ছড়ি ঘুরিয়েই যাবে সেনাবাহিনী! -মিয়ানমারের নির্বাচন নিয়ে বার্তা সংস্থা এপির বিশ্লেষণ
ইয়াঙ্গুনে এনএলডি সদর দপ্তরের বাইরে পত্রিকা পড়ছেন এক ব্যক্তি। ৮ নভেম্বরের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির এনএলডি বিপুল ব্যবধানে জয়ের পথে রয়েছে |
মিয়ানমারে
ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর তিন দিন পার হয়ে গেল গতকাল বুধবার।
কিন্তু ফলাফল ঘোষণায় চলছে শম্বুকগতি। যদিও এরই মধ্যে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে,
অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কাছে ঐতিহাসিক পরাজয়
বরণ করতে যাচ্ছে সেনা-সমর্থিত ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড
ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)।
আর নির্বাচনের আগে থেকেই এটা জানা ছিল, মিয়ানমারের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর যে সম্পৃক্ততা সেটার বেড়াজাল থেকে নির্বাচনের ফলাফলও বাদ থাকবে না। ১৯৬২ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করা সেনাবাহিনী বছরের পর বছর গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর নিষ্ঠুর নিপীড়ন চালানোর পর নির্বাচিত কোনো বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়ার পথ সুগম করে দেয় ২০১১ সালে। তবে তখনো ক্ষমতার সুতোটা তাদের হাতেই ছিল।
অবশ্য এবারের নির্বাচন যে গত কয়েক দশকের মধ্যে ছিল সবচেয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সন্দেহ আছে স্পষ্ট বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকামীদের কাছে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা ও পরবর্তী সময়ে স্বাধীনভাবে তাঁদের দেশ চালাতে দেওয়া নিয়ে।
এ রকম সন্দেহ-সংশয় ফুটে উঠেছে অনেক বিশ্লেষকের কথায়। তাঁদের একজন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেন পলিসি ইনিশিয়েটিভের অ্যালেন বর্ক। বলছিলেন, ‘রোববারের নির্বাচন বার্মায় গণতন্ত্রের বিজয়কে প্রতিফলিত করে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক বছর থেকেই এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সেনাবাহিনী ও তার রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা (ক্ষমতাসীন দল) দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণে প্রকৃত আগ্রহী নন।’
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর ও নির্বাচিত সরকারকে নিজেদের মতো করে কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়া নিয়ে সেনাবাহিনী ও সেনাসমর্থিত ক্ষমতাসীনদের মনে রয়েছে নানা শঙ্কা। ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের দাগ জান্তার শঙ্কার অন্যতম কারণ। সু চি অবশ্য সব পক্ষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও অহিংস নীতি প্রতিষ্ঠার ওপরই জোর দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আলোচনায় বসার জন্য গতকাল তিনি প্রেসিডেন্ট এবং প্রভাবশালী সেনাপ্রধানের কাছে আহ্বানও জানিয়েছেন।
নির্বাচনী ফলাফল অকুণ্ঠচিত্তে মেনে নেওয়ার ব্যাপারে নরম সুরে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ও সেনা-কর্মকর্তারাও। এ অবস্থায় অং সান সু চি শেষ পর্যন্ত যদি ক্ষমতাও পান তবে ‘ঘোর শত্রু’ প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা করেই চলতে হবে তাঁকে। কেননা, দেশটির সংবিধান, পার্লামেন্ট ও শাসনব্যবস্থা সামরিক উর্দি পরিহিত শাসকেরা এমনভাবে সাজিয়েছে যে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের ছড়ি ঘোরানোর শিকার হওয়া থেকে সু চির মুক্তি নেই।
আবার, মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি হলেও সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন বিশেষ গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কবজায় নিতে পারবে, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, ‘২০০৮ সালে সাবেক জান্তা প্রণীত সংবিধানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক কাঠামো এমনভাবে সাজানো হয় যে, সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না এবং সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা বা সুযোগ-সুবিধা পাকাপোক্ত থাকবে। যেমন-সেনাবাহিনীর জন্য ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ, সংবিধান সংশোধনে তিন-চতুর্থাংশ আইনপ্রণেতার প্রয়োজনীয় সমর্থন, সামরিক বাজেটে পার্লামেন্টারি নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না রাখা এবং প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র ও সীমান্তরক্ষাবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিসভার পদগুলো কেবল সেনাসদস্যদের জন্য সংরক্ষিত রাখা ইত্যাদি বিষয়।’
