পবিত্র কোরআনের আলো-বনি ইসরাইলকে আপাতত মিসরেই বসবাস করার নির্দেশ
৮৪। ওয়াক্বা-লা মূছা- ইয়া-ক্বাওমি ইন কুনতুম আ-মানতুম বিল্লা-হি ফাআ'লাইহি তাওয়াক্কালূ ইন কুনতুম্ মুছ্লিমীন।
৮৫। ফাক্বা-লূ আ'লা ল্লা-হি তাওয়াক্কালনা-; রাব্বা-না লা-তাজআ'ল্না- ফিত্নাতা লি্লক্বাওমিয্ যা-লিমীন।
৮৫। ফাক্বা-লূ আ'লা ল্লা-হি তাওয়াক্কালনা-; রাব্বা-না লা-তাজআ'ল্না- ফিত্নাতা লি্লক্বাওমিয্ যা-লিমীন।
৮৬। ওয়ানাজ্জিনা- বিরাহ্মাতিকা মিনাল ক্বাওমিল কা-ফিরীন।
৮৭। ওয়াআওহাইনা- ইলা- মূছা- ওয়াআখীহি আন তাবাওয়্যাআ- লিক্বাওমিকুমা- বিমিস্রা বুইঊতাওঁ ওয়াজ্আ'লূ বুইঊতাকুম কি্বব্লাতাওঁ ওয়াআক্বীমু চ্ছালা-হ্; ওয়াবাশ্শিরিল মু'মিনীন। [সুরা : সূরা ইউনুস, আয়াত : ৮৪-৮৭]
অনুবাদ
৮৪. মুসা বললেন : হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা সত্যিই আল্লাহর ওপর ইমান এনে থাকলে তাঁর ওপর ভরসা করো। যদি সত্যিই তোমরা তাঁর অনুগত হয়ে থাকো।
৮৫. জবাবে তারা বলল, আমরা আল্লাহর ওপরই ভরসা করলাম। হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এই জালেম সম্প্রদায়ের কলহে লিপ্ত করো না।
৮৬. আর তোমার নিজ রহমতে আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের হাত থেকে মুক্ত করো।
৮৭. আমি মুসা ও তার ভাইয়ের (হারুন) কাছে ওহি পাঠালাম (এই বলে যে) তোমরা তোমাদের সম্প্রদায়কে মিসরের আবাদভূমিতেই (আপাতত) বসবাস করার নির্দেশ দাও এবং তোমাদের বাসস্থানকেই নামাজের স্থান বানিয়ে নাও। নামাজ কায়েম করো এবং মুমিনদের জন্য সুসংবাদ প্রদান করো।
ব্যাখ্যা
প্রথমোক্ত তিনটি আয়াতে আল্লাহর ওপর নির্ভর করার গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষ করে বনি ইসরাইল সম্প্রদায় মিসরে তাদের চরম সংকটময় মুহূর্তে কী করবে, সে ব্যাপারেই উপদেশ দেওয়া হচ্ছিল। তখন তাদের প্রথম কর্তব্য ছিল আল্লাহর ওপর ভরসা করা এবং তার সাহায্য প্রার্থনা করা। ইমানদার বনি ইসরাইলরা তা-ই করেছিলেন। তারা পরাক্রমশালী ফারাও শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্তি চেয়েছিল। তারা জানত মিসরে ফারাও রাজবংশকে পরাজিত করা সম্ভব নয়, তাই তারা অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার কথাও ভেবেছিল এবং যেকোনোভাবে ফারাও শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজছিল। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর ওপর নির্ভর করাকেই অন্যতম উপায় হিসেবে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
৮৭ নম্বর আয়াতে বনী ইসরাইলকে হুকুম দেওয়া হয়েছে। তারা যেন আপাতত পালিয়ে না গিয়ে অর্থাৎ হিজরত না করে মিসরে নিজেদের অবস্থানেই বসবাস করতে থাকে। এ দিকে মুসার সঙ্গে ফিরআউনের ধর্ম বিশ্বাসের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় ধর্মীয় কারণেও বনী ইসরাইলের ওপর অত্যাচার বাড়তে থাকে। মসজিদে প্রকাশ্যে নামাজ আদায় করা বনি ইসরাইলের জন্য ঝুঁকি হয়ে ওঠে। যদিও তখন মসজিদে নামাজ আদায় করারই বিধান ছিল। এই আয়াতের মাধ্যমে অপারগতার কারণে কাবাগৃহকে কেবলা বানানো বা কাবাগৃহে নামাজ আদায় করার অনুমতি প্রদান করা হয়। এই আয়াতটির মাধ্যমে বনি ইসরাইলের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়েছে। এক. চরম প্রতিকূল অবস্থায়ও মিসরে থেকে যাওয়া। দুই. গোপনে এক আল্লাহর উপাসনা করা। উল্লেখ করা প্রয়োজন, মিসর সাম্রাজ্য তখন অত্যন্ত বিশাল ছিল। ফারাওয়ের সেনা দলের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচা সহজ ছিল না। পালানোর চেষ্টা করা হলে সম্রাটের আইন অনুযায়ী তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারত। সুতরাং তাদের ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ ছিল বাস্তবানুগ।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৮৭। ওয়াআওহাইনা- ইলা- মূছা- ওয়াআখীহি আন তাবাওয়্যাআ- লিক্বাওমিকুমা- বিমিস্রা বুইঊতাওঁ ওয়াজ্আ'লূ বুইঊতাকুম কি্বব্লাতাওঁ ওয়াআক্বীমু চ্ছালা-হ্; ওয়াবাশ্শিরিল মু'মিনীন। [সুরা : সূরা ইউনুস, আয়াত : ৮৪-৮৭]
