আফ্রিকায় লাল-সবুজের পতাকা সমুন্নত রাখছে ব্যানব্যাট by কাজী সোহাগ
মধ্য
আফ্রিকায় বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকাকে সমুন্নত রাখছে বাংলাদেশ
ব্যাটালিয়ন। ব্যানব্যাট নামে এটা সবচেয়ে বেশি পরিচিত। শান্তি রক্ষায়
বাংলাদেশের ৩টি কন্টিনজেন্টের মধ্যে সবচেয়ে বড়। ৮০৬ সদস্যের এ ব্যাটালিয়নে
বিভিন্ন স্তরের অফিসার রয়েছেন ৬৫ জন। অপর দুই কন্টিনজেন্ট হচ্ছে বাংলাদেশ
স্পেশাল ফোর্স (ব্যানএসএফ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল (ব্যানমেড)। আফ্রিকার
বিস্তীর্ণ দুর্গম অঞ্চল জুড়ে কাজ করছে ব্যানব্যাট।
নিজেদের ৫টি ক্যাম্প থেকে তারা একের পর এক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। ক্যাম্পগুলো আছে- বেলেকো, বোকারাঙ্গা, বোসামতেলে, বোসামবেলে আর হেডকোয়ার্টার বোয়ারে। জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রথমদিকে ক্যামেরুনের সীমান্ত এলাকা বেলেকো থেকে মধ্য আফ্রিকার রাজধানী বাংগুই পর্যন্ত ৬১০ কিলোমিটার সড়কের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১৪ সালে ৭৫০ সদস্য নিয়ে শুরু হয় এই ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম। এরপর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চৌকস সদস্যরা কাজের মাধ্যমে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। এতে আস্থা বাড়ে জাতিসংঘেরও। এ কারণে গত বছর থেকে এ ব্যাটালিয়নের ওপর বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে দেয়া হয় স্থানীয় মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ৬ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার থেকে এক লাফে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা। কাজের পরিধি বাড়ে ক্যামেরুন ও চাদ সীমান্ত পর্যন্ত। জাতিসংঘের এই আস্থার মর্যাদা দিতে প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। ব্যানব্যাটে কাজ করছেন এমন কয়েক সেনা কর্মকর্তা মানবজমিনেক বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ‘সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক’-এর লাইফ লাইন রক্ষায় কাজ করছেন তারা। দেশটির একমাত্র মহাসড়ক দিয়ে সপ্তাহের ছয়দিন খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা দেয়। তা নাহলে না খেয়েই মরতে হতো অসংখ্য হতদরিদ্র মানুষকে। এই ব্যবস্থাকে জাতিসংঘের পরিভাষায় বলা হচ্ছে, মেইন সাপ্লাই রুট বা এমএসআর। দেশটির রাজধানী বাংগুইসহ সারা দেশের মানুষের খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আসে ক্যামেরুন বর্ডার দিয়ে। ল্যান্ডলকড (কোনো সমুদ্রবন্দর নেই) কান্ট্রি হিসাবে পার্শ্ববর্তী অন্য কোনো দেশ থেকে কোনো পণ্যসামগ্রী আনার সুযোগ নেই তাদের। শেষ ৭ মাসে ৮ হাজারের বেশি গাড়িকে নিরাপত্তা দিয়েছে ব্যানব্যাটের সদস্যরা। অতীতে এ রুটে অসংখ্য গাড়ি লুটের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে অসংখ্য মালবাহী গাড়ি। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব নেয়ার পর এ ধরনের হামলার সংখ্যা শূন্যের কোঠায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর ব্যাপক আস্থাশীল। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যানব্যাটের সদস্যরা নিরাপত্তা না দেয় ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাস্তায় চলাচল করার সাহস পায় না। সংশ্লিষ্টরা জানান, বেলেকো থেকে বাংগুই পর্যন্ত ৬১০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার রাস্তা ভালো। ২০০ কিলোমিটার রাস্তা ভঙ্গুর আর রয়েছে ছোট-বড় গর্ত। বাকি রাস্তা বলা চলে চলাচলের অনুপযোগী। এ অবস্থায়ও ঝুঁকি নিয়ে অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাহসী সৈনিকরা। এজন্য তাদের জীবন দিতে হচ্ছে, ত্যাগও স্বীকার করতে হচ্ছে। সর্বশেষ ২৬শে মে বকেদের ইয়ালোকা