নৃশংসভাবে সাংবাদিককে হত্যা
রংপুরে
গতকাল বৃহস্পতিবার মসিউর রহমান ওরফে উৎস নামের এক সাংবাদিকের লাশ উদ্ধার
করা হয়েছে। মাথা থেঁতলে যাওয়া লাশটি মহাসড়কের পাশে একটি গাছে বাঁধা ছিল।
আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ঘাড় ও পিঠের বিভিন্ন স্থানে।
পুলিশ বলছে, হাতুড়ি বা এ-জাতীয় ভারী বস্তু দিয়ে পিটিয়ে মসিউরকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মাদক ব্যবসা নিয়ে লেখালেখির কারণে তিনি খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশ ও সহকর্মীদের ধারণা। স্থানীয় সাংবাদিকেরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
৩২ বছর বয়সী মসিউর রহমান রংপুর শহরের পীরপুর এলাকার শামসুল হুদা মণ্ডলের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দেড় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি স্থানীয় যুগের আলো পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন। প্রায় দুই বছর আগে পত্রিকাটিতে যোগ দেন মসিউর। এর আগে ২০০৭ সালে দৈনিক পরিবেশ নামে আরেক স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে তাঁর সাংবাদিকতা শুরু। তিনি উৎস রহমান নামে লিখতেন।
পুলিশ ও সহকর্মী সূত্রে জানা যায়, মসিউর একটি দাওয়াতের কথা বলে গত বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পত্রিকা কার্যালয় থেকে মোটরসাইকেলযোগে বের হন। তিনি এক ঘণ্টার জন্য বেরোনোর কথা বললেও পরে আর ফেরেননি। কর্মস্থল ও পরিবারের পক্ষ থেকে রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। পরে গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে শেখপাড়া এলাকায় মসিউরের লাশ পাওয়া যায়। গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা লাশ দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। থানায় লাশটি শনাক্ত করেন স্ত্রী তহমিনা বেগম।
থানায় শোকে মুহ্যমান তহমিনা বলছিলেন, ‘আমার সন্তান আর কাকে বাবা বলে ডাকবে। আমি কাকে নিয়ে বাঁচব।’ নিহত সাংবাদিকের বাবা শামসুল হুদা বলেন, ‘মানুষ এভাবে মানুষকে খুন করতে পারে! আমার ছেলের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
কী কারণে এই নৃশংস খুন, তা বুঝে উঠতে পারছে না পরিবারটি। সহকর্মীরাও অন্ধকারে। যুগের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আবু তালেব বলেন, ‘কী কারণে মসিউরকে হত্যা করা হলো, তা ভেবে উঠতে পারছি না। তবে অতিসম্প্রতি তিনি মাদক-সংক্রান্ত কয়েকটি প্রতিবেদন করেছিলেন। এর পর থেকে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলেন মসিউর।’ প্রসঙ্গত, গতকালও যুগের আলো পত্রিকায় মাদক নিয়ে তাঁর লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
রংপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বলেন, পুলিশ গাছে বাঁধা অবস্থায় মসিউরের লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গতকাল সন্ধ্যায় মসিউরের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাত আটটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এশার নামাজের পর পীরপুর জামে মসজিদে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।
আন্দোলনে সাংবাদিকেরা: এদিকে সাংবাদিক মসিউর হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রংপুরের সাংবাদিকেরা। গতকাল বিকেল চারটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের প্রধান সড়কে সিটি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়। এ সময় বক্তব্য দেন একুশে টিভির সাংবাদিক লিয়াকত আলী, এনটিভির মইনুল ইসলাম, যুগের আলোর আফজাল হোসেন প্রমুখ। বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
এ ছাড়া রংপুর জেলা ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন গতকাল থেকে তিন দিনব্যাপী কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি শুরু করেছে বলে সংগঠনের সভাপতি জাহিদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন। আর রংপুরের সাংবাদিক সমাজ কাল শনিবার রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফ এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ বলছে, হাতুড়ি বা এ-জাতীয় ভারী বস্তু দিয়ে পিটিয়ে মসিউরকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মাদক ব্যবসা নিয়ে লেখালেখির কারণে তিনি খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশ ও সহকর্মীদের ধারণা। স্থানীয় সাংবাদিকেরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
৩২ বছর বয়সী মসিউর রহমান রংপুর শহরের পীরপুর এলাকার শামসুল হুদা মণ্ডলের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দেড় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি স্থানীয় যুগের আলো পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন। প্রায় দুই বছর আগে পত্রিকাটিতে যোগ দেন মসিউর। এর আগে ২০০৭ সালে দৈনিক পরিবেশ নামে আরেক স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে তাঁর সাংবাদিকতা শুরু। তিনি উৎস রহমান নামে লিখতেন।
পুলিশ ও সহকর্মী সূত্রে জানা যায়, মসিউর একটি দাওয়াতের কথা বলে গত বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পত্রিকা কার্যালয় থেকে মোটরসাইকেলযোগে বের হন। তিনি এক ঘণ্টার জন্য বেরোনোর কথা বললেও পরে আর ফেরেননি। কর্মস্থল ও পরিবারের পক্ষ থেকে রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। পরে গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে শেখপাড়া এলাকায় মসিউরের লাশ পাওয়া যায়। গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা লাশ দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। থানায় লাশটি শনাক্ত করেন স্ত্রী তহমিনা বেগম।
থানায় শোকে মুহ্যমান তহমিনা বলছিলেন, ‘আমার সন্তান আর কাকে বাবা বলে ডাকবে। আমি কাকে নিয়ে বাঁচব।’ নিহত সাংবাদিকের বাবা শামসুল হুদা বলেন, ‘মানুষ এভাবে মানুষকে খুন করতে পারে! আমার ছেলের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
কী কারণে এই নৃশংস খুন, তা বুঝে উঠতে পারছে না পরিবারটি। সহকর্মীরাও অন্ধকারে। যুগের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আবু তালেব বলেন, ‘কী কারণে মসিউরকে হত্যা করা হলো, তা ভেবে উঠতে পারছি না। তবে অতিসম্প্রতি তিনি মাদক-সংক্রান্ত কয়েকটি প্রতিবেদন করেছিলেন। এর পর থেকে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলেন মসিউর।’ প্রসঙ্গত, গতকালও যুগের আলো পত্রিকায় মাদক নিয়ে তাঁর লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
রংপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বলেন, পুলিশ গাছে বাঁধা অবস্থায় মসিউরের লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গতকাল সন্ধ্যায় মসিউরের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাত আটটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এশার নামাজের পর পীরপুর জামে মসজিদে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।
আন্দোলনে সাংবাদিকেরা: এদিকে সাংবাদিক মসিউর হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রংপুরের সাংবাদিকেরা। গতকাল বিকেল চারটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের প্রধান সড়কে সিটি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়। এ সময় বক্তব্য দেন একুশে টিভির সাংবাদিক লিয়াকত আলী, এনটিভির মইনুল ইসলাম, যুগের আলোর আফজাল হোসেন প্রমুখ। বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
এ ছাড়া রংপুর জেলা ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন গতকাল থেকে তিন দিনব্যাপী কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি শুরু করেছে বলে সংগঠনের সভাপতি জাহিদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন। আর রংপুরের সাংবাদিক সমাজ কাল শনিবার রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফ এ তথ্য জানিয়েছেন।
No comments