লড়ছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ৫ নারী by গোলাম মোস্তফা ফারুক
বাঁ থেকে : রূপা হক, মিনা রহমান, মেরিনা আহমদ (উপরে), টিউলিপ সিদ্দিক ও রুশনারা আলী |
ব্রিটিশ
পার্লামেন্ট নির্বাচনে এবার ৫ বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নারী দুটি প্রধান
রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। এদের মধ্যে প্রধান
বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে এমপি মনোনয়ন পেয়েছেন ৪ জন। ক্ষমতাসীন
কনজারভেটিভ পার্টি মনোনয়ন দিয়েছে ১ জনকে। পুরুষদের পাশাপাশি সমান তালে তারা
নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে লেবার পার্টির রুশনারা
আলী, টিউলিপ সিদ্দিক এবং রূপা হক এখন পর্যন্ত তাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে কোনো
কোনো আসনে সমানভাবে, কোথাও বিপুল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। বাংলাদেশী
বংশোদ্ভূত এসব নারী প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মতৎপরতা তুলে ধরা হল :
রুশনারা আলী : বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী ২০১০ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো নির্বাচনী এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম বাঙালি এমপি। এবারও তিনি এ আসন থেকে শ্বেতাঙ্গ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়ছেন। প্রায় ১২ হাজার ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তিনি লেবার পার্টির এ আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। গত ৫ বছরে রুশনারা তার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করেন। তিনি শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন লেবার পার্টির এমপি হিসেবে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় ব্রিটেনের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় তার দেশের বাড়ি। ৭ বছর বয়সে তিনি পিতা-মাতার সঙ্গে লন্ডনে আসেন। পূর্ব লন্ডনের মালবারী গার্লস স্কুলের এই ছাত্রী পরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে রাজনীতি, দর্শন এবং অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক : লন্ডনের ক্যামডেন কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর ও সংস্কৃতিবিষয়ক কেবিনেট মেম্বার টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আসন থেকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন। টিউলিপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি। শেখ রেহানার বড় মেয়ে। তার শৈশব কেটেছে ব্র“নেই, ভারত, সিঙ্গাপুর এবং বাংলাদেশে। লন্ডনে কিংস কলেজ থেকে রাজনীতি, পিলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি করেন। তিনি ১৬ বছর বয়স থেকে ব্রিটেনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, গ্রেটার লন্ডন অথোরিটি ও সেইভ দ্য চিলড্রেন ফান্ড চ্যারিটির জন্য তিনি কাজ করেন। ২০০৮ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে অংশ নেন টিউলিপ। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তিনি একজন সদস্য।
রূপা আশা হক : ২০০৪ সালে রূপা হক ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০৫ সালে লেবার পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেশাম অ্যান্ড এমারশাম আসন থেকে লড়েছিলেন। তিনি লন্ডন বারা অব ইলিংয়ের ডেপুটি মেয়র ছিলেন। ১৯৯৩ সালে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে রাজনীতি, সমাজবিজ্ঞান এবং আইনে গ্রাজুয়েশন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি কালচরাল স্টাডিজের ওপর পিএইচডি করেন। ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান, সানডে অবজারভার, ট্রিবিউন প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত কলাম লিখেন। রূপা হক ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে লেকচারারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে সোশ্যালজি ও ক্রিমিনালজিতে লেকচারারের দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টি হয়ে ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড একটন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ষাটের দশকে তার মা-বাবা ব্রিটেনে আসেন। তাদের দেশের বাড়ি পাবনা জেলায়। রূপার জন্ম ১৯৭২ সালে লন্ডনে।
মেরিনা আহমদ : ব্যারিস্টার মেরিনা আহমদ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টি মনোনয়ন পেয়েছেন লন্ডনের বেকেনহাম আসনে। মেরিনা গত ত্রিশ বছর লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পার্টির বিভিন্ন ন্যাশনাল ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেছেন।
মেরিনা ইউনিভার্সিটি অব সারে থেকে ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাসে বিএ অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব বাথ থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং পরে ইন্স অব কোর্ট স্কুল অব ল’ থেকে বার এট ল’ সমাপ্ত করেন।
মেরিনা ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে হেলথ প্রমোশন অফিসার এবং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। লন্ডনে একটি স্থানীয় সংস্থার পলিসি অফিসার তিনি। সরকারের অনেক মন্ত্রীর সঙ্গে কেবিনেট অফিসে তিনি কাজ করেছেন। ব্যারিস্টার হিসেবে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের প্রসিকিশন টিমে দায়িত্ব পালন করছেন।
মিনা রহমান : এবারের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে লন্ডনের বাকিং আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি একমাত্র বাঙালি যিনি এ বছর কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন। লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী মার্গারেট হজ এই আসনের এমপি ছিলেন। মিনা কাউন্সিলের ঘরবাড়ি উন্নয়ন, বয়স্কদের উন্নয়ন ভাতা বৃদ্ধি, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো, স্বল্প ও মধ্যবিত্ত মানুষের কল্যাণসহ বেশ কয়েকটি দাবি বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যদিও তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন কিন্তু তার আসনটি প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায় মিনার জন্ম। দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে বসবাস করছেন।
রুশনারা আলী : বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী ২০১০ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো নির্বাচনী এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম বাঙালি এমপি। এবারও তিনি এ আসন থেকে শ্বেতাঙ্গ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়ছেন। প্রায় ১২ হাজার ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তিনি লেবার পার্টির এ আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। গত ৫ বছরে রুশনারা তার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করেন। তিনি শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন লেবার পার্টির এমপি হিসেবে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় ব্রিটেনের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় তার দেশের বাড়ি। ৭ বছর বয়সে তিনি পিতা-মাতার সঙ্গে লন্ডনে আসেন। পূর্ব লন্ডনের মালবারী গার্লস স্কুলের এই ছাত্রী পরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে রাজনীতি, দর্শন এবং অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক : লন্ডনের ক্যামডেন কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর ও সংস্কৃতিবিষয়ক কেবিনেট মেম্বার টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আসন থেকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন। টিউলিপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি। শেখ রেহানার বড় মেয়ে। তার শৈশব কেটেছে ব্র“নেই, ভারত, সিঙ্গাপুর এবং বাংলাদেশে। লন্ডনে কিংস কলেজ থেকে রাজনীতি, পিলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি করেন। তিনি ১৬ বছর বয়স থেকে ব্রিটেনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, গ্রেটার লন্ডন অথোরিটি ও সেইভ দ্য চিলড্রেন ফান্ড চ্যারিটির জন্য তিনি কাজ করেন। ২০০৮ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে অংশ নেন টিউলিপ। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তিনি একজন সদস্য।
রূপা আশা হক : ২০০৪ সালে রূপা হক ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০৫ সালে লেবার পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেশাম অ্যান্ড এমারশাম আসন থেকে লড়েছিলেন। তিনি লন্ডন বারা অব ইলিংয়ের ডেপুটি মেয়র ছিলেন। ১৯৯৩ সালে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে রাজনীতি, সমাজবিজ্ঞান এবং আইনে গ্রাজুয়েশন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি কালচরাল স্টাডিজের ওপর পিএইচডি করেন। ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান, সানডে অবজারভার, ট্রিবিউন প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত কলাম লিখেন। রূপা হক ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে লেকচারারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে সোশ্যালজি ও ক্রিমিনালজিতে লেকচারারের দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টি হয়ে ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড একটন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ষাটের দশকে তার মা-বাবা ব্রিটেনে আসেন। তাদের দেশের বাড়ি পাবনা জেলায়। রূপার জন্ম ১৯৭২ সালে লন্ডনে।
মেরিনা আহমদ : ব্যারিস্টার মেরিনা আহমদ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টি মনোনয়ন পেয়েছেন লন্ডনের বেকেনহাম আসনে। মেরিনা গত ত্রিশ বছর লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পার্টির বিভিন্ন ন্যাশনাল ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেছেন।
মেরিনা ইউনিভার্সিটি অব সারে থেকে ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাসে বিএ অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব বাথ থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং পরে ইন্স অব কোর্ট স্কুল অব ল’ থেকে বার এট ল’ সমাপ্ত করেন।
মেরিনা ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে হেলথ প্রমোশন অফিসার এবং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। লন্ডনে একটি স্থানীয় সংস্থার পলিসি অফিসার তিনি। সরকারের অনেক মন্ত্রীর সঙ্গে কেবিনেট অফিসে তিনি কাজ করেছেন। ব্যারিস্টার হিসেবে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের প্রসিকিশন টিমে দায়িত্ব পালন করছেন।
মিনা রহমান : এবারের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে লন্ডনের বাকিং আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি একমাত্র বাঙালি যিনি এ বছর কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন। লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী মার্গারেট হজ এই আসনের এমপি ছিলেন। মিনা কাউন্সিলের ঘরবাড়ি উন্নয়ন, বয়স্কদের উন্নয়ন ভাতা বৃদ্ধি, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো, স্বল্প ও মধ্যবিত্ত মানুষের কল্যাণসহ বেশ কয়েকটি দাবি বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যদিও তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন কিন্তু তার আসনটি প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায় মিনার জন্ম। দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে বসবাস করছেন।
No comments