অনুবাদ
৮৪. মুসা বললেন : হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা সত্যিই আল্লাহর ওপর ইমান এনে থাকলে তাঁর ওপর ভরসা করো। যদি সত্যিই তোমরা তাঁর অনুগত হয়ে থাকো।
৮৫. জবাবে তারা বলল, আমরা আল্লাহর ওপরই ভরসা করলাম। হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এই জালেম সম্প্রদায়ের কলহে লিপ্ত করো না।
৮৬. আর তোমার নিজ রহমতে আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের হাত থেকে মুক্ত করো।
৮৭. আমি মুসা ও তার ভাইয়ের (হারুন) কাছে ওহি পাঠালাম (এই বলে যে) তোমরা তোমাদের সম্প্রদায়কে মিসরের আবাদভূমিতেই (আপাতত) বসবাস করার নির্দেশ দাও এবং তোমাদের বাসস্থানকেই নামাজের স্থান বানিয়ে নাও। নামাজ কায়েম করো এবং মুমিনদের জন্য সুসংবাদ প্রদান করো।
ব্যাখ্যা
প্রথমোক্ত তিনটি আয়াতে আল্লাহর ওপর নির্ভর করার গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষ করে বনি ইসরাইল সম্প্রদায় মিসরে তাদের চরম সংকটময় মুহূর্তে কী করবে, সে ব্যাপারেই উপদেশ দেওয়া হচ্ছিল। তখন তাদের প্রথম কর্তব্য ছিল আল্লাহর ওপর ভরসা করা এবং তার সাহায্য প্রার্থনা করা। ইমানদার বনি ইসরাইলরা তা-ই করেছিলেন। তারা পরাক্রমশালী ফারাও শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্তি চেয়েছিল। তারা জানত মিসরে ফারাও রাজবংশকে পরাজিত করা সম্ভব নয়, তাই তারা অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার কথাও ভেবেছিল এবং যেকোনোভাবে ফারাও শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজছিল। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর ওপর নির্ভর করাকেই অন্যতম উপায় হিসেবে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
৮৭ নম্বর আয়াতে বনী ইসরাইলকে হুকুম দেওয়া হয়েছে। তারা যেন আপাতত পালিয়ে না গিয়ে অর্থাৎ হিজরত না করে মিসরে নিজেদের অবস্থানেই বসবাস করতে থাকে। এ দিকে মুসার সঙ্গে ফিরআউনের ধর্ম বিশ্বাসের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় ধর্মীয় কারণেও বনী ইসরাইলের ওপর অত্যাচার বাড়তে থাকে। মসজিদে প্রকাশ্যে নামাজ আদায় করা বনি ইসরাইলের জন্য ঝুঁকি হয়ে ওঠে। যদিও তখন মসজিদে নামাজ আদায় করারই বিধান ছিল। এই আয়াতের মাধ্যমে অপারগতার কারণে কাবাগৃহকে কেবলা বানানো বা কাবাগৃহে নামাজ আদায় করার অনুমতি প্রদান করা হয়। এই আয়াতটির মাধ্যমে বনি ইসরাইলের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়েছে। এক. চরম প্রতিকূল অবস্থায়ও মিসরে থেকে যাওয়া। দুই. গোপনে এক আল্লাহর উপাসনা করা। উল্লেখ করা প্রয়োজন, মিসর সাম্রাজ্য তখন অত্যন্ত বিশাল ছিল। ফারাওয়ের সেনা দলের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচা সহজ ছিল না। পালানোর চেষ্টা করা হলে সম্রাটের আইন অনুযায়ী তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারত। সুতরাং তাদের ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ ছিল বাস্তবানুগ।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments