কোন ঝুঁকি নিতে যাননি ম্যাজিস্ট্রেটরা
ঢাকা
উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাৎক্ষণিক বিচারের
কাজে নিয়োজিত ৪৭৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন নিশ্চুপ। কেন্দ্র দখলের পর কোন
ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিক বিচার করতে ভোট কেন্দ্রে যাননি। স্ট্রাইকিং
ফোর্সের সঙ্গে কেন্দ্রের বাইরে যাওয়া-আসা করেই সময় পার করেছেন। সরকার
সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ইশারা অনুযায়ী কাজ করেছেন। নিজেদের
চাকরির চিন্তায় কোন ধরনের ঝুঁকি নিতে চাননি। গতকাল নির্বাচনী দায়িত্ব শেষ
করে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেছেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। বিষয়টি সম্পর্কে
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা জানান, তিন সিটি
নির্বাচনে অনেক এক্সিকিউটিভ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হলেও
তাদের তৎপরতা চোখে পড়েনি। তাৎক্ষণিক ট্রায়ালের কোন ব্যবস্থা দেখিনি। তাহলে
ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবরা করলেন কি? শুধু পুলিশের সামান্য তৎপরতা দেখলাম। এটাও
প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকারী কয়েক জন নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে
নিযুক্ত র্যাব ও বর্ডার গার্ডের সঙ্গে দায়িত্ব ছিল তাদের। তাই কেন্দ্রের
দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার না ডাকা পর্যন্ত তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে
কেন্দ্রে যেতে পারেননি। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয়
গাড়ি সরবরাহ করা হয়নি। প্রতি তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য একটি গাড়ি দেয়া
হয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য পেশকার, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র দেয়া হয়নি। এ
ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্বও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। এসব সমস্যার
কারণে তাদের দায়িত্ব পালন করতে কষ্ট হয়েছে। ইচ্ছা থাকলেও তারা ঠিকভাবে
দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত
২২শে এপ্রিল ঢাকায় ৩০৭ জন এবং চট্টগ্রামে ১৩৪ জনসহ মোট ৪৪১ জন নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা
উত্তরের জন্য ১৪৩ ও দক্ষিণে ১৬৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। আইন ও বিচার বিভাগ
আলাদাভাবে ৩৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়। সিটি
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী একজন ম্যাজিস্ট্রেট জানালেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি
করপোরেশনে এক প্লাটুন বিজিবির সঙ্গে ৩ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট দেয়া হয়।
কিন্তু গাড়ি দেয়া হয় মাত্র একটি। ফলে কষ্ট করে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকার
কাছাকাছি একটি উপজেলার ইউএনও পদে কর্মরত এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
জানালেন, আমাদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার দায়িত্ব দেয়া হলেও কোন
পেশকার, ডিসিআর বইসহ সাপোর্টিং পেপারস দেয়া হয়নি। কিভাবে দায়িত্ব পালন
করবো। এটা যেন ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারের মতো অবস্থা।
No comments