রাজনৈতিক দল ও অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চা by আল মাসুদ হাসানউজ্জামান
বিশিষ্ট
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক রওনক জাহানের Political Parties in Bangladesh:
Challenges of Democratization একটি সময়োপযোগী প্রকাশনা। রাজনৈতিক দলের
ওপর গবেষণা এ জন্য অত্যন্ত জরুরি। তবে এ দেশে রাজনৈতিক দল বিষয়ে
স্বল্পসংখ্যক গবেষণাকর্মই সম্পাদিত হয়েছে এবং গভীরতর সূক্ষ্ম,
অনুসন্ধানমূলক গবেষণার অভাব রয়ে গেছে। এই গবেষণা ও বইটি এ অভাব পূরণের
সুচারু প্রয়াস। এ জন্য রওনক জাহানকে অভিনন্দন।
ছয়টি অধ্যায়ে বিন্যাসকৃত আলোচ্য বইটির ভূমিকায় লেখক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক উন্নয়ন তাত্ত্বিকভাবে ব্যাখ্যা করে দ্বিতীয় অধ্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে বিভিন্ন শাসনামলের তিনটি পর্বে দলীয় ব্যবস্থার প্রকৃতি নির্ণয় করেছেন। এভাবে বর্ণিত হয়েছে ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত এক দলের প্রাধান্য থেকে একদলীয় ব্যবস্থা, ১৯৭৫-৯০ সময়ে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সামরিক শাসনামলে দল গঠন এবং ১৯৯১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত দ্বিদলীয় প্রাধান্যে দ্বন্দ্বমূলক রাজনৈতিক পরিসর। এরপর আলোচনায় এসেছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বৈশিষ্ট্য, অভ্যন্তরীণ দলীয় গণতন্ত্রচর্চা, স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় রাজনীতি এবং বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে গণতন্ত্রচর্চার মাত্রা যাচাইকরণ। উপসংহারে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায় প্রাপ্ত ফল ও সুপারিশমালা।
গণতন্ত্রচর্চার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের অপরিহার্য ভূমিকা আর অত্যাবশ্যকতা সর্বজনবিদিত; দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও বহুমাত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা এবং দলীয় কর্মকাণ্ড নাগরিক জীবনকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চালিকাশক্তি হচ্ছে রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক ক্ষমতার মূল হাতিয়ার।
রাজনৈতিক দলের সম্প্রসারিত ভূমিকার কারণে ডেমোক্রেসিকে ‘পার্টিক্রেসি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ১৯৬০–এর দশকের শেষার্ধে লুই আর্মস্ট্রং পার্টিক্রেসি শব্দটি ব্যবহার করেন। ‘পার্টিক্রেসি’ বস্তুত রাজনৈতিক দলের অতি ভূমিকা ও ব্যাপকতর প্রভাবেরই পরিচায়ক। নেতিবাচক অর্থে দেখতে গেলে যেখানে জনগণ নীরব ভূমিকাধারী বা দর্শকের ভূমিকায় আর রাজনৈতিক দল প্রতিনিধিত্ব ও শাসনের ক্ষেত্রে তার একচেটিয়াত্ব বিস্তার করে চলেছে।
রাজনৈতিক দল ও বিষয়টি পশ্চিমা উদ্ভূত। পশ্চিমা উদারনৈতিক গণতন্ত্রে দল গঠনের ক্ষেত্র ও উদ্ভবের প্রেক্ষাপট আর বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক দলের ইতিহাস, গঠন ও বিকাশ ভিন্ন। এ জন্য এসব দেশের দল-গবেষণার ক্ষেত্রে পশ্চিমা ধারণার পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না। ইউরোপীয় ধ্রুপদি পার্টি মোড, মরিস ডুভারজারের মাস-বেস-পার্টি বা কার্শহেইমারের ক্যাচ-অল পার্টি গঠন আমাদের মতন কাঠামোতে অবিকলভাবে খাপ খাওয়ানো সম্ভব নয়। আমাদের দেশের ক্রান্তিকালীন পর্যায়ে যে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ, সমস্যার সংকট প্রত্যক্ষ করা হচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় এনে অনুসন্ধান আবশ্যক হয়। এ জন্য রাজনৈতিক দলের সমাজতত্ত্ব প্রয়োগ করে গবেষণা সম্পাদন গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক দলের তাত্ত্বিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে সমরূপতা রয়েছে। যেমন: রাজনৈতিক সামাজিকীকরণ, স্বার্থ জ্ঞাপন, স্বার্থ সংরক্ষণ আর রাজনৈতিক যোগাযোগ যাকে পলিটিক্যাল ইনপুট কাজ বলা হয়। বস্তুত, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নির্মাণের জন্য আবশ্যক কর্ম সম্পাদন নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রকৃতি আর দলীয় ব্যবস্থার কার্যকারিতার ওপর। এ ক্ষেত্রে দলের প্রাতিষ্ঠানিকায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় এবং সক্রিয় দল-ব্যবস্থার সঙ্গে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ইতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্ক পরিমাপ করা হয়।
আসলে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দল, নির্বাচকমণ্ডলীর সঙ্গে দল, সরকার আর বিরোধী দলে রাজনৈতিক দলের যে ভূমিকা, তা পালনে রাজনৈতিক দলের সংগঠন থেকে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যার সফল পরিণতি হচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ।
এ ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও পরীক্ষণের বিষয়গুলো হচ্ছে সমাজের গভীরে রাজনৈতিক দল ও দলীয় ব্যবস্থার শিকড় কতখানি প্রোথিত হয়েছে, তার নির্ণয় এবং দলের আদর্শ ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাত্রা, দলীয় নেতৃত্ব, কাঠামো, দলীয় স্বাতন্ত্র্য, সংহতি, স্বকীয়তা, সাংগঠনিক দৃঢ়তা, দল ও জনগণ, দল ও সুশীল সমাজ সম্পর্ক এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক কর্ম সম্পাদনের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ।
এ দেশে সংসদীয় কাঠামো চালু থাকলেও এর সুষ্ঠু কার্যকারিতা না থাকায় সরকারের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব এবং বিরোধী দলের বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতাসহ নেতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রয়ে গেছে। এভাবে জন-ইস্যুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থ উদ্ধারে অব্যাহত-লাগাতার হরতাল হয় এবং এসব জনবিচ্ছিন্ন নেতিবাচক কর্মসূচি ক্রমান্বয়ে সহিংস ও নৈরাজ্যময় হয়ে যায়। জনজীবন ও তার নিরাপত্তা চরম হুমকিতে পড়ে। ক্রমাগত সহিংসতা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কখনো সুষ্ঠু দলীয় ব্যবস্থা নির্দেশ করে না।
রওনক জাহানের গবেষণায় লক্ষণীয় হয়েছে যে নব্বই-পরবর্তী থেকে এ দেশে দ্বিদলীয় প্রভাবাধীনে এবং জোটবদ্ধভাবে রাজনীতি চর্চিত হচ্ছে। তবে দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং রাজনীতি দুর্বৃত্তদের করায়ত্ত হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় অর্জিত প্রক্রিয়ার বদলে আরোপিত প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ‘এক-এগারো’-পরবর্তী সময়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে শীর্ষ নেতৃত্বের কর্তৃত্ব অধিকতর সুসংহত ও সুদৃঢ় হয়েছে। দলে অরাজনৈতিক উপাদানের অনুপ্রবেশ ও প্রভাব বিস্তার ঘটেছে, যা নির্বাচনী মনোনয়নে দৃশ্যমান হয়েছে। রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়িক স্বার্থের প্রাধান্য অব্যাহত রয়েছে এবং রাজনীতির বাণিজ্যকরণ ঘটছে। সেই সঙ্গে আছে অস্বচ্ছ রাজনৈতিক অর্থায়ন।
