৫০০ অভিবাসীকে হত্যা!
থাইল্যান্ড
ও মালয়েশিয়া সীমান্তের বন্দিশিবিরে পাচার বা অপহরণের শিকার হওয়া পাঁচ
শতাধিক অভিবাসীকে মেরে ফেলা হয়ে থাকতে পারে। মানব পাচারকারীদের হাত থেকে
বেঁচে যাওয়া একজন অভিবাসী এ কথা বলেছেন। মানব পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে
ব্যর্থ হলে থাইল্যান্ডকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়
ইউনিয়ন (ইইউ)। খবর বিবিসি, রয়টার্স, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট
জার্নাল ও ফুকেট গেজেটের।
বন্দিশিবিরের পাঁচ শতাধিক লোককে মেরে ফেলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন যিনি, সেই অভিবাসী তাঁর নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ওই ঘাঁটিগুলোতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে চাকরির আশ্বাস দিয়ে বা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আটক রাখা হতো। মালয়েশিয়ায় চাকরির লোভ দেখিয়ে ছয় মাস আগে তাঁকেও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে থাইল্যান্ডে নেয় পাচারকারীরা। তিনি যে শিবিরে ছিলেন সেখানে ৭০০ থেকে ৮০০ অভিবাসীকে আটকে রাখা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘মা জমি বিক্রি করে মুক্তিপণ শোধ করায় আমি বেঁচে গেছি।’
থাইল্যান্ডের শংখলা প্রদেশের সাদাও এলাকার গভীর জঙ্গলে গণকবর থেকে সম্প্রতি যে ২৬ জন বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসীর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের একজনের নাম কাজিম। বেঁচে যাওয়া এক অভিবাসী পুলিশকে জানিয়েছেন, অরনুয়া নামের এক পাচারকারী ও তার সহযোগীরা মিলে কাজিমকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে মেরে ফেেলছে। তিনি নিজে সে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে কাজিম কোন দেশের নাগরিক তা উল্লেখ করা হয়নি।
থাইল্যান্ড সীমান্তের বন্দিশিবির থেকে ভাগনে কাজিমকে ছাড়াতে ৯৫ হাজার বাথ (থাই মুদ্রা) মুক্তিপণ দিয়েছিলেন কুরামিয়া। তার পরও কাজিমকে জীবিত ফিরে পাননি। মিলেছে তাঁর দেহাবশেষ। কুরামিয়া নিজেও ভাগ্যান্বেষণে একইভাবে দেশ ছেড়েছিলেন।
কুরামিয়া বলেন, ‘অরনুয়া নামের এক পাচারকারী যখন আমার সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে, তখন তাকে কাজিমের মুক্তিপণ বাবদ ৯৫ হাজার বাথ দিই। ১৫ দিন পর সে আরও ১ লাখ ২০ হাজার বাথ চায়। আর টাকা না থাকায় আমি থাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করি। এরপর কাজিমকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।’
থাইল্যান্ডের পুলিশ কর্মকর্তা জারুমপর্ন সুরামানি গত রোববার জানান, প্রথম গণকবর থেকে তাঁরা ২০ জনের কঙ্কাল ও ছয়জনের গলিত দেহাবশেষ পেয়েছেন। একই দিন শংখলার গভীর জঙ্গলে আরেকটি গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবর শোনা যায়। গত শুক্র ও শনিবার প্রথম গণকবরটি থেকে যাঁদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়, তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি ছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার শিবির থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি। দ্বিতীয় গণকবরটিতে ৫০ জনের বেশি লোকের দেহাবশেষ থাকতে পারে বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়। সেখানে অনুসন্ধান চলছে।
পুলিশ জানায়, প্রত্যন্ত শংখলা এলাকায় মানব পাচারকারীদের বড় ঘাঁটি ছিল বলে তাদের ধারণা। সম্ভবত কিছুদিন আগে তারা এলাকাটি ছেড়ে গেছে। নৌকায় করে আসা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওই বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হতো। পরে স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। টাকা দিতে না পারায় অনেকে দীর্ঘ সময় বন্দী থেকে অনাহারে ও রোগে মারা যান।
জীবিত একজন বাংলাদেশি: গণকবরের কাছ থেকে গত শুক্রবার মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি বাংলাদেশি বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাস। পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক গতকাল বিবিসিকে বলেন, রাষ্ট্রদূত ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। আরও নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
চাপের মুখে থাইল্যান্ড: মানব পাচার রোধে থাইল্যান্ডের বর্তমান সামরিক সরকারের ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল দেশটির ওপর চাপ বাড়িয়েছে। সম্প্রতি গণকবর থেকে অভিবাসীদের দেহাবশেষ উদ্ধারের ঘটনায় এ চাপ অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় থাই সরকার পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর অঙ্গীকার করেছে।
কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে থাইল্যান্ডকে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি করার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। থাইল্যান্ড থেকে বছরে প্রায় ৭০ কোটি ডলারের সামুদ্রিক খাবারের আমদানি বাতিল করার হুমকি দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘এ ঘটনায় বিস্ময়ের তেমন কিছু নেই। মানব পাচারে থাই কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন থেকেই জড়িত। দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততায় নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।’
