ক্ষতিপূরণ চাইতে তাজরীনের সুমি যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র
রাজনৈতিক ডামাডোলে তাজরীন ট্রাজেডি’র কথা
ভুলতে বসেছে অনেকেই। কিন্তু সুমি ভুলতে পারেননি। দাউ দাউ করে যখন কারখানাটি
পুড়ছিলো, আর সেই সাথে পুড়ে ছাই হচ্ছিলো শতাধিক তাজা দেহ-প্রাণ, তখন
ভাগ্যবান আরও কিছু শ্রমিকের মতোই বেঁচে গিয়েছিলেন সুমি আবেদীন।
২৪
বছরের এই তরুণী পোশাক কর্মী সেই রাতে সাত তলা ভবনটির চতূর্থ তলা থেকে
লাফিয়ে পড়েছিলেন। এই সুমিই এখন সোচ্চার তার নিহত-আহত সহকর্মীদের পক্ষে। এ
সপ্তাহেই সুমি যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র। সুমি নিজেই কথা বলবেন সেই সব
কোম্পানির কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে যাদের পণ্য পাওয়া গিয়েছিলো সেদিনের পুড়ে
যাওয়া পোশাকের ধংশস্তুপের মধ্যে।
সুমি একা নন, তিনি মূলত যোগ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমঅধিকার কর্মীদের সঙ্গে। তারা সবাই মিলে জড়ো হবেন ওয়াল-মার্ট স্টোরস ইনকপোরেটেড এবং ওয়াল্ট ডিজনি’র সদর দফতরের সামনে। এছাড়া এসব কোম্পানির কর্তা ব্যক্তিদের বাড়ির সামনেও দেখা যাবে সুমিসহ অন্যদের।
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতাদের জন্য তৈরি পোশাকগুলো বিদেশ থেকে অত্যন্ত নি¤œমানের কর্ম-পরিবেশ থেকে বানিয়ে আনা হচ্ছে, এই অভিযোগকে সামনে এনেই এমন একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমঅধিকার সংগঠনগুলো।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুমি আবেদীন বলেন, “তাজরীনের হতাহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতে এবং ফ্যাক্টরিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পক্ষে কথা বলতেই আমি আমেরিকা যাচ্ছি।”
“পোশাক বানাতে গিয়ে শ্রমিক মারা যাবে এমনটা আর চলতে পারে না,” বলেন সুমি।
গত ২৫ নভেম্বর রাতে তাজরীনের ওই অগ্নিদুর্ঘটনায় ১১২ শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।
ওয়াল-মার্টের নারী মুখোপাত্র অবশ্য ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে ডব্লিউএসজে। তিনি সংবাদপত্রটিকে বলেছেন, তারা এখন বাংলাদেশের গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল শিল্পে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক কিছু কর্মসূচিতে অর্থ বিনিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তাজরীনের পুড়ে যাওয়া স্তুপে ওয়াল-মার্টের লোগো লাগানো কাপড় পাওয়া গেলেও কোম্পানিটি বলছে তাদের পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাদের না জানিয়েই তাজরীনকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছিলো।
আর ওয়াল্ট ডিজনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ডব্লিউএসজে কে কোনো মন্তব্য দিতেই রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক অধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এই ক্যাম্পেইনে তারা ৫০ লাখ ডলার ফান্ড তোলার চেষ্টা করবে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের যেসব কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কাপড় বানিয়ে নেয় তারা যাতে বাংলাদেশের অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা চুক্তি মেনেই তাদের কাজ করায় সেটা নিশ্চিত করার দাবি তুলবে। যুক্তরাষ্ট্রের পিভিএইচ কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন কোম্পানি শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়ন মিলে ২০১২ সালেই এই অগ্নিনিরাপত্তা চুক্তিটি স্বাক্ষর করে। পিভিএইচ কেলভিন ক্লেইন ও টমি হিলফিগারের মতো ব্র্যান্ডের প্রস্তুতকারক।
সুমি আবেদীনের এই সফরে অর্থায়ন করছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম অধিকার সংগঠনগুলো।
সুমি আবেদীনও ওই রাতে শত শত শ্রমিকের মতো ফ্যাক্টরির মধ্যেই অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে তিনিও অন্যদের সঙ্গে ছুটে যান সিঁড়ির দিকে। কিন্তু সুপারভাইজার তাদের কাজে ফিরে যেতে বলেই এই বলে যে এটি মিথ্যা অ্যালার্ম।
নিমেষেই চারিদিক কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। বিগি¦দিক ছুটতে শুরু করি এটা-সেটার সঙ্গে ধাক্কা খেতে খেতে। কয়েকজন মিলে ততক্ষণে একটি জানালা ভেঙ্গে ফেলে। সেখান দিয়েই অনেকের মতো আমিও লাফিয়ে পড়ি।”
নিচে পড়ে সুমির ডান পা ও বাম হাত ভেঙ্গে যায়। কেটে যায় পায়ের পাতাও।
সুমি জানান, ঘটনার পর তিনি ফ্যক্টরি থেকে হাজার টাকা ও বিজিএমইএ থেকে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তবে পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তার পক্ষে কাজে ফিরে যাওয় আর সম্ভব নয়।
সুমি জানান, তিনি সেদিন শন কম্বস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য শর্টস সেলাই করছিলেন। শন কম্বসের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে পায়নি ডব্লিউএসজে।
এদিকে তাজরীনে যেসব বিশ্বখ্যাত কোম্পানির পণ্য পাওয়া গেছে তাদের সবগুলোকেই আগামী ১৫ এপ্রিল একটি সভায় ডেকেছে জেনেভাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন। প্রতিষ্ঠানটির সদরদফতরে এই সভাটি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ইন্ডাস্ট্রিঅল বলেছে তারা খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে খুব কমই সাড়া পাচ্ছে।
