'। এটির সামনের চাকাটি বিশাল বড়। পেছনেরটি ছোট। মঁশিয়ে লেলমোর ভেলোসিপেডের তুলনায় এটি চলে দ্বিগুণ গতিতে।
তখনকার দিনে কেবল কিছু দুরন্ত ছেলেই এই সাইকেল চালানোর সাহস করতো। পাঁচ ফুট উঁচু একটা দুই চাকার জিনিসে চড়ে দ্রুতবেগে চলার বিপদ ছিল অনেক। সামান্য বাধাতেই তারা সাইকেল থেকে ছিটকে পড়তো।
কিন্তু এর পর যে ধরনের 'নিরাপদ বাইসাইকেল' বাজারে এলো, সেটি বেশ জনপ্রিয় হলো। প্রযুক্তির দিক থেকে এটি আগেরগুলোর চেয়ে উন্নত। অনেকটা আজকের যুগের বাইসাইকেলের মতোই। দুটি চাকাই সমান, চেইন আছে, ডায়মন্ড আকৃতির ফ্রেম।
তবে
এই সাইকেলের গতি আসতো বড় চাকা থেকে নয়, গিয়ার থেকে। ভালো কাপড়-চোপড়
পরেও এই সাইকেলে চড়া যেত। তবে একজন নারী প্রথমবারের মতো প্যান্ট পরে এই
সাইকেল চালিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। অ্যাঞ্জেলিন অ্যালেন। ১৮৯৩ সালে
তিনি নিউ ইয়র্ক নগরীর উপকন্ঠে নিউওয়ার্কে এভাবে সাইকেল চালান।
সেসময় পুরুষদের একটি সাময়িকী তাকে নিয়ে প্রচ্ছদ কাহিনী করেছিল। শিরোনাম ছিল, "পুরুষদের প্যান্ট পরেছে এই মহিলা!" অ্যাঞ্জেলিনা অ্যালেন ছিলেন তরুণী, সুন্দরী এবং ডিভোর্সী। কাজেই তাকে নিয়ে ছিল সবার বিপুল আগ্রহ।
বাইসাইকেল যেন মেয়েদের জন্য মুক্তি নিয়ে এসেছিল। আঁটোসাঁটো কোমরবন্ধ আর ফুলানো-ফাঁপানো স্কার্টের ঘেরাটোপ থেকে বেরুনোর দরকার ছিল তাদের। বাইসাইকেল সেই সুযোগ করে দিল। কারণ এসব পোশাক পরে তো আর বাইসাইকেল চালানোর সুযোগ নেই। আর সাথে নিয়ে কোন সঙ্গীও নিতে হচ্ছে না।
কিন্তু সমাজের রক্ষণশীলরা আঁতকে উঠেছিল। মেয়েরা এরকম পোশাকে বাইসাইকেল চালালে নৈতিক অধপতন ঘটবে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল অনেকে। তারা বলছিল স্বমেহন বেড়ে যাবে, সমাজে পতিতাবৃত্তির বিস্তার ঘটবে। কিন্তু তাদের এসব প্রতিবাদ কিছুদিনের মধ্যেই হাস্যকর প্রমাণিত হলো।
সাইক্লিং ইতিহাসবিদ মার্গারেট গুরোফের মতে, মিজ অ্যালেন কী পোশাক পরেছিলেন সেটা নিয়েই কেবল মানুষ কথা বলছিল। কিন্তু তিনি কী করেছিলেন, সেটা নিয়ে কেউ ভাবছিল না। একটি মেয়ে একাকী রাস্তায় সাইকেলে চড়ছে, এটাকে অত বড় কেলেংকারি মনে হয়নি।
সেসময় পুরুষদের একটি সাময়িকী তাকে নিয়ে প্রচ্ছদ কাহিনী করেছিল। শিরোনাম ছিল, "পুরুষদের প্যান্ট পরেছে এই মহিলা!" অ্যাঞ্জেলিনা অ্যালেন ছিলেন তরুণী, সুন্দরী এবং ডিভোর্সী। কাজেই তাকে নিয়ে ছিল সবার বিপুল আগ্রহ।
বাইসাইকেল যেন মেয়েদের জন্য মুক্তি নিয়ে এসেছিল। আঁটোসাঁটো কোমরবন্ধ আর ফুলানো-ফাঁপানো স্কার্টের ঘেরাটোপ থেকে বেরুনোর দরকার ছিল তাদের। বাইসাইকেল সেই সুযোগ করে দিল। কারণ এসব পোশাক পরে তো আর বাইসাইকেল চালানোর সুযোগ নেই। আর সাথে নিয়ে কোন সঙ্গীও নিতে হচ্ছে না।
কিন্তু সমাজের রক্ষণশীলরা আঁতকে উঠেছিল। মেয়েরা এরকম পোশাকে বাইসাইকেল চালালে নৈতিক অধপতন ঘটবে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল অনেকে। তারা বলছিল স্বমেহন বেড়ে যাবে, সমাজে পতিতাবৃত্তির বিস্তার ঘটবে। কিন্তু তাদের এসব প্রতিবাদ কিছুদিনের মধ্যেই হাস্যকর প্রমাণিত হলো।