তিন সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার: আন্তর্জাতিক চাপ ও সমালোচনার মুখে মানব পাচারে জড়িত সন্দেহে তিন সরকারি কর্মকর্তাকে গতকাল গ্রেপ্তার করেছে থাইল্যান্ড। থাই পুলিশের জেনারেল সোময়ুত পুনপানমুয়াং গতকাল ঘটনার আলোচিত কেন্দ্রস্থল শংখলায় যান। এর আগে আগে সাদাও এলাকার একজন কাউন্সিলর ও দুজন উপগ্রামপ্রধানকে গ্রেপ্তারের কথা ঘোষণা করেন তিনি।
বুধবার পুলিশ সো নাইং ওরফে আনওয়ার নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে। কর্তৃপক্ষের ধারণা, সে পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা। পুলিশ বলেছে, তাদের অভিযানে সম্প্রতি একটি আটক শিবির বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে প্রায় ৪০০ অভিবাসীকে মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল বলে তাদের ধারণা। তাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি।
সীমান্তে অন্তত ৬০ আটক শিবির: থাইল্যান্ডের রোহিঙ্গা অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কামাল বলেন, থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া সীমান্তে পাচারকারীদের অন্তত ৬০টি আটক শিবির রয়েছে। এর অধিকাংশই মালয়েশীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত। প্রতিটি শিবিরে ১৫০ থেকে ৮০০ জন রয়েছেন।
এদিকে আরাকান প্রোজেক্ট নামের একটি সংগঠনের পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেন, থাইল্যান্ডের সমুদ্রোপকূলের শিবিরগুলোতে এখনো অনেক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা বন্দী হয়ে আছেন।
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার তাগিদ: বাংলাদেশে মানব পাচার চক্রগুলো আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইএমওর কর্মকর্তা আসিফ মুনির বিবিসিকে বলেন, সংঘবদ্ধ চক্রগুলো সব সময় তৎপর রয়েছে। তবে মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বেড়েছে। তারা বুঝতে পারছে, বেআইনি পথে বিদেশে যাওয়াটা কত বিপজ্জনক। তার পরও অনেকের মধ্যে মরিয়া ভাবটা থেকে যায় যে তার হয়তো কিছু হবে না।
আসিফ মুনির আরও বলেন, বেআইনিভাবে যারা বিদেশে যান, তাঁদের ব্যাপারে সরকার বা অন্য সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য থাকে না। যখন তাঁরা বিদেশে কোনো বিপদে পড়ে সাহায্য চান, কেবল তখনই তথ্যগুলো প্রকাশ পায়। এ ধরনের বেআইনি অভিবাসনের চেষ্টা প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তৎপরতা বাড়াতে হবে।
বন্দিশিবিরের পাঁচ শতাধিক লোককে মেরে ফেলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন যিনি, সেই অভিবাসী তাঁর নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ওই ঘাঁটিগুলোতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে চাকরির আশ্বাস দিয়ে বা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আটক রাখা হতো। মালয়েশিয়ায় চাকরির লোভ দেখিয়ে ছয় মাস আগে তাঁকেও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে থাইল্যান্ডে নেয় পাচারকারীরা। তিনি যে শিবিরে ছিলেন সেখানে ৭০০ থেকে ৮০০ অভিবাসীকে আটকে রাখা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘মা জমি বিক্রি করে মুক্তিপণ শোধ করায় আমি বেঁচে গেছি।’
থাইল্যান্ডের শংখলা প্রদেশের সাদাও এলাকার গভীর জঙ্গলে গণকবর থেকে সম্প্রতি যে ২৬ জন বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসীর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের একজনের নাম কাজিম। বেঁচে যাওয়া এক অভিবাসী পুলিশকে জানিয়েছেন, অরনুয়া নামের এক পাচারকারী ও তার সহযোগীরা মিলে কাজিমকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে মেরে ফেেলছে। তিনি নিজে সে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে কাজিম কোন দেশের নাগরিক তা উল্লেখ করা হয়নি।
থাইল্যান্ড সীমান্তের বন্দিশিবির থেকে ভাগনে কাজিমকে ছাড়াতে ৯৫ হাজার বাথ (থাই মুদ্রা) মুক্তিপণ দিয়েছিলেন কুরামিয়া। তার পরও কাজিমকে জীবিত ফিরে পাননি। মিলেছে তাঁর দেহাবশেষ। কুরামিয়া নিজেও ভাগ্যান্বেষণে একইভাবে দেশ ছেড়েছিলেন।
কুরামিয়া বলেন, ‘অরনুয়া নামের এক পাচারকারী যখন আমার সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে, তখন তাকে কাজিমের মুক্তিপণ বাবদ ৯৫ হাজার বাথ দিই। ১৫ দিন পর সে আরও ১ লাখ ২০ হাজার বাথ চায়। আর টাকা না থাকায় আমি থাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করি। এরপর কাজিমকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।’
