দুবাই থেকেও ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের ডন ছিল জিসান by শুভ্র দেব
অস্ত্র
উঁচিয়ে দাপিয়ে বেড়াত রাজপথে। সঙ্গে থাকত তার বিশাল ক্যাডার বাহিনী। কাউকে
তোয়াক্কার বালাই ছিল না। খুন-খারাবি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি সবই ছিল তার
নিয়ন্ত্রণে। চাঁদা চেয়ে চিঠির সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে দিত। কেউ অপারগতা
প্রকাশ করলে তাকে মেরে ফেলতো। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তার
গতিবিধি বুঝে উঠতে পারতেন না। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ভয়ে এভাবেই তটস্থ
থাকতো রাজধানীবাসী।
২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন জিসান । তাকে ধরিয়ে দেবার জন্য পুরুষ্কারও ঘোষণা করা হয়েছিলো। ইন্টারপোল রেড এলার্টেও নোটিশ জারি করা হয়। সেখানে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সবসময়ই জিসান ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকত। তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ২০০৩ সালে তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য ডিবির দুই কর্মকর্তা মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে অভিযান চালান। জিসান উল্টো তাদের গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলো। এরপর থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা শুরু করেন। তাকে ধরিয়ে দেবার জন্য সরকার পুরুষ্কারও ঘোষণা করেছিলো। কিন্তু জিসান গাঁঢাকা দিয়ে ভারতে চলে যান।
ভারতে বসে ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে কৌশলে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে চলে যায় দুবাইয়ে। সেখান থেকেই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয় জিসান। সম্প্রতি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে যুবলীগ দক্ষিণের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও টেন্ডারমোঘল জি কে শামীম র্যাবের কাছে গ্রেপ্তারের আলোচনায় আসে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী। গত কয়েকদিন আগে ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব দুবাই (এনসিবি) তাকে সেখানকার নিজ ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এটি এনসিবি বাংলাদেশকে গত বুধবার নিশ্চিত করেছে দুবাই এনসিবি।
গোয়েন্দাসূত্র বলছে, ডিবির দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার পরে জিসানের আধিপত্য বিস্তার কিছুটা কমে যায়। ওই সময় গ্রেপ্তার আতঙ্কে সময় কাটত তার। পুলিশ ও ডিবির একাধিক টিম তাকে গ্রেপ্তারের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতো। তাই ২০০৫ সালে কৌশলে সীমান্ত পর হয়ে জিসান ভারতে চলে যায়। পরে ভারতে বসেই সে ফের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায়। কারণ সে ভারতের কলকাতায় চলে গেলেও দেশে তার বিশাল অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী ছিল। যাদের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করে। এক সময় সে পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। কলকাতায় বসে নানা অপরাধে জড়িয়ে গেলে সেখানকার পুলিশ থাকে গ্রেপ্তার করে। পরে জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করে চলে যায় দুবাইতে। সেখানে বসে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যায়। গণপূর্ত, শিক্ষাভবনসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের টেন্ডারবাজিতে একক নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। পরে যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াদের সকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শেল্টার দিত জিসান। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্লাব ভিত্তিক ক্যাসিনো চালানোর নেপথ্য ছিল তার নাম। বিনিময়ে তার কাছে পৌঁছে যেত নির্দিষ্ট পরিমান টাকার ভাগ। যুবলীগের ওই নেতারাই হুন্ডি করে তার কাছে টাকা পাঠাতেন। র্যাব ও ডিবির কাছে রিমান্ডে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও টেন্ডারমোঘল জি কে শামীম জিসানের সঙ্গে তার সখ্যতার কথা বলেছেন। তারা জিসানের কাছে টাকা পাঠানোর কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীমকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করত জিসান। যখন টেন্ডার হত তখন জিসান তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের চারপাশ নিয়ন্ত্রণে নিত। একসময় টেন্ডারবাজির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে খালেদ মাহমুদ ভূঁ্ইয়ার সঙ্গে জিসানের দ্বন্দ্বও তৈরি হয়েছিলো। ওই সময় জিসান খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেছিলো। অনুসন্ধানে জানা গেছে, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ মানিকের নির্দেশেই কাজ করতেন। খালেদ চাঁদার টাকা তুলে ভারতে পলাতক মানিকের কাছে পাঠাতেন। কিন্তু একসময় জাফর আহমেদ খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন খালেদ। পরে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেন।
জিসানের সহযোগিতা নিয়ে তিনি চাঁদাবাজির পাশাপাশি টেন্ডারবাজিতে নাম লেখান। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে শুরু করে রেলভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন জোনের টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। সেখানকার টাকার ভাগ চলে যেত জিসানের কাছে। কিছুদিন পর জিসানের সঙ্গে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় খালেদের। তারপর জিসানের কাছ থেকেও সরে আসেন খালেদ। জিসানের ক্যাডার বাহিনীকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরিয়ে দেন। এককভাবে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নেন খালেদ। এরপর থেকে জিসান-খালেদ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারন করে। খালেদের ওপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে জিসানের। খালেদ তখন থেকে বিশাল ক্যাডার বাহিনীর প্রটোকল নিয়ে চলাফেরা করেন। তার সঙ্গে অস্ত্রধারী কিছু ক্যাডার থাকেন। গোয়েন্দাসূত্রগুলো বলছে, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিতে বিদেশে বসে জিসান খালেদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত জুলাই মাসে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম ঢাকার খিলগাঁর সিপাহীবাগ এলাকা থেকে ফয়সাল নামের এক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকার ফাইভ স্টার নিবাসের আট তলায় অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, চারটি বিদেশি অস্ত্র ও ১টি রিভলবার উদ্ধার করে। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে তারা সবাই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ক্যাডার বাহিনী। যুবলীগের এক শীর্ষ নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য জিসানই এই অস্ত্রগুলো তাদের সরবরাহ করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, জিসান ২০০৫ সালে ভারতে প্রবেশের পর নিজের নাম পরিচয় পরিবর্তন করে পাসপোর্ট তৈরি করে। সেই পাসপোর্টে নিজের নাম দেন আলী আকবর চৌধুরী। ঠিকানা দেখায় সারদা পল্লী ঘানাইলা মালুগ্রাম শিলচর। বাবা হাবিবুর রহমান চৌধুরী ও মায়ের নাম শাফিতুন্নেছা চৌধুরী এবং স্ত্রী রিনাজ বেগম চৌধুরী। তার কাছে থাকা পাসপোর্টটির মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ফের ১০ বছরের জন্য পাসপোর্ট নবায়ন করে জিসান। মূলত এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত শুরু করে। দুবাই, জার্মানি থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার যাতায়াত ছিল। এসব দেশ থেকেই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করত। শীর্ষ পলাতক আরও কয়েকজন সন্ত্রাসীর সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল। সেই সন্ত্রাসীরা অন্য দেশে থাকলেও জিসানের হয়েই কাজ করত তারা। দুবাই এনসিবির কাছে জিসান গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পেয়ে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী টিএনটি নাদিম তাকে ছাড়ানোর জন্য তৎপরতা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সে ওই দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছে। সে যেকোনো উপায়ে জিসানকে মুক্ত করতে চায়। নাদিম ছাড়াও ওয়ারী এলাকার রাজিব হত্যা মামলার আসামি শাকিল ও জিসানের ছোটভাই শামীম মালয়েশিয়া থেকে দুবাই অবস্থান করছে। টিএনটি নাদিম, শাকিল ও শামীম তিনজনই একসঙ্গে অবস্থান করছে। জিসানকে মুক্ত করার পরিকল্পনা করতে তারা বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেছে।
