কলকাতার মধ্যরাতের জাদু
কলকাতার
আইকনিক স্টুয়ার্ট হগ মার্কেটের আঙিনায় তখন মধ্যরাত। সকালে যে জায়গাটায়
হকার আর খদ্দেরদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে তোলপাড় থাকে, সেই স্থানটি মধ্যরাতে
হয়ে গেল গণবিছানা। সেখানকার কর্মীসহ স্থানীয়রা কার্ডবোর্ড, কম্বল,
সংবাদপত্র – যে যা পেরেছে, তাই বিছিয়ে বিছানা বানিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।
রাস্তার বাতিগুলো উজ্জ্বল আলো ছড়াচ্ছে। প্রাইভেসি বলতে এখানে কিছুই নেই।
এই দৃশ্য দেখার মজাই আলাদা। আর এ কারণেই গভীর রাতে ভারতীয় মহানগরীগুলোর দৃশ্য দেখার আয়োজন বাড়ছে।
এই উদ্যোগের সূচনা করেছিলেন অ্যান্থনি খাতচুতুরিয়ান। উপনিবেশ আমলের কলকাতার এক নির্মাতার নাতি তিনি। নগরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হেঁটে হেঁটে দেখানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এসব স্থাপনার আপিল কোনো দিনই ফুরাবার নয়।
আইডিয়াটি কলকাতার লোকজনকে ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করে। খরচও বেশি নয়। মাথাপিছু মাত্র ১৫ ডলার। বেসরকারি অনেক কোম্পানি এখন নৈশ অভিযানে নিয়ে যাচ্ছে পর্যটকদের। এসব কোম্পানির একটি হলো লেট আজ গো। এই ট্যুরে সবচেয়ে বেশি যে লাভটি হয় তা হলো নগরীর ইতিহাসে আরো সহজে প্রবেশ করা যায়।
আগ্রহী অংশগ্রহণকারীরা শেষ রাতের শ্রমিকদের ঠিক বিপরীত দিক দিয়ে চলে এই আগ্রহী পর্যটকেরা। এই সময় রাস্তা থাকে ফাঁকা। ফলে নির্জন রাস্তায় চলার আলাদা মজাও পাওয়া যায়।
এই পর্যটনের একটি বিখ্যাত যাত্রাবিরতি ঘটে আর্ট ডেকো স্টেটসম্যান হাউজে। একসময় এখান থেকেই কিংবদান্তিপ্রতীম সংবাদপত্রটি প্রকাশিত হতো।এখন ভবনটি আগের ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
তারপর আছে অল ইন্ডিয়া রেডিওর একসময়ের অফিস ভবনটি। পাশেই আছে সেন্ট জন্স চার্চ। এই চার্চের ঘন্টা কথা বলে পর্যটকদের সাথে। রেডিও অফিস ভবনটির অস্তিত্ব নেই, তবে একটি বটবৃক্ষ এখনো মৃদুমন্দ বাতাস দিয়ে অতীত দিনের স্মৃতি জানিয়ে রাখছে। এই ভবনেই এক বিখ্যাত পিয়ানো বাদকের মৃত্যু ঘটেছিল। এখনো নাকি তিনি তার বাজনা থামাননি। অ্যান্থনি খাতচুতুরিয়ান জানিয়েছেন, তার প্রথম দিকের এক ট্যুরে হঠাৎ করে দুই নারী দৌড় দিয়েছিলেন। তাদের একজন আবার কাঁদছিলেন। দুজনই দাবি করেছেন, তারা পিয়ানো মিউজিক শুনেছেন।
তিনি জানান, মজার ব্যাপার হলো, ওই পিয়ানোবাদক যে এখানে মারা গিয়েছিল, তা কিন্তু তখনো ওই দুই নারী জানতেন না। পরে তারা শুনেছিলেন ঘটনাটি।
রাস্তার বাতিগুলো উজ্জ্বল আলো ছড়াচ্ছে। প্রাইভেসি বলতে এখানে কিছুই নেই।
এই দৃশ্য দেখার মজাই আলাদা। আর এ কারণেই গভীর রাতে ভারতীয় মহানগরীগুলোর দৃশ্য দেখার আয়োজন বাড়ছে।
এই উদ্যোগের সূচনা করেছিলেন অ্যান্থনি খাতচুতুরিয়ান। উপনিবেশ আমলের কলকাতার এক নির্মাতার নাতি তিনি। নগরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হেঁটে হেঁটে দেখানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এসব স্থাপনার আপিল কোনো দিনই ফুরাবার নয়।
আইডিয়াটি কলকাতার লোকজনকে ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করে। খরচও বেশি নয়। মাথাপিছু মাত্র ১৫ ডলার। বেসরকারি অনেক কোম্পানি এখন নৈশ অভিযানে নিয়ে যাচ্ছে পর্যটকদের। এসব কোম্পানির একটি হলো লেট আজ গো। এই ট্যুরে সবচেয়ে বেশি যে লাভটি হয় তা হলো নগরীর ইতিহাসে আরো সহজে প্রবেশ করা যায়।
আগ্রহী অংশগ্রহণকারীরা শেষ রাতের শ্রমিকদের ঠিক বিপরীত দিক দিয়ে চলে এই আগ্রহী পর্যটকেরা। এই সময় রাস্তা থাকে ফাঁকা। ফলে নির্জন রাস্তায় চলার আলাদা মজাও পাওয়া যায়।
এই পর্যটনের একটি বিখ্যাত যাত্রাবিরতি ঘটে আর্ট ডেকো স্টেটসম্যান হাউজে। একসময় এখান থেকেই কিংবদান্তিপ্রতীম সংবাদপত্রটি প্রকাশিত হতো।এখন ভবনটি আগের ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
তারপর আছে অল ইন্ডিয়া রেডিওর একসময়ের অফিস ভবনটি। পাশেই আছে সেন্ট জন্স চার্চ। এই চার্চের ঘন্টা কথা বলে পর্যটকদের সাথে। রেডিও অফিস ভবনটির অস্তিত্ব নেই, তবে একটি বটবৃক্ষ এখনো মৃদুমন্দ বাতাস দিয়ে অতীত দিনের স্মৃতি জানিয়ে রাখছে। এই ভবনেই এক বিখ্যাত পিয়ানো বাদকের মৃত্যু ঘটেছিল। এখনো নাকি তিনি তার বাজনা থামাননি। অ্যান্থনি খাতচুতুরিয়ান জানিয়েছেন, তার প্রথম দিকের এক ট্যুরে হঠাৎ করে দুই নারী দৌড় দিয়েছিলেন। তাদের একজন আবার কাঁদছিলেন। দুজনই দাবি করেছেন, তারা পিয়ানো মিউজিক শুনেছেন।
তিনি জানান, মজার ব্যাপার হলো, ওই পিয়ানোবাদক যে এখানে মারা গিয়েছিল, তা কিন্তু তখনো ওই দুই নারী জানতেন না। পরে তারা শুনেছিলেন ঘটনাটি।
রাতের সফরে অংশগ্রহণকারীদের একটি বড় অংশই উপনিবেশ আমলের ভবনগুলোতে ঢু মারতে যান। আর এসব অফিস নিশুতি রাতে থাকে সুনশান। তাদের সফর তালিকায় ব্ল্যাক হোলও থাকে। ব্রিটিশরা বলেছিল, এখানে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা বদ্ধঘরে আটকিয়ে ১৪৩ জন ইংরেজকে দম বন্ধ করে মেরেছিলেন। আজো সফরের সময় এটিও পর্যটকদের মনে দাগ কাটে।
মধ্যরাতের সফরে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই ভুতুরে কাহিনীর ঝাপি মেলে ধরেন। প্রায় সবারই নিজেদেরই ভূত দেখার অভিজ্ঞতা আছে কিংবা প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে কাহিনী শুনেছে। আবার অনেকে ব্ল্যাক হোলে গিয়েও ভুতুরে কাণ্ডকারখানার সাথে পরিচিত হন।
কলকাতায় অবশ্য রাতের বেলায় নয়, দিনের বেলাতেও ভূতের অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে দিনের বেলাতেও থাকে ভীতিকর নীরবতা। এই কলকাতা ১৯১১ সাল পর্যন্ত ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। ওই আমলে করা কলকাতা হাইকোর্ট, রাজভবন, রাইটার্স বিল্ডিং এখনো আগের দিনের কথা সামনে নিয়ে আসছে।
ওই আমলের অনেক ভবন পরিত্যক্ত হয়ে হয়ে এখন বট গাছের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
খাতচুতুরিয়ান জানান, অনেকেই এসব ভবনে ভূতের দেখা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তারা এসব কাহিনী বেশ জোর দিয়ে বলেও থাকেন।
বাঙালিদের মধ্যে ভূতের গল্প বেশ প্রচলিত। গল্পকাহিনীতে ২৫ ধরনের ভূতের দেখা মেলে। এসব কাহিনী নিয়ে অনেক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়ে আসছে।
হেরিটেজ ওয়াক কলকাতার মালিক ড. তথাগত নিয়োগি ও তার স্ত্রী চেলসি ম্যাকগিলের মতে, কলকাতার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ভালোবাসা এই নগরীকে অতিপ্রাকৃতি পর্যায়ে এনে দিয়েছে।
এসব কাহিনী শুনতে শুনতেই অনেক সময় সফর শেষ হয়ে যায়। ভোরের আলো তখন ফুটে ওঠে। ভূত থাকুক বা না থাকুক, ভূতুরে এই সফর আপনাকে নিশ্চিতভাবেই আনন্দ দেবে। অজানাকে জানার আনন্দে আপনার মন ভরে ওঠবে।
No comments