দুই দিনের ধর্মঘট ডেকেছে ট্রেড ইউনিয়ন জোট
তুরস্কের চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সংহতি জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সে দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলো দুই দিনের ধর্মঘট ডেকেছে। সোমবার রাতভর রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়। খেস্ক নামের বামপন্থী ১১টি শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ট্রেড ইউনিয়ন জোট ধর্মঘটের ডাক দেয়। এই জোট দুই লাখ ৪০ হাজারের মতো শ্রমিকের প্রতিনিধিত্ব করে। সংগঠনটির অভিযোগ, সরকার দেশে ‘ত্রাসের রাজত্ব’ কায়েম করতে চাইছে। তারা গণতন্ত্রের ভিতকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল চার দিনের সফরে মরক্কো গেছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান। মরক্কোর রাজধানী রাবাতে পৌঁছে তিনি দাবি করেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি ‘নিরীহ’ জনগণকে উসকানি দিচ্ছে। আর যাঁরা সংবাদ তৈরি করতে গিয়ে এটাকে ‘তুর্কি বসন্ত’ বলে চালিয়ে দিচ্ছেন, তাঁরা তুরস্ককে সত্যিকার অর্থে জানেন না। প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান বলেন, ‘আমি মরক্কো থেকে দেশে ফিরলেই সংকটের সমাধান হয়ে যাবে।’ এসব ঘটনায় রিপাবলিকানস পিপলস পার্টি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কিছুটা সুর মিলিয়ে বলেছেন, প্রতিবাদ-সমাবেশ করার অধিকার সবারই আছে। তবে তা শান্তিপূর্ণ হতে হবে। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, চলমান এই আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুলের মধ্যে বিরোধের বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। এদিকে উপপ্রধানমন্ত্রী বুয়েন্ত আরেঞ্চ গতকাল বলেছেন, সত্যিই যাঁরা ইস্তাম্বুলের পার্ক রক্ষার জন্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। আরেঞ্চ বলেন, ‘লোকের মন থেকে সংশয় দূর করতে হবে। এ জন্য তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ উপপ্রধানমন্ত্রী আরেঞ্চ আরও বলেন, ‘বৈচিত্র্যই তুরস্কের বড় সম্পদ। কাজেই সরকার ভিন্ন ভিন্ন মানুষের জীবনযাত্রার পদ্ধতিকে শ্রদ্ধা করে।’
সোমবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ইস্তাম্বুলের তাসকিম স্কয়ারে জড়ো হন। বিক্ষোভকারীদের অনেকে এ সময় এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। তাঁদের হাতে লাল পতাকা ও ব্যানার দেখা যায়। বেসিকতাস শহরে এরদোয়ানের দলের কার্যালয়ের কাছে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ: এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ‘তুরস্কের পুলিশ বাড়াবাড়ি করছে। আমাদের প্রত্যাশা, এ ঘটনার পুরোপুরি তদন্ত হবে এবং পুলিশকে এ ধরনের তৎপরতা থেকে বিরত রাখা হবে।’ বিবিসি ও রয়টার্স।
No comments