রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ফের ব্যর্থ: ঢাকার চুলচেরা বিশ্লেষণ বিশ্বকে জানাতে ব্রিফিং আজ
সব
প্রস্তুতি সত্ত্বেও দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চেষ্টা ব্যর্থ
হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা শুরু করছে ঢাকা। গতকাল রোহিঙ্গা বিষয়ক
জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে। সেগুনবাগিচায়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত প্রায় ৩
ঘন্টার পর্যালোচনা বৈঠকে টাস্কফোর্সের সব কর্মকর্তাই অংশ নেন এবং এ নিয়ে
তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। বৈঠক সূত্র বলছে, প্রত্যাবাসন চেষ্টা
বাংলাদেশের কোন ত্রুটি, দায় বা গাফিলতি যে ছিল না সেটির বিষয়ে সবাই একমত।
বিষয়টি বিশ্ব সমপ্রদায়ের বিবেচনায় আরো জোরালোভাবে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত
হয়েছে। সূত্র মতে, এ নিয়ে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা
ছাড়াও বিশ্বের দেশে দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেন জানিয়ে একটি সূত্র বলছে, আজ
জরুরি ভিত্তিতে ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ব্রিফ করবেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকালে ওই ব্রিফিং হবে।
ওই কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সূত্র মতে, ব্রিফিংয়ের পর এ নিয়ে গণমাধ্যমে কোন তথ্য শেয়ার করতে বারণ করা হয়েছে। তবে এটা আভাস মিলেছে যে কূটনৈতিক ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই গণমাধ্যমকেও ব্রিফ করতে পারেন।
কূটনীতিকদের কী বলবে বাংলাদেশ: টাস্কফোর্সের মিটিংয়ের পর্যালোচনা বা কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে গণমাধ্যমের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এটেছেন সেগুনবাগিচার কর্মকর্তারা। আজকের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে কী বলবে বাংলাদেশ? সন্ধ্যা পর্যন্ত এ নিয়ে জানার চেষ্টা ছিল মানবজমিনের। কিন্তু কোন কর্মকর্তাই খোলাসা করে কিছু বলতে রাজী হননি। একজন শুধু বলেন, প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের দোষারোপ চেষ্টার বিপরীতে ঢাকার তরফে একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। সেখানে কিছু বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে। যেমন মিয়ানমারের ভিত্তিহীন অভিযোগ, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডা, যা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। ঢাকা মনে করে রোহিঙ্গা সমস্যার উপযুক্ত সমাধানে ‘দায়বদ্ধতা’ এবং ‘প্রতিশ্রুতি’র বাস্তবায়নে মিয়ানমারের পুরোপুরি মনোনিবেশ করা জরুরি। কারণ এ সঙ্কট সৃষ্টির জন্য সম্পূর্ণভাবে মিয়ানমারই দায়ী। সুতরাং সামাধান তাদেরই করতে হবে। বাংলাদেশ ভুক্তভোগী মাত্র। কিন্তু মিয়ানমার তাদের দায় এবং প্রতিশ্রুতির বিষয়টি ভুলে গিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতার’ অভিযোগ করছে, যা পুরোপুরি অন্যায়। রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে ফেরত নেয়া, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া তদারকি করা এবং দেশটিতে বসবাসরত অন্য জাতি-গোষ্ঠির মধ্যে রোহিঙ্গাদের রিইন্টিগ্রেশন বা পূণঃএকত্রিকরণের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সঙ্গে মিলে একটি ‘সমন্বিত পদেক্ষেপ’ বা উদ্যোগ গ্রহণ করা। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের দায়-দায়িত্বের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া ছাড়াও এ ইস্যুতে এ পর্যন্ত বিশ্ব সম্প্রদায়ের যে অব্যাহত সমর্থন সেটির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। একই সঙ্গে জানাবে- যারাই ফিরতে চায়, যে কোনো সময় তাদের ফেরৎ পাঠাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তাদের জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে ‘কাউকে বাধা না দেয়ার’ যে নীতিগত অবস্থান বাংলাদেশ বজায় রেখে চলেছে সেটিও আজ দুনিয়ার সামনে ফের তুলে ধরবে ঢাকা। রাখাইনে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে মিয়ানমার কী করেছে তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা ছাড়াও রোহিঙ্গাদের কাছে শেয়ার করার আহ্বান পূণর্ব্যক্ত করবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গারা মনে করে রাখাইনে এখনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা যথেষ্ট হয়নি। সার্বিকভাবে রাখাইনে তাদের ফেরার মতো পরিবেশ এখনও নিশ্চিত না হওয়ায় একজন রোহিঙ্গাও ফিরতে রাজি হয়নি, এটাই দুনিয়াকে বলবে বাংলাদেশ। রাখাইনে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিয়ে যে গভীর উদ্বেগ রয়েছে সেটাও তুলে ধরা হবে। সেখানে প্রত্যাবাসের প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়া, বিশেষ করে আইনের শাসন, তাদের অধিকার বিষয়ক ইস্যুগুলো যেমন নাগরিকত্ব, মুক্তভাবে চলাফেরার নিশ্চয়তা এবং বলপূর্বক কেড়ে নেয়া বসতভিটা-জমি জমার অধিকার ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করবে ঢাকা। বাংলাদেশ বলবে- রোহিঙ্গারা কেউ বলেনি ফিরতে চায় না, তারা সবাই বলেছে ফিরতে চায়, কিন্তু অবশ্য তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মিয়ানমার সরকারকে মানতে হবে। তাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের আলোচনায় তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, প্রত্যাবাসন তদারকি এবং রি-ইন্টিগ্রেশনে রাখাইনে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের উপস্থিতির দাবি করেছিল। মিয়ানমারও তাদের নাগরিকত্বসহ মৌলিক দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নেয়া এবং সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পেতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বাস্তুচ্যুতদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু এ নিয়ে মিয়ানমারের পরবর্তী কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় রোহিঙ্গারা যে বিরক্তি প্রকাশ করেছে সেটিও দুনিয়াকে জানাবে বাংলাদেশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বাস্তুচ্যুতদের প্রত্যাবাসনে উৎসাহিত করা সম্পূর্ণভাবে যে মিয়ানমারের দায়িত্ব সেটিও স্মরণ করবে ঢাকা। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মধ্যে থাকা আস্থার সংকট দূর করাও যে দায়িত্ব সেটি পূণর্ব্যক্ত করা হবে। আনান কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে একটি যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ ব্যক্ত করবে ঢাকা।
ওই কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সূত্র মতে, ব্রিফিংয়ের পর এ নিয়ে গণমাধ্যমে কোন তথ্য শেয়ার করতে বারণ করা হয়েছে। তবে এটা আভাস মিলেছে যে কূটনৈতিক ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই গণমাধ্যমকেও ব্রিফ করতে পারেন।
কূটনীতিকদের কী বলবে বাংলাদেশ: টাস্কফোর্সের মিটিংয়ের পর্যালোচনা বা কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে গণমাধ্যমের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এটেছেন সেগুনবাগিচার কর্মকর্তারা। আজকের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে কী বলবে বাংলাদেশ? সন্ধ্যা পর্যন্ত এ নিয়ে জানার চেষ্টা ছিল মানবজমিনের। কিন্তু কোন কর্মকর্তাই খোলাসা করে কিছু বলতে রাজী হননি। একজন শুধু বলেন, প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের দোষারোপ চেষ্টার বিপরীতে ঢাকার তরফে একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। সেখানে কিছু বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে। যেমন মিয়ানমারের ভিত্তিহীন অভিযোগ, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডা, যা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। ঢাকা মনে করে রোহিঙ্গা সমস্যার উপযুক্ত সমাধানে ‘দায়বদ্ধতা’ এবং ‘প্রতিশ্রুতি’র