সরকারে সু চির প্রভাব কতটা থাকছে?
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য সু চি প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারলেন না। তবে মনোনীত প্রার্থী থিন কিউ প্রেসিডেন্ট হিসেবে সু চির প্রতিনিধিত্বই করবেন। এখন সু চির ভূমিকা কী হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পর্দার আড়াল থেকে সু চিই দেশ পরিচালনা করবেন বলে ধারণা করা হয়। এখন কী হবে: সু চিকে যে সংবিধান প্রেসিডেন্ট হতে দিল না, সেই সংবিধানের বিধিবিধান ধরেই এখন নতুন প্রার্থী থিন কিউয়ের মূল্যায়ন হবে। পার্লামেন্টের দুই কক্ষে এরপর ভোটাভুটি হবে। দুটি কক্ষেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি)। বিদায়ী সেনা-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের কাছে থেকে এ মাসের ৩১ তারিখ দায়িত্ব বুঝে নেবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। এ সময়ে সু চি তাঁর মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ সারবেন। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই নতুন মন্ত্রিসভা কাজ শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সু চির ভূমিকা কেমন হবে: এখন মিয়ানমারে যে পরিস্থিতি হলো তাতে কেউ কেউ সু চির সঙ্গে ভারতের কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর তুলনা করছেন। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় দল তাঁর পুরো নিয়ন্ত্রণে ছিল। যদিও তিনি কোনো সরকারি পদে ছিলেন না। এর আরেক উদাহরণ সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ।
দায়িত্ব থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেওয়ার পর উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেন তিনি। মিয়ানমারেও এমনটিই ঘটবে। শুধু নামেই প্রেসিডেন্ট হবেন না সু চি। কিন্তু কার্যত তিনিই হবেন প্রেসিডেন্ট। অনেকেই ভাবছেন, সু চি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন। এর ফলে তিনি দেশটির সেনানিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা কাউন্সিলে থাকতে পারবেন। তবে সু চির জন্য নানা সমস্যাও আছে। সেনাবাহিনী হয়তো তাঁর মনোনীত প্রেসিডেন্টকে সংবিধানবিরোধী কাজের দায়ে অভিযুক্ত করতে পারে। আবার এ কথাও ঠিক, ‘পুতুল নেতা’ কখনো শতভাগ বিশ্বাসযোগ্য হন না। সোনিয়া গান্ধী এটি বুঝেছেন। সেনাবাহিনী কী অতীতের ভূমিকা থেকে সরে আসবে: এ ক্ষেত্রে বলা যায়, সে আশা সুদূরপরাহত। গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডির ভূমিধস বিজয় এবং এরপর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ফলে গণতান্ত্রিক শক্তির উন্মেষ আশা করা যেতেই পারে। কিন্তু দেশের সংবিধান আজও সেনাবাহিনীকে বিপুল ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে। পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন অনির্বাচিত সেনাসদস্যের দখলে। সেনাবাহিনী একটি ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ পাবে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং সীমান্তবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতো তিন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় থাকছে তাদের হাতেই। দেশটির জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের অভিভাবক সেনাবাহিনীই। সবচেয়ে বড় কথা, এই কাউন্সিল জরুরি পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রক্ষমতা নিতে পারে।
No comments