প্রধানমন্ত্রীর শ্লেষ, কোথায় কখন হাসতে হয় তাও জানেন না? by শফিকুল ইসলাম
রাজধানীর
বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই
শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় অনেকের মতো মর্মাহত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাও। এ দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের
কার্যকরী সভাপতি ও নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া
প্রতিক্রিয়ায় হেসে হেসে কথা বলায় সারাদেশে যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে তাতে
বিরক্ত প্রধানমন্ত্রীও। দুর্ঘটনার দু’দিন পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এক নিহত
শিক্ষার্থীর বাসায় সমবেদনা জানাতে পাঠানোর পাশাপাশি নৌপরিবহনমন্ত্রীকে ডেকে
সংযত হয়ে কথা বলার নির্দেশ দিয়ে শ্লেষের সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,
‘কোথায় কখন হাসতে হয় তাও জানেন না?’ সোমবার (৩০ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক
শেষে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে ডেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ
দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কালশী ফ্লাইওভারের অদূরে র্যাডিসন হোটেলের উল্টোদিকে সিএমএইচ স্টপেজে দাঁড়ানো অবস্থায় দ্রুতগামী বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও ১০/১২ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় দায়ী বাসচালক ও সহকারীর বিচার ও সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পরপর তিনদিন মহাসড়কে নেমে এলে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। এ দুর্ঘটনায় আর সবার মতো মর্মাহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। তিনি মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে নিহত দিয়া খানমের বাসায় পাঠিয়ে তার পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং এই ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির বিষয়ে পরিবারটিকে আশ্বাস দেন।
তবে এর আগে গতকাল সোমবার (৩০ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে শাজাহান খানকে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, শাজাহান খানকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিব্রত হয় –এমন যে কোনও মন্তব্য পরিহার করতে হবে। কথা বলার সময় আরও সতর্ক থাকতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ না করে এর কাউন্টার হিসেবে মহারাষ্ট্রের সড়ক দুর্ঘটনার রেফারেন্স দেওয়া ঠিক হয়নি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক সূত্রের দাবি, এসময় শাজাহান খানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোথায় কখন হাসতে হয়, তাও জানেন না!’
উল্লেখ্য, রবিবার (২৯ জুলাই) দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি হেসে হেসে এ বিষয়ে দায়ীদের শাস্তির কথা জানানোর পাশাপাশি এ দুর্ঘটনার সঙ্গে ভারতের মহারাষ্ট্রে এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত হওয়ার তুলনা করেন। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের নেতা হিসেবে নৌ-মন্ত্রীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বাসের চালক ও হেলপাররা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠছে –এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার শাজাহান খান হেসে হেসে বলেন, ‘আজকের বিষয়ের সঙ্গে এটি রিলেটেড নয়। মহারাষ্ট্রে এক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত হলেও কোনও হৈ চৈ হয় না। অথচ বাংলাদেশে সামান্য কিছুতেই হৈ চৈ হয়।’
হেসে হেসে নৌমন্ত্রীর এমন মন্তব্য করা দেখে খোদ সরকারের অনেকেই আশ্চর্য হন; অনেকে এ নিয়ে সমালোচনাও করেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি দুঃখ প্রকাশ করতে পারতেন। এ দুর্ঘটনায় মন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ করার কথা। অথচ তিনি উল্টো হাসেন। এ কি করে সম্ভব! তিনি কি সুস্থ আছেন?
আওয়ামী লীগ ও সরকারের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এটাও বলেন যে, অন্য দল থেকে আসা শাজাহান খান আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট করছেন। সামনে নির্বাচন –এমন সময় তার এমন আচরণ দলকে নানা প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দাঁত বের করে হাসলেই হয় না। হাসার স্থান-কাল-পাত্র বুঝতে হয়।’
শাজাহান খানের হাসি ও মন্তব্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ফেসবুকে সাংবাদিক মিলটন আনোয়ার এক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘একটি হাসি সারা জাতির অপমান।’
মো. মাহবুব আলম সরকার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আমি বড় পুকুরিয়ার কয়লা দিয়ে দাঁত মাজি। তাই তো আমার এত সুন্দর হাসি।’
মিলন খান নামে অন্য এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, ‘দুই শিক্ষার্থীর প্রাণ গেলো, আর এক মন্ত্রী দাঁত কেলিয়ে বিবৃতি দিলো! জনগণ কেন এদের ভোট দেয়?’
