শরণার্থী, আইএস ও পুতিনের বছর ২০১৫ : বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়াদি বিভাগের সম্পাদকের বিশ্লেষণ
বছরটি
ছিল ‘শরণার্থী, আইএস আর পুতিনের’। এই তিন ‘জন’ বছরজুড়ে বিশ্ব গণমাধ্যমের
পুরোভাগে তাদের সদম্ভ উপস্থিতি ঘোষণা করেছে। বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়াদি
বিভাগের সম্পাদক জন সিম্পসনের বিশ্লেষণধর্মী একটি লেখায় এমন চিত্র পাওয়া
গেছে।
সিম্পসনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সিরিয়ার বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের বিপৎসংকুল পথে ইউরোপযাত্রা, তাদের করুণতম প্রাণহানি ও তাদের পুনর্বাসন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের নানা পদক্ষেপ গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।
এরপরই বছরটিতে আলোচ্য বিষয় ছিল মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কর্মকাণ্ড। এ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনায় এসেছেন নানাভাবে।
সিম্পসন লিখেছেন, বিপদসংকুল সাগর কিংবা দীর্ঘ সড়কপথ পাড়ি দিয়ে দেশ ছেড়ে আসা আশ্রয়-ব্যাকুল বিপর্যস্ত শরণার্থীদের মুখের ছবি বছরজুড়ে বিশ্ববাসী দেখেছে। এসব শরণার্থীর সবাই যে নজরদারি এড়িয়ে ঢুকতে পেরেছে তাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে, তা নয়। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির একটি কারাগারে সীমান্ত অতিক্রম করতে ধরা পড়া শত শত বন্দীকে দেখা গেছে। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী এসব তরুণ এসেছেন উত্তর আফ্রিকা বা পাকিস্তান থেকে। তাঁদের লক্ষ্য ছিল কাজের জন্য ইউরোপে ঢোকা।
বন্দীদের মধ্যে এক মানব পাচারকারী ছিলেন। নৌকা ডুবে ৭০০ মানুষ নিহত হওয়ার অভিযোগে তাঁকে ধরা হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে তাঁর সাজা হয়েছে। তিনি বলছিলেন, ‘আমার বুকের ভেতরটা দেখলে বুঝতেন কী কষ্ট ও দুঃখ আছে সেখানে।’
বছরজুড়ে উত্তপ্ত ছিল ইরাক ও আফগানিস্তান। ইঙ্গো-মার্কিন বাহিনীর রেখে যাওয়া ব্যবস্থা দুটি দেশেই চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে এ বছর। এ বছরের মে মাসে আইএসের হাতে ইরাকি শহর রামাদির পতন ছিল খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আইএসের প্রকাশ্যে গলা কেটে মানুষ হত্যা করার বিষয়টি বিশ্ববাসীকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। আইএসের আক্রমণের পর ইরাকি সেনারা স্রেফ পালিয়ে বেঁচেছেন। এখন পর্যন্ত বাগদাদ পুরোপুরি নিরাপদ থাকলেও কিছুটা দুর্বলতা রয়ে গেছে। রামাদি পতনের পরপরই ইরাকের নতুন প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি আমরা শিগগিরই শহরটি ফিরে পাব।’
তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, শিগগির বলতে কয় মাস? উত্তরে তিনি বললেন, ‘না না, আমি বলছি কয়েক দিন।’
রামাদির দখল ফিরে পেয়েছে ইরাকি বাহিনী। কিন্তু তা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে সাত মাস।
আফগানিস্তানের হেলমান্দসহ এবং নানা জায়গায় তালেবান বাহিনীর বাড়তে থাকা তৎপরতা চোখে পড়েছে এ বছর।
প্রায় এক বছর আগে মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে সাংবাদিকদের ইচ্ছেমতো প্রশ্ন করার অধিকার ছিল। তাঁকে সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আপনি কি একটি বার্তা পশ্চিমকে দিতে চান যে আপনি আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধ চান না?’ পুতিনের জবাব ছিল, ‘রাশিয়া যা করছে, তা শুধু তার জাতীয় স্বার্থে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার অধিকার আছে।’
এ বছরটিতে পুতিনের নানা কর্মকাণ্ড প্রমাণ করেছে, তিনি রাশিয়াকে আবার প্রবল ক্ষমতাধর হিসেবে দেখাতে চান। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ থাকলেও সের্গেই আকসিয়োনভকে ক্রিমিয়ার প্রধানমন্ত্রী করতে দ্বিধা করেনি রাশিয়া। দেশটি বলেছে, ক্রিমিয়া কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না। চিরদিনের জন্য এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত অক্টোবরে প্যারিসের ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের শীর্ষ সম্মেলনে দেখা গেল, পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে পুতিনের হাতে। আলোচ্য বিষয় ইউক্রেন হলেও আলোচনা পরিবর্তিত হয়ে গেল সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের হামলা নিয়ে।
