গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণ- দুই ছেলের পর না ফেরার দেশে বাবা, সঙ্কটাপন্ন মা
দুই
ছেলে সারলিন ও জায়ানের পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাবা প্রকৌশলী
শাহনেওয়াজ। টানা দুই দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে হেরে গেলেন তিনি।
শাহনেওয়াজ ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের প্রকৌশলী ছিলেন।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের হাই-ডিপেনডেনসি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার স্ত্রী সুমাইয়া নেওয়াজের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকেরা স্বজনদের তার কাছাকাছি থাকতে বলেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার প্রায় ১১ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে লড়ে বিকেলে বড় ছেলে সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও সন্ধ্যায় ছোট ছেলে জায়ান বিন নেওয়াজ (১৪ মাস) মারা যায়। তবে তাদের মেজ ছেলে জারিন বিন নেওয়াজের (১০) অবস্থা অনেকটাই বিপদমুক্ত। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিককে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে শাহনেওয়াজের মৃত্যুর আগে আজ বিকেলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট বার্ন ইউনিটে শাহনেওয়াজ ও তার স্ত্রীকে দেখতে যান। এ সময় দগ্ধ দম্পতির জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন রাষ্ট্রদূত।
গত শুক্রবার ভোরে ১৩ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়ির সপ্তমতলার একটি ফ্ল্যাটে গ্যাসের পাইপে বিস্ফোরণে বাসায় আগুন ধরে যায়। এতে পুড়ে যায় পরিবারের সব সদস্য।
প্রতিবেশী ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জানান, ২০ ফেব্রুয়ারি ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন প্রকৌশলী পরিবার। শুক্রবার খুব ভোরে ছোট ছেলেকে নিয়ে পায়েচারি করছিলেন শাহনেওয়াজ। এ সময় স্ত্রী সুমাইয়া রান্না ঘরে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে ম্যাচের কাঠি জ্বালানোর সাথে সাথে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ৮শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাটে। এতে দগ্ধ হন তিন সন্তানসহ বাবা-মা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। নতুন ফ্ল্যাটে সংসার গোছগাছের আগেই সব শেষ।
প্রকৌশলীর স্বজন ও পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন ফ্ল্যাটে ওঠার পর বাড়িওয়ালা দেলোয়ার হোসেনের কাছে গ্যাস লাইনের ছিদ্র থেকে গ্যাস বের হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গ্যাস লাইনের কাজ করানো হলে হয়তো এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতো না।
প্রকৌশলী শাহনেওয়াজের ভাগনে নাজমুস সাকিব জানান, মামী সুমাইয়া বলেছেন, মারা গেলে তাকে যেন বরিশালে দাফন করা হয়। তারা জানেন না আরো লাশ তাদের দেখতে হবে কি না। কীভাবে কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বলেন, শনিবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ মারা যান। তার স্ত্রীর অবস্থাও সঙ্কটাপন।
তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে থাকে। সাধ্যমতো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জারিফের অবস্থা ভালো। তার শরীরের ছয় শতাংশ পুড়েছে। সে আশঙ্কামুক্ত।
দগ্ধ শাহনেওয়াজের ভাই কামরুল আহসান বলেন, নিহত দুই ভাই সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও ১৪ মাস বয়সী জায়ান বিন নেওয়াজের লাশ ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় নেয়া হয়েছে। সেখানে জানাজা শেষে তাদের লাশ নানার বাড়ি বরিশালে নেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত হোক। তারপর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
এদিকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভাই জারিফ বিন নেওয়াজ শারীরিকভাবে অন্যদের চেয়ে ভালো। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় আছে। তবে সে মানসিকভাবে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছে বলে জানান ভাগনে নাজমুস সাকিব। তিনি বলেন, তার কথাবার্তা এলোমেলো।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক মুন্নী মমতাজ আজ সাংবাদিকদের বলেন, চারজনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। শাহনেওয়াজের শরীরের ৯৫ শতাংশ ও তার স্ত্রীর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়েছে। সারলিনের ৮৮ শতাংশ ও জায়ানের শরীরের ৭৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। জারিফের পুড়েছে ৬ শতাংশ।
এদিকে চুলার গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য দগ্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ির মালিক মির্জা দেলোয়ার আটক করেছে পুলিশ।
উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, গ্যাস লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় বাড়ির মালিক মির্জা দেলোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
শাহনেওয়াজ ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের প্রকৌশলী ছিলেন।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের হাই-ডিপেনডেনসি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার স্ত্রী সুমাইয়া নেওয়াজের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকেরা স্বজনদের তার কাছাকাছি থাকতে বলেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার প্রায় ১১ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে লড়ে বিকেলে বড় ছেলে সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও সন্ধ্যায় ছোট ছেলে জায়ান বিন নেওয়াজ (১৪ মাস) মারা যায়। তবে তাদের মেজ ছেলে জারিন বিন নেওয়াজের (১০) অবস্থা অনেকটাই বিপদমুক্ত। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিককে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে শাহনেওয়াজের মৃত্যুর আগে আজ বিকেলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট বার্ন ইউনিটে শাহনেওয়াজ ও তার স্ত্রীকে দেখতে যান। এ সময় দগ্ধ দম্পতির জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন রাষ্ট্রদূত।
গত শুক্রবার ভোরে ১৩ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়ির সপ্তমতলার একটি ফ্ল্যাটে গ্যাসের পাইপে বিস্ফোরণে বাসায় আগুন ধরে যায়। এতে পুড়ে যায় পরিবারের সব সদস্য।
প্রতিবেশী ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জানান, ২০ ফেব্রুয়ারি ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন প্রকৌশলী পরিবার। শুক্রবার খুব ভোরে ছোট ছেলেকে নিয়ে পায়েচারি করছিলেন শাহনেওয়াজ। এ সময় স্ত্রী সুমাইয়া রান্না ঘরে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে ম্যাচের কাঠি জ্বালানোর সাথে সাথে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ৮শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাটে। এতে দগ্ধ হন তিন সন্তানসহ বাবা-মা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। নতুন ফ্ল্যাটে সংসার গোছগাছের আগেই সব শেষ।
প্রকৌশলীর স্বজন ও পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন ফ্ল্যাটে ওঠার পর বাড়িওয়ালা দেলোয়ার হোসেনের কাছে গ্যাস লাইনের ছিদ্র থেকে গ্যাস বের হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গ্যাস লাইনের কাজ করানো হলে হয়তো এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতো না।
প্রকৌশলী শাহনেওয়াজের ভাগনে নাজমুস সাকিব জানান, মামী সুমাইয়া বলেছেন, মারা গেলে তাকে যেন বরিশালে দাফন করা হয়। তারা জানেন না আরো লাশ তাদের দেখতে হবে কি না। কীভাবে কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বলেন, শনিবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ মারা যান। তার স্ত্রীর অবস্থাও সঙ্কটাপন।
তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে থাকে। সাধ্যমতো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জারিফের অবস্থা ভালো। তার শরীরের ছয় শতাংশ পুড়েছে। সে আশঙ্কামুক্ত।
দগ্ধ শাহনেওয়াজের ভাই কামরুল আহসান বলেন, নিহত দুই ভাই সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও ১৪ মাস বয়সী জায়ান বিন নেওয়াজের লাশ ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় নেয়া হয়েছে। সেখানে জানাজা শেষে তাদের লাশ নানার বাড়ি বরিশালে নেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত হোক। তারপর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
এদিকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভাই জারিফ বিন নেওয়াজ শারীরিকভাবে অন্যদের চেয়ে ভালো। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় আছে। তবে সে মানসিকভাবে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছে বলে জানান ভাগনে নাজমুস সাকিব। তিনি বলেন, তার কথাবার্তা এলোমেলো।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক মুন্নী মমতাজ আজ সাংবাদিকদের বলেন, চারজনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। শাহনেওয়াজের শরীরের ৯৫ শতাংশ ও তার স্ত্রীর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়েছে। সারলিনের ৮৮ শতাংশ ও জায়ানের শরীরের ৭৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। জারিফের পুড়েছে ৬ শতাংশ।
এদিকে চুলার গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য দগ্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ির মালিক মির্জা দেলোয়ার আটক করেছে পুলিশ।
উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, গ্যাস লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় বাড়ির মালিক মির্জা দেলোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
No comments