সাড়া জাগাতে ব্যর্থ! by মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন

ডিজিটাল
প্রযুক্তিতে চলচ্চিত্র নির্মাণের হিড়িক পড়ে যাওয়ায় নতুন নায়ক-নায়িকা,
বিশেষ করে নায়িকা আসছে বানের স্রোতের মতো। অধিকাংশ প্রযোজক পরিচালক রীতিমতো
চোখ-কান বন্ধ করে নতুন নায়িকা আনছেন। ছবি নির্মাণ করছেন। কিন্তু এসব
নায়িকা দর্শক মনে সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। গত বছরের পুরোটা ছিল নতুন
নায়িকাদের ব্যর্থতায় ভরা। রেকর্ড সংখ্যক নতুন নায়িকা এসেছেন। কিন্তু কারও
ভাগ্যেই টিকে থাকার মতো সাফল্য জোটেনি। বরং ব্যর্থতার পাল্লা ভারি হয়েছে।
লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার ফারিয়া, প্রসূন আজাদ, ঈতিশা, সেরাকণ্ঠ সাবিলা
সাবি, মৌমিতা, মিষ্টি জান্নাত, মিম চৌধুরী, রুহি, প্রিয়া আমান, তানিয়া,
পুষ্পিতা, সিমি, বীথি এবং নতুন বছরের শুরুতে এসে অমৃতা খান কোন আশার আলো
জ্বালাতে পারেননি। শাবনাজ, মৌসুমী, শাবনূর, শাহনাজ, পপি, পূর্ণিমার পর আশার
সঞ্চার করেছিলেন অপু বিশ্বাস, নিপুণ, সাহারা ও বর্ষা। এরপর মাহিয়া মাহি।
ববি ও আঁচল রয়েছেন আশা-নিরাশার মাঝখানে। এদের পরপরই উল্লিখিত নতুনদের নিয়ে
কিছু আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার, নিম্নমানের
চলচ্চিত্র নির্মাণ, নতুনদের এনে প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ না
নেয়ার কারণে আনকোড়া নতুনদের সঙ্গে এক-দুই ছবির নায়িকা লাক্স চ্যানেল আই
সুপারস্টার জাকিয়া বারী মম ও বিদ্যা সিনহা সাহা মীম এবং এক ছবির নায়িকা
নিঝুম রুবিনাও ব্যর্থ হয়েছেন দর্শক আকর্ষণে। তার পরও নতুন নায়িকা আনছেন
প্রযোজক পরিচালকরা। অনেক প্রযোজক নিজেদের নায়িকার জন্যই ছবি প্রযোজনা
করছেন। পরিচালকরাও রুটি-রুজির তাগিদে প্রযোজকের চাহিদা পূরণ করছেন। কিন্তু
কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রযোজকদের ভয়ে পরিচালকরাও নায়িকাদের তুলে ধরতে
পারছেন না দর্শকদের পছন্দমতো। প্রচার প্রচারণাও চালাতে পারছেন না অর্থনৈতিক
কারণে। প্রযোজককে একরকম বাজেটের কথা বলে তার চেয়েও অধিক বাজেটে ছবি
নির্মাণ করছেন অনেক পরিচালক। শেষে মুক্তি দিতে গিয়ে পড়েছেন অর্থ সঙ্কটে।
তখন প্রচার-প্রচারণার চেয়ে ছবি মুক্তি দেয়াই তাদের কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়।
ফলে কেবল পোস্টার দেখে নতুন নায়িকাদের দর্শক ঠিকমতো চিনতে পারেন না। তাতে
তেমন আগ্রহও পায় না। দর্শক আগ্রহ না থাকায় আশানুরূপ সাফল্য কারও ভাগ্যেই
জুটছে না। এখন প্রতিযোগিতায় আছেন মাহি, ববি, আঁচল ও আইরিন। বর্ষা নিজেদের
বাইরে ছবিতে কাজ করেন না। মৌসুমী গুরুত্ব দিচ্ছেন চরিত্রের প্রতি। শাবনূর,
পপি, পূর্ণিমা, সাহারার পর অপু বিশ্বাসের অবস্থানও এখন নড়বড়ে। আলোচনায় আছেন
কেবলই পরী মণি। কোন ছবি মুক্তি না পেলেও অনেক ছবির নায়িকা হয়ে তিনি বেশ
আলোচিত। তবে অবস্থান বোঝা যাবে ছবি মুক্তির পর। তার পাশাপাশি আরও বেশ ক’জন
নতুন নায়িকা আসছেন। প্রিয়ন্তি পরী, তানিয়া বৃষ্টি, তানহা তানিয়া, মৌসুমী
হামিদ, টিটান চৌধুরী, অরিন। সেই সঙ্গে ছোট পর্দার প্রিয়মুখ নওশিন,
জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়াসহ অনেকেই অপেক্ষা করছেন বড় পর্দায় অভিষিক্ত হওয়ার।
এদের মধ্যে কেউ যদি চমক সৃষ্টি করতে পারেন, দর্শক মনে সাড়া জাগাতে পারেন
তাহলে চলচ্চিত্র শিল্পে নবজোয়ার সৃষ্টি হবে। যদি ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা
অব্যাহত থাকে, তাহলে নতুন নায়িকা, নতুন সিনেমা, নতুন প্রযুক্তি- সবকিছুই
গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। যে অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধান পাওয়া চলচ্চিত্র
শিল্পের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে বলে চলচ্চিত্রবোদ্ধারা আশঙ্কা করছেন।
No comments