লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এবার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আবাসিক ভবনগুলোতে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০জন। লেবাননের ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) মতে, কমপক্ষে ৫টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এর আগে ওই এলাকায় কোনো সতর্কতা দেয়নি ইসরাইল। এতে একটি আটতলা বিশিষ্ট ভবন পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। জনবহুল বাস্তা অঞ্চলে অবস্থিত ওই ভবনটি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, শনিবার স্থানীয় সময় ভোররাত চারটার দিকে এই হামলা হয়। এতে ওই অঞ্চলসহ পুরো রাজধানী কেঁপে ওঠে। বাস্তা এলাকায় এই হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইলি সেনাবাহিনী। ভয়াবহ এই হামলার মাত্রা এবং সতর্কতা ছাড়া তা চালানো এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কোনো সিনিয়র কর্মকর্তাকে টার্গেট করা হতে পারে। তবে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলি সেনাবাহিনী কোনো পক্ষ থেকেই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। হামলার পর জরুরি উদ্ধারকর্মীরা সেখানে ছুটে যান। তারা দেখতে পান বিশাল গর্ত হয়ে গেছে। সেখান থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। সেখানে অব্যাহতভাবে ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে, আরও মৃতদেহ পাওয়া যেতে পারে। এতে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে করা হচ্ছে ডিএনএ পরীক্ষা। স্থানীয় অধিবাসী নেমির জরারিয়া বলেছেন, তখন খুব ভোরবেলা। তিনি ও তার পরিবারের সবাই তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। এমন সময় হামলা হয়। দ্বিতীয় আরেকটি হামলা। কী হচ্ছে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। চারদিকে শুধু ধুলোবালি। ধ্বংসস্তূপ। তার ভিতর দিয়ে লোকজন দৌড়াচ্ছিল। তারা আর্তনাদ করছিলেন। তারা চিৎকার করে বলছিলেন- আমার স্ত্রী হাসপাতালে। আমার মেয়ে হাসপাতালে। কেউ বলছেন, আমার আন্টি হাসপাতালে।
এ নিয়ে এক সপ্তাহে বৈরুতে চতুর্থ দফা হামলা চালালো ইসরাইল। সোমবার ইরানসমর্থিত হিজবুল্লাহ বলেছে, তাদের মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। অন্য শহরগুলোতে হামলার পর শনিবার খুব ভোরে বাস্তা এলাকায় হামলা হয়। দক্ষিণ বৈরুত থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। হিজবুল্লাহর অবকাঠামো বা তাদের ইন্টারেস্ট আছে এমন স্থানগুলোর কাছাকাছি থাকা লোকজনকে সরে যেতে বলেছে তারা। আইডিএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, এই হামলার একঘণ্টা পরে বেশকিছু স্থাপনায় হামলা করেছে তাদের যুদ্ধবিমান। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৈরুতে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এর মধ্যে আছেন শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। সেপ্টেম্বরে এই সংগঠনের বিরুদ্ধে বড় রকমের অভিযান শুরু করে আইডিএফ। তারা লেবাননের দক্ষিণে আকাশ পথে হামলা করে। ভিতরে পাঠিয়ে দেয় সেনাবাহিনীকে। ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস ইসরাইলে রকেট নিক্ষেপ করে। তাতে এক হাজারের মতো ইসরাইলি নিহত হয়। এরপর থেকেই হামাস ও হিজবুল্লাহকে টার্গেট করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।
No comments