রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ৫ বছর: জীবিত শ্রমিকদের অর্ধেকই কাজ করতে পারেন না
রানা
প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের ৪৮ শতাংশই কাজ করতে পারছেন না। শারীরিক ও
মানসিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তাদের এই অবস্থা। রানা প্লাজায়
দুর্ঘটনার শিকার ২০০ জীবিত শ্রমিকের ওপর গবেষণা চালিয়ে এ প্রতিবেদন দিয়েছে
একশনএইড বাংলাদেশ। গতকাল ওই দুর্ঘটনার পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে মহাখালীর
ব্র্যাক সেন্টার ইন এ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সংস্থাটির
ম্যানেজার নুজহাত জেবিন। এ সময় বক্তারা বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর
বেশকিছু সংস্কার ও উদ্যোগের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এ দুর্ঘটনার ৫ বছর
পেরিয়ে গেলেও তার অগ্রগতি নেই। বিশেষ করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন,
নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। অনুষ্ঠানে গবেষণার পাশাপাশি বিশ্লেষণপত্রও
তুলে ধরা হয়। একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্রম ও
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছবি বিশ্বাস।
এ ছাড়া সরকার, মালিক, বিদেশি ক্রেতা, শ্রমিক সংগঠন এবং রানা প্লাজায় আহত
শ্রমিকসহ সব পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, শ্রমিকরা
যাতে সম্মানজনক এবং প্রয়োজন অনুযায়ী মজুরি পায়, সেজন্য সরকার, মালিক ও
ক্রেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর প্রতি বছরের মতো এবারও পরিস্থিতি তুলে ধরতে দুর্ঘটনার শিকার জীবিত ২০০ শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করে একশনএইড। গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার নুজহাত জেবিন বলেন, জীবিত শ্রমিকদের মধ্যে ১২ শতাংশের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর ২২ শতাংশ শ্রমিক এখনো মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। গবেষণায় অংশ নেয়া ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ শ্রমিক এখনও কোনো কাজ করতে পারছেন না। অন্যদিকে, ২১ দশমিক ৬ শতাংশ শ্রমিক পোশাক কারখানায় আবারো যুক্ত হতে পেরেছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওই দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও পোশাক খাতের উন্নয়নে সরকার, মালিক ও ক্রেতারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন করা, মজুরি ও ভবন নির্মাণ বিষয়ে যথাযথ আইন ও উদ্যোগের অভাবে এখনও পোশাক খাতের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ। শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী পোশাক খাতের উন্নয়নে যে সমস্ত সংস্কার ও নীতিগত উদ্যোগ সরকারসহ বিভিন্ন পক্ষ নিয়েছিল তারও পর্যালোচনা করা হয়। ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের শিল্প খাত- উদ্যোগ ও পরিবর্তন’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন ডেভেলপমেন্ট সিনার্জি ইনস্টিটিউট-এর চেয়ারম্যান ড. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা নানাভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন। তবে এই ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে কোনো মানদণ্ড ঠিক করা হয়নি। নেই আইনি কাঠামোও। আবার দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এবং বিদেশি ক্রেতারা। তবে তাদের কাজের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ভবনের উন্নয়ন অর্থাৎ কারিগরি সংস্কার। শ্রমিকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে খুব কমই কাজ হয়েছে।
উন্মুক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান (অব.) বলেন, সাভারের দুর্ঘটনার পরও আমাদের টনক নড়েনি। এখনো ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিধিমালা মানা হচ্ছে না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম বলেন, সঠিকভাবে ভবন নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড তৈরি করা হয়েছিল সেই ’৯০-এর দশকে। তবে সেটি এখনও আইনে রূপান্তরিত হয়নি। ফলে মানুষ বিধিমালা মানে না। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের নেয়া হয় না। সাভারের ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। অনুমোদন ছাড়াই পাঁচতলা ভবন নয় তলা হয়ে গেল। পৌরসভা যাচাই-বাছাই না করেই অনুমোদন দিয়ে দিলো। এরকম পরিস্থিতি অনেক জায়গাতেই। সম্প্রতি আমরা ময়মনসিংহে ৭০০ ভবনের ওপর জরিপ করেছি। যার মধ্যে ২৩৯টি ঝুঁকিপূর্ণ। ভবন নির্মাণ বিধিমালা বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-এর নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি আশুলিয়ায় শ্রমিকরা যখন তাদের অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করল, তখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলো। তারা নিজের কথাগুলো বলতে পারে না। ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারেন না শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরিও পান না। আমাদের মাথাপিছু জাতীয় মাসিক আয় ১০ হাজার টাকার উপর। যেখানে শ্রমিকরা পান পাঁচ হাজার তিন শ’ টাকা। এটা কোনোভাবেই হওয়া উচিত না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন হওয়া উচিত ২২ হাজার টাকা। বেতন বাড়লে শিল্প টিকবে না, মালিকদের এমন দাবি ও ধারণা একেবারেই ভুল। কারণ, আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ড. ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান করতে হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার করতেই হবে। শ্রমিদের ইউনিয়ন কার্যত নেই। যা আছে তাও শুধু লোক দেখানের জন্য। একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর যে সংস্কার ও উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। শ্রমিকরা যাতে সম্মানজনক এবং প্রয়োজন অনুযায়ী মজুরি পায়, এজন্য সরকার, মালিক ও ক্রেতাদের দায়িত্ব নিতেই হবে। শ্রমিক অধিকার বিষয়ক যেসব আইন আছে তা প্রয়োগের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। আর যদি পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয় তাহলে আমরা দরিদ্র্যতা থেকে বের হতে পারবো না। দূর হবে না অসমতা এবং বৈষম্য। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছবি বিশ্বাস বলেন, নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ পাওয়া, ভালো মজুরি পাওয়া শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি। মানবিক কারণে হলেও শ্রমিকদের দিকে তাকানো দরকার।
