প্রধানমন্ত্রী বলছেন, শহিদুল গুজব ছড়িয়ে বিক্ষোভ উস্কে দেন, সমালোচকদের দাবি এটা ক্র্যাকডাউনের অংশ -রয়টার্সের রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, কারান্তরীন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম আগস্টে ‘গুজব’ ছড়িয়ে
সরকার বিরোধী বিক্ষোভ উস্কে দিয়েছিলেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল
আলমকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ বলেও বর্ণনা করেন। শহিদুল আলমের ওই আচরণের জন্য
প্রধানমন্ত্রী তার পারিবারিক পরিচয়কেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, শহীদুলের
দাদার ভাই স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী ছিলেন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, নিজের অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি প্রধানমন্ত্রী। তবে শহিদুলের পরিবার ও আইনজীবী এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আগস্টে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রবিক্ষোভ সামাল দিতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করার ঘণ্টা কয়েক পরই শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আটক করার বিষয়টি বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এছাড়া বিশ্বজুড়ে তার মুক্তির দাবি উঠেছে।
২০১৪ সালে বিরোধীদের বয়কট করা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফিরেন শেখ হাসিনা।
ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে চান তিনি। তবে সমালোচকরা বলছেন, ক্রমেই তার সরকার কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছে। আর এর বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক আতাউর রহমান এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আপনি এখন নির্দোষ প্রমাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত দোষী। আমাদের সিস্টেম উল্টো। মানুষ এখন তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হতে চায় না এই ভয়ে যে যদি তাদেরকেও শহিদুলের ভাগ্য বরণ করতে হয়।’
শেখ হাসিনার মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল আলমের পরিবার জানান, বিচার হওয়ার আগেই সরকার তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে রেখেছে। তার ভাইঝি দিলরুবা করিম বলেন, ‘এ থেকে প্রমাণ হয় যে তারা ইতিমধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, শেখ হাসিনার মন্তব্য ‘ভীষণ নিষ্ঠুর ও তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশের নেতার সঙ্গে মানানসই নয়।’
শেখ হাসিনা সরকারের আইন বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তার দেশের বিচার ব্যবস্থার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সমালোচক শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি বিতর্কিত ধারার অধীনে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, সরকার বহু সমালোচককে বাছবিচারহীনভাবে আটক করার কাজে এই ধারা ব্যবহার করেছে। এছাড়া এটি বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি আইনের মধ্যে অন্যতম।
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট বলেছে, শহিদুলের মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া লঙ্ঘনের প্রচুর নজির রয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইনমন্ত্রী।
শহিদুল আলমের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে শহিদুল আলম যেসব মন্তব্য করেছেন তা কোনো ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়ে না। আর শহিদুল আলমের দাদার ভাইকে নিয়ে হাসিনার মন্তব্য ‘সামন্ততান্ত্রিক’ বিচার ব্যবস্থার ইঙ্গিত বহন করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনা সরকার এমন অনেক আইন প্রণয়ন করেছে যেখানে দেশের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালালে কারাদণ্ডের কথা বলা আছে। অপরদিকে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তিনি যাতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে না পারেন সেই পরিকল্পনারই অংশ এই সাজা।
সরকার অবশ্য জোর দিয়ে বলছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় তারা হস্তক্ষেপ করেনি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘হাসিনা সরকারের মতো কোনো সরকারই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মূলনীতি এত বেশি সুরক্ষিত ও সমুন্নত রাখেনি।’
শহিদুল আলমকে মূলত আটক করা হয়েছিল ওই ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে তার ‘বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্যের কারণে। সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলশিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভ পরে এই বছরের সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়। শহিদুল আলম বলছেন, তিনি ওই বিক্ষোভ একজন ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাভার করছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে তিনি প্রায় ডজনখানেক ফেসবুক ভিডিও আপলোড করেন। সেখানের একটিতে তিনি বলেন, তার ওপর হামলা করা হয়েছে। ধাতব রড ও লাঠি হাতে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ‘গুন্ডারা’ তার ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলেছে। তিনি পরে কিছু ছবি আপলোড করেন যেখানে মুখোশ পরিহিত ব্যক্তিরা পুলিশের সামনেই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করছে বলে দেখা যায়।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা বিপ্লব বড়–য়া বলেন, ফেসবুক ভিডিওতে ছাত্রদের ওপর আক্রমন ও পুলিশের নির্বিকার অবস্থা স¤পর্কে ফেসবুক ভিডিওতে শহীদুল আলম যা বলেছেন, তা স¤পূর্ণ মিথ্যা। এর ফলে আরও বেশি সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা হামলার শিকার এ ধরণের ছবিতে অনলাইন সয়লাব। তবে হামলাকারীরা কোন গোষ্ঠীর লোক তা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
