মতিরহাটে মেঘনার পাড়ে সৈকতের আমেজ by জুনাইদ আল হাবিব
মতিরহাটে মেঘনার অপরূপ দৃশ্য |
চোখজুড়ানো বিশাল জলরাশি। ওপরে উন্মুক্ত আকাশের ভিন্ন ভিন্ন
দৃশ্যপটে নিচে নদীর রঙ বদলায়। কূলে দাঁড়িয়ে এমন মোহনীয় মুহূর্ত
ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে বেশ উপভোগ্য। বিকেলে মেঘনার জলে সূর্যের বিকিরণ দেখলে
মনে পড়ে যায় কুয়াকাটা সৈকতে সূর্যাস্তের দৃশ্য।
এ এক অনিন্দ্যসুন্দর চিত্র। দক্ষিণাঞ্চলের পূর্ব উপকূলীয় জেলা
লক্ষ্মীপুরে কমলনগরের ঐতিহ্যবাহী বড় বাজার মতিরহাটে সৈকতের আমেজ পেতে
প্রতিদিন সমবেত হন অনেকে। লোকমুখে জায়গাটি ‘মতিরহাট মেঘনা সৈকত’ নামে
পরিচিত। অনেকে এর নাম দিয়েছেন ‘মিনি কক্সবাজার’।
দিনভর নদীর বুক চিরে আসা ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে। সেই জলে পা ভিজিয়ে হাঁটেন ভ্রমণপিপাসুরা। অনেকে নৌকায় চড়ে ঢেউয়ের তালে তালে মেতে ওঠেন ভ্রমণের আনন্দে। ভাসতে ভাসতে তাদের চোখে পড়ে রূপালি ইলিশ শিকারে ব্যস্ত একদল জেলেকে।
দিনভর নদীর বুক চিরে আসা ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে। সেই জলে পা ভিজিয়ে হাঁটেন ভ্রমণপিপাসুরা। অনেকে নৌকায় চড়ে ঢেউয়ের তালে তালে মেতে ওঠেন ভ্রমণের আনন্দে। ভাসতে ভাসতে তাদের চোখে পড়ে রূপালি ইলিশ শিকারে ব্যস্ত একদল জেলেকে।
প্রায়
একযুগ আগেও এখানে চলছিল মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন। এ কারণে বাজার রক্ষায় বেড়িবাঁধ
নির্মাণ করা হয়। ফলে ভাঙন থেমে দক্ষিণে প্রায় আধ কিলোমিটার ও উত্তরে দেড়
কিলোমিটার পর্যন্ত বিশাল বেলাভূমি সৃষ্টি হয়। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই জায়গা
ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
শুধু বেলাভূমি নয়, মতিরহাটে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধে দাঁড়ালে মেঘনার স্বচ্ছ জল মনকে সিক্ত করে দেয়। যতদূর চোখ যাবে, কেবল মেঘনার বিস্তীর্ণ জলরাশি চোখে পড়ে। জাহাজ, লঞ্চ, ফেরির মতো নৌ-যান নিয়মিত চলাচল করে এর বুকে।
শুধু বেলাভূমি নয়, মতিরহাটে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধে দাঁড়ালে মেঘনার স্বচ্ছ জল মনকে সিক্ত করে দেয়। যতদূর চোখ যাবে, কেবল মেঘনার বিস্তীর্ণ জলরাশি চোখে পড়ে। জাহাজ, লঞ্চ, ফেরির মতো নৌ-যান নিয়মিত চলাচল করে এর বুকে।
মতিরহাটে
মেঘনার পাড়ে অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের দারুণ সময় হলো বিকেলবেলা। এ
সময় মতিরহাটে আনন্দ উপভোগ করতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হয়। তখন যদি
নদীতে ভাটা থাকে তাহলে তো কথাই নেই! ভ্রমণপ্রেমীরা হারিয়ে যান প্রকৃতির
রূপে।
দুপুরে এসে দাবদাহ এড়াতে অনেকে মেঘনায় নেমে পড়েন গোসলে। কেউ কেউ নদীর
জলে লাফ দিয়ে আনন্দ খোঁজেন। নদীর পাড়ে বসে গানের সুর তোলার দৃশ্যও চোখে
পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেগুলো লাইভে দেখান ঘুরতে আসা মানুষেরা।
পেছনে নদীর জল রেখে সেলফি আর ছবি তোলা তো চলেই।
নদীর
তীরে সুবিশাল নারিকেল ও সুপারি বাগান আর ইলিশ বেচাকেনার দৃশ্য অন্যরকম।
এছাড়া মতিরহাট বেলাভূমির অদূরে মেঘনার বুকে জেগে ওঠা চর দেখা যায় অনায়াসে।
সব মিলিয়ে শহরের যান্ত্রিকতার বিপরীতে প্রকৃতির অপরূপ সান্নিধ্যে প্রশান্তি
মেলে এখানে।
ঈদ কিংবা বিভিন্ন উৎসবে অথবা শুক্রবারসহ ছুটির দিনের বিকেলে মতিরহাটে
থাকে উপচেপড়া ভিড়। স্থানীয়দের পাশাপাশি আশেপাশের জেলা থেকে ভ্রমণপিপাসুরা
সিএনজি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য যানবাহনে চড়ে
মতিরহাটে ঘুরতে আসেন।
যেভাবে আসবেন
ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে চাঁদপুর আসতে হবে প্রথমে। এরপর লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর ইলিশ স্কয়ার। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সড়কপথে ঝুমুরে এসে সেখান থেকে লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়ক বাস অথবা সিএনজিতে তোরাবগঞ্জ যেতে হবে। তারপর মতিরহাট সড়কে সিএনজি করে মেঘনার পাড়ে বেলাভূমিতে চলে আসুন।
ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে চাঁদপুর আসতে হবে প্রথমে। এরপর লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর ইলিশ স্কয়ার। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সড়কপথে ঝুমুরে এসে সেখান থেকে লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়ক বাস অথবা সিএনজিতে তোরাবগঞ্জ যেতে হবে। তারপর মতিরহাট সড়কে সিএনজি করে মেঘনার পাড়ে বেলাভূমিতে চলে আসুন।
চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরের যেকোনও গাড়িতে একইভাবে মতিরহাট আসা যাবে।
বন্দরনগরীতেও লঞ্চ আছে। ভোলা ও বরিশাল থেকে লঞ্চে মতিরহাট আসা যায়। তবে
ফেরি দিয়ে কেবল ভোলা থেকে আসতে পারেন ভ্রমণপিপাসুরা। এক্ষেত্রে সড়কপথের
সুবিধা নেই।
যেখানে থাকবেন
দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য মতিরহাটে কোনও রিসোর্ট কিংবা হোটেল গড়ে ওঠেনি। তবে জেলা শহরে উন্নতমানের বেশকিছু গেস্ট হাউজ রয়েছে। কেউ চাইলে এগুলোতে থাকতে পারেন।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য মতিরহাটে কোনও রিসোর্ট কিংবা হোটেল গড়ে ওঠেনি। তবে জেলা শহরে উন্নতমানের বেশকিছু গেস্ট হাউজ রয়েছে। কেউ চাইলে এগুলোতে থাকতে পারেন।
>>>ছবি: লেখক
No comments