নতুন যম ৪৩
আগে
সবার যম ছিল ৫৭ ধারা। এখন থেকে অনলাইন প্রকাশনার জন্য বেশি যম হবে ডিজিটাল
আইনের ৪৩ ধারা। কারণ ৫৭ ধারা প্রয়োগের যাচাই চূড়ান্ত করার এখতিয়ার ছিল
আদালতের। ৫৭ ধারার আওতায় পুলিশ শুধু গ্রেপ্তার করতে পারতো। অনলাইন মাধ্যম
বা ওয়েবসাইট পুলিশ বন্ধ করতে পারতো না। পুলিশ এখন তা পারবে। বিলকুল
তল্লাশি, দেহতল্লাশি, গ্রেপ্তার এবং ইন্টারনেটসহ পুরো কম্পিউটার সিস্টেম
জব্দ করতে পারবে। এর ফলে বাস্তবে পুলিশ কার্যত তাৎক্ষণিক কোনো ওয়েব
প্রকাশনা চলমান রাখা অসম্ভব করে তুলতে পারে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্লক বা অপসারণ করতে হলে ৮ ধারার আওতায় মহাপরিচালকের মাধ্যমে বিটিআরসিকে অনুরোধ করবে পুলিশ।
তবে এসবের কোনো কিছুর জন্যই তাকে আদালতের সাহায্য নিতে হবে না। পুলিশকে এজন্য কোনো আগাম মামলা দিতে হবে না।
তবে একটা শর্ত আছে। পুলিশ এ ধরনের তল্লাশি অভিযানে আসার আগে কমপক্ষে এসআই পদের কাউকে থানায় একটা লিখিত রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। আগে লিখে তারপর তাকে অভিযানে নামতে হবে। সংবাদমাধ্যম আদালতের এখতিয়ার তৈরি হয়েছে পুলিশ আগে লিখেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখার।
উল্লেখ্য, এখন বিলুপ্ত ৫৭ ধারার অপরাধগুলো চারভাগে ডিজিটাল আইনে ঢুকেছে। এর ফলে ৪৩ ধারার আওতায় দেশের যেকোনো পুলিশ অফিসারের মনে ‘বিশ্বাস’ জন্মালেই হলো যে, ৫৭ ধারার অপরাধগুলো কোথাও ঘটেছে। এমনকি বাস্তবে আদৌ না ঘটলেও চলবে। শুধু সাবেক ৫৭ ধারার অপরাধ ঘটার ‘সম্ভাবনা’ আছে, এরকম কোনো পুলিশ অফিসারের মনে হলেই হলো।
মন্ত্রিসভা একটি রক্ষাকবচ তৈরি করে দিয়েছিল। ৪৩ ধারায় বলা হয়েছিল, এইরূপ বিশ্বাসের কারণ লিখে মহাপরিচালকের অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু বিল পাসের দিন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি ষোলোকলা পূর্ণ করেছে। এক জাপা সংসদ সদস্যের সংশোধনীর কারণে মহাপরিচালকের অনুমোদন লাগার বিধানটি লোপ পেয়েছে। সেদিক থেকে জাতীয় পার্টি অনেক বিশেষজ্ঞের মতে সরকারি দলের থেকেও বেশি ক্ষতিকর ভূমিকা রেখেছে। অনেকের মতে, জাপা সরকারি দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, এটা অবিলম্বে সরকারি দলের বিবেচনায় নেয়া উচিত হবে। কারণ, এজেন্সির যিনি মহাপরিচালক হবেন, তাকে অবিশ্বাসের কোনো কারণ ছিল না। কারণ তাকে তো বর্তমান সরকারই নিয়োগ দেবে।
৪৩ ধারা বলেছে, পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তার। (১) যদি কোনো পুলিশ অফিসারের এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে কোনো স্থানে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে বা হইতেছে বা হইবার সম্ভাবনা রহিয়াছে বা সাক্ষ্য প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছিয়া ফেলা, পরিবর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে দুষ্প্রাপ্য হইবার বা করিবার সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি, অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া নিম্নবর্ণিত কার্য সম্পাদন করিতে পারিবেন,-
ক. উক্ত স্থানে প্রবেশ করিয়া তল্লাশি এবং প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হইলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; খ. উক্ত স্থানে তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা অন্যান্য সরঞ্জামাদি এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোনো দলিল জব্দকরণ;
গ. উক্ত স্থানে উপস্থিত যেকোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি;
ঘ. উক্ত স্থানে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ করিয়াছেন বা করিতেছেন বলিয়া সন্দেহ হইলে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার।
