রাজনৈতিক দলগুলোও তথ্য অধিকার আইনের আওতায়
ভারতের কংগ্রেস, বিজেপিসহ ছয়টি জাতীয় রাজনৈতিক দলকে তথ্য অধিকার আইনের (আরটিআই) আওতায় নিয়ে আসার রায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন (সিআইসি)। এ ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রায়ের আওতায় বাকি চারটি দল হচ্ছে সিপিআই, সিপিআই (এম), বহুজন সমাজ পার্টি ও শারদ পাওয়ারের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে দলগুলো ঠিক করবে, তারা সিআইসির এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করবে কি না। তবে ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস এরই মধ্যে রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, এ ধরনের ‘অদূরদর্শী’ পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তথ্য কমিশন গত সোমবার ৫৪ পৃষ্ঠার এক আদেশে বলেছে, ওই ছয়টি জাতীয় দলকে কেন্দ্রীয় সরকার উল্লেখযোগ্য হারে অর্থ দিয়েছে, যদিও তা পরোক্ষভাবে। রায়ে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোরও আরটিআই আইনের আওতায় ‘সর্বসাধারণের আজ্ঞাধীন হওয়ার বৈশিষ্ট্য’ রয়েছে। কারণ, তারা জনসাধারণকে নিয়েই কাজ করে থাকে। কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে। তবে তারা যদি তা না করে অথবা করেও ব্যর্থ হয়, তবে শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো আরটিআই আইনের আওতাভুক্ত হবে। তখন কোন দল কীভাবে ও কার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে, কীভাবে তা খরচ করছে, নির্বাচনে কাদের প্রার্থী করছে কিংবা সরকারের কাছ থেকে কতটা সাহায্য পাচ্ছে, সবকিছুই সাধারণ মানুষকে জানাতে বাধ্য থাকবে। দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইসি এই রায় দেয়। এর মধ্যে একটি আবেদন করেছিল অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) নামের একটি সংগঠন। আরেকটি করেছিলেন তথ্য অধিকার নিয়ে কাজ করা মানবাধিকারকর্মী এস সি আগরওয়াল। রায়ে সিআইসি রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো আবেদনের বিষয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে জনসংযোগ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া তাদের আইনি বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শনেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। একমাত্র সিপিআই এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে ছিল। দলটির নেতা সাংসদ গুরুদাস গুপ্ত সিআইসির রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, একমাত্র এভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্নীতি কমানো সম্ভব। বাকি দলগুলোর অধিকাংশই অতীতে এ ধরনের ব্যবস্থার সমালোচনা করেছে। কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিআই (এম) নেতারা জানিয়েছেন, দিন কয়েকের মধ্যেই তাঁরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জনার্দন ত্রিবেদি গতকাল মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে দ্বিমত পোষণ করছি। এ ধরনের ‘অদূরদর্শী’ পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনেক ক্ষতি ও ধ্বংস ডেকে আনবে।’
No comments