সাংবাদিকতার ওপর আঘাত -হামলাকারীদের শাস্তি দিতে হবে
চুয়াডাঙ্গার সরকারি দলের সাংসদের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী তত্পরতা সম্পর্কে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওই শহরের দুই সাংবাদিককে এলাকা ছেড়ে যেতে হয়েছে। তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, তাঁদের ওপর শারীরিক আক্রমণ চালানো হবে, এমনকি প্রাণে মেরে ফেলাও বিচিত্র নয়।
সত্যিই আক্রমণ চালানো হয়েছে। প্রথম আলোর চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি শাহ আলমের বাড়িতে গত বুধবার রাতে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী রামদাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। অবশ্য তারা তাঁকে পায়নি, কারণ এই সাংবাদিক আগেই বাড়ি ছেড়েছেন। তাঁর শিশুপুত্র ও শাশুড়িকে নিয়ে বাড়ির পেছনের পথ দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে হয়েছে তাঁর স্ত্রীকে। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের মধ্যে স্থানীয় সাংসদের সাবেক গাড়িচালককে প্রত্যক্ষদর্শীরা চিনতে পেরেছে। এটা পরিষ্কার যে, সাংসদের পেটোয়া বাহিনীই ওই হামলা চালিয়েছিল। হামলার আগে সাংসদের ভাই চুয়াডাঙ্গার মেয়রের বাসায় তারা সভাও করেছিল বলে জানা গেছে। হামলাকারীদের মধ্যে ভাড়াটে খুনিও ছিল।
সাংবাদিকের বাড়িতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রথমে ছিল নির্বিকার। ঢাকা থেকে পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টেলিফোন-আদেশ পাওয়ার আগে পর্যন্ত তারা সক্রিয় হয়নি। হামলাকারীরা সাংবাদিকের বাড়ি তছনছ করে চলে যাওয়ার পরই কেবল তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়, সরকারদলীয় স্থানীয় সাংসদের সন্ত্রাসী তত্পরতার বিরুদ্ধে সেখানকার আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও চুয়াডাঙ্গার আরেক সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ওই শহরের সংবাদকর্মীদের মধ্যে এখন স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাহীনতার ভীতি সৃষ্টি হয়েছে, যা তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধার কারণ হচ্ছে।
কিন্তু দিনবদলের অঙ্গীকার করে এসেছে যে সরকার, তার আমলে এমনটি হওয়ার কথা নয়। তারা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অবাধ তথ্যপ্রবাহ, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এই সরকারের লিখিত অঙ্গীকার। তথ্য অধিকার আইন পাস করেছে এই সরকার। অথচ একজন সাংসদের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের খবর জনগণকে জানানোর দায়ে সাংবাদিকের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে, কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না—এর উত্তর কী?
শুধু তা-ই নয়, সাজানো মামলার আসামি বানিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানির ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগের এক কর্মী যে মামলা করেছেন, তার আসামির তালিকায় প্রথম আলো ও আমার দেশ-এর চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিদের নাম ঢোকানো হয়েছে। তাঁদের একজনের বিরুদ্ধে ছিনতাই, অন্যজনের বিরুদ্ধে দা দিয়ে কোপানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেকটি মামলা করা হয়েছে মানহানির অভিযোগে। সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ যে হাস্যকরভাবে অমূলক, তা জেনেও স্থানীয় পুলিশ ওই মামলা গ্রহণ করেছে। কারণ, মামলা করেছে সরকারদলীয় স্থানীয় সাংসদের লোক। তিনি নাকি চুয়াডাঙ্গাকে ফেনী বানাতে চান।
এছাড়া যশোরে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক এক সমাবেশে প্রথম আলোর সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে তাঁকে যশোর থেকে বিতাড়নের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সম্পর্কে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের কারণেই এই হুমকি।
একটি গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে এমন ক্ষতিকর প্রবণতা আর হয় না। আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর ফলে অতীতে প্রতিটি সরকারের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তবে শুধু সরকারের ভাবমূর্তিই নয়, জনগণের তথ্য জানার অধিকার, স্বাধীনভাবে জনগণকে তথ্য জানানোর অধিকার রক্ষার স্বার্থে সরকারকে এই ধরনের নেতিবাচক, হঠকারী ও সন্ত্রাসী তত্পরতা বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকের বাড়িতে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে, তাদের যারা লেলিয়ে দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে।