বর্ণিত পার্টিক্রেসির নেতিবাচক প্রবণতার প্রেক্ষাপটে দলীয় জবাবদিহি বা দায়িত্বশীলতার প্রসঙ্গটি আসে। সাম্প্রতিক কালে উন্নয়নশীল বিশ্বে দলীয় জবাবদিহির জন্য রাজনৈতিক দলকে আইনি কাঠামোয় আনা এবং কাঠামোগত সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও কর্মকাণ্ডকে আইনি প্রক্রিয়ায় এনে দায়িত্বশীলতা আনয়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য গণপ্রতিনিধিত্বশীল আদেশ তথা আরপিওতে সংস্কারসাধন এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এতে রয়েছে নির্বাচনে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন, গণতন্ত্রসম্মত গঠনতন্ত্র রচনা, অর্থায়ন ও নির্বাচনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে দল ও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর আবশ্যিক তথ্য প্রকাশ, দলীয় আয়-ব্যয়ের তথ্য উন্মুক্তকরণ ইত্যাদি। তবে অদ্যাবধি গণপ্রতিনিধিত্বশীল আদেশের যথাযথ অনুসরণ ও সুষ্ঠু প্রয়োগ দৃশ্যমান হয়নি।
রওনক জাহানের বইটিতে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র অনুসারে দলীয় কাঠামোর বিন্যাস, নেতৃত্ব নির্বাচন, দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া, নির্বাচনে দল ও প্রার্থীর অর্থায়ন, নির্বাচনী মনোনয়নদান, দলে নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব, বাৎসরিক আয়-ব্যয়, হিসাব দাখিল ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রচলিত আরপিও বিধিবিধান ও প্রকৃত চর্চার ক্ষেত্রে বিস্তর পার্থক্য এবং অসংগতি যথাযথ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, তত্ত্ব ও তথ্যের মাধ্যমে সুচারুরূপে উদ্ঘাটন করা হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রাইমারি উৎস থেকে তথ্য পাওয়ার সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে, যা অবশ্য লেখক বইয়ের মুখবন্ধে উল্লেখ করেছেন। গবেষণার জন্য চারটি রাজনৈতিক দল: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের দীর্ঘ সময়ে রাজনীতিতে বামপন্থী দলগুলোর সরব অংশগ্রহণের প্রেক্ষাপটে একটি বামপন্থী দলকে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করলে গবেষণা আরও প্রতিনিধিত্বমূলক হতে পারত বলে মন্তব্য করা যায়।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে রাজনৈতিক দল-ব্যবস্থায় অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সম্পর্ক গণতন্ত্রায়ণ ও রাজনীতিচর্চাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। যখন শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতা আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মূল নিয়ামক হয়ে ওঠে, তখন এ ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিংসাত্মক ও সহিংস হয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে নির্বাচনী গণতন্ত্রসহ রাষ্ট্রের মৌল বিষয়ে ঐকমত্যহীনতা রয়েছে, সেখানে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সহিংস ও অসাংবিধানিক পন্থাই অনুসৃত হয়ে থাকে, যা আমরা আন্তদলীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ করেছি। আলোচ্য বইটিতে অন্তর্দলীয় বিষয়াদি বিভিন্ন ডাইমেনশন থেকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে আন্তদলীয় সম্পর্কের উপাদানগুলো গণতন্ত্রায়ণের সমস্যার অন্যতম প্রভাবক কিনা তার পরীক্ষণ বইটিতে পর্যালোচনার দাবি রাখে।
