দ্রুত বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট, সু চিই প্রেসিডেন্ট হবেন? by সোহরাব হাসান
নির্বাচনের
ফল প্রকাশ শেষ না হতেই মিয়ানমারের রাজনৈতিক দৃশ্যপট দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে।
গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে যে সংশয় ও অনিশ্চয়তা ছিল, বুধবার
অধিকাংশ আসনের ফল প্রকাশের মধ্য দিয়ে তা কেটে গেছে। এখন কেউ মনে করেন না
যে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়া কিংবা স্থগিত রাখা
সম্ভব। এমনকি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে
অং সান সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকে। সু
চিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সেনাসমর্থিত প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন। প্রভাবশালী
সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংও সু চির দল এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার
বিষয়টি এদিন স্বীকার করে নেন। এটাই ছিল ভোটের পর থেকে সেনাপ্রধানের প্রথম
আনুষ্ঠানিক মন্তব্য। এর আগে ‘জাতীয় সমঝোতা’র জন্য সংলাপে বসতে প্রেসিডেন্ট
থেইন সেইন, সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও স্পিকার শোয়ে মানকে চিঠি দেন সু
চি। প্রেসিডেন্ট এবং সেনাপ্রধান তাতে সাড়াও দিয়েছেন। যদিও আলোচনার
দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। গতকাল ইয়াঙ্গুনের কূটনীতিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে
কথা বলে এবং বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে এসব তথ্য জানা গেছে। মধ্যরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য
অনুযায়ী, পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের যে ২৯৯টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়,
তার মধ্যে এনএলডি পেয়েছে ২৫৬টি। আর ক্ষমতাসীন ইউএসডিপি পেয়েছে মাত্র
২১টি। এনএলডির সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, তারা ৮০ শতাংশের বেশি আসন পাবে। এক
দিন আগে এনএলডির নেত্রী সু চি বলেছিলেন, তাঁরা ৭০ শতাংশ আসনে জয়ী হবেন বলে
আশা করছেন।
এক দিন আগেও প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের মুখপাত্র বলেছিলেন, নির্বাচনের পুরো ফল প্রকাশের পরই কেবল তিনি বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানাবেন। কিন্তু অং সান সু চির পক্ষ থেকে সমঝোতা বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর ক্ষমতাসীন মহল নড়েচড়ে বসে। গতকাল তথ্যমন্ত্রী উ রে থোয়া প্রেসিডেন্টের পক্ষে এক বিবৃতিতে সু চিকে অভিনন্দন জানান এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আশ্বাস দেন।
মিয়ানমারের প্রভাবশালী সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংও এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। গতকাল রাতে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ আসনেই জয়ী হওয়ায় আমরা এনএলডিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ আনুষ্ঠানিকভাবে পুরো ফল ঘোষণা হওয়ার পর তিনি সু চির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলেও জানিয়েছেন।
ইয়াঙ্গুনে সু চির নিজের আসনের ফল গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের পর দৃশ্যপট অনেকটাই পাল্টে যায়। থেইন সেইন সরকারের সমর্থক বলে পরিচিত পত্রিকাগুলোর হঠাৎ এনএলডির প্রতি ঝুঁকে পড়ার ঘটনাও ইঙ্গিত দেয় যে সু চিই সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, নির্বাচনের পরদিন থেকে ইয়াঙ্গুনসহ মিয়ানমারের সবখানে সবকিছু স্বাভাবিক। গত দুই দিন ফলাফল নিয়ে যে জল্পনা চলছিল, তা-ও অনেকটা কেটে গেছে। এখন বিদেশি কূটনীতিক, দাতা সংস্থা—সবাই মানসিকভাবে নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যে এনএলডির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কেউ কেউ যোগাযোগ করেছেন বলে গত রাতে প্রথম আলোকে টেলিফোনে জানিয়েছেন একটি বেসরকারি সংস্থার প্রধান। পেশাগত কারণে তিনি গতকালই ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এই কর্মকর্তা গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এবারের নির্বাচনে যে ফল হয়েছে, তাতে ক্ষমতাসীন মহল হকচকিত। কেননা, গত চার বছর থেইন সেইন সরকার দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের যথেষ্ট প্রসার ঘটেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক অধিকারবঞ্চিত মিয়ানমারবাসী এবারের নির্বাচনকে নিয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ হিসেবে। ভোট দেওয়ার সময়ে তাঁরা উন্নয়নের বিষয়টি সেভাবে আমলে নেননি।
তবে পর্যবেক্ষকেরা এ-ও মনে করেন, নির্বাচনে এনএলডির বিপুল বিজয় তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। ক্ষমতাসীনদের পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলো এত কম আসন পেয়েছে যে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। নতুন সরকার কীভাবে আঞ্চলিক দল ও জাতিগোষ্ঠীগুলোর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এখন যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো, সু চি সামনে একজন ‘পুতুল প্রেসিডেন্ট’ রেখে নিজে দেশ চালাবেন, নাকি নিজেই প্রেসিডেন্ট হবেন? পর্যবেক্ষকদের মতে, সু চি ও সেনাবাহিনী একে অপরকে ছাড় দিতে পারেন। এমনও হতে পারে যে সংবিধান সংশোধন করে সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ উন্মুক্ত করতে সেনাবাহিনী সম্মতি দিতে পারে। বিনিময়ে সু চি সেনাবাহিনীর সাংবিধানিক ক্ষমতা পুরোপুরি কাটছাঁট না-ও করতে পারেন।
তবে মিয়ানমারের একজন সাংবাদিক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সু চি যে এককভাবে বড় বড় সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মন্তব্য করেছেন, সেটি তাঁর শুভানুধ্যায়ী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা সুনজরে দেখেননি। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে সামরিক সরকারের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য কী থাকল?