সাংবাদিক আজাদ সুমন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা পিষ্ট হয় বাসের চাপায়, আর শাজাহান কাকায় হাসে।’
রাজিউর রহমান রুমি লিখেন, ‘অন্যের কষ্টে যাদের মুখে হাসি, তারা দেশি না প্রবাসী?’
এ ব্যাপারে সোমবার (৩০ জুলাই) শাজাহান খান নিজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সবসময়ই হাসি, আমার কালো মুখ কেউ দেখেনি। এটা কি দোষের?’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও দেশজুড়ে শুরু হওয়া সমালোচনায় নরম সুরে কথা বলতে শুরু করেন শাজাহান খান। হাসি-মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চান। প্রতিশ্রুতি দেন, এই দুর্ঘটনার বিচারে বাসচালকের শাস্তি হলে তিনি সাংগঠনিকভাবে কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত বিবৃতিও পাঠানো হয় সংবাদ মাধ্যম অফিসগুলোয়।
এদিকে, বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর নিহতের প্রতিবাদে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করেন। একইসঙ্গে তারা গাড়িচাপায় শিক্ষার্থী হত্যার বিচার ও শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেন। এর জবাবও নরম সুরে দেন শাজাহান খান। সোমবার (৩০ জুলাই) নিজ দফতরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পদত্যাগ সমস্যার সমাধান নয়। মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেই তো আর সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে না। পদত্যাগ করলে যদি সব সমস্যার সমাধান হয়, তাহলে আমার পদত্যাগ করতে কোনও অসুবিধা নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে আমাদের মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিবাদ আমরা করতে রাজি নই। এসবের দায়-দায়িত্ব আমরা নেবো না।’ এসময় দুই ছাত্র নিহত হওয়ার বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক এবং দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আজ মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল নিহত শিক্ষার্থী মিমের বাসায় যান। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক, আমরা মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রীও দুঃখ পেয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন। সে কারণে তিনি আমাকে পরিবারটির খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি খুবই কঠোর।’
রাস্তায় ছাত্রদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে, এটি তারা করতেই পারে। কারণ, তারা তাদের সহপাঠীকে হারিয়েছে, বন্ধুকে হারিয়েছে। তাদের আবেগ আছে, তাই তারা বিক্ষোভ করছে। আমি ছাত্রদের এই বিক্ষোভকে সমর্থন করি।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কালশী ফ্লাইওভারের অদূরে র্যাডিসন হোটেলের উল্টোদিকে সিএমএইচ স্টপেজে দাঁড়ানো অবস্থায় দ্রুতগামী বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও ১০/১২ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় দায়ী বাসচালক ও সহকারীর বিচার ও সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পরপর তিনদিন মহাসড়কে নেমে এলে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। এ দুর্ঘটনায় আর সবার মতো মর্মাহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। তিনি মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে নিহত দিয়া খানমের বাসায় পাঠিয়ে তার পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং এই ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির বিষয়ে পরিবারটিকে আশ্বাস দেন।
তবে এর আগে গতকাল সোমবার (৩০ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে শাজাহান খানকে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, শাজাহান খানকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিব্রত হয় –এমন যে কোনও মন্তব্য পরিহার করতে হবে। কথা বলার সময় আরও সতর্ক থাকতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ না করে এর কাউন্টার হিসেবে মহারাষ্ট্রের সড়ক দুর্ঘটনার রেফারেন্স দেওয়া ঠিক হয়নি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক সূত্রের দাবি, এসময় শাজাহান খানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোথায় কখন হাসতে হয়, তাও জানেন না!’
