ভাগ্য বিড়ম্বিত গণক by আবদুল আলীম
গণক
মো. মুজিবুর রহমান। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দিতে জন্ম। সেখানেই বেড়ে ওঠা।
পাকিস্তান আমলে ডিগ্রি পাস, তবে এখন তিনি ফুটপাথের জ্যোতিষী। হাত দেখে
ভাগ্য গণনা ছাড়াও ভাগ্য পরিবর্তনের পরশ পাথরের সন্ধান দেয়াই তার কাজ। দুই
দশক ধরে শনি গ্রহের প্রভাব কাটিয়ে উত্তরোত্তর সাফল্যের পথ দেখিয়েছেন অগণিত
মানুষকে। ভাগ্য নিজ হাতে পরিবর্তন না করলেও তার পরামর্শ মতো পাথর ব্যবহার
করলে সামনের পথ পরিষ্কার বলে অভয় দিয়েছেন সবাইকে। তবে ২০ বছর ধরে মানুষের
ভাগ্য গণনা করে সাফল্যের পথ দেখালেও নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের কোনো পরশ পাথর
আজও খুঁজে পাননি তিনি। জ্যোতিষী পেশার শুরু থেকে এখনও রাজধানীর
মুক্তাঙ্গণের ফুতপাতে বসেই হাত দেখেন। আগন্তুক কাস্টমারকে দুটি ইটের ওপরে
খবরের কাগজ বিছিয়ে বসতে দেন। নিজে বসেন আর দুটি ইটের ওপরে কাগজ বিছিয়ে।
এভাবেই তার সারা দিনের কাজ চলতে থাকে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত
মুক্তাঙ্গনেই তাকে পাওয়া যায়। তার হাত দেখার হাদিয়া মাত্র ২০ টাকা। শনিবার
দুপুরে রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে গাড়ি-ঘোড়ার ধুলোবালিতে ভরা ফুতপাতে বসে কথা হয়
জ্যোতিষীর সঙ্গে। মানবজমিনের এই প্রতিবেদককে ২০ টাকার বিনিময়ে হাত দেখে
দেন। ডান হাত ধরে একটি কলম ধরে এক নাগাড়ে বলতে থাকেন জীবন পরম্পরা। জন্ম
থেকে আজ ২০১৫ সালের ১৯শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বহু বিপদ এসেছে। সবগুলো একে একে
কেটে গেছে। মানুষকে বিপদে সহযোগিতা করার মনোভাব আছে। তবে বড় অঙ্কের টাকা
দিয়ে সহযোগিতা করলে ধরা খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুক্র গ্রহের কোনো প্রভাব
নেই। হাতের রেখার দ্বিতীয় গ্রহ শনির মারাত্মক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। তবে একটি
ইয়ামেনি পাথর ব্যবহার করলে শনির এই প্রভার কেটে যাবে। যে কোনো জায়গা থেকে এ
পাথর কিনতে পারেন। অথবা আমার কাছ থেকেও কিনতে পারেন। দাম পড়বে মাত্র সাড়ে
৩শ টাকা। জীবনের আগামী দিনগুলোতে উত্তরোত্তর সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ভাগ্য কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। নিজের ভাগ্য নিজেই পরিবর্তন করতে হয়। সে
জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আপনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পছন্দ করেন। আগামী
দিনগুলোয় বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায় নামবেন না। অপরের বুদ্ধির ওপর নির্ভর
করে কাজে নামলে নিঃস্ব হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এভাবে হাতের রেখা দেখে একে একে
বলতে থাকেন রবি, বুধ, নেপচুন, প্লুটোসহ বিভিন্ন গ্রহের প্রভাব ও তার আজগবি
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। ব্যাখ্যা দেন হাতের অন্যান্য রেখারও। বলেন, হাতের
নিচের রেখাগুলোয় দেখা যায় আপনি দুটি বিয়ে করবেন। ব্রেনের রেখা এখনও ভালো।
যথেষ্ট স্মৃতি শক্তি রয়েছে। নাম শুনে বলেন আপনার রাশি মেষ। যেকোনো মানুষের
সঙ্গে খুব সহজেই মিশতে পারেন।
