শিক্ষকদের রাজনীতি -আইন ভঙ্গের প্রতিকার দেখতে চাই
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সিলেট বিভাগ আয়োজিত তৃণমূল পর্যায়ের এক বড় সভায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের উপস্থিতি এবং জননেতাদের চেয়েও জ্বালাময়ী ভঙ্গিতে তাঁদের বক্তৃতা করার খবর ওই শহরের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই শিক্ষকদের বক্তৃতা দেখে ও শুনে এমনকি বিএনপির নিয়মিত নেতা-কর্মীদেরও তাক লেগেছে। বলাবলি হয়েছে, তাঁরা নাকি নেতাদেরও হার মানিয়েছেন।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় দুটোর আইন অনুযায়ী কাজটা ঠিক হয়নি। শাবিপ্রবির আইনের ৫১(২) ধারায় স্পষ্ট ভাষায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের রাজনৈতিক মতামত পোষণের স্বাধীনতা থাকবে। তবে তিনি রাজনৈতিক মতামত প্রচার বা নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন না। আর সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ৪৬(৫) ধারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত করতে পারবেন না। বিএনপির সেদিনের সভায় শাবিপ্রবির একজন শিক্ষক সভাপতিত্ব করেছেন। তাহলে এটা স্পষ্ট যে, ওই চার শিক্ষক সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় দুটির আইন ভঙ্গ করেছেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এ দেশে নতুন কোনো বিষয় নয়। বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়—১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের আওতাধীন এই চারটি বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দলীয় রাজনৈতিক লাইনে বিভক্ত। এমন নয় যে এর ফলে জাতীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নতি ঘটেছে; বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মতো মর্যাদাপূর্ণ পেশার কিছু গুণগত ও মর্যাদাগত অবনমন ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা, গবেষণা, জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দলীয় লাইনে শিক্ষক-রাজনীতি নেতিবাচক ছাত্ররাজনীতির জন্য ইন্ধনের কাজ করেছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে আবাসিক হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণকাজ, এমনকি ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক চলাফেরা-জীবনযাপনেও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বই হয়ে উঠেছে প্রধান বিষয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে পড়াশোনা, গবেষণা, সেমিনার, বিতর্ক ইত্যাদি বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত তাঁদের অবশ্যই থাকবে, কিন্তু তাই বলে তাঁরা রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করবেন, দলীয় নেতাদের আনুকূল্য-অনুগ্রহের জন্য দলীয় সভা ও কর্মসূচিতে যোগ দেবেন, রাজনৈতিক নেতাদের ঢঙে বক্তৃতা করবেন—এসব মোটেই বাঞ্ছিত নয়। এসবের মধ্য দিয়ে অন্তত নিজেদের শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকের মর্যাদা, গুরুত্ব ও সম্মান বাড়ে না।
শাবিপ্রবির উপাচার্য তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষকের বিএনপির সভায় যোগ দেওয়া সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আইন অনুযায়ী একজন শিক্ষক এ ধরনের অনুষ্ঠানে যেতে পারেন না। তবে আমি মনে করি, স্বায়ত্তশাসিত বা বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যদি এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন, তাহলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঠেকিয়ে লাভ কী?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হয়ে শাবিপ্রবির উপাচার্য কী করে এমন কথা বলতে পারলেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আইন আছে তা প্রয়োগ করার জন্য। মানুষ আশা করবে, বিশ্ববিদ্যালয় দুটোর বিদ্যমান আইন অনুযায়ী উল্লিখিত চার শিক্ষকের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় দুটোর আইন অনুযায়ী কাজটা ঠিক হয়নি। শাবিপ্রবির আইনের ৫১(২) ধারায় স্পষ্ট ভাষায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের রাজনৈতিক মতামত পোষণের স্বাধীনতা থাকবে। তবে তিনি রাজনৈতিক মতামত প্রচার বা নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন না। আর সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ৪৬(৫) ধারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত করতে পারবেন না। বিএনপির সেদিনের সভায় শাবিপ্রবির একজন শিক্ষক সভাপতিত্ব করেছেন। তাহলে এটা স্পষ্ট যে, ওই চার শিক্ষক সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় দুটির আইন ভঙ্গ করেছেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এ দেশে নতুন কোনো বিষয় নয়। বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়—১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের আওতাধীন এই চারটি বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দলীয় রাজনৈতিক লাইনে বিভক্ত। এমন নয় যে এর ফলে জাতীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নতি ঘটেছে; বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মতো মর্যাদাপূর্ণ পেশার কিছু গুণগত ও মর্যাদাগত অবনমন ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা, গবেষণা, জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দলীয় লাইনে শিক্ষক-রাজনীতি নেতিবাচক ছাত্ররাজনীতির জন্য ইন্ধনের কাজ করেছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে আবাসিক হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণকাজ, এমনকি ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক চলাফেরা-জীবনযাপনেও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বই হয়ে উঠেছে প্রধান বিষয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে পড়াশোনা, গবেষণা, সেমিনার, বিতর্ক ইত্যাদি বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত তাঁদের অবশ্যই থাকবে, কিন্তু তাই বলে তাঁরা রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করবেন, দলীয় নেতাদের আনুকূল্য-অনুগ্রহের জন্য দলীয় সভা ও কর্মসূচিতে যোগ দেবেন, রাজনৈতিক নেতাদের ঢঙে বক্তৃতা করবেন—এসব মোটেই বাঞ্ছিত নয়। এসবের মধ্য দিয়ে অন্তত নিজেদের শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকের মর্যাদা, গুরুত্ব ও সম্মান বাড়ে না।
শাবিপ্রবির উপাচার্য তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষকের বিএনপির সভায় যোগ দেওয়া সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আইন অনুযায়ী একজন শিক্ষক এ ধরনের অনুষ্ঠানে যেতে পারেন না। তবে আমি মনে করি, স্বায়ত্তশাসিত বা বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যদি এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন, তাহলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঠেকিয়ে লাভ কী?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হয়ে শাবিপ্রবির উপাচার্য কী করে এমন কথা বলতে পারলেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আইন আছে তা প্রয়োগ করার জন্য। মানুষ আশা করবে, বিশ্ববিদ্যালয় দুটোর বিদ্যমান আইন অনুযায়ী উল্লিখিত চার শিক্ষকের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
No comments