তামাশার নির্বাচন বাতিলের দাবি আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের
সিটি
নির্বাচনকে তামাশার নির্বাচন আখ্যায়িত করে তা বাতিল ও পুরো নির্বাচন
কমিশনের (ইসি) পদত্যাগ দাবি করেছে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন। গতকাল বিকালে জাতীয়
প্রেস ক্লাবে আয়োজিক এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গঠিত
সংগঠনটি এ দাবি জানায়। লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্যসচিব শওকত মাহমুদ বলেন,
বিগত ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে সরকার ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার পর থেকে
দেশের রাজনীতি দ্বন্দ্ব-সংঘাত-সহিংসতা, বিভেদ ও হানাহানির কারণে অস্থির,
অসহিঞ্চু ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে। আইনের শাসন মারাত্মকভাবে উপেক্ষিত হয়।
গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ও মূল্যবোধ হয়েছে নিদারুণভাবে নিপীড়িত। তিনি
বলেন, সেই অবস্থা থেকে রাজনীতিকে বের করে এনে আবার গণতান্ত্রিক পথে চলতে
সবাইকে সাহায্য করার জন্য আমরা সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী
দিয়েছিলাম। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম সরকার ও ইসি সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে
গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে তুলে ধরে সকল প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত
করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবে। কিন্তু এ
ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা হিলাময়চুম্বী ও ক্ষমার অযোগ্য। তিনি বলেন, এ
নির্বাচন দেশের ইতিহাসের মহাকলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। সংগঠনের আহ্বায়ক
প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, তিনি ১৯৪৬ সাল থেকে সব নির্বাচন দেখেছেন।
কিন্তু কোন নির্বাচনই গতকালের ?নির্বাচনের সঙ্গে তুল্য নয়। এ নির্বাচন
আবর্জনাতুল্য। যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, এভাবে নির্বাচন হয় না। তিনি বলেন,
হরতাল হচ্ছিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল- এমন পরিস্থিতিতে আমরা
নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়টি বিএনপিকে প্রস্তাব করেছিলেন। নির্বাচন হলে এক
ধরনের সংলাপ হবে, এটা ভেবে। আমরা দেশের সংঘাতপূর্ণ রাজনীতিকে একটি সুস্থ
আবহ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গণতন্ত্রে ফিরিয়ে এনে ঢাকাকে সকলের আদর্শ
বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে এ সংগঠন গড়ে তুলেছিলাম। সে কারণে আমরা নির্দিষ্ট
কিছু লক্ষ্য নিয়ে, কিছু ভিশন নিয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও
কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিলাম। ২০ দলীয় জোট তা সমর্থন জানিয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর সাবেক এই ভিসি বলেন, এক অর্থে সংলাপ হয়েছে। ভোটাররা
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রার্থীরা প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
বিভিন্ন পর্যায় থেকে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেন,
তারা ভেবেছিলেন, এটিকে বৃহত্তর পর্যায়ে নিয়ে গেলে রাজনৈতিক সংলাপের রূপ
আসবে। কিন্তু তা হয়নি। তিনি জাতীয় স্বার্থে ইসির পদত্যাগ দাবি করে বলেন,
নির্বাচন কমিশন যা করেছে, প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রদের বসিয়ে দিলেও এমন হবে।
এমাজউদ্দীন বলেন, এভাবে নির্বাচন হয় না। আমরা নির্বাচনের আগে ইসির কাছে
গিয়েছিলাম। তাদের বলেছিলাম নির্বাচনের ভূমিটা যেন সমতল হয়। ভোটাররা যেন
যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারে। প্রার্থী যেন তার ভোটারদের কাছে যেতে পারে।
আমাদের কোন দাবিই মানা হয়নি। সে কারণে গতকাল কি হয়েছে তা পুরো জাতি দেখেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে কমিশন রয়েছে, তার অধীনে সামনে কোন নির্বাচন হওয়া
সম্ভব না। উচিতও না। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র
ফিরিয়ে আনতে এ নির্বাচন কমিশনকে রাখলে হবে না। তাই জাতির বৃহত্তর স্বার্থে
তাদের থাকা চলবে না। পদত্যাগ করে সরে যেতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের
সদস্যসচিব শওকত বলেন, আদর্শ ঢাকা আন্দোলন একটি নাগরিক সংগঠন। এটি কোন
রাজনৈতিক দল নয়। তাই এই নির্বাচন বিষয়ে কোন কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা তাদের
নেই। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি
করপোরেশনে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও বিএনপি নেতা শিমুল
বিশ্বাসের কথোপকথনে বিএনপির নির্বাচন বর্জন পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে হয়েছে-
এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শওকত মাহমুদ বলেন, এটা ঠিক নয়। এটা
ভিত্তিহীন। খালেদা জিয়া সিরিয়াসলি নির্বাচন নিয়ে কাজ করেছেন। জীবনের ঝুঁকি
নিয়ে কাজ করেছেন। পরিকল্পিত হলে তা করতেন না। ভোটের দিন সকাল থেকে বিভিন্ন
কেন্দ্রের পরিস্থিতি দেখে আমরা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সংবাদ
সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ, সিনিয়র সাংবাদিক
মাহফুজ উল্লাহ, সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার ও ডিইউজের
সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
খালেদার সঙ্গে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের সাক্ষাৎ
এদিকে গতকাল রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের নেতারা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, মাহফুজ উল্লাহসহ সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে যান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা সিটি নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করেন। পরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকা উত্তরে বিএনপি সমর্থিত আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
খালেদার সঙ্গে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের সাক্ষাৎ
এদিকে গতকাল রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের নেতারা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, মাহফুজ উল্লাহসহ সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে যান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা সিটি নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করেন। পরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকা উত্তরে বিএনপি সমর্থিত আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
No comments