কমানো হোক জ্বালানি তেলের দাম
সর্বমহল থেকে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি থাকলেও সরকার বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে ২০১৩ সাল অবধি সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছিল। সেই সময়ে সরকারকে ভর্তুকি গুনতে হলেও গত তিন বছরে সুদে-আসলে তা উঠে গেছে। প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চলতি আগস্ট মাস পর্যন্ত গত ৪০ বছরের মধ্যে ২০ বছর লোকসান দিয়েছে এবং বাকি ২০ বছরে যে লাভ করেছে, তা লোকসানের প্রায় দ্বিগুণ। বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে গত ২৫ এপ্রিল সরকার জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমিয়েছে, কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষ খুব একটা সুফল পায়নি। বিশেষ করে পরিবহন খাতের ভাড়া এক পয়সাও কমেনি। তখন বলা হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ওঠা-নামার পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস অন্তর দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে। কিন্তু চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেই।
অথচ গত দুই মাসে ভারত তিন দফায় জ্বালানি তেলের দাম কমিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলে মূল্যস্ফীতি কমবে ও বিনিয়োগ বাড়বে এবং উৎপাদন বাড়ার কারণে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হবে। গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলেছে, জ্বালানি তেলের দাম গড়ে ১০ শতাংশ কমানো হলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি দশমিক ৩ শতাংশ বাড়বে। জ্বালানি তেলের বেশি দাম রেখে সরকার যে মুনাফা করছে সেই তুলনায় দাম কমালে সার্বিক অর্থনীতিতে তার যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, সেটা দেশের জন্য বেশি লাভজনক। তেলের দাম কমালে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন খরচ যেমন কমবে, তেমনি জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ও হ্রাস পাবে আশা করা যায়। গত মে-জুন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৩০ ডলার থেকে কিছুটা বাড়লেও ফের এখন কমতির দিকে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম না কমানোর কোনো যুক্তি নেই।
No comments