যা হোক, আলোচ্য বইটিতে গত তেতাল্লিশ বছরে বাংলাদেশে দলীয় ব্যবস্থার বিকাশ এবং রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রায়ণের চ্যালেঞ্জগুলো গভীরভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। যদিও এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলো দলীয় নেতৃত্বেই হয়, তথাপি দলীয় কাঠামোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ও প্রাতিষ্ঠানিকায়নে একধরনের অবক্ষয় বিরাজমান। প্রধান দলগুলোর মূল লক্ষ্য রাষ্ট্রক্ষমতা দখল হওয়ায় সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে নিজ নিজ সমর্থনের ভিত্তি সম্প্রসারণ তাদের মতাদর্শ ও নীতির সঙ্গে আপসকামিতা প্রকাশ করে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মক্কেলধর্মী সম্পর্ক, দুর্নীতি ও সহিংসতার প্রসার ঘটায়। ফলে রাজনৈতিক দলের ঐতিহ্যিক কর্মকাণ্ড পালন ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। গণতন্ত্রায়ণে উত্তরণের জন্য লেখক রাজনৈতিক দলগুলোকে অগণতান্ত্রিক আচরণ পরিহার, নিজ পক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ও সম্পদের ব্যবহার বন্ধকরণ, জাতীয় সংসদ বয়কটের সংস্কৃতির অবসান, অন্তঃ ও আন্তদলীয় দ্বন্দ্ব নিরসনে সহিংসতা পরিত্যাগ, দলীয় সংগঠনকে সরকার থেকে পৃথক্করণ, ব্যবসায়িক স্বার্থের পরিবর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ সামাজিক গোষ্ঠীসহ নারী ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ এবং দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক গতি–প্রকৃতির সুষ্ঠু ব্যাখ্যার জন্য দল ও দলীয় ব্যবস্থার ওপর সার্বিক ও গভীরতর গবেষণা ও ফলোআপ পঠন–পাঠনের সুষ্ঠু পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পাদন করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে রওনক জাহানের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য, সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের পরামর্শ বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। অধ্যাপক জাহানের রচিত প্রতিটি প্রবন্ধ, গবেষণাকর্ম ও বই এ দেশের সমাজবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জন্য একাডেমিক সম্পদ হিসেবে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আলোচ্য বইটি আরেকটি মূল্যবান সংযোজন।
পলিটিক্যাল পার্টিজ ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অব ডেমোক্রেটাইজেশন। লেখক: রওনক জাহান, প্রথমা প্রকাশন ২০১৪।
আল মাসুদ হাসানউজ্জামান: অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
ছয়টি অধ্যায়ে বিন্যাসকৃত আলোচ্য বইটির ভূমিকায় লেখক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক উন্নয়ন তাত্ত্বিকভাবে ব্যাখ্যা করে দ্বিতীয় অধ্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে বিভিন্ন শাসনামলের তিনটি পর্বে দলীয় ব্যবস্থার প্রকৃতি নির্ণয় করেছেন। এভাবে বর্ণিত হয়েছে ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত এক দলের প্রাধান্য থেকে একদলীয় ব্যবস্থা, ১৯৭৫-৯০ সময়ে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সামরিক শাসনামলে দল গঠন এবং ১৯৯১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত দ্বিদলীয় প্রাধান্যে দ্বন্দ্বমূলক রাজনৈতিক পরিসর। এরপর আলোচনায় এসেছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বৈশিষ্ট্য, অভ্যন্তরীণ দলীয় গণতন্ত্রচর্চা, স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় রাজনীতি এবং বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে গণতন্ত্রচর্চার মাত্রা যাচাইকরণ। উপসংহারে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায় প্রাপ্ত ফল ও সুপারিশমালা।
গণতন্ত্রচর্চার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের অপরিহার্য ভূমিকা আর অত্যাবশ্যকতা সর্বজনবিদিত; দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও বহুমাত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা এবং দলীয় কর্মকাণ্ড নাগরিক জীবনকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চালিকাশক্তি হচ্ছে রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক ক্ষমতার মূল হাতিয়ার।
