ছিনতাইয়ে ‘সালাম পার্টি’ by আল-আমিন
পোশাকে-আশাকে
ভদ্রলোক। চলাফেরায় আভিজাত্যের ছাপ। কথা বলবে শুদ্ধ ভাষায়। পথচারীদের
দৃষ্টি আকর্ষণে বেশ দক্ষ। রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় সুন্দর করে সালাম দেবে।
সালামের উত্তর দিয়ে দাঁড়ালে কুশল বিনিময় হবে। হ্যান্ডশেক করবে। এর মাঝেই
আরো কিছু লোক এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা-পয়সা, মোবাইল হাতিয়ে নেবে। রাজধানীতে
এমন অভিনব কায়দায় ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু চক্র। যারা পরিচিত
‘সালাম পার্টি’ নামে। এসব প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছেন
অনেক সাধারণ মানুষ। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে সালাম পার্টির বেশ কিছু
সদস্য। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টার্গেট করে যে কোনো সড়ক
দিয়ে রিকশা বা হেঁটে যাওয়ার সময় এই চক্রের সদস্যরা সামনে এসে দাঁড়াবে।
প্রথমেই বিনয়ের সঙ্গে ‘সালাম দিবে’। এরপর জিজ্ঞাসা করবে, ‘কেমন আছেন ভাইয়া
অথবা আপি, আমি ওমুক। আরে, চিনতে পারছেন না আমাকে’? যে কেউ তার কথা শুনে
ভাবনায় পড়ে যাবেন? মনে হবে হয়তো তিনি আমাকে চিনেন। আমি হয়তো তাকে মনে করতে
পারছি না। তখন তিনিও হাসি মুখে হাত বাড়িয়ে দেন। হাত ধরার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ
আরো কয়েকজন যুবক এসে সেখানে হাজির। এ সময় তারা শরীরে ধারালো অস্ত্র অথবা
রিভলবার ঠেকিয়ে বলবে, যা আছে দ্রুত বের করে দে’। নইলে জীবন দে? তখন
ভিকটিমের মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়ে। কোনো কিছু চিন্তা করে নির্বিগ্নে যা আছে
তাদেরকে বের করে দেয়। তখন সেখান থেকে দ্রুত কেটে পড়ে ‘সালাম পার্টির’
প্রতারক চক্রের দল। ছিনতাইয়ে জড়িত ‘সালাম পার্টির’ ৮ থেকে ১০টি চক্র ঢাকার
বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। ছিনতাইয়ে জড়িত এই চক্রটিকে দমন করার জন্য কাজ
করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বিভিন্ন শাখা। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর
গোয়েন্দা পুলিশের পূর্ব বিভাগের ডিসি খন্দকার নূরনবী মানবজমিনকে জানান,
‘সালাম দিয়ে এমন একটি চক্র ঢাকার বিভিন্নস্থানে ছিনতাই করছে। তাদের দেখলে
বোঝা যাবে না যে, তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। পুলিশ এই চক্রটি দমন করার
জন্য মাঠে কাজ করছে।’ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ‘গত
২০শে মার্চ মতিঝিল ব্যাংক কলোনি এলাকায় এক ব্যবসায়ী এমন ঘটনার শিকার হন।
পরে তিনি মতিঝিল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। বিষয়টি ছায়া তদন্ত শুরু
করে ঢাকা মহানগর পুলিশের পূর্ব বিভাগ। এরপর গত ২৮শে মার্চ পল্টনের আইডিয়াল
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো:
মো. জিতু (৪৯), মো. মিজান (৩৫), মো. আকতার হোসেন (৪৫), মো. রিপন (২৮) ও
পিন্টু মিয়া (৩১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি মোটরসাইকেল ও ছিনতাইকৃত ১
লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলায়
পুলিশ তাদের রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে এ চক্রের আদ্যপ্রান্ত জানার চেষ্টা করে
পুলিশ। তাদের তথ্য অনুযায়ী ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় অভিযান চালাচ্ছে গোয়েন্দা
পুলিশ।
ডিবি জানায়, ‘সালাম পার্টির’ সদস্যদের দেখে কোনোভাবেই মনে হবে না যে, তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। ভদ্র এবং উচ্চবিত্তের পরিবারের লোকজনের মতো এ চক্রের সদস্যরা তারা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার জন্য বিকাল বেলায় ঢাকার কোনো একটি এলাকায় রিকশা ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে। কেউবা প্রাইভেটকার নিয়ে ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু, তারা একদিন একাধিক কোনো স্থানে ঘুরে না। ভাগ করে ঘুরে বেড়াই। ভ্যানিটি ব্যাগ বা ব্রিফকেসধারী নারী অথবা পুরুষ হয় তাদের প্রধান টার্গেট। ওই এলাকায় ব্যাংক অথবা এটিএম বুথের পাশে একজন ঘোরাঘুরি করে। কেউ বা গ্রাহক সেজে ব্যাংকের মধ্যে গিয়ে টাকা তোলে। লক্ষ্য রাখে কে কত টাকা নিয়ে বের হচ্ছে। নিজেদের টার্গেট পেয়ে গেলে ওই পুরুষ ও নারীর পিছু নেয় তারা। পথের মধ্যে মোবাইলে তাদের অপর সহযোগীদের জানিয়ে দেয়। শরীরের বিভিন্নস্থানে তারা রিভলবার ও অস্ত্র গোপনস্থানে রাখে। যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে। একপর্যায়ে এ চক্রের সদস্যরা ওই টার্গেটকৃত ব্যক্তির সামনে এসে দাঁড়ায়। সালাম দিয়ে প্রাথমিক কথা বলার সময়ের কিছুক্ষণের মধ্যে গ্রুপের অন্য সদস্যরা সেখানে এসে হাজির হয়। তখন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা ভিকটিমের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ব্যাগ ও মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ সময় ভিকটিমের চিৎকার ও কান্না করা ছাড়া আর কিছুই থাকে না। কোনো উপায় না পেয়ে ভিকটিম তখন থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।
