একজন লিয়ন ম্যাক্স ল্যাডেরম্যান এবং তার নোবেল পুরষ্কার বিক্রি করে দেওয়ার গল্প by রেজওয়ান হাসান
ডঃ লিয়ন ম্যাক্স ল্যাডেরম্যান |
মনে
করুন, আপনি আজ কোন একটি কালজয়ী আবিষ্কার বা বক্তব্য বা যে কোন বিশেষ কারণে
নোবেল পুরষ্কার পেলেন, স্বর্ণের নোবেল তাও। আপনি কি তা কখনো বিক্রি করবেন?
উত্তরটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই “না” আসবে জানা কথা। কারণ দিনরাত এক করে
অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিছু একটা করলেন এবং তা পুরো বিশ্বের কাছে
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয় নোবেল প্রাইজ পাওয়ার মাধ্যমে; তা কেন আপনি কিছু টাকার
বিনিময়ে বিক্রি করবেন?
কিন্তু, ঠিক এই ব্যতিক্রমটিই ঘটেছিলো ১৯৮৮ সালে নোবেল স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ডঃ লিয়ন ম্যাক্স ল্যাডেরম্যান এর সাথে।
লিয়ন ম্যাক্স ল্যাডেরম্যান পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ। উনি উনার পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ার মানুষজনের কাছে “লিয়ন এম ল্যাডেরম্যান” নামেই বেশি পরিচিত।
লিয়ন এম ল্যাডেরম্যান আরো দুইজন পদার্থবিদ যথাক্রমে ম্যালভিন সোয়ার্টজ এবং জ্যাক স্টেইনব্যার্গার এর সাথে ১৯৮৮ সালে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল স্বর্ণপদক লাভ করেন অতিপারমাণবিক কণা “মিউওন নিউট্রিনো” আবিষ্কারের জন্য।
সাধারনত ১৯৯৩ সালে গডস পার্টিকেল “হিগস বোসন” কণার খোঁজ নিয়ে প্রকাশিত হওয়া “The God Particle” বইয়ের লেখক হিসেবেই লিয়নকে পদার্থবিজ্ঞান দুনিয়ার লোকজন চিনে। প্রসঙ্গত অনেকের মতে এই হিগস বোসন কণাই মহাবিশ্বের বাকি সব কণাকে ভর দান করে।
যাই হোক, বয়স ৯০-এর কোঠায় আসার পর তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি তার নোবেল পুরস্কার বিক্রি করে দিবেন। কারণটাও দায়সারা একদম, উনার মনে হয়েছে এটা অনাদরে অবহেলায় যুগ যুগ ধরে যেহেতু তাকে পড়ে আছে, সেহেতু সেটি বিক্রি করা দেয়াটাই যৌক্তিক মনে হয়েছে উনার কাছে। এবং যেই ভাবা সেই কাজ, নিলামে তুলে দিলেন সেই ২৪ ক্যারটের খাঁটি সোনার উপর প্লেট করা ১৮ ক্যারটের সবুজ সোনার তৈরী সেই মেডেলটি। এবং তা বিক্রিও হয়ে গেলো ৭,৬৫,০০০ ডলারের বিনিময়ে নিলামে উঠে বিক্রি হলো সেই নোবেল প্রাইজটি। ক্রেতার নাম গোপন রাখা হয়েছে নিলাম কমিটির থেকেই।
কিন্তু, ঠিক এই ব্যতিক্রমটিই ঘটেছিলো ১৯৮৮ সালে নোবেল স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ডঃ লিয়ন ম্যাক্স ল্যাডেরম্যান এর সাথে।
লিয়ন ম্যাক্স ল্যাডেরম্যান পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ। উনি উনার পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ার মানুষজনের কাছে “লিয়ন এম ল্যাডেরম্যান” নামেই বেশি পরিচিত।
