আওয়ামী লীগের নৈতিকভাবে রাজনীতি করার অধিকার নেই -আন্দালিব রহমান পার্থ

আওয়ামী লীগের নৈতিকভাবে রাজনীতি করার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি বলেন, একটা রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকার জন্য কতো হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। যে পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অনুশোচনা না করে, ক্ষমা না চায় এবং বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নির্বাচনের কোনো অধিকার নাই। গতকাল রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ‘সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংবিধানে বিধান সংযোজন করার প্রস্তাবও দেন পার্থ।

বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে ঘর থেকে বের হতে দেবে না। বিএনপি হয়তো আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে চায় যে নির্বাচনে আসুক। কিন্তু নৈতিকভাবে আমি মনে করি না আওয়ামী লীগের নির্বাচন করার কোনো সুযোগ আছে। যারা গণহত্যায় বিশ্বাস করে, যাদের কোনো রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই, যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সব কিছু করতে রাজি সে ধরনের দলকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংবিধানের বিধান থাকা উচিত। না হলে আবারো এ ধরনের রাজনৈতিক দল সামনে চলে আসবে।

আন্দালিব পার্থ বলেন, বর্তমান সংবিধান ফ্যাসিস্ট বানানোর সবচেয়ে বড় কারখানায় পরিণত হয়েছে। বিগত সরকার এই সংবিধানকে ব্যবহার করে মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। ভোটের অধিকারসহ গণতন্ত্রের গলা টিপে হত্যা করেছে। যেকোনো সরকার এই সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হলে তাদের ফ্যাসিস্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমাদের এই সংবিধান মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। কিন্তু এই সংবিধানকে ব্যবহার করে বার বার মানুষের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। সুতরাং যেই সংবিধানে মানুষকে রক্ষা করে না তা মানুষ ছুড়ে ফেলে দেবে। এটা প্রাসঙ্গিক হওয়া জরুরি। সংবিধান সংস্কারের জন্য জনগণের সরকার প্রয়োজন। নির্বাচিত সরকারই কেবল সংবিধান সংশোধন করতে পারে। এ সময় সংবিধানে সংশোধনের কয়েকটি প্রস্তাব রাখেন তিনি।

তিনি বলেন, বিপ্লব যখন হয় তখন সংবিধান চলে না। বিগত সরকারের এমপি, মন্ত্রীদের দুর্নীতির বর্ণনা দিয়ে বিজেপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইন সংবিধানে থাকা উচিত। যাদের দুর্নীতি কর্মকাণ্ডের জন্য বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সম্মান হেয় হয়, তাদের জন্য বিশেষ আইন থাকা উচিত। অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে শাস্তি দেয়া উচিত।

রাজনৈতিক বৈষম্যের সমালোচনা করে পার্থ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৈষম্য হয় রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। গত ১৭ বছর অনেক মানুষ চাকরি পায়নি পরিবারের বাবা, চাচা বিএনপি করে এই জন্য। সংবিধানে এই আইন করা উচিত যে, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। কোনো সংবিধানই গুম খুনকে সমর্থন করে না। তারপরেও এই বিষয়ে আইন থাকবে হবে। ভবিষ্যতে যারাই বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসুক তাদেরকে আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বানও জানান ব্যারিস্টার পার্থ। তিনি বলেন, আধুনিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমরা বাংলাদেশে চাই না।
বিজেপির মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালাউদ্দিন মতিন প্রকাশ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস মাতব্বর, যুব সংহতির আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ হারুন। 

mzamin

No comments

Powered by Blogger.