বাদানুবাদে হিলারি ও স্যান্ডার্স
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের অষ্টম বিতর্কে হিলারি ক্লিনটন ও বার্নি স্যান্ডার্স তাঁদের মিল-অমিল নির্দেশ করার সময় তীব্র ভাষায় পরস্পরের সমালোচনা করলেন। গত বুধবার মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হয় এ বিতর্ক। হিস্পানিক টেলিভিশন ইউনিভিশন ও ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই বিতর্কের কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল, অভিবাসন প্রশ্নে তাঁদের অবস্থান। হিলারি ও স্যান্ডার্স উভয়েই ব্যাপক অভিবাসন সংস্কার প্রশ্নে সমর্থন জানালেও একে অপরের আগের অবস্থান নিয়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। গত কয়েক বছরে ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুলসংখ্যক অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করেছে। এদের মধ্যে অভিভাবকহীন—এমন অনেক শিশুও রয়েছে। হিলারি ক্লিনটন এর আগে ওবামা প্রশাসনের বহিষ্কার নীতি সমর্থন করলেও এদিনের বিতর্কে অঙ্গীকার করেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি শিশুদের বহিষ্কার করবেন না। অপরাধী ও সন্ত্রাসী—এমন ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো অবৈধ অভিবাসীকে তিনি বহিষ্কার করবেন না, হিলারি সে প্রতিশ্রুতিও দেন। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও একই প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু পাশাপাশি এ কথাও মনে করিয়ে দেন যে হিলারি একসময় অভিভাবকহীন শিশুদের আগমন রোধের ব্যাপারে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। ‘অতিথি শ্রমিক’ কর্মসূচি মার্কিন শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী—এই যুক্তিতে স্যান্ডার্স নিজেও একসময় বহিরাগত শ্রমিকদের আগমনে বাধা দিয়েছিলেন। তাঁকে সে কথা মনে করিয়ে দেওয়া হলে স্যান্ডার্স জানান, এই অতিথি শ্রমিক কর্মসূচির অধীনে বহিরাগত শ্রমিকদের দাসসুলভ মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়।
এ কারণেই তিনি ২০০৭ সালে সেই কর্মসূচির বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অবৈধ বহিরাগতদের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ওবামার নির্বাহী আদেশ তিনি সমর্থন করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে একইভাবে বহিরাগতদের কল্যাণে ব্যাপকতর ব্যবস্থা নেবেন। হিলারি অভিযোগ করেন, সবার জন্য স্বাস্থ্যবিমা থেকে বিনা মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্যান্ডার্স, কিন্তু সে জন্য অর্থসংস্থান কীভাবে হবে, তার ব্যাখ্যা দেননি। জবাবে স্যান্ডার্স বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই স্বাস্থ্যসেবা একটি অধিকার হিসেবে স্বীকৃত নয়। বিতর্কের একপর্যায়ে সরকারি কাজে ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহার করা নিয়ে হিলারি ক্লিনটন যে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন, সে প্রশ্ন ওঠে। মার্কিন বিচার বিভাগ এখন ব্যাপারটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। বিতর্কে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এই তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না? হিলারি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটবে না এবং এই প্রশ্নের তিনি জবাবও দেবেন না। বিতর্কের একটা অংশজুড়ে ছিল অভিবাসী ও মুসলমানদের ব্যাপারে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত অবস্থানের বিষয়টি। ট্রাম্পকে তাঁরা ‘বর্ণবাদী’ বলে মনে করেন কি না—এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে হিলারি ও স্যান্ডার্স উভয়েই ট্রাম্পের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন।
No comments