লিয়ন এম ল্যাডেরম্যান আরো দুইজন পদার্থবিদ যথাক্রমে ম্যালভিন সোয়ার্টজ এবং জ্যাক স্টেইনব্যার্গার এর সাথে ১৯৮৮ সালে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল স্বর্ণপদক লাভ করেন অতিপারমাণবিক কণা “মিউওন নিউট্রিনো” আবিষ্কারের জন্য।
সাধারনত ১৯৯৩ সালে গডস পার্টিকেল “হিগস বোসন” কণার খোঁজ নিয়ে প্রকাশিত হওয়া “The God Particle” বইয়ের লেখক হিসেবেই লিয়নকে পদার্থবিজ্ঞান দুনিয়ার লোকজন চিনে। প্রসঙ্গত অনেকের মতে এই হিগস বোসন কণাই মহাবিশ্বের বাকি সব কণাকে ভর দান করে।
যাই হোক, বয়স ৯০-এর কোঠায় আসার পর তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি তার নোবেল পুরস্কার বিক্রি করে দিবেন। কারণটাও দায়সারা একদম, উনার মনে হয়েছে এটা অনাদরে অবহেলায় যুগ যুগ ধরে যেহেতু তাকে পড়ে আছে, সেহেতু সেটি বিক্রি করা দেয়াটাই যৌক্তিক মনে হয়েছে উনার কাছে। এবং যেই ভাবা সেই কাজ, নিলামে তুলে দিলেন সেই ২৪ ক্যারটের খাঁটি সোনার উপর প্লেট করা ১৮ ক্যারটের সবুজ সোনার তৈরী সেই মেডেলটি। এবং তা বিক্রিও হয়ে গেলো ৭,৬৫,০০০ ডলারের বিনিময়ে নিলামে উঠে বিক্রি হলো সেই নোবেল প্রাইজটি। ক্রেতার নাম গোপন রাখা হয়েছে নিলাম কমিটির থেকেই।
নোবেল পুরস্কারের এপিঠ |
নোবেল পুরস্কারের ওপিঠ |
লিয়ন
অনেকদিন ধরেই বুদ্ধিবৈকল্যতে ভুগছিলেন এবং এই টাকাটি উনার বুদ্ধিবৈকল্যর
চিকিৎসায় খরচ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী এল্যান ক্যার। তারা
অনেকদিন ধরেই মেডিকেল বিলের অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন বলে জনান তাঁর স্ত্রী
এল্যান। তিনি আরো জানিয়েছেন,
- *“এটা খুবই কষ্টসাধ্য। এটি যদি অন্যভাবে হতো। সে যেখানে কুকুর এবং বিড়াল এবং ঘোড়ার সাথে থাকে, সেটা পছন্দ করে। তার কোন দুশ্চিন্তা নেই, এবং এটাইয় আমি খুশি হই যে সে এতো সন্তুষ্ট।”
নোবেল
বিক্রির ঘটনা এটা নতুন নয়, এটি ছিল জীবিত অবস্থায় কারো দ্বিতীয়বারের মতো
নিজের নোবেল নিলামে বিক্রি করার ঘটনা। এর আগেও একবার ঘটেছিলো এমনটি।
আজ পর্যন্ত সবচেয়ে দাম দিয়ে যেই নোবেল পুরস্কারটি বিক্রি হয়েছে, তা ছিলো বিখ্যাত বায়োলজিস্ট জেমস ওয়াটসনের যিনি কিনা ডিএনএ-এর ডাবল হেলিক্স আবিস্কারের জন্য ১৯৬২ সালে নোবেল পেয়েছিলেন। তিনি তার নোবেল ৪.৭ মিলিয়নের বিনিময়ে বিক্রি করেছিলেন।
আজ পর্যন্ত সবচেয়ে দাম দিয়ে যেই নোবেল পুরস্কারটি বিক্রি হয়েছে, তা ছিলো বিখ্যাত বায়োলজিস্ট জেমস ওয়াটসনের যিনি কিনা ডিএনএ-এর ডাবল হেলিক্স আবিস্কারের জন্য ১৯৬২ সালে নোবেল পেয়েছিলেন। তিনি তার নোবেল ৪.৭ মিলিয়নের বিনিময়ে বিক্রি করেছিলেন।
