মিডিয়ার চোখে অমঙ্গলের ভোট by জিএম রুমি
প্রথমে
তারা বিএনপির প্রর্থীদের তাড়ালেন, তারপর তাড়ালেন সাংবাদিকদের, তারপর
তাড়ালেন ভোটাদের... তারপর আর তাড়ানোর কিছু ছিলো না। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার
ততক্ষণে নিজেরাই পলাতক। এভাবে মঙ্গলবারের ভোটের বয়ান এসেছে দৈনিক প্রথম
আলো’তে। ‘কার নৌকায় কে ডোবে’ শীর্ষক লেখাটি লিখেছেন সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ।
এদিন প্রথম আলোর মূল শিরোনাম ছিল- জিতল আওয়ামী লীগ, হারলো গণতন্ত্র। একই
দৈনিকে ছাপা হয়েছে, ২১ সাংবাদিক হামলা ও বাধার শিকার। জাল ভোটে সহযোগী
পুলিশ। সকালে লম্বা সারি, দুপুরে গণসিল।
দেশের প্রায় সব শীর্ষ দৈনিকই মঙ্গলবারের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থকদের ভোট জালিয়াতির খবর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। প্রথম আলো’র প্রধান খবরে আরও বলা হয়, তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে যে শঙ্কা ছিলো তাই সত্যি হলো। প্রশ্নবিদ্ধ এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তিন মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হলেও গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় তোলা এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের খেলায় গণতন্ত্র হেরেছে। সরকার-সমর্থকেরা বিরোধীদের বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রের কাছেই যেতে দেননি। অনেকটা ফাঁকা মাঠে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উন্মুক্ত কারচুপি করেছেন তারা।
বিবিসি বাংলার অনলাইনে ‘তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রের বুথ দখল করে গণহারে ভোট’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের একটি ভোট কেন্দ্রের বুথ দখল করে একদল কর্মীকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর মার্কায় গণহারে সিল মারতে দেখা গেছে। এসময় ভোট-গ্রহণের দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ কর্মকর্তা প্রিজাইডিং অফিসার নিষ্ক্রিয় হয়ে বসেছিলেন। তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ভোট কেন্দ্রে বিবিসির সংবাদদাতা ফারহানা পারভীন এই ভোট জালিয়াতি প্রত্যক্ষ করেন।
‘ভোট জালিয়াতির মহোৎসব’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, সকালেই অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল, অংশ নেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারাও, কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরকারদলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-গুলি। প্রবিবেদনে আরও বলা হয়, দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে দিনের প্রথম ভাগেই তিন সিটির অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনেই তারা ছিনিয়ে নেয় ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স। অস্ত্রের মহড়ার পাশাপাশি জোর করে বের করে দেয় বিএনপিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের। চলে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিলমারাসহ জাল ভোটের মহোৎসব ও নজিরবিহীন কারচুপি।
দৈনিক ইত্তেফাক ‘কেন্দ্র ২৭০০, হাঙ্গামা ৫৫টিতে’ শিরোনামে লিখেছে, বিচ্ছিন্ন কিছু গোলযোগের ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। ঢাকার দুই সিটির এক হাজার ৯৮২টি কেন্দ্রের মধ্যে গোলযোগ হয়েছে অর্ধশত কেন্দ্রে। দুই সিটিতে মোট ভোটার ৪২ লাখের বেশি। বিপরীতে হাঙ্গামা হওয়া কেন্দ্রগুলোতে মোট ভোটার এক লাখের বেশি নয়। ঢাকায় তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ২৫টির মতো কেন্দ্রে সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।
দৈনিক সমকালে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ভোট, বিএনপির বর্জন’ শিরোনামের খবরে বলা হয়, শেষ পর্যন্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই সম্পন্ন হলো তিন সিটি করপোরেশনের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচন। ভোটকেন্দ্র দখল, কারচুপি, জাল ভোট, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া, হামলাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ভোট শুরুর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দিল বিএনপি। প্রতিবাদে ফের হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে দলটি। বিএনপির পাশাপাশি নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতি’ ও ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিভিন্ন দলসমর্থিত মেয়র প্রার্থীরাও।
দৈনিক নয়া দিগন্তে ভোট ‘জালিয়াতির মহোৎসব, বিএনপির বর্জন’ শিরোনামে প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্র দখল আর নজিরবিহীন কারচুপির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজধানীতে সকাল ৮টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় সব ভোটকেন্দ্রের দখল নেয় সরকারদলীয় লোকজন। বেশির ভাগ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি বিএনপি প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের।