রানা প্লাজা ধসের পরবর্তী সময়ে, মূলত যেসব সংস্কার করা হয়েছে তা হলো- শ্রম আইনে সংশোধন যা সংগঠন করার স্বাধীনতাকে অনুমোদন করে, ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনা এবং শ্রম নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করা ইত্যাদি। তা সত্ত্বেও সংস্কার কার্যক্রম বজায় রাখার ক্ষেত্রে এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে বলে আয়োজকরা তাদের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরেন। এ প্রেক্ষাপটে নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি নিয়ে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার শিকার দু’জন শ্রমিকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর প্রতি বছরের মতো এবারও পরিস্থিতি তুলে ধরতে দুর্ঘটনার শিকার জীবিত ২০০ শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করে একশনএইড। গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার নুজহাত জেবিন বলেন, জীবিত শ্রমিকদের মধ্যে ১২ শতাংশের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর ২২ শতাংশ শ্রমিক এখনো মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। গবেষণায় অংশ নেয়া ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ শ্রমিক এখনও কোনো কাজ করতে পারছেন না। অন্যদিকে, ২১ দশমিক ৬ শতাংশ শ্রমিক পোশাক কারখানায় আবারো যুক্ত হতে পেরেছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওই দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও পোশাক খাতের উন্নয়নে সরকার, মালিক ও ক্রেতারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন করা, মজুরি ও ভবন নির্মাণ বিষয়ে যথাযথ আইন ও উদ্যোগের অভাবে এখনও পোশাক খাতের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ। শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী পোশাক খাতের উন্নয়নে যে সমস্ত সংস্কার ও নীতিগত উদ্যোগ সরকারসহ বিভিন্ন পক্ষ নিয়েছিল তারও পর্যালোচনা করা হয়। ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের শিল্প খাত- উদ্যোগ ও পরিবর্তন’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন ডেভেলপমেন্ট সিনার্জি ইনস্টিটিউট-এর চেয়ারম্যান ড. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা নানাভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন। তবে এই ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে কোনো মানদণ্ড ঠিক করা হয়নি। নেই আইনি কাঠামোও। আবার দুর্ঘটনার পর শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এবং বিদেশি ক্রেতারা। তবে তাদের কাজের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ভবনের উন্নয়ন অর্থাৎ কারিগরি সংস্কার। শ্রমিকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে খুব কমই কাজ হয়েছে।
উন্মুক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান (অব.) বলেন, সাভারের দুর্ঘটনার পরও আমাদের টনক নড়েনি। এখনো ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিধিমালা মানা হচ্ছে না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম বলেন, সঠিকভাবে ভবন নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড তৈরি করা হয়েছিল সেই ’৯০-এর দশকে। তবে সেটি এখনও আইনে রূপান্তরিত হয়নি। ফলে মানুষ বিধিমালা মানে না। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের নেয়া হয় না। সাভারের ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। অনুমোদন ছাড়াই পাঁচতলা ভবন নয় তলা হয়ে গেল। পৌরসভা যাচাই-বাছাই না করেই অনুমোদন দিয়ে দিলো। এরকম পরিস্থিতি অনেক জায়গাতেই। সম্প্রতি আমরা ময়মনসিংহে ৭০০ ভবনের ওপর জরিপ করেছি। যার মধ্যে ২৩৯টি ঝুঁকিপূর্ণ। ভবন নির্মাণ বিধিমালা বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-এর নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি আশুলিয়ায় শ্রমিকরা যখন তাদের অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করল, তখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলো। তারা নিজের কথাগুলো বলতে পারে না। ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারেন না শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরিও পান না। আমাদের মাথাপিছু জাতীয় মাসিক আয় ১০ হাজার টাকার উপর। যেখানে শ্রমিকরা পান পাঁচ হাজার তিন শ’ টাকা। এটা কোনোভাবেই হওয়া উচিত না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন হওয়া উচিত ২২ হাজার টাকা। বেতন বাড়লে শিল্প টিকবে না, মালিকদের এমন দাবি ও ধারণা একেবারেই ভুল। কারণ, আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ড. ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান করতে হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার করতেই হবে। শ্রমিদের ইউনিয়ন কার্যত নেই। যা আছে তাও শুধু লোক দেখানের জন্য। একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর যে সংস্কার ও উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। শ্রমিকরা যাতে সম্মানজনক এবং প্রয়োজন অনুযায়ী মজুরি পায়, এজন্য সরকার, মালিক ও ক্রেতাদের দায়িত্ব নিতেই হবে। শ্রমিক অধিকার বিষয়ক যেসব আইন আছে তা প্রয়োগের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। আর যদি পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয় তাহলে আমরা দরিদ্র্যতা থেকে বের হতে পারবো না। দূর হবে না অসমতা এবং বৈষম্য। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছবি বিশ্বাস বলেন, নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ পাওয়া, ভালো মজুরি পাওয়া শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি। মানবিক কারণে হলেও শ্রমিকদের দিকে তাকানো দরকার।
রানা প্লাজা ধসের পরবর্তী সময়ে, মূলত যেসব সংস্কার করা হয়েছে তা হলো- শ্রম আইনে সংশোধন যা সংগঠন করার স্বাধীনতাকে অনুমোদন করে, ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনা এবং শ্রম নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করা ইত্যাদি। তা সত্ত্বেও সংস্কার কার্যক্রম বজায় রাখার ক্ষেত্রে এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে বলে আয়োজকরা তাদের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরেন। এ প্রেক্ষাপটে নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি নিয়ে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার শিকার দু’জন শ্রমিকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
No comments