সাইক্লিং ইতিহাসবিদ মার্গারেট গুরোফের মতে, মিজ অ্যালেন কী পোশাক পরেছিলেন সেটা নিয়েই কেবল মানুষ কথা বলছিল। কিন্তু তিনি কী করেছিলেন, সেটা নিয়ে কেউ ভাবছিল না। একটি মেয়ে একাকী রাস্তায় সাইকেলে চড়ছে, এটাকে অত বড় কেলেংকারি মনে হয়নি।
এর
তিন বছর পর সুজান বি অ্যান্থনি নামের এক নারী অধিকার নেত্রী ঘোষণা করলেন
যে বিশ্বে নারী মুক্তির জন্য অন্য যে কোন কিছুর চাইতে বাইসাইকেল অনেক বেশি
বৈপ্লবিক ভূমিকা রেখেছে।
বাইসাইকেল আজকের যুগেও নারীর ক্ষমতায়নের অন্যতম অস্ত্র।
২০০৬ সালে ভারতের বিহার রাজ্যের সরকার মাধ্যমিক স্কুলগামী ছাত্রীদের বাইসাইকেল কেনার জন্য ভর্তুকি দেয়া শুরু করলো। মেয়েরা যাতে দূরের স্কুলে যেতে পারে, সেটা ছিল এর উদ্দেশ্য।
এই প্রণোদনা বেশ সফল হলো। মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে যাওয়ার হারই শুধু বাড়লো না, তাদের ঝরে পড়ার হারও কমলো।
বাইসাইকেল আজকের যুগেও নারীর ক্ষমতায়নের অন্যতম অস্ত্র।
২০০৬ সালে ভারতের বিহার রাজ্যের সরকার মাধ্যমিক স্কুলগামী ছাত্রীদের বাইসাইকেল কেনার জন্য ভর্তুকি দেয়া শুরু করলো। মেয়েরা যাতে দূরের স্কুলে যেতে পারে, সেটা ছিল এর উদ্দেশ্য।
এই প্রণোদনা বেশ সফল হলো। মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে যাওয়ার হারই শুধু বাড়লো না, তাদের ঝরে পড়ার হারও কমলো।
এমনকি
যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও মানুষের দিগন্ত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বাইসাইকেল
বেশ সহজ একটা উপায়। বাস্কেটবল সুপারস্টার লেব্রন জেমস ওহাইওতে তার নিজ
শহরে একটি স্কুল স্থাপন করেছেন। এই স্কুলে প্রতিটি ছাত্রকে একটি করে বাইক
দেয়া হয়।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, ছোটবেলায় যখন তিনি এবং তার বন্ধুরা বাইক চালাতেন, তখন তাদের মনে হতো তারা মুক্ত, স্বাধীন। পুরো পৃথিবী তাদের হাতের মুঠোয়।
এটা সত্যি যে সমাজের দরিদ্রদের জন্য বহু যুগ ধরেই বাইসাইকেল ছিল এমন এক প্রযুক্তি, যেটি তাদের স্বাধীনতা দিয়েছে। শুরুর দিকে এটি ছিল দামে ঘোড়ার চেয়ে সস্তা। অথচ ব্যবহারের দিক থেকে এটি দিয়ে একই ধরনের স্বাধীনতা পাওয়া যেত, অনেক দূরত্ব পাড়ি দেয়া যেত।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, ছোটবেলায় যখন তিনি এবং তার বন্ধুরা বাইক চালাতেন, তখন তাদের মনে হতো তারা মুক্ত, স্বাধীন। পুরো পৃথিবী তাদের হাতের মুঠোয়।
এটা সত্যি যে সমাজের দরিদ্রদের জন্য বহু যুগ ধরেই বাইসাইকেল ছিল এমন এক প্রযুক্তি, যেটি তাদের স্বাধীনতা দিয়েছে। শুরুর দিকে এটি ছিল দামে ঘোড়ার চেয়ে সস্তা। অথচ ব্যবহারের দিক থেকে এটি দিয়ে একই ধরনের স্বাধীনতা পাওয়া যেত, অনেক দূরত্ব পাড়ি দেয়া যেত।
কিন্তু এই বাইসাইকেল কেবল সামাজিক পরিবর্তনই ঘটায়নি, এটি শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রেও বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়।