রাজনৈতিক দলের সম্প্রসারিত ভূমিকার কারণে ডেমোক্রেসিকে ‘পার্টিক্রেসি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ১৯৬০–এর দশকের শেষার্ধে লুই আর্মস্ট্রং পার্টিক্রেসি শব্দটি ব্যবহার করেন। ‘পার্টিক্রেসি’ বস্তুত রাজনৈতিক দলের অতি ভূমিকা ও ব্যাপকতর প্রভাবেরই পরিচায়ক। নেতিবাচক অর্থে দেখতে গেলে যেখানে জনগণ নীরব ভূমিকাধারী বা দর্শকের ভূমিকায় আর রাজনৈতিক দল প্রতিনিধিত্ব ও শাসনের ক্ষেত্রে তার একচেটিয়াত্ব বিস্তার করে চলেছে।
রাজনৈতিক দল ও বিষয়টি পশ্চিমা উদ্ভূত। পশ্চিমা উদারনৈতিক গণতন্ত্রে দল গঠনের ক্ষেত্র ও উদ্ভবের প্রেক্ষাপট আর বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক দলের ইতিহাস, গঠন ও বিকাশ ভিন্ন। এ জন্য এসব দেশের দল-গবেষণার ক্ষেত্রে পশ্চিমা ধারণার পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না। ইউরোপীয় ধ্রুপদি পার্টি মোড, মরিস ডুভারজারের মাস-বেস-পার্টি বা কার্শহেইমারের ক্যাচ-অল পার্টি গঠন আমাদের মতন কাঠামোতে অবিকলভাবে খাপ খাওয়ানো সম্ভব নয়। আমাদের দেশের ক্রান্তিকালীন পর্যায়ে যে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ, সমস্যার সংকট প্রত্যক্ষ করা হচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় এনে অনুসন্ধান আবশ্যক হয়। এ জন্য রাজনৈতিক দলের সমাজতত্ত্ব প্রয়োগ করে গবেষণা সম্পাদন গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক দলের তাত্ত্বিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে সমরূপতা রয়েছে। যেমন: রাজনৈতিক সামাজিকীকরণ, স্বার্থ জ্ঞাপন, স্বার্থ সংরক্ষণ আর রাজনৈতিক যোগাযোগ যাকে পলিটিক্যাল ইনপুট কাজ বলা হয়। বস্তুত, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নির্মাণের জন্য আবশ্যক কর্ম সম্পাদন নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রকৃতি আর দলীয় ব্যবস্থার কার্যকারিতার ওপর। এ ক্ষেত্রে দলের প্রাতিষ্ঠানিকায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় এবং সক্রিয় দল-ব্যবস্থার সঙ্গে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ইতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্ক পরিমাপ করা হয়।
আসলে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দল, নির্বাচকমণ্ডলীর সঙ্গে দল, সরকার আর বিরোধী দলে রাজনৈতিক দলের যে ভূমিকা, তা পালনে রাজনৈতিক দলের সংগঠন থেকে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যার সফল পরিণতি হচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ।
এ ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও পরীক্ষণের বিষয়গুলো হচ্ছে সমাজের গভীরে রাজনৈতিক দল ও দলীয় ব্যবস্থার শিকড় কতখানি প্রোথিত হয়েছে, তার নির্ণয় এবং দলের আদর্শ ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাত্রা, দলীয় নেতৃত্ব, কাঠামো, দলীয় স্বাতন্ত্র্য, সংহতি, স্বকীয়তা, সাংগঠনিক দৃঢ়তা, দল ও জনগণ, দল ও সুশীল সমাজ সম্পর্ক এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক কর্ম সম্পাদনের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ।
এ দেশে সংসদীয় কাঠামো চালু থাকলেও এর সুষ্ঠু কার্যকারিতা না থাকায় সরকারের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব এবং বিরোধী দলের বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতাসহ নেতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রয়ে গেছে। এভাবে জন-ইস্যুর চেয়ে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থ উদ্ধারে অব্যাহত-লাগাতার হরতাল হয় এবং এসব জনবিচ্ছিন্ন নেতিবাচক কর্মসূচি ক্রমান্বয়ে সহিংস ও নৈরাজ্যময় হয়ে যায়। জনজীবন ও তার নিরাপত্তা চরম হুমকিতে পড়ে। ক্রমাগত সহিংসতা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কখনো সুষ্ঠু দলীয় ব্যবস্থা নির্দেশ করে না।