সূত্র বলছে, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করে জিসান বিপুল টাকার মালিক হয়েছে। এসব টাকা দিয়ে সে দুবাইতে গাড়ির শো-রুম, দুটি হোটেল, স্বর্নের দোকান, বাড়ি, ফ্ল্যাট কিনেছে। এছাড়া সে নাইট ক্লাবও পরিচালনা করে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী পরিচালনা করে। আর জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট ও দুবাইয়ের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। দুবাই ছাড়াও মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। দেশের অনেক প্রভাশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীরাও জিসানের মাধ্যমে ব্যবসায় বিনোয়োগ করেন। শত শত কোটি টাকা জিসানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করছে। ব্যবসা ছাড়া জিসান ঢাকার সন্ত্রাসীদের কাছে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিল। দেশের অনেক বড় বড় সন্ত্রাসীর চাহিদা মত অস্ত্র সে দিত। এছাড়া তার নিজস্ব সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী ছিল।
অনুসন্ধান ও গোয়েন্দাসূত্র বলছে, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ডিএসসিসি কাউন্সিলর একে এম মোমিনুল হক সাইদ, টেন্ডারমোঘল জি কে শামীম প্রায়ই জিসানের সঙ্গে মিলিত হতেন সিঙ্গাপুরের হোটেলে। ক্যাসিনো ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তার, দখলবাজির নানা পরিকল্পনা ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আলোচনা করতেন। মূলত জিসানের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা হাসিল করতেন ঢাকায় থাকা ওই নেতারা। টেন্ডার বা চাঁদা নিতে জিসানের ভয়ভীতি দেখানো হত। প্রয়োজনে জিসান নিজেই ফোন করে হুমকি- দিত।
এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, জিসানের সর্বশেষ অবস্থান ছিল জার্মানিতে। ভারতীয় পাসপোর্টের বদৌলতে সে জার্মানিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিলো। দুবাইয়ে তার ব্যবসার হিসাব নিকাষ ও একটি গোপণ বৈঠকের জন্যই দুবাইয়ে এসেছিলো। দুবাইয়ে আসার পর বিমান বন্দর থেকে তাকে রিসিভ করে তার গাড়ির শো-রুমের ব্যবস্থাপক শাকিল। বিমানবন্দর থেকে জিসান চলে যায় তার শো-রুমে। সেখানে টিএনটি নাদিম ও জিসান মিলে বৈঠক করে। পরে গভীর রাতে জিসান তার দুবাইয়ের ডেরার ফ্ল্যাটে যায়। সেই ফ্ল্যাট থেকেই তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ব্যুরো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এনসিবির এআইজি মহিউল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের অবস্থান দুবাই জানতে পেরে আমরা এনসিবি দুবাইর সঙ্গে অনেকদিন আগে থেকে যোগাযোগ শুরু করি। তারা বিষয়টিকে সাড়া দিলে আমরা জিসানের পাসপোর্ট ও ছবি পাঠিয়েছিলাম। দুবাই থেকে আমাদের জানানো হয় জিসানকে শনাক্ত করা গেছে তবে সে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করছে। তার নামও পরিবর্তন করেছে। আমরা সেটি ভেরিফাই করছিলাম ঠিক তখন জানতে পারি পাসপোর্ট পরিবর্তন করেছে ডমিনিক্যাল রিপাবলিক। পরে ডমিনিক্যাল রিপাবলিকে খোঁজ নিয়ে ওই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। সেখানে কোনো রেকর্ড নেই।
তার নাম, তাদের ভেরিফিকেশনগুলো আবার ভেরিফাইড করে তাদেরকে জানাই। তখন তারা আমাদেরকে জানায় তাকে নজরদারিতে রেখেছে। তাদের পরামর্শেই আমরা রেড নোটিশটা আপডেট করে আরও কিছু মামলা ঢুকিয়ে দেই। ঢাকার ডিবির সঙ্গে এনসিবি বৈঠকে বসে তার কিছু আপডেট তথ্য নিয়ে দুবাইকে জানাই। সে দুবাইতে বসে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। তার দুই সহযোগী ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে। এরপরই জিসানকে তারা গ্রেপ্তার করে। গত বুধবার তারা আমাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানায়। তিনি বলেন, এখন জিসান জুডিসিয়াল কাস্টরিতে আছে। দুবাই এনসিবি আমাদের কাছে কিছু কাগজপত্র চেয়েছে। কিছু কাগজপত্র আমরা ইতিমধ্যে পাঠিয়েছি। আরও কিছু মামলা ওয়ারেন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র ডিবির সহযোগীতায় রেডি করছি। সেগুলো পেলে আমার পাঠিয়ে দিব। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো। জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করছে তাই দুবাই তাকে ভারতে পাঠাবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের অনুরোধে জিসানকে তারা গ্রেপ্তার করছে। তাই আমরাই তাকে দেশে নিয়ে আসব। আর সে শুধু ভারতীয় পাসপোর্ট নয় ভিন্ন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করতো।