দৈনিক ইনকিলাব নজিরবিহীন ‘অভিনব’ ভোট শিরোনামে লিখেছে, অভিনব কায়দায় অনুষ্ঠিত হলো তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আলোচিত এ নির্বাচনে ভোটগগ্রহণ নাটক-সিনেমার গল্প ও আলাদিনের দৈত্যকেও হার মানিয়েছে। সকাল ৯টার মধ্যেই ফলাফল নিশ্চিত হওয়ায় ভোটের ইতিহাসে যোগ হলো নতুন অধ্যায়। অর্ধশত প্রার্থী প্রচারণায় নামতে না পারার ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। আর নির্বাচনও হলো নজিরবিহীন। আগের রাত থেকেই ইশারা-ইঙ্গিত পাওয়া যায় ব্যালট পেপারে সিলমারার খবর।
বাংলাদেশ প্রতিদিন ‘সবকিছু ছিল আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে’ শিরোনামে লিখেছে, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাঠ থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সবকিছুতেই ছিল আওয়ামী লীগের উপস্থিতি। কেন্দ্রের আশপাশে প্রার্থীদের পক্ষে নীরব প্রচারণা, সাধারণ ভোটারদের সহায়তা ও কেন্দ্রের এজেন্ট সব ক্ষেত্রেই এটা চোখে পড়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মহানগরীর সাধারণ কর্মী সবাই ছিলেন সরব। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং মেয়র- তিন পদেই ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সমর্থকদেরই প্রাধান্য।
‘অভিযোগবিদ্ধ ভোটে জয় সরকার সমর্থকদের’ শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট বর্জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিন সিটি করপোরেশনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। মঙ্গলবার ভোটের মাঝখানে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রায় সব কেন্দ্র দখল ও কারচুপির অভিযোগ এনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একই অভিযোগ তোলে বাম দলগুলোও।
দৈনিক মানবজমিন ‘ডিজিটাল জামানায় এনালগ কারচুপি’ শিরোনামে লিখেছে, এক নয়া মডেলের নির্বাচন। উৎসব তো বটেই। দখলের উৎসব। একেবারেই খোলামেলা। কোন রাখডাক নেই। সকাল সকাল প্রায় প্রতিটি কেন্দ্র থেকেই হাওয়া বিএনপি সমর্থক এজেন্টরা। কেউ ঢুকতে পেরেছেন, কেউ পারেননি। তবে থাকতে পারেননি কেউই। হুমকি, মারধর, হামলা আর গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন তারা। কাউকে কাউকে আটকে রাখা হয় আগেই। রক্তাক্ত এজেন্ট যেন একটি নির্বাচনেরই প্রতিচ্ছবি। আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগের রাতেই। খবর আসছিলো, ব্যালট পেপারে সিল মারার। যদিও তার সংখ্যা ছিল কম। তবে গতকাল দিনের শুরুতেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।
দেশের প্রায় সব শীর্ষ দৈনিকই মঙ্গলবারের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থকদের ভোট জালিয়াতির খবর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। প্রথম আলো’র প্রধান খবরে আরও বলা হয়, তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে যে শঙ্কা ছিলো তাই সত্যি হলো। প্রশ্নবিদ্ধ এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তিন মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হলেও গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় তোলা এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের খেলায় গণতন্ত্র হেরেছে। সরকার-সমর্থকেরা বিরোধীদের বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রের কাছেই যেতে দেননি। অনেকটা ফাঁকা মাঠে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উন্মুক্ত কারচুপি করেছেন তারা।
বিবিসি বাংলার অনলাইনে ‘তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রের বুথ দখল করে গণহারে ভোট’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের একটি ভোট কেন্দ্রের বুথ দখল করে একদল কর্মীকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর মার্কায় গণহারে সিল মারতে দেখা গেছে। এসময় ভোট-গ্রহণের দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ কর্মকর্তা প্রিজাইডিং অফিসার নিষ্ক্রিয় হয়ে বসেছিলেন। তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ভোট কেন্দ্রে বিবিসির সংবাদদাতা ফারহানা পারভীন এই ভোট জালিয়াতি প্রত্যক্ষ করেন।
‘ভোট জালিয়াতির মহোৎসব’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, সকালেই অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল, অংশ নেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারাও, কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরকারদলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-গুলি। প্রবিবেদনে আরও বলা হয়, দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে দিনের প্রথম ভাগেই তিন সিটির অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনেই তারা ছিনিয়ে নেয় ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স। অস্ত্রের মহড়ার পাশাপাশি জোর করে বের করে দেয় বিএনপিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের। চলে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিলমারাসহ জাল ভোটের মহোৎসব ও নজিরবিহীন কারচুপি।
