তুরস্কে দুই সাংবাদিকের বিচার হবে রুদ্ধদ্বারে
তুরস্কে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে অভিযুক্ত দুজন শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকের বিচার রুদ্ধদ্বার কক্ষে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির আদালত। গতকাল আলোচিত এ মামলায় আদালত এই অভিমত দিয়েছেন। অভিযুক্ত ওই দুই সাংবাদিক হলেন তুরস্কের চুমহুরিয়াত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক কান দুন্দার এবং পত্রিকাটির আঙ্কারা ব্যুরোর প্রধান এরদেম গুল। তুরস্ক সরকার সিরিয়ার ইসলামপন্থীদের কাছে অস্ত্রবোঝাই জাহাজ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে খবর প্রকাশ করার পর গত বছর তাঁদের আটক করা হয়। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান নিজে বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে ওই সাংবাদিকেরা জামিনে মুক্ত হন।
বিচারে দোষী প্রমাণিত হলে তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। গতকাল সকালে দুই সাংবাদিকের বিচারকাজ শুরু হয়। এ সময় দেশি-বিদেশি শতাধিক সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক আদালত কক্ষে হাজির ছিলেন। একপর্যায়ে সরকারি কৌঁসুলি রুদ্ধদ্বারে শুনানি গ্রহণের জন্য আবেদন জানান। আদালত আবেদন গ্রহণ করেন এবং সংক্ষিপ্ত মুলতবির পর রুদ্ধদ্বার শুনানি শুরু হয়। গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা আদালতের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই সিদ্ধান্তকে ‘বিচারের প্যারোডি’ বলে আখ্যায়িত করেছে। শুনানি শুরুর আগে সাংবাদিক কান দুন্দার এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। দুন্দার অভিযোগ করেন, তুরস্ক সরকার পুরো সাংবাদিকতা পেশাকেই ‘গ্রেপ্তার’ করার পাঁয়তারা করছে। সরকার গণমাধ্যমের ওপর ‘স্বআরোপিত সেন্সরশিপ’ চাপিয়ে দিচ্ছে এবং সংবাদকর্মীদের জন্য এক আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। চলতি মাসের শুরুতে পুলিশি অভিযান চালিয়ে তুরস্কের সর্বাধিক প্রচারিত জামান পত্রিকার নিয়ন্ত্রণ নেয় সরকার। পত্রিকাটিতে প্রশাসক নিয়োগের জন্য আদালতের নির্দেশের পর সে উদ্যোগ নেওয়া হয়। জামান পত্রিকার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগ, তারা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে প্রচার ও সন্ত্রাসে উসকানি দিচ্ছে। পত্রিকাটির সঙ্গে এরদোয়ানের সমালোচক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ধর্মপ্রচারক ফেতুল্লাহ গুলেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
No comments