২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন জিসান । তাকে ধরিয়ে দেবার জন্য পুরুষ্কারও ঘোষণা করা হয়েছিলো। ইন্টারপোল রেড এলার্টেও নোটিশ জারি করা হয়। সেখানে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সবসময়ই জিসান ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকত। তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ২০০৩ সালে তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য ডিবির দুই কর্মকর্তা মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে অভিযান চালান। জিসান উল্টো তাদের গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলো। এরপর থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা শুরু করেন। তাকে ধরিয়ে দেবার জন্য সরকার পুরুষ্কারও ঘোষণা করেছিলো। কিন্তু জিসান গাঁঢাকা দিয়ে ভারতে চলে যান।
ভারতে বসে ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে কৌশলে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে চলে যায় দুবাইয়ে। সেখান থেকেই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয় জিসান। সম্প্রতি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে যুবলীগ দক্ষিণের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও টেন্ডারমোঘল জি কে শামীম র্যাবের কাছে গ্রেপ্তারের আলোচনায় আসে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী। গত কয়েকদিন আগে ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব দুবাই (এনসিবি) তাকে সেখানকার নিজ ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এটি এনসিবি বাংলাদেশকে গত বুধবার নিশ্চিত করেছে দুবাই এনসিবি।
গোয়েন্দাসূত্র বলছে, ডিবির দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার পরে জিসানের আধিপত্য বিস্তার কিছুটা কমে যায়। ওই সময় গ্রেপ্তার আতঙ্কে সময় কাটত তার। পুলিশ ও ডিবির একাধিক টিম তাকে গ্রেপ্তারের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতো। তাই ২০০৫ সালে কৌশলে সীমান্ত পর হয়ে জিসান ভারতে চলে যায়। পরে ভারতে বসেই সে ফের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায়। কারণ সে ভারতের কলকাতায় চলে গেলেও দেশে তার বিশাল অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী ছিল। যাদের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করে। এক সময় সে পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। কলকাতায় বসে নানা অপরাধে জড়িয়ে গেলে সেখানকার পুলিশ থাকে গ্রেপ্তার করে। পরে জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করে চলে যায় দুবাইতে। সেখানে বসে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যায়। গণপূর্ত, শিক্ষাভবনসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের টেন্ডারবাজিতে একক নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। পরে যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াদের সকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শেল্টার দিত জিসান। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্লাব ভিত্তিক ক্যাসিনো চালানোর নেপথ্য ছিল তার নাম। বিনিময়ে তার কাছে পৌঁছে যেত নির্দিষ্ট পরিমান টাকার ভাগ। যুবলীগের ওই নেতারাই হুন্ডি করে তার কাছে টাকা পাঠাতেন। র্যাব ও ডিবির কাছে রিমান্ডে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও টেন্ডারমোঘল জি কে শামীম জিসানের সঙ্গে তার সখ্যতার কথা বলেছেন। তারা জিসানের কাছে টাকা পাঠানোর কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীমকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করত জিসান। যখন টেন্ডার হত তখন জিসান তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের চারপাশ নিয়ন্ত্রণে নিত। একসময় টেন্ডারবাজির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে খালেদ মাহমুদ ভূঁ্ইয়ার সঙ্গে জিসানের দ্বন্দ্বও তৈরি হয়েছিলো। ওই সময় জিসান খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেছিলো। অনুসন্ধানে জানা গেছে, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ মানিকের নির্দেশেই কাজ করতেন। খালেদ চাঁদার টাকা তুলে ভারতে পলাতক মানিকের কাছে পাঠাতেন। কিন্তু একসময় জাফর আহমেদ খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন খালেদ। পরে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেন।
জিসানের সহযোগিতা নিয়ে তিনি চাঁদাবাজির পাশাপাশি টেন্ডারবাজিতে নাম লেখান। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে শুরু করে রেলভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন জোনের টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। সেখানকার টাকার ভাগ চলে যেত জিসানের কাছে। কিছুদিন পর জিসানের সঙ্গে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় খালেদের। তারপর জিসানের কাছ থেকেও সরে আসেন খালেদ। জিসানের ক্যাডার বাহিনীকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরিয়ে দেন। এককভাবে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নেন খালেদ। এরপর থেকে জিসান-খালেদ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারন করে। খালেদের ওপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে জিসানের। খালেদ তখন থেকে বিশাল ক্যাডার বাহিনীর প্রটোকল নিয়ে চলাফেরা করেন। তার সঙ্গে অস্ত্রধারী কিছু ক্যাডার থাকেন। গোয়েন্দাসূত্রগুলো বলছে, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিতে বিদেশে বসে জিসান খালেদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত জুলাই মাসে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম ঢাকার খিলগাঁর সিপাহীবাগ এলাকা থেকে ফয়সাল নামের এক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকার ফাইভ স্টার নিবাসের আট তলায় অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, চারটি বিদেশি অস্ত্র ও ১টি রিভলবার উদ্ধার করে। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে তারা সবাই শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ক্যাডার বাহিনী। যুবলীগের এক শীর্ষ নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য জিসানই এই অস্ত্রগুলো তাদের সরবরাহ করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, জিসান ২০০৫ সালে ভারতে প্রবেশের পর নিজের নাম পরিচয় পরিবর্তন করে পাসপোর্ট তৈরি করে। সেই পাসপোর্টে নিজের নাম দেন আলী আকবর চৌধুরী। ঠিকানা দেখায় সারদা পল্লী ঘানাইলা মালুগ্রাম শিলচর। বাবা হাবিবুর রহমান চৌধুরী ও মায়ের নাম শাফিতুন্নেছা চৌধুরী এবং স্ত্রী রিনাজ বেগম চৌধুরী। তার কাছে থাকা পাসপোর্টটির মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ফের ১০ বছরের জন্য পাসপোর্ট নবায়ন করে জিসান। মূলত এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত শুরু করে। দুবাই, জার্মানি থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার যাতায়াত ছিল। এসব দেশ থেকেই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করত। শীর্ষ পলাতক আরও কয়েকজন সন্ত্রাসীর সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল। সেই সন্ত্রাসীরা অন্য দেশে থাকলেও জিসানের হয়েই কাজ করত তারা। দুবাই এনসিবির কাছে জিসান গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পেয়ে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী টিএনটি নাদিম তাকে ছাড়ানোর জন্য তৎপরতা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সে ওই দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছে। সে যেকোনো উপায়ে জিসানকে মুক্ত করতে চায়। নাদিম ছাড়াও ওয়ারী এলাকার রাজিব হত্যা মামলার আসামি শাকিল ও জিসানের ছোটভাই শামীম মালয়েশিয়া থেকে দুবাই অবস্থান করছে। টিএনটি নাদিম, শাকিল ও শামীম তিনজনই একসঙ্গে অবস্থান করছে। জিসানকে মুক্ত করার পরিকল্পনা করতে তারা বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেছে।