বাস্তবায়নে মিয়ানমারের পুরোপুরি মনোনিবেশ করা জরুরি। কারণ এ সঙ্কট সৃষ্টির জন্য সম্পূর্ণভাবে মিয়ানমারই দায়ী। সুতরাং সামাধান তাদেরই করতে হবে। বাংলাদেশ ভুক্তভোগী মাত্র। কিন্তু মিয়ানমার তাদের দায় এবং প্রতিশ্রুতির বিষয়টি ভুলে গিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতার’ অভিযোগ করছে, যা পুরোপুরি অন্যায়। রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে ফেরত নেয়া, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া তদারকি করা এবং দেশটিতে বসবাসরত অন্য জাতি-গোষ্ঠির মধ্যে রোহিঙ্গাদের রিইন্টিগ্রেশন বা পূণঃএকত্রিকরণের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সঙ্গে মিলে একটি ‘সমন্বিত পদেক্ষেপ’ বা উদ্যোগ গ্রহণ করা। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের দায়-দায়িত্বের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া ছাড়াও এ ইস্যুতে এ পর্যন্ত বিশ্ব সম্প্রদায়ের যে অব্যাহত সমর্থন সেটির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। একই সঙ্গে জানাবে- যারাই ফিরতে চায়, যে কোনো সময় তাদের ফেরৎ পাঠাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তাদের জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে ‘কাউকে বাধা না দেয়ার’ যে নীতিগত অবস্থান বাংলাদেশ বজায় রেখে চলেছে সেটিও আজ দুনিয়ার সামনে ফের তুলে ধরবে ঢাকা। রাখাইনে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে মিয়ানমার কী করেছে তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা ছাড়াও রোহিঙ্গাদের কাছে শেয়ার করার আহ্বান পূণর্ব্যক্ত করবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গারা মনে করে রাখাইনে এখনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা যথেষ্ট হয়নি। সার্বিকভাবে রাখাইনে তাদের ফেরার মতো পরিবেশ এখনও নিশ্চিত না হওয়ায় একজন রোহিঙ্গাও ফিরতে রাজি হয়নি, এটাই দুনিয়াকে বলবে বাংলাদেশ। রাখাইনে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিয়ে যে গভীর উদ্বেগ রয়েছে সেটাও তুলে ধরা হবে। সেখানে প্রত্যাবাসের প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়া, বিশেষ করে আইনের শাসন, তাদের অধিকার বিষয়ক ইস্যুগুলো যেমন নাগরিকত্ব, মুক্তভাবে চলাফেরার নিশ্চয়তা এবং বলপূর্বক কেড়ে নেয়া বসতভিটা-জমি জমার অধিকার ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করবে ঢাকা। বাংলাদেশ বলবে- রোহিঙ্গারা কেউ বলেনি ফিরতে চায় না, তারা সবাই বলেছে ফিরতে চায়, কিন্তু অবশ্য তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মিয়ানমার সরকারকে মানতে হবে। তাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের আলোচনায় তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, প্রত্যাবাসন তদারকি এবং রি-ইন্টিগ্রেশনে রাখাইনে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের উপস্থিতির দাবি করেছিল। মিয়ানমারও তাদের নাগরিকত্বসহ মৌলিক দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নেয়া এবং সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পেতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বাস্তুচ্যুতদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু এ নিয়ে মিয়ানমারের পরবর্তী কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় রোহিঙ্গারা যে বিরক্তি প্রকাশ করেছে সেটিও দুনিয়াকে জানাবে বাংলাদেশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বাস্তুচ্যুতদের প্রত্যাবাসনে উৎসাহিত করা সম্পূর্ণভাবে যে মিয়ানমারের দায়িত্ব সেটিও স্মরণ করবে ঢাকা। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মধ্যে থাকা আস্থার সংকট দূর করাও যে দায়িত্ব সেটি পূণর্ব্যক্ত করা হবে। আনান কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে একটি যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ ব্যক্ত করবে ঢাকা।
No comments