সত্যিই আক্রমণ চালানো হয়েছে। প্রথম আলোর চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি শাহ আলমের বাড়িতে গত বুধবার রাতে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী রামদাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। অবশ্য তারা তাঁকে পায়নি, কারণ এই সাংবাদিক আগেই বাড়ি ছেড়েছেন। তাঁর শিশুপুত্র ও শাশুড়িকে নিয়ে বাড়ির পেছনের পথ দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে হয়েছে তাঁর স্ত্রীকে। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের মধ্যে স্থানীয় সাংসদের সাবেক গাড়িচালককে প্রত্যক্ষদর্শীরা চিনতে পেরেছে। এটা পরিষ্কার যে, সাংসদের পেটোয়া বাহিনীই ওই হামলা চালিয়েছিল। হামলার আগে সাংসদের ভাই চুয়াডাঙ্গার মেয়রের বাসায় তারা সভাও করেছিল বলে জানা গেছে। হামলাকারীদের মধ্যে ভাড়াটে খুনিও ছিল।
সাংবাদিকের বাড়িতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রথমে ছিল নির্বিকার। ঢাকা থেকে পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের টেলিফোন-আদেশ পাওয়ার আগে পর্যন্ত তারা সক্রিয় হয়নি। হামলাকারীরা সাংবাদিকের বাড়ি তছনছ করে চলে যাওয়ার পরই কেবল তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়, সরকারদলীয় স্থানীয় সাংসদের সন্ত্রাসী তত্পরতার বিরুদ্ধে সেখানকার আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও চুয়াডাঙ্গার আরেক সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ওই শহরের সংবাদকর্মীদের মধ্যে এখন স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাহীনতার ভীতি সৃষ্টি হয়েছে, যা তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধার কারণ হচ্ছে।
কিন্তু দিনবদলের অঙ্গীকার করে এসেছে যে সরকার, তার আমলে এমনটি হওয়ার কথা নয়। তারা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অবাধ তথ্যপ্রবাহ, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এই সরকারের লিখিত অঙ্গীকার। তথ্য অধিকার আইন পাস করেছে এই সরকার। অথচ একজন সাংসদের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের খবর জনগণকে জানানোর দায়ে সাংবাদিকের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে, কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না—এর উত্তর কী?
শুধু তা-ই নয়, সাজানো মামলার আসামি বানিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানির ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগের এক কর্মী যে মামলা করেছেন, তার আসামির তালিকায় প্রথম আলো ও আমার দেশ-এর চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিদের নাম ঢোকানো হয়েছে। তাঁদের একজনের বিরুদ্ধে ছিনতাই, অন্যজনের বিরুদ্ধে দা দিয়ে কোপানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেকটি মামলা করা হয়েছে মানহানির অভিযোগে। সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ যে হাস্যকরভাবে অমূলক, তা জেনেও স্থানীয় পুলিশ ওই মামলা গ্রহণ করেছে। কারণ, মামলা করেছে সরকারদলীয় স্থানীয় সাংসদের লোক। তিনি নাকি চুয়াডাঙ্গাকে ফেনী বানাতে চান।
এছাড়া যশোরে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক এক সমাবেশে প্রথম আলোর সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে তাঁকে যশোর থেকে বিতাড়নের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সম্পর্কে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের কারণেই এই হুমকি।
একটি গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে এমন ক্ষতিকর প্রবণতা আর হয় না। আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর ফলে অতীতে প্রতিটি সরকারের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তবে শুধু সরকারের ভাবমূর্তিই নয়, জনগণের তথ্য জানার অধিকার, স্বাধীনভাবে জনগণকে তথ্য জানানোর অধিকার রক্ষার স্বার্থে সরকারকে এই ধরনের নেতিবাচক, হঠকারী ও সন্ত্রাসী তত্পরতা বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকের বাড়িতে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে, তাদের যারা লেলিয়ে দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে।
No comments