সূত্র বলছে, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করে জিসান বিপুল টাকার মালিক হয়েছে। এসব টাকা দিয়ে সে দুবাইতে গাড়ির শো-রুম, দুটি হোটেল, স্বর্নের দোকান, বাড়ি, ফ্ল্যাট কিনেছে। এছাড়া সে নাইট ক্লাবও পরিচালনা করে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী পরিচালনা করে। আর জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট ও দুবাইয়ের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। দুবাই ছাড়াও মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। দেশের অনেক প্রভাশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীরাও জিসানের মাধ্যমে ব্যবসায় বিনোয়োগ করেন। শত শত কোটি টাকা জিসানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করছে। ব্যবসা ছাড়া জিসান ঢাকার সন্ত্রাসীদের কাছে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিল। দেশের অনেক বড় বড় সন্ত্রাসীর চাহিদা মত অস্ত্র সে দিত। এছাড়া তার নিজস্ব সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী ছিল।
অনুসন্ধান ও গোয়েন্দাসূত্র বলছে, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ডিএসসিসি কাউন্সিলর একে এম মোমিনুল হক সাইদ, টেন্ডারমোঘল জি কে শামীম প্রায়ই জিসানের সঙ্গে মিলিত হতেন সিঙ্গাপুরের হোটেলে। ক্যাসিনো ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তার, দখলবাজির নানা পরিকল্পনা ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আলোচনা করতেন। মূলত জিসানের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা হাসিল করতেন ঢাকায় থাকা ওই নেতারা। টেন্ডার বা চাঁদা নিতে জিসানের ভয়ভীতি দেখানো হত। প্রয়োজনে জিসান নিজেই ফোন করে হুমকি- দিত।
এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, জিসানের সর্বশেষ অবস্থান ছিল জার্মানিতে। ভারতীয় পাসপোর্টের বদৌলতে সে জার্মানিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিলো। দুবাইয়ে তার ব্যবসার হিসাব নিকাষ ও একটি গোপণ বৈঠকের জন্যই দুবাইয়ে এসেছিলো। দুবাইয়ে আসার পর বিমান বন্দর থেকে তাকে রিসিভ করে তার গাড়ির শো-রুমের ব্যবস্থাপক শাকিল। বিমানবন্দর থেকে জিসান চলে যায় তার শো-রুমে। সেখানে টিএনটি নাদিম ও জিসান মিলে বৈঠক করে। পরে গভীর রাতে জিসান তার দুবাইয়ের ডেরার ফ্ল্যাটে যায়। সেই ফ্ল্যাট থেকেই তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ব্যুরো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এনসিবির এআইজি মহিউল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের অবস্থান দুবাই জানতে পেরে আমরা এনসিবি দুবাইর সঙ্গে অনেকদিন আগে থেকে যোগাযোগ শুরু করি। তারা বিষয়টিকে সাড়া দিলে আমরা জিসানের পাসপোর্ট ও ছবি পাঠিয়েছিলাম। দুবাই থেকে আমাদের জানানো হয় জিসানকে শনাক্ত করা গেছে তবে সে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করছে। তার নামও পরিবর্তন করেছে। আমরা সেটি ভেরিফাই করছিলাম ঠিক তখন জানতে পারি পাসপোর্ট পরিবর্তন করেছে ডমিনিক্যাল রিপাবলিক। পরে ডমিনিক্যাল রিপাবলিকে খোঁজ নিয়ে ওই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। সেখানে কোনো রেকর্ড নেই।
তার নাম, তাদের ভেরিফিকেশনগুলো আবার ভেরিফাইড করে তাদেরকে জানাই। তখন তারা আমাদেরকে জানায় তাকে নজরদারিতে রেখেছে। তাদের পরামর্শেই আমরা রেড নোটিশটা আপডেট করে আরও কিছু মামলা ঢুকিয়ে দেই। ঢাকার ডিবির সঙ্গে এনসিবি বৈঠকে বসে তার কিছু আপডেট তথ্য নিয়ে দুবাইকে জানাই। সে দুবাইতে বসে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। তার দুই সহযোগী ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে। এরপরই জিসানকে তারা গ্রেপ্তার করে। গত বুধবার তারা আমাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানায়। তিনি বলেন, এখন জিসান জুডিসিয়াল কাস্টরিতে আছে। দুবাই এনসিবি আমাদের কাছে কিছু কাগজপত্র চেয়েছে। কিছু কাগজপত্র আমরা ইতিমধ্যে পাঠিয়েছি। আরও কিছু মামলা ওয়ারেন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র ডিবির সহযোগীতায় রেডি করছি। সেগুলো পেলে আমার পাঠিয়ে দিব। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো। জিসান ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করছে তাই দুবাই তাকে ভারতে পাঠাবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের অনুরোধে জিসানকে তারা গ্রেপ্তার করছে। তাই আমরাই তাকে দেশে নিয়ে আসব। আর সে শুধু ভারতীয় পাসপোর্ট নয় ভিন্ন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করতো।
No comments