আলাপচারিতার একপর্যায়ে জানান, বিখ্যাত জ্যোতিষী লিটন দেওয়ানও এক সময় তার সঙ্গে ফুতপাতে হাত দেখার কাজ করেছেন। তারা সবাই একসঙ্গে জ্যোতিষী পেশার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রামপুরার এক ওস্তাদের কাছে। একপর্যায়ে জানান, যে কেউ তার কাছে জ্যোতিষী বিদ্যা শিখতে পারবেন। এ জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। ১০ দিনের মধ্যে একজন জ্যোতিষী বানিয়ে দেবেন। ৭০ বছর বয়সী এই জ্যোতিষী পড়ালেখা শেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি নেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করে প্রধান কার্যালয়ে হেড ক্লার্ক থাকা অবস্থায় অবসরে যান। এরপর পুরোদমে জ্যোতিষী পেশায় নেমে পড়েন। এখন পরিবার নিয়ে থাকেন যাত্রাবাড়ীর একটি ভাড়া বাসায়। আজ থেকে ২০ বছর আগে জ্যোতিষী বিদ্যায় প্রথম পাঠ নেন। প্রথম দিকে সরকারি চাকরির পাশাপাশি হাত দেখায় সময় দিতেন। ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস। স্বাধীনতার ৩ বছর আগে বিয়ে করেন এলাকার এক এসএসসি পাস মেয়েকে। স্ত্রীর বয়স এখন ৬৫ বছরের ওপরে। তিনি ৩ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক। সবাইকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। মেয়েদের দুজন ডিগ্রি পাস। এক মেয়ে ও ছেলে এসএসসি পাস। তিনি আরও জানান, আমরা তিন ভাই। বড় ভাই স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। নিজে সরকারি চাকরি করতেন। তবে আরেক ভাই বাড়ির কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সবাই এখন বয়ষ্ক।
আলাপচারিতার একপর্যায়ে জানান, বিখ্যাত জ্যোতিষী লিটন দেওয়ানও এক সময় তার সঙ্গে ফুতপাতে হাত দেখার কাজ করেছেন। তারা সবাই একসঙ্গে জ্যোতিষী পেশার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রামপুরার এক ওস্তাদের কাছে। একপর্যায়ে জানান, যে কেউ তার কাছে জ্যোতিষী বিদ্যা শিখতে পারবেন। এ জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। ১০ দিনের মধ্যে একজন জ্যোতিষী বানিয়ে দেবেন। ৭০ বছর বয়সী এই জ্যোতিষী পড়ালেখা শেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি নেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করে প্রধান কার্যালয়ে হেড ক্লার্ক থাকা অবস্থায় অবসরে যান। এরপর পুরোদমে জ্যোতিষী পেশায় নেমে পড়েন। এখন পরিবার নিয়ে থাকেন যাত্রাবাড়ীর একটি ভাড়া বাসায়। আজ থেকে ২০ বছর আগে জ্যোতিষী বিদ্যায় প্রথম পাঠ নেন। প্রথম দিকে সরকারি চাকরির পাশাপাশি হাত দেখায় সময় দিতেন। ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস। স্বাধীনতার ৩ বছর আগে বিয়ে করেন এলাকার এক এসএসসি পাস মেয়েকে। স্ত্রীর বয়স এখন ৬৫ বছরের ওপরে। তিনি ৩ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক। সবাইকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। মেয়েদের দুজন ডিগ্রি পাস। এক মেয়ে ও ছেলে এসএসসি পাস। তিনি আরও জানান, আমরা তিন ভাই। বড় ভাই স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। নিজে সরকারি চাকরি করতেন। তবে আরেক ভাই বাড়ির কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সবাই এখন বয়ষ্ক।
No comments