রওনক জাহানের গবেষণায় লক্ষণীয় হয়েছে যে নব্বই-পরবর্তী থেকে এ দেশে দ্বিদলীয় প্রভাবাধীনে এবং জোটবদ্ধভাবে রাজনীতি চর্চিত হচ্ছে। তবে দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং রাজনীতি দুর্বৃত্তদের করায়ত্ত হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় অর্জিত প্রক্রিয়ার বদলে আরোপিত প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ‘এক-এগারো’-পরবর্তী সময়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে শীর্ষ নেতৃত্বের কর্তৃত্ব অধিকতর সুসংহত ও সুদৃঢ় হয়েছে। দলে অরাজনৈতিক উপাদানের অনুপ্রবেশ ও প্রভাব বিস্তার ঘটেছে, যা নির্বাচনী মনোনয়নে দৃশ্যমান হয়েছে। রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়িক স্বার্থের প্রাধান্য অব্যাহত রয়েছে এবং রাজনীতির বাণিজ্যকরণ ঘটছে। সেই সঙ্গে আছে অস্বচ্ছ রাজনৈতিক অর্থায়ন।
বর্ণিত পার্টিক্রেসির নেতিবাচক প্রবণতার প্রেক্ষাপটে দলীয় জবাবদিহি বা দায়িত্বশীলতার প্রসঙ্গটি আসে। সাম্প্রতিক কালে উন্নয়নশীল বিশ্বে দলীয় জবাবদিহির জন্য রাজনৈতিক দলকে আইনি কাঠামোয় আনা এবং কাঠামোগত সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও কর্মকাণ্ডকে আইনি প্রক্রিয়ায় এনে দায়িত্বশীলতা আনয়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য গণপ্রতিনিধিত্বশীল আদেশ তথা আরপিওতে সংস্কারসাধন এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এতে রয়েছে নির্বাচনে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন, গণতন্ত্রসম্মত গঠনতন্ত্র রচনা, অর্থায়ন ও নির্বাচনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে দল ও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর আবশ্যিক তথ্য প্রকাশ, দলীয় আয়-ব্যয়ের তথ্য উন্মুক্তকরণ ইত্যাদি। তবে অদ্যাবধি গণপ্রতিনিধিত্বশীল আদেশের যথাযথ অনুসরণ ও সুষ্ঠু প্রয়োগ দৃশ্যমান হয়নি।
রওনক জাহানের বইটিতে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র অনুসারে দলীয় কাঠামোর বিন্যাস, নেতৃত্ব নির্বাচন, দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া, নির্বাচনে দল ও প্রার্থীর অর্থায়ন, নির্বাচনী মনোনয়নদান, দলে নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব, বাৎসরিক আয়-ব্যয়, হিসাব দাখিল ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রচলিত আরপিও বিধিবিধান ও প্রকৃত চর্চার ক্ষেত্রে বিস্তর পার্থক্য এবং অসংগতি যথাযথ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, তত্ত্ব ও তথ্যের মাধ্যমে সুচারুরূপে উদ্ঘাটন করা হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রাইমারি উৎস থেকে তথ্য পাওয়ার সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে, যা অবশ্য লেখক বইয়ের মুখবন্ধে উল্লেখ করেছেন। গবেষণার জন্য চারটি রাজনৈতিক দল: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের দীর্ঘ সময়ে রাজনীতিতে বামপন্থী দলগুলোর সরব অংশগ্রহণের প্রেক্ষাপটে একটি বামপন্থী দলকে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করলে গবেষণা আরও প্রতিনিধিত্বমূলক হতে পারত বলে মন্তব্য করা যায়।