নামক স্থানে দুর্গম রাস্তায় দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মারা যান ল্যান্স কর্পোরাল রিপন ও সৈনিক আরজান। এর পাশাপাশি গত বছর থেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্থানীয়দের রক্ষা করতে কাজ করছে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। ব্যানব্যাটের সেনা কর্মকর্তারা মানবজমিনকে বলেন, ব্যানব্যাটের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ৫টি সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রায় ১২শ স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপর। সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে- এন্টি বালাকা, থ্রি-আর (রিটার্ন, রিক্লেমেশন, রিহ্যাবিলিটেশন), ফ্রন্ট ডেমোক্রেটিক দো পিপল আফ্রিকান (এপডিপিসি), ন্যাশনাল মুভমেন্ট ফর দি লিবারেশন অব কার (এমএনএলসি) ও সম্প্রতি সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করা কোয়ালিশন সিরিরি। তাদের হাতে রয়েছে এম-৪৭, একে-৪৭, মেশিনগান, আরপিজি, হ্যান্ডগ্রেনেড থেকে শুরু করে স্থানীয়ভাবে তৈরি নানা ধরনের মারণাস্ত্র। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুটি বড় ধরনের সফল অপারেশন পরিচালনা করে ব্যানব্যাট। একটি অপারেশন জিনজ্যাগ ও অপরটি অপারেশন এমবারাঙ্গা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত সিসির একটি শক্তিশালী ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করা হয় অপারেশন জিনজ্যাগের মাধ্যমে। সেখানে সংগঠনটি যেন আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য অপারেশন চলমান রয়েছে। অপারেশন এমবারাঙ্গার মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের আরেকটি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। এভাবে একের পর এক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করে সফলতা দেখাচ্ছেন অকুতোভয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে তারা দেশকে রাখছেন মাথার ওপরে। আর লাল-সবুজের পতাকাকে মধ্য আফ্রিকার দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় ওড়াচ্ছে পতপত করে। যা দেখে আফ্রিকানরা মাথা উঁচু করে দিচ্ছেন স্যালুট। আর বলছেন- শাবাশ বাংলাদেশ।
নিজেদের ৫টি ক্যাম্প থেকে তারা একের পর এক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। ক্যাম্পগুলো আছে- বেলেকো, বোকারাঙ্গা, বোসামতেলে, বোসামবেলে আর হেডকোয়ার্টার বোয়ারে। জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রথমদিকে ক্যামেরুনের সীমান্ত এলাকা বেলেকো থেকে মধ্য আফ্রিকার রাজধানী বাংগুই পর্যন্ত ৬১০ কিলোমিটার সড়কের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১৪ সালে ৭৫০ সদস্য নিয়ে শুরু হয় এই ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম। এরপর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চৌকস সদস্যরা কাজের মাধ্যমে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। এতে আস্থা বাড়ে জাতিসংঘেরও। এ কারণে গত বছর থেকে এ ব্যাটালিয়নের ওপর বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে দেয়া হয় স্থানীয় মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ৬ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার থেকে এক লাফে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা। কাজের পরিধি বাড়ে ক্যামেরুন ও চাদ সীমান্ত পর্যন্ত। জাতিসংঘের এই আস্থার মর্যাদা দিতে প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। ব্যানব্যাটে কাজ করছেন এমন কয়েক সেনা কর্মকর্তা মানবজমিনেক বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ‘সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক’-এর লাইফ লাইন রক্ষায় কাজ করছেন তারা। দেশটির একমাত্র মহাসড়ক দিয়ে সপ্তাহের ছয়দিন খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা দেয়। তা নাহলে না খেয়েই মরতে হতো অসংখ্য হতদরিদ্র মানুষকে। এই ব্যবস্থাকে জাতিসংঘের পরিভাষায় বলা হচ্ছে, মেইন সাপ্লাই রুট বা এমএসআর। দেশটির রাজধানী বাংগুইসহ সারা দেশের মানুষের খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আসে ক্যামেরুন বর্ডার দিয়ে। ল্যান্ডলকড (কোনো সমুদ্রবন্দর নেই) কান্ট্রি হিসাবে পার্শ্ববর্তী অন্য কোনো দেশ থেকে কোনো পণ্যসামগ্রী আনার সুযোগ নেই তাদের। শেষ ৭ মাসে ৮ হাজারের বেশি গাড়িকে নিরাপত্তা দিয়েছে ব্যানব্যাটের সদস্যরা। অতীতে এ রুটে অসংখ্য গাড়ি লুটের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে অসংখ্য মালবাহী গাড়ি। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব নেয়ার পর এ ধরনের হামলার সংখ্যা শূন্যের কোঠায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর ব্যাপক আস্থাশীল। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যানব্যাটের সদস্যরা নিরাপত্তা না দেয় ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাস্তায় চলাচল করার সাহস পায় না। সংশ্লিষ্টরা জানান, বেলেকো থেকে বাংগুই পর্যন্ত ৬১০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার রাস্তা ভালো। ২০০ কিলোমিটার রাস্তা ভঙ্গুর আর রয়েছে ছোট-বড় গর্ত। বাকি রাস্তা বলা চলে চলাচলের অনুপযোগী। এ অবস্থায়ও ঝুঁকি নিয়ে অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাহসী সৈনিকরা। এজন্য তাদের জীবন দিতে হচ্ছে, ত্যাগও স্বীকার করতে হচ্ছে। সর্বশেষ ২৬শে মে বকেদের ইয়ালোকা নামক স্থানে দুর্গম রাস্তায় দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মারা যান ল্যান্স কর্পোরাল রিপন ও সৈনিক আরজান। এর পাশাপাশি গত বছর থেকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্থানীয়দের রক্ষা করতে কাজ করছে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। ব্যানব্যাটের সেনা কর্মকর্তারা মানবজমিনকে বলেন, ব্যানব্যাটের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ৫টি সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রায় ১২শ স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপর। সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে- এন্টি বালাকা, থ্রি-আর (রিটার্ন, রিক্লেমেশন, রিহ্যাবিলিটেশন), ফ্রন্ট ডেমোক্রেটিক দো পিপল আফ্রিকান (এপডিপিসি), ন্যাশনাল মুভমেন্ট ফর দি লিবারেশন অব কার (এমএনএলসি) ও সম্প্রতি সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করা কোয়ালিশন সিরিরি। তাদের হাতে রয়েছে এম-৪৭, একে-৪৭, মেশিনগান, আরপিজি, হ্যান্ডগ্রেনেড থেকে শুরু করে স্থানীয়ভাবে তৈরি নানা ধরনের মারণাস্ত্র। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুটি বড় ধরনের সফল অপারেশন পরিচালনা করে ব্যানব্যাট। একটি অপারেশন জিনজ্যাগ ও অপরটি অপারেশন এমবারাঙ্গা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত সিসির একটি শক্তিশালী ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করা হয় অপারেশন জিনজ্যাগের মাধ্যমে। সেখানে সংগঠনটি যেন আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য অপারেশন চলমান রয়েছে। অপারেশন এমবারাঙ্গার মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের আরেকটি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। এভাবে একের পর এক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করে সফলতা দেখাচ্ছেন অকুতোভয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে তারা দেশকে রাখছেন মাথার ওপরে। আর লাল-সবুজের পতাকাকে মধ্য আফ্রিকার দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় ওড়াচ্ছে পতপত করে। যা দেখে আফ্রিকানরা মাথা উঁচু করে দিচ্ছেন স্যালুট। আর বলছেন- শাবাশ বাংলাদেশ।
No comments