গত ২৩শে জানুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী এক সারসংক্ষেপে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছিলেন, ‘বিদ্যমান বাস্তবতার নিরিখে ২০০৬ সালের ৫৭ ধারার উপাদানসমূহ বিবেচনাক্রমে পৃথক ৪টি ধারায় (২৫ [মিথ্যা, ভীতিপ্রদর্শক তথ্য], ২৮ [ ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতি], ২৯ [মানহানি] এবং ৩১ [আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো]) বিন্যস্ত করা হয়েছে। নতুন ডিজিটাল আইনে এসব অপরাধ করলে কেউ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি পাবেন। যেমন ২৫ ধারায় তিন বছর জেল, দ্বিতীয়বার করলে ৫ বছর জেল হবে। ২৮ ধারায় প্রথমবার অপরাধ করলে ৫ বছর, দ্বিতীয়বার করলে ১০ বছর, ২৯ ধারায় মানহানি করলে প্রথম ৩ বছর, দ্বিতীয় বারে ৫ বছর এবং ৩১ ধারায় প্রথমে সাত ও পরে ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।
নতুন ডিজিটাল আইনের ৮ ধারা বলেছে, কতিপয় তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করিবার ক্ষমতা।-১. মহাপরিচালকের নিজ অধিক্ষেত্রভুক্ত কোনো বিষয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত ডিজিটাল নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি সৃষ্টি করিলে তিনি উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ক্ষেত্রমত, ব্লক করিবার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে, অতঃপর বিটিআরসি বলিয়া উল্লিখিত, অনুরোধ করিতে পারিবেন। ২. যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট প্রতীয়মান হয় যে, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা উহার কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে, বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তাহা হইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করিবার জন্য মহাপরিচালকের মাধ্যমে, বিটিআরসিকে অনুরোধ করিতে পারিবেন। ৩. উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন কোনো অনুরোধ প্রাপ্ত হইলে বিটিআরসি, উক্ত বিষয়াদি সরকারকে অবহিতক্রমে, তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ক্ষেত্রমত, ব্লক করিবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্লক বা অপসারণ করতে হলে ৮ ধারার আওতায় মহাপরিচালকের মাধ্যমে বিটিআরসিকে অনুরোধ করবে পুলিশ।
তবে এসবের কোনো কিছুর জন্যই তাকে আদালতের সাহায্য নিতে হবে না। পুলিশকে এজন্য কোনো আগাম মামলা দিতে হবে না।
তবে একটা শর্ত আছে। পুলিশ এ ধরনের তল্লাশি অভিযানে আসার আগে কমপক্ষে এসআই পদের কাউকে থানায় একটা লিখিত রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। আগে লিখে তারপর তাকে অভিযানে নামতে হবে। সংবাদমাধ্যম আদালতের এখতিয়ার তৈরি হয়েছে পুলিশ আগে লিখেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখার।
উল্লেখ্য, এখন বিলুপ্ত ৫৭ ধারার অপরাধগুলো চারভাগে ডিজিটাল আইনে ঢুকেছে। এর ফলে ৪৩ ধারার আওতায় দেশের যেকোনো পুলিশ অফিসারের মনে ‘বিশ্বাস’ জন্মালেই হলো যে, ৫৭ ধারার অপরাধগুলো কোথাও ঘটেছে। এমনকি বাস্তবে আদৌ না ঘটলেও চলবে। শুধু সাবেক ৫৭ ধারার অপরাধ ঘটার ‘সম্ভাবনা’ আছে, এরকম কোনো পুলিশ অফিসারের মনে হলেই হলো।
মন্ত্রিসভা একটি রক্ষাকবচ তৈরি করে দিয়েছিল। ৪৩ ধারায় বলা হয়েছিল, এইরূপ বিশ্বাসের কারণ লিখে মহাপরিচালকের অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু বিল পাসের দিন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি ষোলোকলা পূর্ণ করেছে। এক জাপা সংসদ সদস্যের সংশোধনীর কারণে মহাপরিচালকের অনুমোদন লাগার বিধানটি লোপ পেয়েছে। সেদিক থেকে জাতীয় পার্টি অনেক বিশেষজ্ঞের মতে সরকারি দলের থেকেও বেশি ক্ষতিকর ভূমিকা রেখেছে। অনেকের মতে, জাপা সরকারি দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, এটা অবিলম্বে সরকারি দলের বিবেচনায় নেয়া উচিত হবে। কারণ, এজেন্সির যিনি মহাপরিচালক হবেন, তাকে অবিশ্বাসের কোনো কারণ ছিল না। কারণ তাকে তো বর্তমান সরকারই নিয়োগ দেবে।
৪৩ ধারা বলেছে, পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তার। (১) যদি কোনো পুলিশ অফিসারের এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে কোনো স্থানে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে বা হইতেছে বা হইবার সম্ভাবনা রহিয়াছে বা সাক্ষ্য প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছিয়া ফেলা, পরিবর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে দুষ্প্রাপ্য হইবার বা করিবার সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি, অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া নিম্নবর্ণিত কার্য সম্পাদন করিতে পারিবেন,-
ক. উক্ত স্থানে প্রবেশ করিয়া তল্লাশি এবং প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হইলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; খ. উক্ত স্থানে তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা অন্যান্য সরঞ্জামাদি এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোনো দলিল জব্দকরণ;
গ. উক্ত স্থানে উপস্থিত যেকোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি;
ঘ. উক্ত স্থানে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ করিয়াছেন বা করিতেছেন বলিয়া সন্দেহ হইলে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার।
গত ২৩শে জানুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী এক সারসংক্ষেপে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছিলেন, ‘বিদ্যমান বাস্তবতার নিরিখে ২০০৬ সালের ৫৭ ধারার উপাদানসমূহ বিবেচনাক্রমে পৃথক ৪টি ধারায় (২৫ [মিথ্যা, ভীতিপ্রদর্শক তথ্য], ২৮ [ ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতি], ২৯ [মানহানি] এবং ৩১ [আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো]) বিন্যস্ত করা হয়েছে। নতুন ডিজিটাল আইনে এসব অপরাধ করলে কেউ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি পাবেন। যেমন ২৫ ধারায় তিন বছর জেল, দ্বিতীয়বার করলে ৫ বছর জেল হবে। ২৮ ধারায় প্রথমবার অপরাধ করলে ৫ বছর, দ্বিতীয়বার করলে ১০ বছর, ২৯ ধারায় মানহানি করলে প্রথম ৩ বছর, দ্বিতীয় বারে ৫ বছর এবং ৩১ ধারায় প্রথমে সাত ও পরে ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।
নতুন ডিজিটাল আইনের ৮ ধারা বলেছে, কতিপয় তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করিবার ক্ষমতা।-১. মহাপরিচালকের নিজ অধিক্ষেত্রভুক্ত কোনো বিষয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত ডিজিটাল নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি সৃষ্টি করিলে তিনি উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ক্ষেত্রমত, ব্লক করিবার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে, অতঃপর বিটিআরসি বলিয়া উল্লিখিত, অনুরোধ করিতে পারিবেন। ২. যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট প্রতীয়মান হয় যে, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা উহার কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে, বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তাহা হইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করিবার জন্য মহাপরিচালকের মাধ্যমে, বিটিআরসিকে অনুরোধ করিতে পারিবেন। ৩. উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন কোনো অনুরোধ প্রাপ্ত হইলে বিটিআরসি, উক্ত বিষয়াদি সরকারকে অবহিতক্রমে, তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ক্ষেত্রমত, ব্লক করিবে।
No comments