‘১৪-১৬ জন জড়িত’

তকাল বৃহস্পতিবার সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। সেনাবাহিনীর কিছু সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার অভ্যুত্থান চেষ্টা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়। এক প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়, ১৪ থেকে ১৬ জন এই অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত।


প্রশ্ন: সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা কী ধরনের ছিল, এটা আপনারা থামাতে পেরেছেন কি না।
উত্তর: এটা একটা অপচেষ্টা ছিল। আমরা কমান্ড পর্যায়ে সবাই অবগত হয়েছি। আমরা সে চেষ্টা রহিত করতে পেরেছি।
প্রশ্ন: চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কতজন লোক এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে আপনারা জানতে পেরেছেন।
উত্তর: আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, কিছুসংখ্যক লোক এ ঘটনায় জড়িত ছিল। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে পুরো চিত্রটা তদন্ত শেষ হওয়ার আগে বলা যাবে না।
প্রশ্ন: কিছুদিন আগে একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, সেনাবাহিনীতে গুমের ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে মেজর জিয়া বা অন্যদের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না।
উত্তর: না এটা ঠিক না। আর সংশ্লিষ্টতার কথা তদন্ত শেষ হওয়ার আগে বলা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রশ্ন: এ ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের নাম কি বলা যাবে?
উত্তর: আমরা বলেছি, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এহসান ইউসুফ, মেজর জাকির হোসেন ও চাকরিরত মেজর জিয়ার নাম এখন পর্যন্ত পেয়েছি। জিয়া পলাতক আছেন।
প্রশ্ন: এটা আসলে কী ধরনের অভ্যুত্থানের অপচেষ্টা ছিল।
উত্তর: এটা আগেই বলেছি এটা একটা অপচেষ্টা ছিল, যেটা যথাসময়ে কমান্ড চ্যানেল জানতে পারে।
প্রশ্ন: এর আগে সংবাদপত্রে একজন মেজর জেনারেলের নাম এসেছে, তাঁকে গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। তাঁর বর্তমান অবস্থান কী। আসলে কি তিনি গৃহবন্দী?
উত্তর: না এটা ঠিক না। যার কথা বলছেন উনি লগ এরিয়া সদরে সংযুক্ত আছেন। তিনি সপরিবারে সঙ্গে নিজের বাসায় আছেন। গৃহবন্দী বলে কোনো কিছু সেনা আইনে নেই। উনি ফ্রি আছেন।
প্রশ্ন: যে অপরাধের কথা এখন বলা হচ্ছে, সেই অপরাধের শাস্তি কী রকম হতে পারে?
উত্তর: সেনা আইন ৩১-এর সর্বোচ্চ সাজা হলো দেশের সর্বোচ্চ সাজা। তবে অপরাধের গভীরতার ভিত্তিতে সাজা হবে।
প্রশ্ন: অভ্যুত্থান-চেষ্টার সঙ্গে কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বা শক্তি জড়িত ছিল কি না। এ ঘটনায় জড়িত ইশরাককে দেশে আনা সম্ভব কি না।
উত্তর: কারা সংশ্লিষ্ট আছে, কারা নেই—সেটা আমরা এখনই উড়িয়ে দিতে পারি না। সবকিছু বিবেচনা করেই তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হলে আমরা কিছু বলতে পারছি না। ইশরাক কোথায় আছেন, সেটা জানার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে।
প্রশ্ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধাপরাধের যে বিচার চলছে, তার বিরোধিতায় সেনাবাহিনীর একটি অংশ জড়িত আছে। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী।
উত্তর: কোনো সম্ভাবনাকে আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না।
প্রশ্ন: অভ্যুত্থান-চেষ্টায় জড়িতরা সেনাবাহিনীর কোন স্তরের কর্মকর্তা? উচ্চ পদের কেউ কি আছেন?
উত্তর: এঁরা সংখ্যায় খুব কম। যাঁদের কথা বলা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে মধ্যম সারির লোকজন বেশি। তবে একজন অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেলের সংশ্লিষ্টতা আমরা পেয়েছি।
প্রশ্ন: ঢাকা সেনানিবাসের বাইরে কি এ ধরনের প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছে?
উত্তর: যিনি পলাতক আছেন তিনি ঢাকা সেনানিবাসের বাইরের দু-একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে যা হয়েছিল তার সবই টেলিফোন বা ই-মেইলের মাধ্যমে। কোনো মুভমেন্ট হতে পারেনি।
প্রশ্ন: আপনারা ধর্মভিত্তিক সংগঠন, দল ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের কথা বলছেন। আমরা জানি, কোন ব্যক্তি গুপ্তহত্যার কথা বলেছেন। তাঁর ব্যাপারে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না।
উত্তর: আমরা কারও নাম বলিনি। যা বলেছি আপনারা তা শুনেছেন।
প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত কতজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছেন। কত জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
উত্তর: তিনজনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন পালিয়ে গেছেন। তবে সব মিলে এ সংখ্যা ১৪-১৬ জনের বেশি হবে না।
প্রশ্ন: নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্রীরের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু আছে বলে মনে করেন।
উত্তর: ই-মেইলে দেওয়া বক্তব্য হিযবুত তাহ্রীরের। তা ছাড়া যে প্রচারপত্রের ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানেও তাহ্রীরের বক্তব্য আছে।
প্রশ্ন: অভিযোগ আছে, জড়িতরা সবাই মিলিটারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে (এমআইএসটি) ছিলেন। তাহলে কি ওই ইনস্টিটিউটের কোর্সে কোনো ত্রুটি আছে যে সেখানে যাওয়ার পর সবাই ধর্মান্ধ হয়ে যাচ্ছেন?
উত্তর: না, সেখানে পাঁচ হাজার সেনাসদস্য পড়াশোনা করছেন। হয়তো কয়েকজন লোক এ কাজ করেছে। সবাই তো আর এর সঙ্গে জড়িত নয়।

No comments

Powered by Blogger.