দৈনিক ইত্তেফাক ‘কেন্দ্র ২৭০০, হাঙ্গামা ৫৫টিতে’ শিরোনামে লিখেছে, বিচ্ছিন্ন কিছু গোলযোগের ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। ঢাকার দুই সিটির এক হাজার ৯৮২টি কেন্দ্রের মধ্যে গোলযোগ হয়েছে অর্ধশত কেন্দ্রে। দুই সিটিতে মোট ভোটার ৪২ লাখের বেশি। বিপরীতে হাঙ্গামা হওয়া কেন্দ্রগুলোতে মোট ভোটার এক লাখের বেশি নয়। ঢাকায় তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ২৫টির মতো কেন্দ্রে সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।
দৈনিক সমকালে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ভোট, বিএনপির বর্জন’ শিরোনামের খবরে বলা হয়, শেষ পর্যন্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই সম্পন্ন হলো তিন সিটি করপোরেশনের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচন। ভোটকেন্দ্র দখল, কারচুপি, জাল ভোট, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া, হামলাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ভোট শুরুর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দিল বিএনপি। প্রতিবাদে ফের হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে দলটি। বিএনপির পাশাপাশি নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতি’ ও ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিভিন্ন দলসমর্থিত মেয়র প্রার্থীরাও।
দৈনিক নয়া দিগন্তে ভোট ‘জালিয়াতির মহোৎসব, বিএনপির বর্জন’ শিরোনামে প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্র দখল আর নজিরবিহীন কারচুপির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজধানীতে সকাল ৮টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় সব ভোটকেন্দ্রের দখল নেয় সরকারদলীয় লোকজন। বেশির ভাগ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি বিএনপি প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের।
দৈনিক ইনকিলাব নজিরবিহীন ‘অভিনব’ ভোট শিরোনামে লিখেছে, অভিনব কায়দায় অনুষ্ঠিত হলো তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আলোচিত এ নির্বাচনে ভোটগগ্রহণ নাটক-সিনেমার গল্প ও আলাদিনের দৈত্যকেও হার মানিয়েছে। সকাল ৯টার মধ্যেই ফলাফল নিশ্চিত হওয়ায় ভোটের ইতিহাসে যোগ হলো নতুন অধ্যায়। অর্ধশত প্রার্থী প্রচারণায় নামতে না পারার ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। আর নির্বাচনও হলো নজিরবিহীন। আগের রাত থেকেই ইশারা-ইঙ্গিত পাওয়া যায় ব্যালট পেপারে সিলমারার খবর।
বাংলাদেশ প্রতিদিন ‘সবকিছু ছিল আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে’ শিরোনামে লিখেছে, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাঠ থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সবকিছুতেই ছিল আওয়ামী লীগের উপস্থিতি। কেন্দ্রের আশপাশে প্রার্থীদের পক্ষে নীরব প্রচারণা, সাধারণ ভোটারদের সহায়তা ও কেন্দ্রের এজেন্ট সব ক্ষেত্রেই এটা চোখে পড়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মহানগরীর সাধারণ কর্মী সবাই ছিলেন সরব। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং মেয়র- তিন পদেই ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সমর্থকদেরই প্রাধান্য।
‘অভিযোগবিদ্ধ ভোটে জয় সরকার সমর্থকদের’ শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট বর্জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিন সিটি করপোরেশনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। মঙ্গলবার ভোটের মাঝখানে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রায় সব কেন্দ্র দখল ও কারচুপির অভিযোগ এনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একই অভিযোগ তোলে বাম দলগুলোও।
দৈনিক মানবজমিন ‘ডিজিটাল জামানায় এনালগ কারচুপি’ শিরোনামে লিখেছে, এক নয়া মডেলের নির্বাচন। উৎসব তো বটেই। দখলের উৎসব। একেবারেই খোলামেলা। কোন রাখডাক নেই। সকাল সকাল প্রায় প্রতিটি কেন্দ্র থেকেই হাওয়া বিএনপি সমর্থক এজেন্টরা। কেউ ঢুকতে পেরেছেন, কেউ পারেননি। তবে থাকতে পারেননি কেউই। হুমকি, মারধর, হামলা আর গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন তারা। কাউকে কাউকে আটকে রাখা হয় আগেই। রক্তাক্ত এজেন্ট যেন একটি নির্বাচনেরই প্রতিচ্ছবি। আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগের রাতেই। খবর আসছিলো, ব্যালট পেপারে সিল মারার। যদিও তার সংখ্যা ছিল কম। তবে গতকাল দিনের শুরুতেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।
No comments