জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বান -জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বান কি মুন
জাতিসংঘের
মহাসচিব বান কি মুন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গিবাদী সংগঠনকে রুখতে
মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, কঠোর পন্থা
নেওয়ার ফলে জঙ্গিবাদ বরং বেড়েই গেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গত
শুক্রবার বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি এই আহ্বান জানিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা
তুলে ধরেন তিনি।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, প্রতিটি রাষ্ট্রকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে একটি জাতীয় পরিকল্পনা তৈরির আহ্বান জানান বান কি মুন। তিনি বলেন, আইএস বা অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর হুমকি মোকাবিলায় এখন সংকীর্ণ পরিসরে কেবল সামরিক ও নিরাপত্তাগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এদের মোকাবিলা করতে হলে এসব পন্থার বাইরে এসে পরিকল্পনা করতে হবে।
বান কি মুন বলেন, অপরিকল্পিত নীতি, ব্যর্থ নেতৃত্ব, কঠোর পন্থা, কেবল বল প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ নির্মূলের চেষ্টা হয়েছে। উপেক্ষিত হয়েছে মানবাধিকার। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এসব পন্থা নেওয়ার ফলে জঙ্গিবাদ বরং বেড়েই গেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘ভুল নীতির ফলে আমরা নিষ্ঠুর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে হেরে চলেছি। এ ধরনের নীতি মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। কোণঠাসা হওয়া মানুষ দিন দিন আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। আর এর ফলে শত্রুদের হাতই শুধু শক্তিশালী হচ্ছে।’
বান কি মুন বলেন, ‘আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে এবং সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করতে হবে।’
বান কি মুন বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদের একপেশে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রায়ই বিরোধী পক্ষ, সুশীল সমাজের সংগঠন বা মানবাধিকারকর্মীদের কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। কারও মুখ বন্ধ করতে বা কাউকে বাধা দিতে কোনো সরকারেরই এ ধরনের আচরণ করা উচিত নয়। জঙ্গিবাদ সব সময়ই এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নেয়। আমরা যেন সেই ফাঁদে পা না দিই।’
মহাসচিব বলেন, ‘জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবিলায় আইনগত অধিকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রয়েছে। তবে এই সন্ত্রাসবাদের কারণ নির্ণয়েও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’
বান কি মুন জঙ্গিবাদ নির্মূলে ৭৯ দফা সুপারিশ করেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো, যেসব বিদেশি ইতিমধ্যে আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিতে গেছে, তাদের শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ দিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে শিক্ষার প্রসারের তাগিদ দেন বান কি মুন। তিনি বলেন, এর ফলে আইএস বা বোকো হারামের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো তরুণদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা বন্ধ করবে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সভায় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন।
প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘের মহাসচিবের ভাষণের বিষয়বস্তু নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে সরকার ও আওয়ামী লীগের দুজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে জাতিসংঘের মহাসচিবের ভাষণের বিষয়বস্তু বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন বলে মনে করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণতন্ত্র না থাকলে যেকোনো দেশেই জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেয়। বাংলাদেশেও আমরা এর লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি এবং সে জায়গায় পৌঁছে গেছি।’
বিএনপির কূটনৈতিক শাখার গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা বলেন, যখন সরকার গণতন্ত্রের চেতনা থেকে সরে গিয়ে অন্য শক্তি দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে চায়, তখন আইনের শাসন কমতে থাকে, মানবাধিকারের লঙ্ঘন বাড়তে থাকে, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। একপর্যায়ে জীবনের নিরাপত্তাই থাকে না। বাংলাদেশে এখন এর সবই বিদ্যমান।
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রাজনীতি এখনো জঙ্গিবাদের প্রতি আপসকামী। কেবল অস্ত্র দিয়ে আমরা যদি জঙ্গিবাদের মোকাবিলা করতে চাই, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।’ জঙ্গিবাদ নির্মূলে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বিকাশ ও শিক্ষার প্রসারের ওপর গুরুত্ব দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, প্রতিটি রাষ্ট্রকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে একটি জাতীয় পরিকল্পনা তৈরির আহ্বান জানান বান কি মুন। তিনি বলেন, আইএস বা অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর হুমকি মোকাবিলায় এখন সংকীর্ণ পরিসরে কেবল সামরিক ও নিরাপত্তাগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এদের মোকাবিলা করতে হলে এসব পন্থার বাইরে এসে পরিকল্পনা করতে হবে।
বান কি মুন বলেন, অপরিকল্পিত নীতি, ব্যর্থ নেতৃত্ব, কঠোর পন্থা, কেবল বল প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ নির্মূলের চেষ্টা হয়েছে। উপেক্ষিত হয়েছে মানবাধিকার। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এসব পন্থা নেওয়ার ফলে জঙ্গিবাদ বরং বেড়েই গেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘ভুল নীতির ফলে আমরা নিষ্ঠুর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে হেরে চলেছি। এ ধরনের নীতি মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। কোণঠাসা হওয়া মানুষ দিন দিন আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। আর এর ফলে শত্রুদের হাতই শুধু শক্তিশালী হচ্ছে।’
বান কি মুন বলেন, ‘আমাদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে এবং সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করতে হবে।’
বান কি মুন বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদের একপেশে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রায়ই বিরোধী পক্ষ, সুশীল সমাজের সংগঠন বা মানবাধিকারকর্মীদের কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। কারও মুখ বন্ধ করতে বা কাউকে বাধা দিতে কোনো সরকারেরই এ ধরনের আচরণ করা উচিত নয়। জঙ্গিবাদ সব সময়ই এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নেয়। আমরা যেন সেই ফাঁদে পা না দিই।’
মহাসচিব বলেন, ‘জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবিলায় আইনগত অধিকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রয়েছে। তবে এই সন্ত্রাসবাদের কারণ নির্ণয়েও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’
বান কি মুন জঙ্গিবাদ নির্মূলে ৭৯ দফা সুপারিশ করেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো, যেসব বিদেশি ইতিমধ্যে আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিতে গেছে, তাদের শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ দিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে শিক্ষার প্রসারের তাগিদ দেন বান কি মুন। তিনি বলেন, এর ফলে আইএস বা বোকো হারামের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো তরুণদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা বন্ধ করবে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সভায় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন।
প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘের মহাসচিবের ভাষণের বিষয়বস্তু নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে সরকার ও আওয়ামী লীগের দুজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে জাতিসংঘের মহাসচিবের ভাষণের বিষয়বস্তু বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন বলে মনে করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণতন্ত্র না থাকলে যেকোনো দেশেই জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেয়। বাংলাদেশেও আমরা এর লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি এবং সে জায়গায় পৌঁছে গেছি।’
বিএনপির কূটনৈতিক শাখার গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা বলেন, যখন সরকার গণতন্ত্রের চেতনা থেকে সরে গিয়ে অন্য শক্তি দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে চায়, তখন আইনের শাসন কমতে থাকে, মানবাধিকারের লঙ্ঘন বাড়তে থাকে, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। একপর্যায়ে জীবনের নিরাপত্তাই থাকে না। বাংলাদেশে এখন এর সবই বিদ্যমান।
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রাজনীতি এখনো জঙ্গিবাদের প্রতি আপসকামী। কেবল অস্ত্র দিয়ে আমরা যদি জঙ্গিবাদের মোকাবিলা করতে চাই, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।’ জঙ্গিবাদ নির্মূলে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বিকাশ ও শিক্ষার প্রসারের ওপর গুরুত্ব দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা।
No comments