হিজড়াদের অন্যরূপ by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
ঢাকার
সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে কালী মন্দিরের সামনে পুকুর পাড়ে রাত নামার পরপরই
হিজড়াদের বেলেল্লাপনা শুরু হয়। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে তারা
পুরুষদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। বহুলোক তাদের খপ্পরে পড়ে যান। অনেক
সহজ-সরল মানুষকে পতিতাবৃত্তির আদলে ফাঁদে ফেলে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়।
রাতে পার্কে প্রাতঃভ্রমণকারীদের পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। কখনও বা
তারা অনেককে জোরপূর্বক গতিরোধ করে যৌন সস্পর্কিত কথা বলতে চায়। অনেক সময়
পুলিশও না দেখার ভান করে তাদেরকে এড়িয়ে যান বলে প্রাতঃভ্রমণকারীদের সঙ্গে
কথা বলে জানা গেছে। অনেক মানুষকে তারা নানা কায়দায় ব্ল্যাকমেইল করে টাকা
পয়সাও ছিনিয়ে নেয়।
শুধু সোহ্রাওয়ার্দী নয়, ঢাকার বিভিন্ন পার্ক এবং ওভারব্রিজ সংলগ্ন সরু জায়গায় রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে তাদের এমন কর্মকাণ্ডের চিত্র চোখে পড়বে সকলের। আর এভাবে দিন দিন হিজড়াদের বেপরোয়া কুরুচিপূর্ণ আচরণ বেড়েই চলছে। ফলে এসব কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ আগের মতো তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারছে না। প্রকাশ্যে দিবালোকে হিজড়াদের অঙ্গভঙ্গির আচরণে চলে নগরজীবনে অশ্লীলতা। দোকানপাট অফিস, ব্যবসায়ী, পথচারী এমনকি বিভিন্ন বাসস্টপে জনসমকক্ষে চলে তাদের উলঙ্গ অঙ্গভঙ্গি। কর্মদিবসের শুরুতে, কর্মদিবসের মাঝখানে তাদের এসব অশ্লীলতা ভদ্র নগরবাসীর কাছে যেন প্রকশ্যে যৌন ছবির মহড়ার সামিল।
এই চিত্র শুধু শহরে নয়, এখন তারা লোকালয়েও তাদের এ ধরনের নেতিবাচক আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রাবাড়ীর এক বাসিন্দা। ফলে মানুষ আগের মতো তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারছে না। তবে, হিজড়া গুরুরা এ ধরনের আচরণের জন্য লিঙ্গ কাটা হিজড়াদের দায়ী করেছেন। তারা বলছেন, পৃথিবীতে যারা হিজড়া হয়ে এসেছেন তারা এ রকম কাজ করতে পারেন না। এদিকে হিজড়ার দল এখন নগরের বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড, মাদক ব্যবসা, দেহব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বা তাদের জড়িত করে অপরাধী গডফাদাররা ফায়দা হাসিল করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আজকাল তাদের অপরাধের ব্যাপকতার কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ক্ষেত্রবিশেষে অসহায়। কিছু হলে বাহিনীর লোককেও প্রকাশ্যে ঘিরে ধরে। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি আর হাততালি এ যেন প্রকাশ্যে খোলা আকাশের নিচে নিষিদ্ধ ছবির মহড়া। রাস্তায় জ্যামে বা ট্রাফিক মোড়ে গাড়ি আটকা পড়লেই তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে টাকা তুলতে। অনেকের গাড়ির গ্লাস না খুললে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে থাকে। সমপ্রতি রূপসী বাংলা হোটেলর সামনে সিগন্যালে এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু হিজড়া পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েছে। কতিপয় হিজড়া দেদারছে রাতের আঁধারে বিভিন্ন পার্কে এবং ঢাকার ওভারব্রিজসহ সংলগ্ন সরু জায়গায় পতিতাবৃত্তির কাজ চালাচ্ছেন। এতে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে গিয়ে কখনও বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়ছেন। গুলশান এক নম্বরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন বাপ্পি (ছদ্মনাম নাম)। একদিন তিনি হিজড়াদের খপ্পরে পড়েন। তিনি জানান, গুলশান এক নম্বর ও মহাখালী লিঙ্করোডে রাতে তার এই ঘটনা ঘটে। এক হিজড়া বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাকে গুলশান লেকপাড়ে নিয়ে যান। প্রথমে একজন। এরপর অল্পকিছুক্ষণের মধ্যে আরও তিনজন এসে তাকে জাপটে ধরে ফেলে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা জোরপূর্বক তার প্যান্টের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেয়। মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। মানিব্যাগে আনুমানিক পাঁচ হাজার টাকা ছিল। এই অভিজ্ঞতার পর থেকে রাতে হিজড়াদের দেখলে তিনি আর সেখানে অবস্থান করেন না।
এদিকে ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে ব্যবসা, অফিস-পাড়া, পথচারী এমনকি বাসা-বাড়িতে এসে জোর করে চাঁদা দাবি করছে কতিপয় হিজড়া। তারা বিভিন্ন দিবস বা উপলক্ষকে সামনে রেখে ‘ছল্লাই’ তোলার নামে চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ করেন ‘শ’ আদ্যাক্ষরের এক যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা। ওই বাসিন্দা জানান, নবজাত শিশুর জন্মগ্রহণ উপলক্ষে তার পরিবার বা আত্মীয়স্বজন, বিয়ের বরযাত্রীদের থেকে তারা জোরপূর্বকভাবে এসব চাঁদা তোলে। হিজড়ারা কখনও নবজাত শিশুর জন্মগ্রহণ উপলক্ষে দুই হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা, পরিবার ভেদে চাঁদা দাবি করে থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাদের পরিবার ও আশপাশের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি প্রতিবেদককে এই বর্ণনা দেন। এমন বক্তব্যের সততা পাওয়া যায় ধামরাইর নোলক হিজড়ার সঙ্গে আলাপকালে। তিনি (নোলক) জানান, তারা নবজাত শিশুর জন্মগ্রহণ বা বিয়েবাড়িতে গিয়ে এভাবে ‘ছল্লাই’ তোলার মাধ্যমে টাকা আয় করে। তিনি জানান, তাদের (হিজড়াদের) দেখে অনেকে স্বেচ্ছায় টাকা দিয়ে দেন। অনেকে বিয়েবাড়িতে নাচ-গান করে টাকা আনে। নোলক বলেন, যারা পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া হয় তারা রাতে ছিনতাই করে। মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আয় করে। আর পৃথিবীতে যারা হিড়জা হয়ে এসেছে তারা এসব করতে পারে না। তবে, জোরপূর্বক টাকা আদায়ের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের নদী নামের এক হিজড়া মানবজমিনকে বলেন, হিজড়ারা শুধু ‘ছল্লাই’ (চাঁদা) তোলে টাকা খেয়ে ফেলে এমন নয়। সমাজের অকেকের উপকারও করে। আশপাশের কেউ বিপদে পড়লে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়। পাড়া-মহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসায় সাহায্য-সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
হিজড়াদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন ‘বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফয়ার সোসাইটি’। সমাজের মধ্যে এই জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, আত্ম-নির্ভরশীলতা ও ইতিবাচক মনোভাব আনয়নের জন্য কাজ করে এই সংগঠনটি। এজন্য তারা এডভোকেসি প্রোগ্রামও করে থাকে। সংগঠনটি সূত্রে জানা যায়, এই জনগোষ্ঠীকে সরকার ২০১৩ সালের নভেম্বরে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু এখন তাদের অধিকার নিয়ে তারা বেঁচে থাকতে পারেন।
হিজড়াদের ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের ২১শে মে এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সভায় আরও আলোচনা হয় যে, শুধু লিঙ্গ পরিচয়েই নয়, নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে হিজড়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকেও আমলে নেয়া হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পরবর্তীতে সরকার কর্তৃক আরও বিশ্লেষণের পর সংশোধন করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২০১৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে একটি পৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে তারা। এরপর থেকে তারা শিক্ষা এবং অন্যান্য অধিকারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে শুরু করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে তারা মনে করেন। এর মাধ্যমে শুধু পৃথক লিঙ্গ হিসেবে তাদেরকে নামেমাত্র স্বীকৃতি দেয়াই নয়; বরং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে সমাজে তাদেরকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার সুযোগও হয়েছে তাদের।
