দলীয় সম্মেলনে ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ!
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এ পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির চলমান বাছাই পর্বে বেশ ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সমর্থকদের আশা, রিপাবলিকান পার্টির প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দলের মনোনয়ন পাবেন। ট্রাম্প-সমর্থকেরা যতই আশাবাদী হন, দলটির মনোনয়ন নির্ভর করছে জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনের ওপর। সেই সম্মেলন বিভক্তির হলে পিছিয়ে থাকা প্রার্থীদের সংগৃহীত ডেলিগেট ট্রাম্পের হিসাব উল্টে দিতে পারে বলেও বিশ্লেষকদের ধারণা। রিপাবলিকান পার্টির দলীয় মনোনয়নের লড়াইয়ে এর মধ্যেই ঝরে পড়েছেন বাঘা বাঘা সব প্রার্থী। জেব বুশের পর রিপাবলিকান দলের প্রাতিষ্ঠানিক প্রার্থী মারকো রুবিও ঝরে পড়ার পর ট্রাম্প-সমর্থকদের উদ্দীপনা আরও বেড়েছে। সমর্থকদের মতে, রিপাবলিকান দলের প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেই ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাবেন এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে আসছে নভেম্বরে ধরাশায়ী করবেন। দলীয় বাছাই পর্বে রিপাবলিকান পার্টির প্রাতিষ্ঠানিকতাকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমর্থকদের এমন আশাবাদ সত্ত্বেও খাঁটি রিপাবলিকান ঘরানার লোকজন মনে করছেন, ট্রাম্পকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠেয় দলের জাতীয় সম্মেলন পর্যন্ত। আমেরিকার জটিল রাজনৈতিক মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বাছাই পর্বের পর জাতীয় সম্মেলনে প্রার্থীর মনোনয়ন অনুমোদন করা হয়। এবারের সম্মেলন হবে ওহাইও রাজ্যের ক্লিবল্যান্ডে।
১৮ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের বাছাই পর্বে ডোনাল্ড ট্রাম্প এককভাবে ১ হাজার ২৩৭টি ডেলিগেট সংগ্রহ করতে পারলে সম্মেলনে তাঁর মনোনয়ন প্রাপ্তি নিশ্চিত হতে পারে। বাছাই পর্বে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ট্রাম্পকে সম্মেলনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। রাজ্যগুলোতে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ডেলিগেট বরাদ্দ হয়ে থাকে। এসব ডেলিগেট জাতীয় সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ভোট দেন। অঙ্গরাজ্য থেকে আসা ডেলিগেটরা কীভাবে ভোট দেবেন, তা নিয়েও নানা জটিলতা রয়েছে। রাজ্য ভেদে নিয়মকানুন ভিন্ন। ডেলিগেটরা সম্মেলনে নির্বাচকমণ্ডলীর ইচ্ছা অনুযায়ী ভোট প্রদান করবেন। যেমন টেনেসির ডেলিগেটরা বিভক্তির সম্মেলনে দুই দফা নির্বাচকমণ্ডলীর ইচ্ছা অনুযায়ী ভোট দিতে বাধ্য। দ্বিতীয় দফা ভোটের পর প্রার্থী বাছাই না হলে এসব ডেলিগেট কোনো দায়বদ্ধতা ছাড়াই ভোট দিতে পারবেন। আইওয়া, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া, মন্টানা, নেভাদা, পোর্টোরিকো এবং ওয়াশিংটন রাজ্যের ডেলিগেটরা একদফা নির্বাচকমণ্ডলীর ইচ্ছা অনুযায়ী ভোট দিতে বাধ্য। এরপর তাঁরা যেকোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। সাউথ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান ডেলিগেটরা প্রথম দফা ভোট দেবেন তাঁদের রাজ্য বাছাই পর্বে জয়ী প্রার্থীকে। এ পর্যায়ে প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত না হলে এ রাজ্যের ডেলিগেটদের ভোট দিতে হবে তাঁদের রাজ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থান পাওয়া প্রার্থীকে। ট্রাম্প বৈশ্বিক ঝুঁকি: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তা হবে সবচেয়ে বড় ১০টি বৈশ্বিক ঝুঁকির একটি। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বৈশ্বিক অর্থনীতি বিপর্যস্ত হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়া বা দক্ষিণ চীন সাগরে সশস্ত্র সংঘাতের চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ট্রাম্পের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া।
No comments