কৌশল পাল্টিয়ে ফের সক্রিয় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র by শুভ্র দেব
কৌশল
পাল্টে ফের সক্রিয় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক
তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও চক্রের মূলহোতারা থেকে যাচ্ছে অধরা। গতকাল ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অধীনে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়
প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগে হাতে লেখা
প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষার ৭২টি প্রশ্নের মিল
ছিল। এর মধ্যে বাংলার ১৯টি, ইংরেজির ১৭টি, সাধারণ জ্ঞানের ৩৬টি প্রশ্ন
হুবহু মিলে যায়। সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের কপিগুলো
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়
সহকারী প্রক্টর সোহেল রানার কাছে জমা দেন তারা।
পরীক্ষা শেষে দেখা যায় মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল রয়েছে।
একই প্রশ্ন সকাল ৯টার দিকে বিভিন্ন মাধ্যমেও ছড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে গত বছরও ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিলো।
ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর গত বছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতায় গা-ঢাকা দিয়েছিলো বিভিন্ন চক্রের মূলহোতারা। সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বেশ স্বস্তি ফিরেছিলো। অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর না হওয়াতে এবছর আগাম সতর্ক ছিল প্রশাসন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে মনিটরিংসহ, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছিলো। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রকে ধরার জন্য গোয়েন্দা জাল তৈরি করা হয়েছিলো। এসব কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত এক সপ্তাহে অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও রোধ করা যায়নি প্রশ্নপত্র ফাঁস।
গোয়েন্দাসূত্র বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যরা নিত্য নতুন কৌশলে সক্রিয় হয়েছে। চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁস করার। একদিকে যেমন প্রশ্ন সংগ্রহের কাজ করছে অন্যদিকে প্রশ্ন বিক্রি করার জন্য নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে জানান দিচ্ছে তাদের অবস্থান ও তৎপরতা। লোভনীয় টোপ ফেলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের টার্গেট করছে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশকিছু গ্রুপ তৈরি করে সদস্য সংগ্রহ করছে তারা। তাদের টার্গেট চলমান বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। তবে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় এবার প্রশ্ন ফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যদের পাশাপাশি তৎপরতা বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কাজ করছে। সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইম বুধবার ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
তারা হলেন, পিরোজপুর ভাণ্ডারিয়ার কালাম গাজীর ছেলে কাউসার গাজী (১৯), চাঁদপুর মতলবের জাকির হোসেনের ছেলে সোহেল মিয়া (২১), মাদারীপুর কালকিনির হাসানুর রশীদের ছেলে তারিকুল ইসলাম শোভন (১৯), নওগাঁ পত্নীতলার আলমের ছেলে রুবাইয়াত তানভীর (আদিত্য), টাঙ্গাইল কালিহাতীর আনসার আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান ইমন। চক্রের মাস্টারমাইন্ড কাউসার গাজীকে গ্রেপ্তারের পর সে সিআইডিকে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে তারা আগের মতো প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারছে না। তাই ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রশ্নপত্র পাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এভাবে তাদের গ্রুপে সদস্য সংগ্রহের কাজও করতো। কাউসার গাজীকে এ কাজে সহযোগিতা করতো তার বন্ধু সোহেল মিয়া। সে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া বিকাশ একাউন্ট খোলে টাকা লেনদেন করতো। তারা সিআইডিকে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজ করে আসছে।
সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের নজরদারির কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র এখন আর আগের মতো প্রশ্নপত্র পাচ্ছে না। তাই তারা কৌশলে এখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেছে। বিভিন্ন সাজেশন বই ও বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে তারা একটি ভুয়া প্রশ্ন তৈরি করে প্রচার করছে। আমরা এ ধরনের একটি গ্রুপকে শনাক্ত করে আটক করেছি। তদন্ত করে আমরা দেখতে পেরেছি ওই গ্রুপে আরো অনেকেই সক্রিয় আছে। তাদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত ৫ই অক্টোবর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০) মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ ও গ্রহণ করার অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছিলো। তারা হলেন, মহিদুল করিম লিমন (২৬), মো. সারওয়ার হোসেন ওরফে বিপ্লব (২৯), সাদ্দাম হোসেন (২৫), মো. মাসুদ (৩০), উজ্জ্বল রবি দাস (২৩), মো. রিফাত সরকার (১৯), মো. ফয়সাল আহমেদ (১৮), মো. মুস্তাকিন ফুয়াদ (১৯), আবু সাঈদ (১৮), ইশা আলম (২১) ও মো. তারেক হাসান (১৯)। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার চেক, মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ২০১৮-১৯ সেশনের পরীক্ষার্থীদের ৯১টি এডমিট কার্ড, ৫ সেট ভুয়া প্রশ্নপত্র, ১৬টি মোবাইল ফোন ও ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। র্যাব সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সদস্যরা স্বীকার করেছে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তারা আগে থেকে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতে পারবে বলে বিশ্বাস স্থাপন করে। যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে তারা ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপস, ভাইভার, ইমো ব্যবহার করতো। লেনদেন করতো বিকাশ ও রকেটে। র্যাব এই চক্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানতে পেরেছে তারা রাজধানীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) উত্তরের উপ- কমিশনার মশিউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, গত বছর ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়াতে আমরা বেশ কয়েকটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কাজের সফলতা নাই। কারণ এসব চক্রের সদস্যরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে বের হয়ে ফের এই কাজ শুরু করে। তিনি বলেন, এ বছরও আমরা এসব চক্রের সদস্যদের নজরদারিতে রেখেছি।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিট প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন। যে সকল গ্রুপ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তি দিয়ে তাদের গতিবিধি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। পরীক্ষা হলগুলোতে ম্যাগনেট, অপ্টিক ও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর বসানো হচ্ছে। যাতে হলে গিয়েও কেউ বিশেষ ডিভাইস দিয়ে জালিয়াতি করতে না পারে।
পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিটের ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সাইবার ইউনিট সূত্র বলছে, সচেতনতার জন্য তারা জানানোর চেষ্টা করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা জনপ্রিয় চ্যাট ইঞ্জিনগুলোর পাবলিক বা ক্লোজড গ্রুপে যারা প্রশ্ন সরবারহ করবে বলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে সেগুলো ভুয়া। ইতিমধ্যে সেই ভুয়া এন্টিটি বা কন্টেন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব কাজে জড়িত অন্তত ২০টি গ্রুপকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
পরীক্ষা শেষে দেখা যায় মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল রয়েছে।
একই প্রশ্ন সকাল ৯টার দিকে বিভিন্ন মাধ্যমেও ছড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে গত বছরও ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিলো।
ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর গত বছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতায় গা-ঢাকা দিয়েছিলো বিভিন্ন চক্রের মূলহোতারা। সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বেশ স্বস্তি ফিরেছিলো। অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর না হওয়াতে এবছর আগাম সতর্ক ছিল প্রশাসন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে মনিটরিংসহ, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছিলো। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রকে ধরার জন্য গোয়েন্দা জাল তৈরি করা হয়েছিলো। এসব কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত এক সপ্তাহে অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও রোধ করা যায়নি প্রশ্নপত্র ফাঁস।
গোয়েন্দাসূত্র বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যরা নিত্য নতুন কৌশলে সক্রিয় হয়েছে। চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁস করার। একদিকে যেমন প্রশ্ন সংগ্রহের কাজ করছে অন্যদিকে প্রশ্ন বিক্রি করার জন্য নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে জানান দিচ্ছে তাদের অবস্থান ও তৎপরতা। লোভনীয় টোপ ফেলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের টার্গেট করছে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশকিছু গ্রুপ তৈরি করে সদস্য সংগ্রহ করছে তারা। তাদের টার্গেট চলমান বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। তবে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় এবার প্রশ্ন ফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যদের পাশাপাশি তৎপরতা বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কাজ করছে। সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইম বুধবার ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