বিশ্বের ১৪০টি দেশে পাঁচ কোটি শ্রমিকের প্রতিনিধিত্বকারী ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দরকষাকষিতে কাজ করেছে। গত জানুয়ারিতে স্মার্ট এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরির আগুনে ৭ শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে। সে ঘটনায়ও ক্ষতিপূরণের পক্ষে কাজ করে এই ইউনিয়নটি।
সুমি একা নন, তিনি মূলত যোগ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমঅধিকার কর্মীদের সঙ্গে। তারা সবাই মিলে জড়ো হবেন ওয়াল-মার্ট স্টোরস ইনকপোরেটেড এবং ওয়াল্ট ডিজনি’র সদর দফতরের সামনে। এছাড়া এসব কোম্পানির কর্তা ব্যক্তিদের বাড়ির সামনেও দেখা যাবে সুমিসহ অন্যদের।
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতাদের জন্য তৈরি পোশাকগুলো বিদেশ থেকে অত্যন্ত নি¤œমানের কর্ম-পরিবেশ থেকে বানিয়ে আনা হচ্ছে, এই অভিযোগকে সামনে এনেই এমন একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমঅধিকার সংগঠনগুলো।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুমি আবেদীন বলেন, “তাজরীনের হতাহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতে এবং ফ্যাক্টরিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পক্ষে কথা বলতেই আমি আমেরিকা যাচ্ছি।”
“পোশাক বানাতে গিয়ে শ্রমিক মারা যাবে এমনটা আর চলতে পারে না,” বলেন সুমি।
গত ২৫ নভেম্বর রাতে তাজরীনের ওই অগ্নিদুর্ঘটনায় ১১২ শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।
ওয়াল-মার্টের নারী মুখোপাত্র অবশ্য ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে ডব্লিউএসজে। তিনি সংবাদপত্রটিকে বলেছেন, তারা এখন বাংলাদেশের গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল শিল্পে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক কিছু কর্মসূচিতে অর্থ বিনিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তাজরীনের পুড়ে যাওয়া স্তুপে ওয়াল-মার্টের লোগো লাগানো কাপড় পাওয়া গেলেও কোম্পানিটি বলছে তাদের পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাদের না জানিয়েই তাজরীনকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছিলো।
আর ওয়াল্ট ডিজনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ডব্লিউএসজে কে কোনো মন্তব্য দিতেই রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক অধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এই ক্যাম্পেইনে তারা ৫০ লাখ ডলার ফান্ড তোলার চেষ্টা করবে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের যেসব কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কাপড় বানিয়ে নেয় তারা যাতে বাংলাদেশের অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা চুক্তি মেনেই তাদের কাজ করায় সেটা নিশ্চিত করার দাবি তুলবে। যুক্তরাষ্ট্রের পিভিএইচ কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন কোম্পানি শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়ন মিলে ২০১২ সালেই এই অগ্নিনিরাপত্তা চুক্তিটি স্বাক্ষর করে। পিভিএইচ কেলভিন ক্লেইন ও টমি হিলফিগারের মতো ব্র্যান্ডের প্রস্তুতকারক।
সুমি আবেদীনের এই সফরে অর্থায়ন করছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম অধিকার সংগঠনগুলো।
সুমি আবেদীনও ওই রাতে শত শত শ্রমিকের মতো ফ্যাক্টরির মধ্যেই অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে তিনিও অন্যদের সঙ্গে ছুটে যান সিঁড়ির দিকে। কিন্তু সুপারভাইজার তাদের কাজে ফিরে যেতে বলেই এই বলে যে এটি মিথ্যা অ্যালার্ম।
নিমেষেই চারিদিক কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। বিগি¦দিক ছুটতে শুরু করি এটা-সেটার সঙ্গে ধাক্কা খেতে খেতে। কয়েকজন মিলে ততক্ষণে একটি জানালা ভেঙ্গে ফেলে। সেখান দিয়েই অনেকের মতো আমিও লাফিয়ে পড়ি।”
নিচে পড়ে সুমির ডান পা ও বাম হাত ভেঙ্গে যায়। কেটে যায় পায়ের পাতাও।
সুমি জানান, ঘটনার পর তিনি ফ্যক্টরি থেকে হাজার টাকা ও বিজিএমইএ থেকে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তবে পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তার পক্ষে কাজে ফিরে যাওয় আর সম্ভব নয়।
সুমি জানান, তিনি সেদিন শন কম্বস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য শর্টস সেলাই করছিলেন। শন কম্বসের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে পায়নি ডব্লিউএসজে।
এদিকে তাজরীনে যেসব বিশ্বখ্যাত কোম্পানির পণ্য পাওয়া গেছে তাদের সবগুলোকেই আগামী ১৫ এপ্রিল একটি সভায় ডেকেছে জেনেভাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন। প্রতিষ্ঠানটির সদরদফতরে এই সভাটি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ইন্ডাস্ট্রিঅল বলেছে তারা খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে খুব কমই সাড়া পাচ্ছে।
বিশ্বের ১৪০টি দেশে পাঁচ কোটি শ্রমিকের প্রতিনিধিত্বকারী ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দরকষাকষিতে কাজ করেছে। গত জানুয়ারিতে স্মার্ট এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরির আগুনে ৭ শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে। সে ঘটনায়ও ক্ষতিপূরণের পক্ষে কাজ করে এই ইউনিয়নটি।
No comments