যেভাবে সন্ত্রাসীরা দখল করে আব্রাহাম ক্রুশের বাড়ি by রুদ্র মিজান
বাসার
বাইরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী। সঙ্গে পুলিশ। ছোট্ট বাসার ভেতরে তপন ক্রুশ,
স্ত্রী তৃষ্ণা মারিয়া ক্রুশ ও বোন পুতুল সিসিলিয়া ক্রুশ। ভয়ে কাঁপছিলেন
তারা। দরজায় ক্রমাগত বাড়তে থাকে লাথির শব্দ। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ভেতরে
ঢুকে পাঁচ-সাত যুবক। বাইরে দাঁড়ানো আরো ৩০-৩৫ জন। তপনকে মারধর করে তারা।
টানাহেঁচড়া করে তৃষ্ণা ও পুতুলকে। মুহূর্তের মধ্যেই বাসার টেলিভিশন,
আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, সোফা লুট করে নিয়ে যায়। মারধর করে বাসা থেকে বের
করে দেয় তাদের। এভাবেই দখল করে নেয় বাড়ি। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের
অক্টোবরে রাজধানীর পূর্বতেজতুরি বাজার এলাকায়।
সেদিনের পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তপন ক্রুশের পিতা আব্রাহাম ক্রুশ জানান, বাড়িটি হারানোর পর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় থাকছেন আব্রাহামের পরিবারের সদস্যরা। বাড়িটি উদ্ধারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। ঢাকা শহরে এই বাড়ি ছাড়া কিছুই নেই আমার। একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে চাকরি করেন আব্রাহাম ক্রুশ। আব্রাহাম জানান, দখলের দিন সকালে বাসার বাইরে ছিলেন তিনি। ফোনে ছেলে তপন ক্রুশের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে দ্রুত বাসায় ছুটে যান। গিয়ে দেখেন সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। বাসার টিন পর্যন্ত খুলে নিয়েছে তারা। এ নিয়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ালে আব্রাহাম ক্রুশকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। বাসার সামনে তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক সুজিতসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য। তাদের সামনেই ঘটছিল ঘটনা। পুলিশ আব্রাহামকে জানায় কোর্টের রায় আছে, তাই দখল বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে সাইফ উল্যাকে। উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের পাঁচ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা সাইফ উল্যার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। আব্রাহাম থানায় ছুটে যান। মারধর, মেয়েদের লাঞ্ছনার অভিযোগে একটি জিডি বা মামলা করতে চান। কিন্তু পুলিশ জিডি বা মামলা নেবে না। আব্রাহাম ক্রুশ বলেন, থানার ওসি বলেছেন, আমাদের কিছু করার নেই। আপনার অভিযোগ নেয়া যাবে না।
এভাবেই নিজের বাসাটি হারিয়ে যায় আব্রাহামের। আদালতের রায় সম্পর্কে জানা গেছে, আদালতে সাইফ উল্যা’র দায়েরকৃত ৬৮৮/১৫ মামলার রায়ে আব্রাহামের ৪৬/২ নম্বর বাসার কথা উল্লেখ নেই। ওই মামলায় ডকলেজ এ গমেজের দখলে থাকা সাড়ে তিন কাঠা জায়গা সম্পর্কে রায় দেয়া হয়েছে। আব্রাহাম বলেন, আমার বাসার জায়গা নিয়ে কোনো মামলাই ছিল না। রায় থাকবে কিভাবে। ডকলেজ এ গমেজের জায়গা দখল করার সময় কৌশলে তারা আমার বাসাটি দখল করেছে। পুলিশও তাদের সহযোগিতা করেছে। এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আদালতের। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
আব্রাহাম ক্রুশ জানান, তেজতুরি বাজার মৌজার ১৪৫৯ ও ১৪৬০ নম্বর দাগের সোয়া তিন কাঠা জায়গার মালিক তার স্ত্রী পারুল মারিয়া ক্রুশ। পৈত্রিক সূত্রে এই জায়গা পান পারুল মারিয়া। বৃটিশ আমল থেকেই তাদের পূর্বসূরিরা এখানে বসবাস করছেন। ২০১৩ সালে পারুল মারিয়া ক্রুশ মারা যাওয়ার পর থেকে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন আব্রাহাম ও তার দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও বড় ছেলের স্ত্রী।
হঠাৎ করেই সাইফ উল্যার দৃষ্টি পড়ে এই বাসার ওপর। প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় সফলও হন তিনি। অন্যদিকে, থানা পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে আদালতে যান আব্রাহাম ক্রুশ। আদালত ওই জায়গার ওপরে স্থিতিতাদেশ দেন। সোমবার পূর্ব তেজতুরি বাজারের ৪৬/২ নম্বরের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজের উল্টো দিকে রাস্তার পাশের কয়েক বাড়ি পরেই এই বাড়িটি। সামনের গেটে সার্বক্ষণিক রয়েছেন একজন নিরাপত্তাকর্মী। গেটের ভেতরে বেশ কয়েক কোচিং সেন্টার ও একটি মাদরাসা ভাড়া দেয়া হয়েছে। এর মধ্যেই আব্রাহামের বাড়ি। ছোট্ট বাড়িটি ভাঙ্গা ধ্বংসস্তূপ অবস্থায় পড়ে আছে। পাকা কয়েক পিলার ও ক্রংক্রিটের ভাঙ্গা দেয়ালের ভেতরে রয়েছে ভাঙাড়ি জিনিসপত্র।
তেজগাঁওয়ের হলি রোজারি চার্চের ফাদার কমল কোড়াইয়া জানান, বাড়িটি দখল হওয়ার পর দীর্ঘদিন চার্চে আশ্রয় নিয়েছিলেন আব্রাহাম। তারপর থেকে কোথায় আছেন জানা নেই তার। এ বিষয়ে আব্রাহাম বলেন, গরিব মানুষ। বাসা ভাড়া দিয়ে থাকার মতো টাকা নেই। বাড়িটি হারানোর পর ছেলে ও ছেলের স্ত্রী এক আত্মীয়ের বাসায় থাকছে। ছোট ছেলে মেসে থাকে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আর আব্রাহাম থাকেন মহাখালীতে আত্মীয়ের বাসায়। এভাবেই দিনাতিপাত করছেন তারা।
আব্রাহাম ক্রুশ জানান গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল এখনও তার স্ত্রী পারুল মারিয়া ক্রুশের নামেই আসে। ২০১৭ সালের ৯ই জুলাই সিটি করপোরেশনের করও পরিশোধ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে সাইফ উল্যার বক্তব্যের জন্য তার ফোন নম্বরে বারবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সেদিনের পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তপন ক্রুশের পিতা আব্রাহাম ক্রুশ জানান, বাড়িটি হারানোর পর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় থাকছেন আব্রাহামের পরিবারের সদস্যরা। বাড়িটি উদ্ধারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। ঢাকা শহরে এই বাড়ি ছাড়া কিছুই নেই আমার। একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে চাকরি করেন আব্রাহাম ক্রুশ। আব্রাহাম জানান, দখলের দিন সকালে বাসার বাইরে ছিলেন তিনি। ফোনে ছেলে তপন ক্রুশের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে দ্রুত বাসায় ছুটে যান। গিয়ে দেখেন সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। বাসার টিন পর্যন্ত খুলে নিয়েছে তারা। এ নিয়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ালে আব্রাহাম ক্রুশকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। বাসার সামনে তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক সুজিতসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য। তাদের সামনেই ঘটছিল ঘটনা। পুলিশ আব্রাহামকে জানায় কোর্টের রায় আছে, তাই দখল বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে সাইফ উল্যাকে। উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের পাঁচ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা সাইফ উল্যার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। আব্রাহাম থানায় ছুটে যান। মারধর, মেয়েদের লাঞ্ছনার অভিযোগে একটি জিডি বা মামলা করতে চান। কিন্তু পুলিশ জিডি বা মামলা নেবে না। আব্রাহাম ক্রুশ বলেন, থানার ওসি বলেছেন, আমাদের কিছু করার নেই। আপনার অভিযোগ নেয়া যাবে না।