তারা হলেন, পিরোজপুর ভাণ্ডারিয়ার কালাম গাজীর ছেলে কাউসার গাজী (১৯), চাঁদপুর মতলবের জাকির হোসেনের ছেলে সোহেল মিয়া (২১), মাদারীপুর কালকিনির হাসানুর রশীদের ছেলে তারিকুল ইসলাম শোভন (১৯), নওগাঁ পত্নীতলার আলমের ছেলে রুবাইয়াত তানভীর (আদিত্য), টাঙ্গাইল কালিহাতীর আনসার আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান ইমন। চক্রের মাস্টারমাইন্ড কাউসার গাজীকে গ্রেপ্তারের পর সে সিআইডিকে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে তারা আগের মতো প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারছে না। তাই ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রশ্নপত্র পাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এভাবে তাদের গ্রুপে সদস্য সংগ্রহের কাজও করতো। কাউসার গাজীকে এ কাজে সহযোগিতা করতো তার বন্ধু সোহেল মিয়া। সে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া বিকাশ একাউন্ট খোলে টাকা লেনদেন করতো। তারা সিআইডিকে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজ করে আসছে।
সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের নজরদারির কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র এখন আর আগের মতো প্রশ্নপত্র পাচ্ছে না। তাই তারা কৌশলে এখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেছে। বিভিন্ন সাজেশন বই ও বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে তারা একটি ভুয়া প্রশ্ন তৈরি করে প্রচার করছে। আমরা এ ধরনের একটি গ্রুপকে শনাক্ত করে আটক করেছি। তদন্ত করে আমরা দেখতে পেরেছি ওই গ্রুপে আরো অনেকেই সক্রিয় আছে। তাদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত ৫ই অক্টোবর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০) মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ ও গ্রহণ করার অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছিলো। তারা হলেন, মহিদুল করিম লিমন (২৬), মো. সারওয়ার হোসেন ওরফে বিপ্লব (২৯), সাদ্দাম হোসেন (২৫), মো. মাসুদ (৩০), উজ্জ্বল রবি দাস (২৩), মো. রিফাত সরকার (১৯), মো. ফয়সাল আহমেদ (১৮), মো. মুস্তাকিন ফুয়াদ (১৯), আবু সাঈদ (১৮), ইশা আলম (২১) ও মো. তারেক হাসান (১৯)। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার চেক, মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ২০১৮-১৯ সেশনের পরীক্ষার্থীদের ৯১টি এডমিট কার্ড, ৫ সেট ভুয়া প্রশ্নপত্র, ১৬টি মোবাইল ফোন ও ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। র্যাব সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সদস্যরা স্বীকার করেছে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তারা আগে থেকে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতে পারবে বলে বিশ্বাস স্থাপন করে। যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে তারা ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপস, ভাইভার, ইমো ব্যবহার করতো। লেনদেন করতো বিকাশ ও রকেটে। র্যাব এই চক্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানতে পেরেছে তারা রাজধানীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) উত্তরের উপ- কমিশনার মশিউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, গত বছর ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়াতে আমরা বেশ কয়েকটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কাজের সফলতা নাই। কারণ এসব চক্রের সদস্যরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে বের হয়ে ফের এই কাজ শুরু করে। তিনি বলেন, এ বছরও আমরা এসব চক্রের সদস্যদের নজরদারিতে রেখেছি।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিট প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন। যে সকল গ্রুপ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তি দিয়ে তাদের গতিবিধি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। পরীক্ষা হলগুলোতে ম্যাগনেট, অপ্টিক ও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর বসানো হচ্ছে। যাতে হলে গিয়েও কেউ বিশেষ ডিভাইস দিয়ে জালিয়াতি করতে না পারে।
পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিটের ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সাইবার ইউনিট সূত্র বলছে, সচেতনতার জন্য তারা জানানোর চেষ্টা করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা জনপ্রিয় চ্যাট ইঞ্জিনগুলোর পাবলিক বা ক্লোজড গ্রুপে যারা প্রশ্ন সরবারহ করবে বলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে সেগুলো ভুয়া। ইতিমধ্যে সেই ভুয়া এন্টিটি বা কন্টেন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব কাজে জড়িত অন্তত ২০টি গ্রুপকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
No comments