উনিশ শতকের শুরুর দিকে মার্কিন সেনাবাহিনীর সমরাস্ত্র তৈরির জন্য এমন ধরনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হচ্ছিল, যেগুলো একদম একই মাপের, ফলে অদল-বদল করেও কাজে লাগানো যায়। কিন্তু বেসামরিক কারখানায় এ ধরনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার তখনো বেশ ব্যয়বহুল ছিল।
এক্ষেত্রে বাইসাইকেল খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করলো। উচ্চ মানের সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ব্যবস্থা এবং ব্যাপক জনগোষ্ঠীর জন্য নানা জটিল পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থা, এই দুয়ের মাঝে বাইসাইকেল শিল্প একটি সংযোগ তৈরি করলো।
বাইসাইকেল বানানো হতো যেসব কারখানায়, সেখানে বেশ কিছু সহজ প্রযুক্তি এবং কৌশল উদ্ভাবন করা হয়। যেমন ঠান্ডা ধাতব পাতকে কিভাবে একটি আকৃতি দেয়া যায়, যা কীনা কম খরচেই করা সম্ভব মান বজায় রেখেই। বল বিয়ারিং, নিউমেটিক টায়ার, গিয়ার এবং ব্রেকের নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলো তারা।
পরবর্তীকালে কিন্তু বাইসাইকেল শিল্পের এসব প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হয়েছে গাড়ি শিল্পে। হেনরি ফোর্ড তার কারখানায় এসব প্রযুক্তি এবং কৌশল ব্যবহার করেছেন।
নিরাপদে ব্যবহার করা যায় এমন ধরনের বাইসাইকেল বিশ্বে প্রথম তৈরি করা হয় ১৮৮৫ সালে ইংল্যান্ডের কভেন্ট্রিতে রোভারের কারখানায়।
উনিশ শতকের শুরুর দিকে মার্কিন সেনাবাহিনীর সমরাস্ত্র তৈরির জন্য এমন ধরনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হচ্ছিল, যেগুলো একদম একই মাপের, ফলে অদল-বদল করেও কাজে লাগানো যায়। কিন্তু বেসামরিক কারখানায় এ ধরনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার তখনো বেশ ব্যয়বহুল ছিল।
এক্ষেত্রে বাইসাইকেল খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করলো। উচ্চ মানের সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ব্যবস্থা এবং ব্যাপক জনগোষ্ঠীর জন্য নানা জটিল পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থা, এই দুয়ের মাঝে বাইসাইকেল শিল্প একটি সংযোগ তৈরি করলো।
বাইসাইকেল বানানো হতো যেসব কারখানায়, সেখানে বেশ কিছু সহজ প্রযুক্তি এবং কৌশল উদ্ভাবন করা হয়। যেমন ঠান্ডা ধাতব পাতকে কিভাবে একটি আকৃতি দেয়া যায়, যা কীনা কম খরচেই করা সম্ভব মান বজায় রেখেই। বল বিয়ারিং, নিউমেটিক টায়ার, গিয়ার এবং ব্রেকের নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলো তারা।
পরবর্তীকালে কিন্তু বাইসাইকেল শিল্পের এসব প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হয়েছে গাড়ি শিল্পে। হেনরি ফোর্ড তার কারখানায় এসব প্রযুক্তি এবং কৌশল ব্যবহার করেছেন।
নিরাপদে ব্যবহার করা যায় এমন ধরনের বাইসাইকেল বিশ্বে প্রথম তৈরি করা হয় ১৮৮৫ সালে ইংল্যান্ডের কভেন্ট্রিতে রোভারের কারখানায়।
