মুসলিমবিদ্বেষ: আক্রমণের মুখে ডোনাল্ড ট্রাম্প
মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ব্যাপারে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজ দলের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেব বুশের আক্রমণের মুখে পড়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সাউথ ক্যারোলাইনার নর্থ চার্লসটনে অনুষ্ঠিত সম্ভাব্য সাত রিপাবলিকান প্রার্থীর ষষ্ঠ বিতর্কে ট্রাম্প বুশের এ আক্রমণের শিকার হন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি আইওয়া অঙ্গরাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে রিপাবলিকান পার্টির প্রথম প্রাক্-নির্বাচনী বাছাই। ‘আইওয়া ককাস’ নামে পরিচিত এই নির্বাচনের ১৮ দিন আগে অনুষ্ঠিত হয় এ বিতর্ক। ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেব বুশ বিতর্কে ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দেন, সৌদি আরব ও জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র। তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে একা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াই বাস্তবসম্মত নয়। বিতর্কে জেব বুশ মন্তব্য করেন, মুসলিমদের নিষিদ্ধের ব্যাপারে ট্রাম্পের অবস্থান ‘পাগলামি’। বিতর্কের সঞ্চালক মনে করিয়ে দেন, বুশ ইতিপূর্বেও ট্রাম্পের বক্তব্য ‘পাগলামি’ বলেছিলেন—এর পরপরই সাউথ ক্যারোলাইনায় ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৮ শতাংশ বেড়ে যায়। এ সময় ট্রাম্প মৃদু হেসে বলেন, ‘৮ নয়, ১১ শতাংশ।’ বিতর্কে ট্রাম্প জানিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্য থেকে সরে আসবেন না তিনি। বিতর্কে ট্রাম্পকে মুসলিমবিদ্বেষী পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে তাঁর প্রতি আহ্বান জানান জেব বুশ।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘“ইসলামি উগ্রপন্থা” নিয়ে আমরা গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন। এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বিশ্বজুড়েই সমস্যা।’প্রসঙ্গত, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়ার পর বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করলেও মার্কিনদের মধ্যে তাঁর সমর্থন বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবারের এ বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন টেক্সাস থেকে নির্বাচিত সিনেটর টেড ক্রুজ। অধিকাংশ সময় তাঁকে নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প ও সিনেটর মার্কো রুবিওর কাছ থেকে সাঁড়াশি আক্রমণের সম্মুখীন হতে হয়। জনমত গণনায় জাতীয় পর্যায়ে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও আইওয়াতে ওপরে আছেন ক্রুজ। সে কারণেই ট্রাম্প ক্রুজকে তাঁর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেন। তাঁর সর্বশেষ আক্রমণের বিষয় ছিল প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ক্রুজের আইনগত যোগ্যতা। মার্কিন শাসনতন্ত্র অনুসারে, শুধু জন্মগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকই প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। ক্রুজের জন্ম কানাডায়, তাঁর বাবা কিউবান ও মা আমেরিকান। বিতর্কে ক্রুজ নানাভাবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর মা আমেরিকান হওয়ায় তিনি জন্মগতভাবে আমেরিকান—এই ছিল তাঁর যুক্তি। ক্রুজ এমন কথাও বলেন, ট্রাম্পের নিজের মা-ও স্কটল্যান্ডের। সে কথা উড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি নিউইয়র্কের কুইন্সে জন্মেছেন, ফলে তাঁর জন্মগত কোনো সমস্যা নেই। এ বিতর্কের পর সিএনএনের এক তাৎক্ষণিক জনমত গণনায় ট্রাম্পকে জয়ী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
No comments