রোহিঙ্গা নিপীড়ন: মিয়ানমারের বিচারে সম্ভাব্য সব পথ বিবেচনায় রাখা উচিত: যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন, মিয়ানমার যদি রোহিঙ্গা নিপীড়নে
দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে না পারে তাহলে হেগে অবস্থিত আইসিসির
মাধ্যমে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হতে
হবে। যেহেতু সদস্য নয় এমন পক্ষের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম চালাতে
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের’ (আইসিসির) নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন নেওয়ার
বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেহেতু ভিন্ন পথেও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতের বিষয়টি
বিবেচনায় রাখতে হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে,
যুক্তরাজ্য খুব সম্ভবত রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো জাতিগত নিপীড়ন, গণহত্যা ও
মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে নতুন উদ্যোগ
গ্রহণ করতে যাচ্ছে, ঠিক যেমন সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করতে উদ্যোগ
নিয়েছে দেশটি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে।
মিয়ানমার সফরে থাকা অবস্থাতেই হান্ট তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘বার্মায় যদি জবাবদিহিতা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত না হয় তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টি বিচারের জন্য পাঠানো থেকে শুরু করে অন্যান্য সবগুলো পথ বিবেচনায় রাখা। আন্তর্জাতিক আদালতের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের দরকার পড়বে, যা পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের অন্যান্য পথ কী কী হতে পারে সে বিষয়ে ভাবতে হবে।’
ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি মিয়ানমারের দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। রাখাইনে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে গত সপ্তাহে প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং লাইং ও সংশ্লিষ্ট অপর পাঁচ জন জেনারেলকে গণহত্যা চালানো, যুদ্ধাপরাধ সংঘটন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনা উচিত।
তাছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদা জানিয়েছেন, তিনি রোহিঙ্গাদের অপর মিয়ানমারের চালানো নিপীড়নের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক আদলাত তার এক আবেদনের রায়ে বলেছে, মিয়ানমারের সংঘটিত রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের বিষয়ে তদন্ত শুরু করা যেতে পারে। সে প্রেক্ষিতেই বেনসুদা এখন আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন। যেহেতু মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয় সেহেতু তারা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মিয়ানমারকে জড়িত করে এমন বিচার কার্যক্রম গ্রহণ করতে রাজি নয়। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির প্রেসিডেন্টের অফিস, দুই স্থান থেকেই মিয়ানমারের দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের উদ্যোগকে আইসিসির বিধিবহির্ভূত কার্যকলাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন, ফাতৌ বেনসুদার উদ্যোগ ছাড়াও রয়েছে মার্কিন পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র গত ১৭ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো জাতিগত নিধনযজ্ঞের দায়ে দেশটির তিনজন সেনা কর্মকর্তা, দুইটি সেনা ব্রিগেড ও বর্ডার পুলিশের এক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালত সে সমর্থন নাও পেতে পারে। দেশটির ধারণা, চীন নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেওয়া প্রস্তাবে ভেটো দেবে। মিয়ানমারের বিচারের দাবি তোলা ব্রিটিশ আন্দোলনকারীরা মনে করেন, হান্টের উচিত অব্যাহতভাবে মিয়ানমারের বিচারের দাবির পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া। এতে করে নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটির বিষয়টি গৌণ হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক সমর্থন রোহিঙ্গাদের পক্ষে চলে এলে মিয়ানমার বিশ্বসভায় কোণঠাসা হয়ে যাবে। তখন রোহিঙ্গাদের নিধনযজ্ঞের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর দায়ী সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হবে।
জেরেমি হান্ট বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য একা পারবে না। আমাদেরকে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা আইনের শাসনের ভিত্তিতে ন্যায় নিশ্চিত করতে চাই। দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
জেরেমি হান্ট আরও জানিয়েছেন, অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকে তিনি আটক রয়টার্স সানবাদিকদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন। রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিক মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। কিন্তু তাদেরকে কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের আদালত। অং সান সু চির ভাষ্য, রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিককে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের দায়ে সাজা দেওয়া হয়নি, সরকারি নথির গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
গার্ডিয়ান লিখেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সু চির নিয়ন্ত্রণে নেই, এমন কথা বলে জেরেমি হান্টও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সু চিও রোহিঙ্গাদের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তিনি চাইলে সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে দিতে পারতেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে।
মিয়ানমার সফরে থাকা অবস্থাতেই হান্ট তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘বার্মায় যদি জবাবদিহিতা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত না হয় তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টি বিচারের জন্য পাঠানো থেকে শুরু করে অন্যান্য সবগুলো পথ বিবেচনায় রাখা। আন্তর্জাতিক আদালতের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের দরকার পড়বে, যা পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের অন্যান্য পথ কী কী হতে পারে সে বিষয়ে ভাবতে হবে।’
ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি মিয়ানমারের দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। রাখাইনে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে গত সপ্তাহে প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং লাইং ও সংশ্লিষ্ট অপর পাঁচ জন জেনারেলকে গণহত্যা চালানো, যুদ্ধাপরাধ সংঘটন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনা উচিত।
তাছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদা জানিয়েছেন, তিনি রোহিঙ্গাদের অপর মিয়ানমারের চালানো নিপীড়নের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক আদলাত তার এক আবেদনের রায়ে বলেছে, মিয়ানমারের সংঘটিত রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের বিষয়ে তদন্ত শুরু করা যেতে পারে। সে প্রেক্ষিতেই বেনসুদা এখন আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন। যেহেতু মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয় সেহেতু তারা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মিয়ানমারকে জড়িত করে এমন বিচার কার্যক্রম গ্রহণ করতে রাজি নয়। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির প্রেসিডেন্টের অফিস, দুই স্থান থেকেই মিয়ানমারের দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের উদ্যোগকে আইসিসির বিধিবহির্ভূত কার্যকলাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন, ফাতৌ বেনসুদার উদ্যোগ ছাড়াও রয়েছে মার্কিন পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র গত ১৭ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো জাতিগত নিধনযজ্ঞের দায়ে দেশটির তিনজন সেনা কর্মকর্তা, দুইটি সেনা ব্রিগেড ও বর্ডার পুলিশের এক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালত সে সমর্থন নাও পেতে পারে। দেশটির ধারণা, চীন নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেওয়া প্রস্তাবে ভেটো দেবে। মিয়ানমারের বিচারের দাবি তোলা ব্রিটিশ আন্দোলনকারীরা মনে করেন, হান্টের উচিত অব্যাহতভাবে মিয়ানমারের বিচারের দাবির পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া। এতে করে নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটির বিষয়টি গৌণ হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক সমর্থন রোহিঙ্গাদের পক্ষে চলে এলে মিয়ানমার বিশ্বসভায় কোণঠাসা হয়ে যাবে। তখন রোহিঙ্গাদের নিধনযজ্ঞের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর দায়ী সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হবে।
জেরেমি হান্ট বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য একা পারবে না। আমাদেরকে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা আইনের শাসনের ভিত্তিতে ন্যায় নিশ্চিত করতে চাই। দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
জেরেমি হান্ট আরও জানিয়েছেন, অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকে তিনি আটক রয়টার্স সানবাদিকদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন। রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিক মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। কিন্তু তাদেরকে কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের আদালত। অং সান সু চির ভাষ্য, রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিককে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের দায়ে সাজা দেওয়া হয়নি, সরকারি নথির গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
গার্ডিয়ান লিখেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সু চির নিয়ন্ত্রণে নেই, এমন কথা বলে জেরেমি হান্টও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সু চিও রোহিঙ্গাদের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তিনি চাইলে সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে দিতে পারতেন।
No comments