এটা কোন কাকতালীয় ব্যাপার নয় যে পরবর্তীকালে রোভার গাড়ি নির্মাণ শিল্পে একটি কোম্পানিতে পরিণত হয়।
সাইকেল তৈরি দিয়ে শুরু করে গাড়ি নির্মাণ শিল্পে উত্তরণের পথটি বেশ স্পষ্ট।
জাপানে শিল্পের আধুনিকীকরণে একইরকম ভূমিকা রেখেছিল বাইসাইকেল।
জাপানের আধুনিক শিল্পায়নের প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে ১৮৯০ সালে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বাইসাইকেল আমদানি করা হতো। এরপর এসব বাইসাইকেল সারাই করার দোকান হতে থাকে। এর পরের ধাপে স্থানীয়ভাবে বাইসাইকেলের খুচরো পার্টস তৈরি শুরু হয়। একজন দক্ষ কারিগরের জন্য যা মোটেই কোন কঠিন কাজ নয়।
এর মাত্র দশ বছরের মধ্যেই জাপানের নিজস্ব বাইসাইকেল শিল্প দাঁড়িয়ে যায়, যেখানে সবকিছুই তৈরি হতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন শুরু হয়ে গেল, ততদিনে জাপানে বছরে তৈরি হচ্ছে প্রায় বিশ লাখ বাইসাইকেল। জাপানে এক নতুন ব্যবসায়ী শ্রেণী তৈরি হয়েছে তখন।
সাইকেল তৈরি দিয়ে শুরু করে গাড়ি নির্মাণ শিল্পে উত্তরণের পথটি বেশ স্পষ্ট।
জাপানে শিল্পের আধুনিকীকরণে একইরকম ভূমিকা রেখেছিল বাইসাইকেল।
জাপানের আধুনিক শিল্পায়নের প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে ১৮৯০ সালে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বাইসাইকেল আমদানি করা হতো। এরপর এসব বাইসাইকেল সারাই করার দোকান হতে থাকে। এর পরের ধাপে স্থানীয়ভাবে বাইসাইকেলের খুচরো পার্টস তৈরি শুরু হয়। একজন দক্ষ কারিগরের জন্য যা মোটেই কোন কঠিন কাজ নয়।
এর মাত্র দশ বছরের মধ্যেই জাপানের নিজস্ব বাইসাইকেল শিল্প দাঁড়িয়ে যায়, যেখানে সবকিছুই তৈরি হতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন শুরু হয়ে গেল, ততদিনে জাপানে বছরে তৈরি হচ্ছে প্রায় বিশ লাখ বাইসাইকেল। জাপানে এক নতুন ব্যবসায়ী শ্রেণী তৈরি হয়েছে তখন।
বাইসাইকেলকে পুরোনো দিনের প্রযুক্তি বলে ভাবার একটা প্রবণতা আছে। কিন্তু তথ্য এবং গবেষণা বলে ভিন্ন কথা।
মাত্র ৫০ বছর আগেও পৃথিবীতে গাড়ি আর বাইসাইকেল তৈরি হতো প্রায় সমান সমান সংখ্যায়। কিন্তু এরপর গাড়ির উৎপাদন বাড়তে থাকে, বাইসাইকেলের কমতে থাকে। এক সময় বাইসাইকেলের তুলনায় গাড়ি তৈরি হতে থাকে তিনগুণ বেশি। কিন্তু এখন আবার সময় পাল্টাচ্ছে। বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বাইসাইকেলের উৎপাদন গাড়ির তুলনায় আবার দ্বিগুণ হয়েছে। বছরে এখন বাইসাইকেল তৈরি হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি।
সামনের দিনে বাইসাইকেলই আবার আমাদের পথ দেখাবে, কথাটা যতই অদ্ভুত শোনাক না কেন।
মাত্র ৫০ বছর আগেও পৃথিবীতে গাড়ি আর বাইসাইকেল তৈরি হতো প্রায় সমান সমান সংখ্যায়। কিন্তু এরপর গাড়ির উৎপাদন বাড়তে থাকে, বাইসাইকেলের কমতে থাকে। এক সময় বাইসাইকেলের তুলনায় গাড়ি তৈরি হতে থাকে তিনগুণ বেশি। কিন্তু এখন আবার সময় পাল্টাচ্ছে। বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বাইসাইকেলের উৎপাদন গাড়ির তুলনায় আবার দ্বিগুণ হয়েছে। বছরে এখন বাইসাইকেল তৈরি হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি।