এক দিন আগেও প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের মুখপাত্র বলেছিলেন, নির্বাচনের পুরো ফল প্রকাশের পরই কেবল তিনি বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানাবেন। কিন্তু অং সান সু চির পক্ষ থেকে সমঝোতা বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর ক্ষমতাসীন মহল নড়েচড়ে বসে। গতকাল তথ্যমন্ত্রী উ রে থোয়া প্রেসিডেন্টের পক্ষে এক বিবৃতিতে সু চিকে অভিনন্দন জানান এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আশ্বাস দেন।
মিয়ানমারের প্রভাবশালী সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংও এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। গতকাল রাতে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ আসনেই জয়ী হওয়ায় আমরা এনএলডিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ আনুষ্ঠানিকভাবে পুরো ফল ঘোষণা হওয়ার পর তিনি সু চির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলেও জানিয়েছেন।
ইয়াঙ্গুনে সু চির নিজের আসনের ফল গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের পর দৃশ্যপট অনেকটাই পাল্টে যায়। থেইন সেইন সরকারের সমর্থক বলে পরিচিত পত্রিকাগুলোর হঠাৎ এনএলডির প্রতি ঝুঁকে পড়ার ঘটনাও ইঙ্গিত দেয় যে সু চিই সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, নির্বাচনের পরদিন থেকে ইয়াঙ্গুনসহ মিয়ানমারের সবখানে সবকিছু স্বাভাবিক। গত দুই দিন ফলাফল নিয়ে যে জল্পনা চলছিল, তা-ও অনেকটা কেটে গেছে। এখন বিদেশি কূটনীতিক, দাতা সংস্থা—সবাই মানসিকভাবে নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যে এনএলডির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কেউ কেউ যোগাযোগ করেছেন বলে গত রাতে প্রথম আলোকে টেলিফোনে জানিয়েছেন একটি বেসরকারি সংস্থার প্রধান। পেশাগত কারণে তিনি গতকালই ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এই কর্মকর্তা গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এবারের নির্বাচনে যে ফল হয়েছে, তাতে ক্ষমতাসীন মহল হকচকিত। কেননা, গত চার বছর থেইন সেইন সরকার দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের যথেষ্ট প্রসার ঘটেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক অধিকারবঞ্চিত মিয়ানমারবাসী এবারের নির্বাচনকে নিয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ হিসেবে। ভোট দেওয়ার সময়ে তাঁরা উন্নয়নের বিষয়টি সেভাবে আমলে নেননি।
তবে পর্যবেক্ষকেরা এ-ও মনে করেন, নির্বাচনে এনএলডির বিপুল বিজয় তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। ক্ষমতাসীনদের পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলো এত কম আসন পেয়েছে যে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। নতুন সরকার কীভাবে আঞ্চলিক দল ও জাতিগোষ্ঠীগুলোর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এখন যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো, সু চি সামনে একজন ‘পুতুল প্রেসিডেন্ট’ রেখে নিজে দেশ চালাবেন, নাকি নিজেই প্রেসিডেন্ট হবেন? পর্যবেক্ষকদের মতে, সু চি ও সেনাবাহিনী একে অপরকে ছাড় দিতে পারেন। এমনও হতে পারে যে সংবিধান সংশোধন করে সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ উন্মুক্ত করতে সেনাবাহিনী সম্মতি দিতে পারে। বিনিময়ে সু চি সেনাবাহিনীর সাংবিধানিক ক্ষমতা পুরোপুরি কাটছাঁট না-ও করতে পারেন।
তবে মিয়ানমারের একজন সাংবাদিক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সু চি যে এককভাবে বড় বড় সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মন্তব্য করেছেন, সেটি তাঁর শুভানুধ্যায়ী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা সুনজরে দেখেননি। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে সামরিক সরকারের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য কী থাকল?
No comments