শুধু সোহ্রাওয়ার্দী নয়, ঢাকার বিভিন্ন পার্ক এবং ওভারব্রিজ সংলগ্ন সরু জায়গায় রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে তাদের এমন কর্মকাণ্ডের চিত্র চোখে পড়বে সকলের। আর এভাবে দিন দিন হিজড়াদের বেপরোয়া কুরুচিপূর্ণ আচরণ বেড়েই চলছে। ফলে এসব কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ আগের মতো তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারছে না। প্রকাশ্যে দিবালোকে হিজড়াদের অঙ্গভঙ্গির আচরণে চলে নগরজীবনে অশ্লীলতা। দোকানপাট অফিস, ব্যবসায়ী, পথচারী এমনকি বিভিন্ন বাসস্টপে জনসমকক্ষে চলে তাদের উলঙ্গ অঙ্গভঙ্গি। কর্মদিবসের শুরুতে, কর্মদিবসের মাঝখানে তাদের এসব অশ্লীলতা ভদ্র নগরবাসীর কাছে যেন প্রকশ্যে যৌন ছবির মহড়ার সামিল।
এই চিত্র শুধু শহরে নয়, এখন তারা লোকালয়েও তাদের এ ধরনের নেতিবাচক আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রাবাড়ীর এক বাসিন্দা। ফলে মানুষ আগের মতো তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারছে না। তবে, হিজড়া গুরুরা এ ধরনের আচরণের জন্য লিঙ্গ কাটা হিজড়াদের দায়ী করেছেন। তারা বলছেন, পৃথিবীতে যারা হিজড়া হয়ে এসেছেন তারা এ রকম কাজ করতে পারেন না। এদিকে হিজড়ার দল এখন নগরের বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড, মাদক ব্যবসা, দেহব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বা তাদের জড়িত করে অপরাধী গডফাদাররা ফায়দা হাসিল করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আজকাল তাদের অপরাধের ব্যাপকতার কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ক্ষেত্রবিশেষে অসহায়। কিছু হলে বাহিনীর লোককেও প্রকাশ্যে ঘিরে ধরে। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি আর হাততালি এ যেন প্রকাশ্যে খোলা আকাশের নিচে নিষিদ্ধ ছবির মহড়া। রাস্তায় জ্যামে বা ট্রাফিক মোড়ে গাড়ি আটকা পড়লেই তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে টাকা তুলতে। অনেকের গাড়ির গ্লাস না খুললে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে থাকে। সমপ্রতি রূপসী বাংলা হোটেলর সামনে সিগন্যালে এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু হিজড়া পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েছে। কতিপয় হিজড়া দেদারছে রাতের আঁধারে বিভিন্ন পার্কে এবং ঢাকার ওভারব্রিজসহ সংলগ্ন সরু জায়গায় পতিতাবৃত্তির কাজ চালাচ্ছেন। এতে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে গিয়ে কখনও বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়ছেন। গুলশান এক নম্বরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন বাপ্পি (ছদ্মনাম নাম)। একদিন তিনি হিজড়াদের খপ্পরে পড়েন। তিনি জানান, গুলশান এক নম্বর ও মহাখালী লিঙ্করোডে রাতে তার এই ঘটনা ঘটে। এক হিজড়া বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাকে গুলশান লেকপাড়ে নিয়ে যান। প্রথমে একজন। এরপর অল্পকিছুক্ষণের মধ্যে আরও তিনজন এসে তাকে জাপটে ধরে ফেলে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা জোরপূর্বক তার প্যান্টের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেয়। মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। মানিব্যাগে আনুমানিক পাঁচ হাজার টাকা ছিল। এই অভিজ্ঞতার পর থেকে রাতে হিজড়াদের দেখলে তিনি আর সেখানে অবস্থান করেন না।