থাইল্যান্ডের পুলিশ কর্মকর্তা জারুমপর্ন সুরামানি গত রোববার জানান, প্রথম গণকবর থেকে তাঁরা ২০ জনের কঙ্কাল ও ছয়জনের গলিত দেহাবশেষ পেয়েছেন। একই দিন শংখলার গভীর জঙ্গলে আরেকটি গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবর শোনা যায়। গত শুক্র ও শনিবার প্রথম গণকবরটি থেকে যাঁদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়, তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি ছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার শিবির থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি। দ্বিতীয় গণকবরটিতে ৫০ জনের বেশি লোকের দেহাবশেষ থাকতে পারে বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়। সেখানে অনুসন্ধান চলছে।
পুলিশ জানায়, প্রত্যন্ত শংখলা এলাকায় মানব পাচারকারীদের বড় ঘাঁটি ছিল বলে তাদের ধারণা। সম্ভবত কিছুদিন আগে তারা এলাকাটি ছেড়ে গেছে। নৌকায় করে আসা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওই বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হতো। পরে স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। টাকা দিতে না পারায় অনেকে দীর্ঘ সময় বন্দী থেকে অনাহারে ও রোগে মারা যান।
জীবিত একজন বাংলাদেশি: গণকবরের কাছ থেকে গত শুক্রবার মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি বাংলাদেশি বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাস। পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক গতকাল বিবিসিকে বলেন, রাষ্ট্রদূত ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। আরও নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
চাপের মুখে থাইল্যান্ড: মানব পাচার রোধে থাইল্যান্ডের বর্তমান সামরিক সরকারের ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল দেশটির ওপর চাপ বাড়িয়েছে। সম্প্রতি গণকবর থেকে অভিবাসীদের দেহাবশেষ উদ্ধারের ঘটনায় এ চাপ অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় থাই সরকার পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর অঙ্গীকার করেছে।
কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে থাইল্যান্ডকে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি করার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। থাইল্যান্ড থেকে বছরে প্রায় ৭০ কোটি ডলারের সামুদ্রিক খাবারের আমদানি বাতিল করার হুমকি দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘এ ঘটনায় বিস্ময়ের তেমন কিছু নেই। মানব পাচারে থাই কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন থেকেই জড়িত। দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততায় নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।’
তিন সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার: আন্তর্জাতিক চাপ ও সমালোচনার মুখে মানব পাচারে জড়িত সন্দেহে তিন সরকারি কর্মকর্তাকে গতকাল গ্রেপ্তার করেছে থাইল্যান্ড। থাই পুলিশের জেনারেল সোময়ুত পুনপানমুয়াং গতকাল ঘটনার আলোচিত কেন্দ্রস্থল শংখলায় যান। এর আগে আগে সাদাও এলাকার একজন কাউন্সিলর ও দুজন উপগ্রামপ্রধানকে গ্রেপ্তারের কথা ঘোষণা করেন তিনি।
বুধবার পুলিশ সো নাইং ওরফে আনওয়ার নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে। কর্তৃপক্ষের ধারণা, সে পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা। পুলিশ বলেছে, তাদের অভিযানে সম্প্রতি একটি আটক শিবির বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে প্রায় ৪০০ অভিবাসীকে মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল বলে তাদের ধারণা। তাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি।
সীমান্তে অন্তত ৬০ আটক শিবির: থাইল্যান্ডের রোহিঙ্গা অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কামাল বলেন, থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া সীমান্তে পাচারকারীদের অন্তত ৬০টি আটক শিবির রয়েছে। এর অধিকাংশই মালয়েশীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত। প্রতিটি শিবিরে ১৫০ থেকে ৮০০ জন রয়েছেন।
এদিকে আরাকান প্রোজেক্ট নামের একটি সংগঠনের পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেন, থাইল্যান্ডের সমুদ্রোপকূলের শিবিরগুলোতে এখনো অনেক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা বন্দী হয়ে আছেন।
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার তাগিদ: বাংলাদেশে মানব পাচার চক্রগুলো আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইএমওর কর্মকর্তা আসিফ মুনির বিবিসিকে বলেন, সংঘবদ্ধ চক্রগুলো সব সময় তৎপর রয়েছে। তবে মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বেড়েছে। তারা বুঝতে পারছে, বেআইনি পথে বিদেশে যাওয়াটা কত বিপজ্জনক। তার পরও অনেকের মধ্যে মরিয়া ভাবটা থেকে যায় যে তার হয়তো কিছু হবে না।
আসিফ মুনির আরও বলেন, বেআইনিভাবে যারা বিদেশে যান, তাঁদের ব্যাপারে সরকার বা অন্য সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য থাকে না। যখন তাঁরা বিদেশে কোনো বিপদে পড়ে সাহায্য চান, কেবল তখনই তথ্যগুলো প্রকাশ পায়। এ ধরনের বেআইনি অভিবাসনের চেষ্টা প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তৎপরতা বাড়াতে হবে।
No comments