‘তাই জনগণ যতই তাঁর পেছনে থাকুক না কেন, অং সান সু চিকে সমস্যা মোকাবিলা করতেই হবে। কেননা, তিনি যদি সেনাবাহিনীকে টেক্কা দিয়ে এগোতে চান, তাহলে তা হবে তাঁর জন্য দেয়ালে মাথা ঠুঁকার মতোই’—বললেন রবার্টসন।
আর নির্বাচনের আগে থেকেই এটা জানা ছিল, মিয়ানমারের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর যে সম্পৃক্ততা সেটার বেড়াজাল থেকে নির্বাচনের ফলাফলও বাদ থাকবে না। ১৯৬২ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করা সেনাবাহিনী বছরের পর বছর গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর নিষ্ঠুর নিপীড়ন চালানোর পর নির্বাচিত কোনো বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়ার পথ সুগম করে দেয় ২০১১ সালে। তবে তখনো ক্ষমতার সুতোটা তাদের হাতেই ছিল।
অবশ্য এবারের নির্বাচন যে গত কয়েক দশকের মধ্যে ছিল সবচেয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সন্দেহ আছে স্পষ্ট বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকামীদের কাছে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা ও পরবর্তী সময়ে স্বাধীনভাবে তাঁদের দেশ চালাতে দেওয়া নিয়ে।
এ রকম সন্দেহ-সংশয় ফুটে উঠেছে অনেক বিশ্লেষকের কথায়। তাঁদের একজন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেন পলিসি ইনিশিয়েটিভের অ্যালেন বর্ক। বলছিলেন, ‘রোববারের নির্বাচন বার্মায় গণতন্ত্রের বিজয়কে প্রতিফলিত করে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক বছর থেকেই এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সেনাবাহিনী ও তার রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা (ক্ষমতাসীন দল) দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণে প্রকৃত আগ্রহী নন।’
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর ও নির্বাচিত সরকারকে নিজেদের মতো করে কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়া নিয়ে সেনাবাহিনী ও সেনাসমর্থিত ক্ষমতাসীনদের মনে রয়েছে নানা শঙ্কা। ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের দাগ জান্তার শঙ্কার অন্যতম কারণ। সু চি অবশ্য সব পক্ষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও অহিংস নীতি প্রতিষ্ঠার ওপরই জোর দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আলোচনায় বসার জন্য গতকাল তিনি প্রেসিডেন্ট এবং প্রভাবশালী সেনাপ্রধানের কাছে আহ্বানও জানিয়েছেন।
নির্বাচনী ফলাফল অকুণ্ঠচিত্তে মেনে নেওয়ার ব্যাপারে নরম সুরে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ও সেনা-কর্মকর্তারাও। এ অবস্থায় অং সান সু চি শেষ পর্যন্ত যদি ক্ষমতাও পান তবে ‘ঘোর শত্রু’ প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা করেই চলতে হবে তাঁকে। কেননা, দেশটির সংবিধান, পার্লামেন্ট ও শাসনব্যবস্থা সামরিক উর্দি পরিহিত শাসকেরা এমনভাবে সাজিয়েছে যে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের ছড়ি ঘোরানোর শিকার হওয়া থেকে সু চির মুক্তি নেই।
আবার, মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি হলেও সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন বিশেষ গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কবজায় নিতে পারবে, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, ‘২০০৮ সালে সাবেক জান্তা প্রণীত সংবিধানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক কাঠামো এমনভাবে সাজানো হয় যে, সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না এবং সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা বা সুযোগ-সুবিধা পাকাপোক্ত থাকবে। যেমন-সেনাবাহিনীর জন্য ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ, সংবিধান সংশোধনে তিন-চতুর্থাংশ আইনপ্রণেতার প্রয়োজনীয় সমর্থন, সামরিক বাজেটে পার্লামেন্টারি নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না রাখা এবং প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র ও সীমান্তরক্ষাবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিসভার পদগুলো কেবল সেনাসদস্যদের জন্য সংরক্ষিত রাখা ইত্যাদি বিষয়।’
‘তাই জনগণ যতই তাঁর পেছনে থাকুক না কেন, অং সান সু চিকে সমস্যা মোকাবিলা করতেই হবে। কেননা, তিনি যদি সেনাবাহিনীকে টেক্কা দিয়ে এগোতে চান, তাহলে তা হবে তাঁর জন্য দেয়ালে মাথা ঠুঁকার মতোই’—বললেন রবার্টসন।
No comments