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে রাজনৈতিক দল-ব্যবস্থায় অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সম্পর্ক গণতন্ত্রায়ণ ও রাজনীতিচর্চাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। যখন শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতা আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মূল নিয়ামক হয়ে ওঠে, তখন এ ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিংসাত্মক ও সহিংস হয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে নির্বাচনী গণতন্ত্রসহ রাষ্ট্রের মৌল বিষয়ে ঐকমত্যহীনতা রয়েছে, সেখানে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সহিংস ও অসাংবিধানিক পন্থাই অনুসৃত হয়ে থাকে, যা আমরা আন্তদলীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ করেছি। আলোচ্য বইটিতে অন্তর্দলীয় বিষয়াদি বিভিন্ন ডাইমেনশন থেকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে আন্তদলীয় সম্পর্কের উপাদানগুলো গণতন্ত্রায়ণের সমস্যার অন্যতম প্রভাবক কিনা তার পরীক্ষণ বইটিতে পর্যালোচনার দাবি রাখে।
যা হোক, আলোচ্য বইটিতে গত তেতাল্লিশ বছরে বাংলাদেশে দলীয় ব্যবস্থার বিকাশ এবং রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রায়ণের চ্যালেঞ্জগুলো গভীরভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। যদিও এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলো দলীয় নেতৃত্বেই হয়, তথাপি দলীয় কাঠামোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ও প্রাতিষ্ঠানিকায়নে একধরনের অবক্ষয় বিরাজমান। প্রধান দলগুলোর মূল লক্ষ্য রাষ্ট্রক্ষমতা দখল হওয়ায় সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে নিজ নিজ সমর্থনের ভিত্তি সম্প্রসারণ তাদের মতাদর্শ ও নীতির সঙ্গে আপসকামিতা প্রকাশ করে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মক্কেলধর্মী সম্পর্ক, দুর্নীতি ও সহিংসতার প্রসার ঘটায়। ফলে রাজনৈতিক দলের ঐতিহ্যিক কর্মকাণ্ড পালন ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। গণতন্ত্রায়ণে উত্তরণের জন্য লেখক রাজনৈতিক দলগুলোকে অগণতান্ত্রিক আচরণ পরিহার, নিজ পক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ও সম্পদের ব্যবহার বন্ধকরণ, জাতীয় সংসদ বয়কটের সংস্কৃতির অবসান, অন্তঃ ও আন্তদলীয় দ্বন্দ্ব নিরসনে সহিংসতা পরিত্যাগ, দলীয় সংগঠনকে সরকার থেকে পৃথক্করণ, ব্যবসায়িক স্বার্থের পরিবর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ সামাজিক গোষ্ঠীসহ নারী ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ এবং দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক গতি–প্রকৃতির সুষ্ঠু ব্যাখ্যার জন্য দল ও দলীয় ব্যবস্থার ওপর সার্বিক ও গভীরতর গবেষণা ও ফলোআপ পঠন–পাঠনের সুষ্ঠু পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পাদন করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে রওনক জাহানের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য, সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের পরামর্শ বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। অধ্যাপক জাহানের রচিত প্রতিটি প্রবন্ধ, গবেষণাকর্ম ও বই এ দেশের সমাজবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জন্য একাডেমিক সম্পদ হিসেবে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আলোচ্য বইটি আরেকটি মূল্যবান সংযোজন।
পলিটিক্যাল পার্টিজ ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অব ডেমোক্রেটাইজেশন। লেখক: রওনক জাহান, প্রথমা প্রকাশন ২০১৪।
আল মাসুদ হাসানউজ্জামান: অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments