ভয়াবহ মানসিক সংকটে রোহিঙ্গা শিশুরা by হান্নাহ বীচ
জহুরা
বেগম দ্রুত দৌড়াচ্ছিল। ধানক্ষেতের ভেতর দিয়ে দৌড়াচ্ছিল। দৌড়াচ্ছিল
কর্দমাক্ত খালের ভেতর দিয়ে। কিন্তু কিভাবে তার মতো ১২ বছর বয়সী একটি বালিকা
দৌড়ে বুলেট থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে?
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধরা যখন গত আগস্টের শেষদিকে রোহিঙ্গাদের মুসলিম গ্রামগুলোতে নৃশংসতা চালায়, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে, তখন মা-বাবা, চার ভাইবোনকে সঙ্গে নিয়ে জহুরুর ১৪ সদস্যের পরিবার দৌড়াচ্ছিল। তারা যথেষ্ট দৌড়েছিল। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও মানবাধিকার গ্রুপগুলো মংডুতে গণহত্যার বিষয়ে তদন্ত করে বলেছে, তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।
জহুরু যখন খালের ভেতর দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল তখন তাকেও গুলি করা হয়েছিল। তার গা ঘেঁষে চলে গেছে বুলেট। এভাবেই জহুরা ও তার ছোট ভাই খায়রুল আমিন নিরাপদে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পৌঁছাতে পেরেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এসব রোহিঙ্গার আদি আবাস। সেখানে বর্তমানে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি রোহিঙ্গা এখন অবস্থান করছেন বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে। সেখান থেকে জহুরা বলেছে, দৌড়ানোর পথে আমার ভয় ছিল সেনাবাহিনী আমাকে ধরে ফেলবে। আমি ঘুম ভেঙে আতঙ্কে জেগে উঠি। মা-বাবার কথা চিন্তা করি। তারপর আমাকে অনেকটা সময় জেগে থাকতে হয়। রাখাইনে সহিংসতা সৃষ্টির পর থেকে কমপক্ষে ৬ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, এর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজারই হলো স্বল্প বয়সী শিশু-কিশোর। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে শতকরা কমপক্ষে ৩০ ভাগেরই বয়স হলো ৫ বছরের নিচে। বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরের সর্বত্রই শিশু-কিশোর। তারা সহায়তা পাওয়ার জন্য লড়াই করছে। সুয়েজ লাইনে ছোটাছুটি করছে। জগভর্তি পানি নিয়ে শরীরে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে। অথবা তাদের মাথার ওপর আঁটি বাঁধা জ্বালানি কাঠ। দান করা কাপড় পরে আছে তাদের কেউ কেউ। তাদের এই পোশাক অদ্ভুত। পরনে আছে জ্যাকেট। আরো রয়েছে বাস্কেটবল খেলার শর্টস। অনেকের পরনে কিছুই নেই। ধুলোবালিতে একাকার তারা।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরগুলোতে অন্য কিছু শোনা যাক বা না যাক, শিশুদের কাশির তীব্র শব্দ পাওয়া যাবে। এসব বাচ্চা শরণার্থীর অবস্থা খুবই শোচনীয়। সেভ দ্য চিলড্রেনের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা লালু রোট্রাপ হোলডট বলেছেন, এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি শিশুদের মধ্যে ভয়াবহ মানসিক স্বাস্থ্য সংকট বিস্তার লাভ করছে। তাদের মনে রয়েছে বিশাল ক্ষত। তারা চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড। দেখতে পায় কিছু না নিয়ে একেবারে খালিহাতে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। লালু রোট্রাপ হোলডট বলেন, এদের মাঝে আপনি পাবেন ক্ষুধার্ত শিশু। পুষ্টিহীন। এটা একটি পুরো সম্প্রদায়ের জন্য চরম বিপর্যয়কর।
(নিউ ইয়র্ক টাইমস নিউজ সার্ভিসে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধরা যখন গত আগস্টের শেষদিকে রোহিঙ্গাদের মুসলিম গ্রামগুলোতে নৃশংসতা চালায়, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে, তখন মা-বাবা, চার ভাইবোনকে সঙ্গে নিয়ে জহুরুর ১৪ সদস্যের পরিবার দৌড়াচ্ছিল। তারা যথেষ্ট দৌড়েছিল। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও মানবাধিকার গ্রুপগুলো মংডুতে গণহত্যার বিষয়ে তদন্ত করে বলেছে, তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।
জহুরু যখন খালের ভেতর দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল তখন তাকেও গুলি করা হয়েছিল। তার গা ঘেঁষে চলে গেছে বুলেট। এভাবেই জহুরা ও তার ছোট ভাই খায়রুল আমিন নিরাপদে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পৌঁছাতে পেরেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এসব রোহিঙ্গার আদি আবাস। সেখানে বর্তমানে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি রোহিঙ্গা এখন অবস্থান করছেন বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে। সেখান থেকে জহুরা বলেছে, দৌড়ানোর পথে আমার ভয় ছিল সেনাবাহিনী আমাকে ধরে ফেলবে। আমি ঘুম ভেঙে আতঙ্কে জেগে উঠি। মা-বাবার কথা চিন্তা করি। তারপর আমাকে অনেকটা সময় জেগে থাকতে হয়। রাখাইনে সহিংসতা সৃষ্টির পর থেকে কমপক্ষে ৬ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক সহায়তা বিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, এর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজারই হলো স্বল্প বয়সী শিশু-কিশোর। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে শতকরা কমপক্ষে ৩০ ভাগেরই বয়স হলো ৫ বছরের নিচে। বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরের সর্বত্রই শিশু-কিশোর। তারা সহায়তা পাওয়ার জন্য লড়াই করছে। সুয়েজ লাইনে ছোটাছুটি করছে। জগভর্তি পানি নিয়ে শরীরে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে। অথবা তাদের মাথার ওপর আঁটি বাঁধা জ্বালানি কাঠ। দান করা কাপড় পরে আছে তাদের কেউ কেউ। তাদের এই পোশাক অদ্ভুত। পরনে আছে জ্যাকেট। আরো রয়েছে বাস্কেটবল খেলার শর্টস। অনেকের পরনে কিছুই নেই। ধুলোবালিতে একাকার তারা।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরগুলোতে অন্য কিছু শোনা যাক বা না যাক, শিশুদের কাশির তীব্র শব্দ পাওয়া যাবে। এসব বাচ্চা শরণার্থীর অবস্থা খুবই শোচনীয়। সেভ দ্য চিলড্রেনের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা লালু রোট্রাপ হোলডট বলেছেন, এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি শিশুদের মধ্যে ভয়াবহ মানসিক স্বাস্থ্য সংকট বিস্তার লাভ করছে। তাদের মনে রয়েছে বিশাল ক্ষত। তারা চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড। দেখতে পায় কিছু না নিয়ে একেবারে খালিহাতে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। লালু রোট্রাপ হোলডট বলেন, এদের মাঝে আপনি পাবেন ক্ষুধার্ত শিশু। পুষ্টিহীন। এটা একটি পুরো সম্প্রদায়ের জন্য চরম বিপর্যয়কর।
(নিউ ইয়র্ক টাইমস নিউজ সার্ভিসে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
No comments