সিম্পসনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সিরিয়ার বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের বিপৎসংকুল পথে ইউরোপযাত্রা, তাদের করুণতম প্রাণহানি ও তাদের পুনর্বাসন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের নানা পদক্ষেপ গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।
এরপরই বছরটিতে আলোচ্য বিষয় ছিল মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কর্মকাণ্ড। এ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনায় এসেছেন নানাভাবে।
সিম্পসন লিখেছেন, বিপদসংকুল সাগর কিংবা দীর্ঘ সড়কপথ পাড়ি দিয়ে দেশ ছেড়ে আসা আশ্রয়-ব্যাকুল বিপর্যস্ত শরণার্থীদের মুখের ছবি বছরজুড়ে বিশ্ববাসী দেখেছে। এসব শরণার্থীর সবাই যে নজরদারি এড়িয়ে ঢুকতে পেরেছে তাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে, তা নয়। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির একটি কারাগারে সীমান্ত অতিক্রম করতে ধরা পড়া শত শত বন্দীকে দেখা গেছে। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী এসব তরুণ এসেছেন উত্তর আফ্রিকা বা পাকিস্তান থেকে। তাঁদের লক্ষ্য ছিল কাজের জন্য ইউরোপে ঢোকা।
বন্দীদের মধ্যে এক মানব পাচারকারী ছিলেন। নৌকা ডুবে ৭০০ মানুষ নিহত হওয়ার অভিযোগে তাঁকে ধরা হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে তাঁর সাজা হয়েছে। তিনি বলছিলেন, ‘আমার বুকের ভেতরটা দেখলে বুঝতেন কী কষ্ট ও দুঃখ আছে সেখানে।’
বছরজুড়ে উত্তপ্ত ছিল ইরাক ও আফগানিস্তান। ইঙ্গো-মার্কিন বাহিনীর রেখে যাওয়া ব্যবস্থা দুটি দেশেই চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে এ বছর। এ বছরের মে মাসে আইএসের হাতে ইরাকি শহর রামাদির পতন ছিল খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আইএসের প্রকাশ্যে গলা কেটে মানুষ হত্যা করার বিষয়টি বিশ্ববাসীকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। আইএসের আক্রমণের পর ইরাকি সেনারা স্রেফ পালিয়ে বেঁচেছেন। এখন পর্যন্ত বাগদাদ পুরোপুরি নিরাপদ থাকলেও কিছুটা দুর্বলতা রয়ে গেছে। রামাদি পতনের পরপরই ইরাকের নতুন প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি আমরা শিগগিরই শহরটি ফিরে পাব।’
তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, শিগগির বলতে কয় মাস? উত্তরে তিনি বললেন, ‘না না, আমি বলছি কয়েক দিন।’
রামাদির দখল ফিরে পেয়েছে ইরাকি বাহিনী। কিন্তু তা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে সাত মাস।
আফগানিস্তানের হেলমান্দসহ এবং নানা জায়গায় তালেবান বাহিনীর বাড়তে থাকা তৎপরতা চোখে পড়েছে এ বছর।
প্রায় এক বছর আগে মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে সাংবাদিকদের ইচ্ছেমতো প্রশ্ন করার অধিকার ছিল। তাঁকে সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আপনি কি একটি বার্তা পশ্চিমকে দিতে চান যে আপনি আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধ চান না?’ পুতিনের জবাব ছিল, ‘রাশিয়া যা করছে, তা শুধু তার জাতীয় স্বার্থে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার অধিকার আছে।’
এ বছরটিতে পুতিনের নানা কর্মকাণ্ড প্রমাণ করেছে, তিনি রাশিয়াকে আবার প্রবল ক্ষমতাধর হিসেবে দেখাতে চান। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ থাকলেও সের্গেই আকসিয়োনভকে ক্রিমিয়ার প্রধানমন্ত্রী করতে দ্বিধা করেনি রাশিয়া। দেশটি বলেছে, ক্রিমিয়া কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না। চিরদিনের জন্য এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত অক্টোবরে প্যারিসের ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের শীর্ষ সম্মেলনে দেখা গেল, পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে পুতিনের হাতে। আলোচ্য বিষয় ইউক্রেন হলেও আলোচনা পরিবর্তিত হয়ে গেল সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের হামলা নিয়ে।
No comments