আল জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সরকার অতীতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-েও জড়িয়েছে। তবে বিতর্কিত মাদকবিরোধী অভিযানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অনুমতি দেওয়ার যেই অভিযোগ রয়েছে, তা সরকার অস্বীকার করেছে।
গত মাসের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে হাসিনা বলেন, কর্তৃপক্ষ যখন শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছিল শহীদুল আলম তখন মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (শহীদুল) পরিস্থিতি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, উস্কে দিতে চেয়েছিলেন। আমরা শিশুদের বাঁচাতে চেয়েছি কিন্তু তিনি এই শিশুদের ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। যাবতীয় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। আপনি এটা কিভাবে মানতে পারেন?’
সাক্ষাৎকারে তিনি শহীদুল আলমের দাদার মৃত ভাই আবদুস সবুর খানের কড়া সমালোচনা করেন। সাবেক মন্ত্রী সবুর খান বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিলেন। পাকিস্তানের সঙ্গে একাত্ম হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছেন। পাকিস্তানে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশ তিনি মেনে নেননি। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন। রক্ত মাঝেমাঝে কথা বলে। আপনি বোঝেন সেটা।’
বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ এখনও একটি সংবেদনশীল প্রসঙ্গ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে নতুন একটি আইন সোমবার প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করে কার্যকর করেছেন। এ আইনের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও আমেরিকান সাংবাদিকদের বিরোধীতা ছিল। এতে সরকারী ভবনের ভেতর গোপনে রেকর্ড করা কিংবা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানোর জন্য ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
হাসিনা অবশ্য বলেছেন, সাংবাদিকদের এই আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তার ভাষ্য, ‘তাদের যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে তারা কোনো ভুল কিছু করবেন না, তাহলে তাদের চিন্তিত হওয়ার কি আছে?’
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, নিজের অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি প্রধানমন্ত্রী। তবে শহিদুলের পরিবার ও আইনজীবী এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আগস্টে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রবিক্ষোভ সামাল দিতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করার ঘণ্টা কয়েক পরই শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আটক করার বিষয়টি বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এছাড়া বিশ্বজুড়ে তার মুক্তির দাবি উঠেছে।
২০১৪ সালে বিরোধীদের বয়কট করা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফিরেন শেখ হাসিনা।
ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে চান তিনি। তবে সমালোচকরা বলছেন, ক্রমেই তার সরকার কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছে। আর এর বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক আতাউর রহমান এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আপনি এখন নির্দোষ প্রমাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত দোষী। আমাদের সিস্টেম উল্টো। মানুষ এখন তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হতে চায় না এই ভয়ে যে যদি তাদেরকেও শহিদুলের ভাগ্য বরণ করতে হয়।’
শেখ হাসিনার মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল আলমের পরিবার জানান, বিচার হওয়ার আগেই সরকার তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে রেখেছে। তার ভাইঝি দিলরুবা করিম বলেন, ‘এ থেকে প্রমাণ হয় যে তারা ইতিমধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, শেখ হাসিনার মন্তব্য ‘ভীষণ নিষ্ঠুর ও তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশের নেতার সঙ্গে মানানসই নয়।’
শেখ হাসিনা সরকারের আইন বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তার দেশের বিচার ব্যবস্থার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সমালোচক শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি বিতর্কিত ধারার অধীনে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, সরকার বহু সমালোচককে বাছবিচারহীনভাবে আটক করার কাজে এই ধারা ব্যবহার করেছে। এছাড়া এটি বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি আইনের মধ্যে অন্যতম।
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট বলেছে, শহিদুলের মামলায় যথাযথ প্রক্রিয়া লঙ্ঘনের প্রচুর নজির রয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইনমন্ত্রী।
শহিদুল আলমের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে শহিদুল আলম যেসব মন্তব্য করেছেন তা কোনো ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়ে না। আর শহিদুল আলমের দাদার ভাইকে নিয়ে হাসিনার মন্তব্য ‘সামন্ততান্ত্রিক’ বিচার ব্যবস্থার ইঙ্গিত বহন করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনা সরকার এমন অনেক আইন প্রণয়ন করেছে যেখানে দেশের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালালে কারাদণ্ডের কথা বলা আছে। অপরদিকে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তিনি যাতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে না পারেন সেই পরিকল্পনারই অংশ এই সাজা।
সরকার অবশ্য জোর দিয়ে বলছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় তারা হস্তক্ষেপ করেনি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘হাসিনা সরকারের মতো কোনো সরকারই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মূলনীতি এত বেশি সুরক্ষিত ও সমুন্নত রাখেনি।’
শহিদুল আলমকে মূলত আটক করা হয়েছিল ওই ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে তার ‘বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্যের কারণে। সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলশিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভ পরে এই বছরের সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়। শহিদুল আলম বলছেন, তিনি ওই বিক্ষোভ একজন ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাভার করছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে তিনি প্রায় ডজনখানেক ফেসবুক ভিডিও আপলোড করেন। সেখানের একটিতে তিনি বলেন, তার ওপর হামলা করা হয়েছে। ধাতব রড ও লাঠি হাতে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ‘গুন্ডারা’ তার ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলেছে। তিনি পরে কিছু ছবি আপলোড করেন যেখানে মুখোশ পরিহিত ব্যক্তিরা পুলিশের সামনেই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করছে বলে দেখা যায়।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা বিপ্লব বড়–য়া বলেন, ফেসবুক ভিডিওতে ছাত্রদের ওপর আক্রমন ও পুলিশের নির্বিকার অবস্থা স¤পর্কে ফেসবুক ভিডিওতে শহীদুল আলম যা বলেছেন, তা স¤পূর্ণ মিথ্যা। এর ফলে আরও বেশি সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা হামলার শিকার এ ধরণের ছবিতে অনলাইন সয়লাব। তবে হামলাকারীরা কোন গোষ্ঠীর লোক তা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
আল জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকার দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সরকার অতীতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-েও জড়িয়েছে। তবে বিতর্কিত মাদকবিরোধী অভিযানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অনুমতি দেওয়ার যেই অভিযোগ রয়েছে, তা সরকার অস্বীকার করেছে।
গত মাসের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে হাসিনা বলেন, কর্তৃপক্ষ যখন শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছিল শহীদুল আলম তখন মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (শহীদুল) পরিস্থিতি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, উস্কে দিতে চেয়েছিলেন। আমরা শিশুদের বাঁচাতে চেয়েছি কিন্তু তিনি এই শিশুদের ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। যাবতীয় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। আপনি এটা কিভাবে মানতে পারেন?’
সাক্ষাৎকারে তিনি শহীদুল আলমের দাদার মৃত ভাই আবদুস সবুর খানের কড়া সমালোচনা করেন। সাবেক মন্ত্রী সবুর খান বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিলেন। পাকিস্তানের সঙ্গে একাত্ম হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছেন। পাকিস্তানে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশ তিনি মেনে নেননি। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন। রক্ত মাঝেমাঝে কথা বলে। আপনি বোঝেন সেটা।’
বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ এখনও একটি সংবেদনশীল প্রসঙ্গ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে নতুন একটি আইন সোমবার প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করে কার্যকর করেছেন। এ আইনের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও আমেরিকান সাংবাদিকদের বিরোধীতা ছিল। এতে সরকারী ভবনের ভেতর গোপনে রেকর্ড করা কিংবা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানোর জন্য ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
হাসিনা অবশ্য বলেছেন, সাংবাদিকদের এই আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তার ভাষ্য, ‘তাদের যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে তারা কোনো ভুল কিছু করবেন না, তাহলে তাদের চিন্তিত হওয়ার কি আছে?’
No comments