সামনের দিনে বাইসাইকেলই আবার আমাদের পথ দেখাবে, কথাটা যতই অদ্ভুত শোনাক না কেন।
আমরা
এখন আগাচ্ছি এমন এক যুগের দিকে, যেখানে চালকবিহিন গাড়ি চলবে রাস্তায়।
কেউ আর গাড়ি রাখবে না, দরকার হলে স্মার্টফোনে গাড়ি ডাকবে, বা ভাড়া নেবে।
যদি সেরকমই ঘটে, তাহলে আমাদের ভবিষ্যতের বাহন কী হবে?
উত্তরটা খুব সহজ- বাইসাইকেল।
যদি সেরকমই ঘটে, তাহলে আমাদের ভবিষ্যতের বাহন কী হবে?
উত্তরটা খুব সহজ- বাইসাইকেল।
বিশ্বে
এখনই এক হাজারের বেশি বাইক শেয়ারিং স্কীম আছে। আছে কোথাও জমা দিতে হয় না
এমন ধরনের লাখ লাখ বাইসাইকেল, যেগুলো সহজেই ভাড়া নেয়া যায়। এরকম বাইকের
সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। চলে এসেছে ব্যাটারি চালিত বাইসাইকেলও।
রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবার তো ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা এখন গাড়ির পরিবর্তে তাদের ব্যবসায় ইলেকট্রিক স্কুটার এবং বাইকের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেবে।
তবে এই বাইক ব্যবসায় কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে কয়েকটি কোম্পানি। তাদের বিপুল সংখ্যাক বাইক চুরি হয়েছে বা নষ্ট করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়া হয়েছে। ফলে কোন কোন শহরে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবার তো ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা এখন গাড়ির পরিবর্তে তাদের ব্যবসায় ইলেকট্রিক স্কুটার এবং বাইকের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেবে।
তবে এই বাইক ব্যবসায় কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে কয়েকটি কোম্পানি। তাদের বিপুল সংখ্যাক বাইক চুরি হয়েছে বা নষ্ট করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়া হয়েছে। ফলে কোন কোন শহরে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
কিন্তু এই ব্যবসা সামনে বাড়বে, তেমনটাই মনে হচ্ছে। কারণ যানজটে অচল হয়ে পড়া শহরগুলোতে বাইসাইকেলই পথ চলার সবচেয়ে সহজ উপায়।
বড় বড় শহরে গাড়ির দূষণের কারণেই অনেকে বাইসাইকেল চালাতে চান না। অনেকে দুর্ঘটনার ভয় পান।
কিন্তু ভবিষ্যতের নগরীগুলোতে যদি দূষণবিহীন ইলেকট্রিক কার চলে, যে গাড়ি কোন মানুষ চালাবে না, চালাবে অত্যন্ত সতর্ক রোবট, তখন হয়তো বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।
বড় বড় শহরে গাড়ির দূষণের কারণেই অনেকে বাইসাইকেল চালাতে চান না। অনেকে দুর্ঘটনার ভয় পান।
কিন্তু ভবিষ্যতের নগরীগুলোতে যদি দূষণবিহীন ইলেকট্রিক কার চলে, যে গাড়ি কোন মানুষ চালাবে না, চালাবে অত্যন্ত সতর্ক রোবট, তখন হয়তো বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।
No comments