এভাবেই নিজের বাসাটি হারিয়ে যায় আব্রাহামের। আদালতের রায় সম্পর্কে জানা গেছে, আদালতে সাইফ উল্যা’র দায়েরকৃত ৬৮৮/১৫ মামলার রায়ে আব্রাহামের ৪৬/২ নম্বর বাসার কথা উল্লেখ নেই। ওই মামলায় ডকলেজ এ গমেজের দখলে থাকা সাড়ে তিন কাঠা জায়গা সম্পর্কে রায় দেয়া হয়েছে। আব্রাহাম বলেন, আমার বাসার জায়গা নিয়ে কোনো মামলাই ছিল না। রায় থাকবে কিভাবে। ডকলেজ এ গমেজের জায়গা দখল করার সময় কৌশলে তারা আমার বাসাটি দখল করেছে। পুলিশও তাদের সহযোগিতা করেছে। এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আদালতের। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
আব্রাহাম ক্রুশ জানান, তেজতুরি বাজার মৌজার ১৪৫৯ ও ১৪৬০ নম্বর দাগের সোয়া তিন কাঠা জায়গার মালিক তার স্ত্রী পারুল মারিয়া ক্রুশ। পৈত্রিক সূত্রে এই জায়গা পান পারুল মারিয়া। বৃটিশ আমল থেকেই তাদের পূর্বসূরিরা এখানে বসবাস করছেন। ২০১৩ সালে পারুল মারিয়া ক্রুশ মারা যাওয়ার পর থেকে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন আব্রাহাম ও তার দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও বড় ছেলের স্ত্রী।
হঠাৎ করেই সাইফ উল্যার দৃষ্টি পড়ে এই বাসার ওপর। প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় সফলও হন তিনি। অন্যদিকে, থানা পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে আদালতে যান আব্রাহাম ক্রুশ। আদালত ওই জায়গার ওপরে স্থিতিতাদেশ দেন। সোমবার পূর্ব তেজতুরি বাজারের ৪৬/২ নম্বরের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজের উল্টো দিকে রাস্তার পাশের কয়েক বাড়ি পরেই এই বাড়িটি। সামনের গেটে সার্বক্ষণিক রয়েছেন একজন নিরাপত্তাকর্মী। গেটের ভেতরে বেশ কয়েক কোচিং সেন্টার ও একটি মাদরাসা ভাড়া দেয়া হয়েছে। এর মধ্যেই আব্রাহামের বাড়ি। ছোট্ট বাড়িটি ভাঙ্গা ধ্বংসস্তূপ অবস্থায় পড়ে আছে। পাকা কয়েক পিলার ও ক্রংক্রিটের ভাঙ্গা দেয়ালের ভেতরে রয়েছে ভাঙাড়ি জিনিসপত্র।
তেজগাঁওয়ের হলি রোজারি চার্চের ফাদার কমল কোড়াইয়া জানান, বাড়িটি দখল হওয়ার পর দীর্ঘদিন চার্চে আশ্রয় নিয়েছিলেন আব্রাহাম। তারপর থেকে কোথায় আছেন জানা নেই তার। এ বিষয়ে আব্রাহাম বলেন, গরিব মানুষ। বাসা ভাড়া দিয়ে থাকার মতো টাকা নেই। বাড়িটি হারানোর পর ছেলে ও ছেলের স্ত্রী এক আত্মীয়ের বাসায় থাকছে। ছোট ছেলে মেসে থাকে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আর আব্রাহাম থাকেন মহাখালীতে আত্মীয়ের বাসায়। এভাবেই দিনাতিপাত করছেন তারা।
আব্রাহাম ক্রুশ জানান গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল এখনও তার স্ত্রী পারুল মারিয়া ক্রুশের নামেই আসে। ২০১৭ সালের ৯ই জুলাই সিটি করপোরেশনের করও পরিশোধ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে সাইফ উল্যার বক্তব্যের জন্য তার ফোন নম্বরে বারবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
No comments