সূত্র জানায়, এ চক্রের সদস্যরা, পল্টন, কাকরাইল, মতিঝিল, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরা, রমনা মহাখালী, কমলাপুর এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। ঢাকায় ৮ থেকে ১০টি গ্রুপ রয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রুপে ৫ থেকে ৬ জন সদস্য রয়েছে। সূত্র জানায়, এ চক্রের অধিকাংশ সদস্য মাদক সেবনে আসক্ত এবং বকে যাওয়া তরুণ। অনেকেই কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে হতাশা থেকে এই ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। গত ২৮শে মার্চ গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশ জানতে পেরেছে, এই সালাম পার্টির সদস্যরা ঢাকায় বসবাস করে না। নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে তারা ঢাকার বাইরে তাদের আবাসস্থল নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এবং গাজীপুর এলাকায় চলে যায়। বিকাল বেলা হলে তারা সেখান থেকে আবার ঢাকায় চলে এসে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ঘোরাঘুরি শুরু করে।
ডিবি জানায়, ‘সালাম পার্টির’ সদস্যদের দেখে কোনোভাবেই মনে হবে না যে, তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। ভদ্র এবং উচ্চবিত্তের পরিবারের লোকজনের মতো এ চক্রের সদস্যরা তারা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার জন্য বিকাল বেলায় ঢাকার কোনো একটি এলাকায় রিকশা ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে। কেউবা প্রাইভেটকার নিয়ে ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু, তারা একদিন একাধিক কোনো স্থানে ঘুরে না। ভাগ করে ঘুরে বেড়াই। ভ্যানিটি ব্যাগ বা ব্রিফকেসধারী নারী অথবা পুরুষ হয় তাদের প্রধান টার্গেট। ওই এলাকায় ব্যাংক অথবা এটিএম বুথের পাশে একজন ঘোরাঘুরি করে। কেউ বা গ্রাহক সেজে ব্যাংকের মধ্যে গিয়ে টাকা তোলে। লক্ষ্য রাখে কে কত টাকা নিয়ে বের হচ্ছে। নিজেদের টার্গেট পেয়ে গেলে ওই পুরুষ ও নারীর পিছু নেয় তারা। পথের মধ্যে মোবাইলে তাদের অপর সহযোগীদের জানিয়ে দেয়। শরীরের বিভিন্নস্থানে তারা রিভলবার ও অস্ত্র গোপনস্থানে রাখে। যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে। একপর্যায়ে এ চক্রের সদস্যরা ওই টার্গেটকৃত ব্যক্তির সামনে এসে দাঁড়ায়। সালাম দিয়ে প্রাথমিক কথা বলার সময়ের কিছুক্ষণের মধ্যে গ্রুপের অন্য সদস্যরা সেখানে এসে হাজির হয়। তখন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা ভিকটিমের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ব্যাগ ও মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ সময় ভিকটিমের চিৎকার ও কান্না করা ছাড়া আর কিছুই থাকে না। কোনো উপায় না পেয়ে ভিকটিম তখন থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।
সূত্র জানায়, এ চক্রের সদস্যরা, পল্টন, কাকরাইল, মতিঝিল, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরা, রমনা মহাখালী, কমলাপুর এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। ঢাকায় ৮ থেকে ১০টি গ্রুপ রয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রুপে ৫ থেকে ৬ জন সদস্য রয়েছে। সূত্র জানায়, এ চক্রের অধিকাংশ সদস্য মাদক সেবনে আসক্ত এবং বকে যাওয়া তরুণ। অনেকেই কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে হতাশা থেকে এই ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। গত ২৮শে মার্চ গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশ জানতে পেরেছে, এই সালাম পার্টির সদস্যরা ঢাকায় বসবাস করে না। নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে তারা ঢাকার বাইরে তাদের আবাসস্থল নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এবং গাজীপুর এলাকায় চলে যায়। বিকাল বেলা হলে তারা সেখান থেকে আবার ঢাকায় চলে এসে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ঘোরাঘুরি শুরু করে।
No comments