এদিকে ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে ব্যবসা, অফিস-পাড়া, পথচারী এমনকি বাসা-বাড়িতে এসে জোর করে চাঁদা দাবি করছে কতিপয় হিজড়া। তারা বিভিন্ন দিবস বা উপলক্ষকে সামনে রেখে ‘ছল্লাই’ তোলার নামে চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ করেন ‘শ’ আদ্যাক্ষরের এক যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা। ওই বাসিন্দা জানান, নবজাত শিশুর জন্মগ্রহণ উপলক্ষে তার পরিবার বা আত্মীয়স্বজন, বিয়ের বরযাত্রীদের থেকে তারা জোরপূর্বকভাবে এসব চাঁদা তোলে। হিজড়ারা কখনও নবজাত শিশুর জন্মগ্রহণ উপলক্ষে দুই হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা, পরিবার ভেদে চাঁদা দাবি করে থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাদের পরিবার ও আশপাশের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি প্রতিবেদককে এই বর্ণনা দেন। এমন বক্তব্যের সততা পাওয়া যায় ধামরাইর নোলক হিজড়ার সঙ্গে আলাপকালে। তিনি (নোলক) জানান, তারা নবজাত শিশুর জন্মগ্রহণ বা বিয়েবাড়িতে গিয়ে এভাবে ‘ছল্লাই’ তোলার মাধ্যমে টাকা আয় করে। তিনি জানান, তাদের (হিজড়াদের) দেখে অনেকে স্বেচ্ছায় টাকা দিয়ে দেন। অনেকে বিয়েবাড়িতে নাচ-গান করে টাকা আনে। নোলক বলেন, যারা পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া হয় তারা রাতে ছিনতাই করে। মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আয় করে। আর পৃথিবীতে যারা হিড়জা হয়ে এসেছে তারা এসব করতে পারে না। তবে, জোরপূর্বক টাকা আদায়ের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের নদী নামের এক হিজড়া মানবজমিনকে বলেন, হিজড়ারা শুধু ‘ছল্লাই’ (চাঁদা) তোলে টাকা খেয়ে ফেলে এমন নয়। সমাজের অকেকের উপকারও করে। আশপাশের কেউ বিপদে পড়লে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়। পাড়া-মহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসায় সাহায্য-সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
হিজড়াদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন ‘বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফয়ার সোসাইটি’। সমাজের মধ্যে এই জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, আত্ম-নির্ভরশীলতা ও ইতিবাচক মনোভাব আনয়নের জন্য কাজ করে এই সংগঠনটি। এজন্য তারা এডভোকেসি প্রোগ্রামও করে থাকে। সংগঠনটি সূত্রে জানা যায়, এই জনগোষ্ঠীকে সরকার ২০১৩ সালের নভেম্বরে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু এখন তাদের অধিকার নিয়ে তারা বেঁচে থাকতে পারেন।
হিজড়াদের ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের ২১শে মে এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সভায় আরও আলোচনা হয় যে, শুধু লিঙ্গ পরিচয়েই নয়, নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে হিজড়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকেও আমলে নেয়া হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পরবর্তীতে সরকার কর্তৃক আরও বিশ্লেষণের পর সংশোধন করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২০১৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে একটি পৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে তারা। এরপর থেকে তারা শিক্ষা এবং অন্যান্য অধিকারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে শুরু করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে তারা মনে করেন। এর মাধ্যমে শুধু পৃথক লিঙ্গ হিসেবে তাদেরকে নামেমাত্র স্বীকৃতি দেয়াই নয়; বরং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে সমাজে তাদেরকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার সুযোগও হয়েছে তাদের।
No comments