উল্লেখ্য, রবিবার (২৯ জুলাই) দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি হেসে হেসে এ বিষয়ে দায়ীদের শাস্তির কথা জানানোর পাশাপাশি এ দুর্ঘটনার সঙ্গে ভারতের মহারাষ্ট্রে এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত হওয়ার তুলনা করেন। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের নেতা হিসেবে নৌ-মন্ত্রীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বাসের চালক ও হেলপাররা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠছে –এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার শাজাহান খান হেসে হেসে বলেন, ‘আজকের বিষয়ের সঙ্গে এটি রিলেটেড নয়। মহারাষ্ট্রে এক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত হলেও কোনও হৈ চৈ হয় না। অথচ বাংলাদেশে সামান্য কিছুতেই হৈ চৈ হয়।’
হেসে হেসে নৌমন্ত্রীর এমন মন্তব্য করা দেখে খোদ সরকারের অনেকেই আশ্চর্য হন; অনেকে এ নিয়ে সমালোচনাও করেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি দুঃখ প্রকাশ করতে পারতেন। এ দুর্ঘটনায় মন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ করার কথা। অথচ তিনি উল্টো হাসেন। এ কি করে সম্ভব! তিনি কি সুস্থ আছেন?
আওয়ামী লীগ ও সরকারের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এটাও বলেন যে, অন্য দল থেকে আসা শাজাহান খান আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট করছেন। সামনে নির্বাচন –এমন সময় তার এমন আচরণ দলকে নানা প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দাঁত বের করে হাসলেই হয় না। হাসার স্থান-কাল-পাত্র বুঝতে হয়।’
শাজাহান খানের হাসি ও মন্তব্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ফেসবুকে সাংবাদিক মিলটন আনোয়ার এক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘একটি হাসি সারা জাতির অপমান।’
মো. মাহবুব আলম সরকার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আমি বড় পুকুরিয়ার কয়লা দিয়ে দাঁত মাজি। তাই তো আমার এত সুন্দর হাসি।’
মিলন খান নামে অন্য এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, ‘দুই শিক্ষার্থীর প্রাণ গেলো, আর এক মন্ত্রী দাঁত কেলিয়ে বিবৃতি দিলো! জনগণ কেন এদের ভোট দেয়?’
সাংবাদিক আজাদ সুমন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা পিষ্ট হয় বাসের চাপায়, আর শাজাহান কাকায় হাসে।’
রাজিউর রহমান রুমি লিখেন, ‘অন্যের কষ্টে যাদের মুখে হাসি, তারা দেশি না প্রবাসী?’
এ ব্যাপারে সোমবার (৩০ জুলাই) শাজাহান খান নিজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সবসময়ই হাসি, আমার কালো মুখ কেউ দেখেনি। এটা কি দোষের?’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও দেশজুড়ে শুরু হওয়া সমালোচনায় নরম সুরে কথা বলতে শুরু করেন শাজাহান খান। হাসি-মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চান। প্রতিশ্রুতি দেন, এই দুর্ঘটনার বিচারে বাসচালকের শাস্তি হলে তিনি সাংগঠনিকভাবে কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত বিবৃতিও পাঠানো হয় সংবাদ মাধ্যম অফিসগুলোয়।
এদিকে, বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর নিহতের প্রতিবাদে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করেন। একইসঙ্গে তারা গাড়িচাপায় শিক্ষার্থী হত্যার বিচার ও শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেন। এর জবাবও নরম সুরে দেন শাজাহান খান। সোমবার (৩০ জুলাই) নিজ দফতরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পদত্যাগ সমস্যার সমাধান নয়। মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেই তো আর সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে না। পদত্যাগ করলে যদি সব সমস্যার সমাধান হয়, তাহলে আমার পদত্যাগ করতে কোনও অসুবিধা নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে আমাদের মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিবাদ আমরা করতে রাজি নই। এসবের দায়-দায়িত্ব আমরা নেবো না।’ এসময় দুই ছাত্র নিহত হওয়ার বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক এবং দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আজ মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল নিহত শিক্ষার্থী মিমের বাসায় যান। আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক, আমরা মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রীও দুঃখ পেয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন। সে কারণে তিনি আমাকে পরিবারটির খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি খুবই কঠোর।’
রাস্তায় ছাত্রদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে, এটি তারা করতেই পারে। কারণ, তারা তাদের সহপাঠীকে হারিয়েছে, বন্ধুকে হারিয়েছে। তাদের আবেগ আছে, তাই তারা বিক্ষোভ করছে। আমি ছাত্রদের এই বিক্ষোভকে সমর্থন করি।
No comments