জেমস ওয়াটসন |
ক্রেতা
ছিলো রাশিয়ান বিলিয়নেয়ার আলিশার ঊশমানোভ। যদিও ঊশমানোভ পরে ওয়াটসনকে তার
নোবেল ফিরিয়ে দেন। এই জেমস ওয়াটসন এবং লিয়ন ল্যাডেরম্যান হচ্ছে জীবিত দুইজন
যারা কিনা জীবিত অবস্থায় নিজেরা নিজেদের নোবেল বিক্রি করেছেন। লিয়নের
নোবেল ছিলো আজ পযন্ত যেই ১০টি নোবেল বিক্রি হয়েছে, তাদের মধ্য ৪র্থ
সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া নোবেল।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই নোবেল যে আসলেও কেউ কিনে নিবে সেটা তারা কেউই ভাবেননি। কারণ জিনিসটা একদমই অযত্নে সেলফে পড়েছিলো। লিয়ন দম্পতি বাচ্চাদের সেই নোবেল নিয়ে খেলতে পর্যন্ত দিতেন এবং সেই নোবেল পুরষ্কারের সাথে ছবিও তুলতে দিতেন যে কাউকে।
২০১২ সালে অবসরে যাবার আগ পযন্ত লিয়ন “ফারমি ন্যাশনাল এক্সেলেরেটর ল্যাবরেটরি” এর সাথে নিযুক্ত ছিলেন এবং পরে পশ্চিমের দিকে চলে যান স্বপরিবারে। ফারমি ল্যাবের ভাষ্যমতে, লিয়ন দম্পতি মনে করছেন যে এই নিলাম যুক্তরাষ্ট্র এবং পুরো পৃথিবীতে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
তবে ২০১৫ সালে নিজের পদকটি নিলামে তুললেও এরপর আর বেশিদিন বাঁচেননি লিয়ন ল্যাডেরম্যান। এই বছরেরই ৩ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত কারণে ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মেধাবী বিজ্ঞানী।
>>>>>>
তথ্যসুত্রঃ- Retired experimental physicist, 92, who found the God Particle sells his 1988 Nobel Prize for $765,000 to cover dementia treatment
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই নোবেল যে আসলেও কেউ কিনে নিবে সেটা তারা কেউই ভাবেননি। কারণ জিনিসটা একদমই অযত্নে সেলফে পড়েছিলো। লিয়ন দম্পতি বাচ্চাদের সেই নোবেল নিয়ে খেলতে পর্যন্ত দিতেন এবং সেই নোবেল পুরষ্কারের সাথে ছবিও তুলতে দিতেন যে কাউকে।
২০১২ সালে অবসরে যাবার আগ পযন্ত লিয়ন “ফারমি ন্যাশনাল এক্সেলেরেটর ল্যাবরেটরি” এর সাথে নিযুক্ত ছিলেন এবং পরে পশ্চিমের দিকে চলে যান স্বপরিবারে। ফারমি ল্যাবের ভাষ্যমতে, লিয়ন দম্পতি মনে করছেন যে এই নিলাম যুক্তরাষ্ট্র এবং পুরো পৃথিবীতে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
তবে ২০১৫ সালে নিজের পদকটি নিলামে তুললেও এরপর আর বেশিদিন বাঁচেননি লিয়ন ল্যাডেরম্যান। এই বছরেরই ৩ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত কারণে ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মেধাবী বিজ্ঞানী।
>>>>>>
তথ্যসুত্রঃ- Retired experimental physicist, 92, who found the God Particle sells his 1988 Nobel Prize for $765,000 to cover dementia treatment
No comments