মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতে ভারত-চীনের ইন্ধন!
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ‘জাতিগত সংঘাত’ (এথনিক কনফ্লিক্ট) দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একদিকে নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ক্ষমতাসীন সরকারের যুদ্ধ ও নির্মূল প্রচেষ্টা, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন ও উস্কানিতে আঞ্চলিক স্বার্থরক্ষার কৌশল এ সংঘাতকে দীর্ঘতর করছে। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্র“প ও স্বাধীনতাকামী সম্প্রদায়কে লালন-ইন্ধন, আবার কৌশলগত বিরোধিতায় সমান ভূমিকা রাখছে ভারত ও চীন। ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স রিভিউয়ের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
কয়েক দশকের সামরিক জান্তা শাসন শেষে ২০১১ সালে মিয়ানমারে এক ধরনের আধা-সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অর্ধেক বেসামরিক ধাঁচের এই সরকার মিয়ানমারকে বিশ্বের জন্য উন্মুক্তকরণ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সংস্কারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। দীর্ঘকাল বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এই ভূখণ্ডের সামনে এগোনোর পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতিগত সংঘাত। ভারত ও চীন সীমান্তে সুদীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের ইতিহাস অনেক লম্বা। গত মাসে ওই সংঘাত নতুন করে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ৫০ সৈন্য ও ৭০ জনের বেশি কোকাং বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। কোকাংসহ মিয়ানমারের বহু নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার দাবিতে দশকের পর দশক ধরে সংগ্রাম করছে। এছাড়া দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় এই বিদ্রোহীরা। সাম্প্রতিককালে ভারত ও চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তি হওয়ায় এই সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। নেইপিডো সরকারের সঙ্গে সঙ্গে বাহ্যিক সুসম্পর্ক দেখালেও বেইজিং ও নয়াদিল্লি নিজেদের স্বার্থে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা কিংবা ইন্ধন অব্যাহত রেখেছে।
গত দশকের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়। ভারত মহাসাগরীয় এলাকার ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় ‘লুক ইস্ট পলিসি’র আলোকে এ চুক্তি করে নয়াদিল্লি। এর আগ পর্যন্ত জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও বহির্সীমান্তের সব গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে ভারত সমর্থন করে এসেছে। ১৯৮৮ সালের চীন আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে ভারতের ভূমি ব্যবহারেও অন্ধ অনুমোদন পেয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা। কিন্তু ২০০৪ সালের প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী ভারত সীমান্তের চীনা গোষ্ঠীকে নির্মূলের দায়িত্ব নেয় নয়াদিল্লি। অন্যদিকে মিয়ানমারে লুকিয়ে থাকা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় বিদ্রোহীদের ধ্বংস করতে রাজি হয় নাইপিডো। এই যৌথ অভিযানের ধারাবাহিতকায় ২০১২ সালে চীন বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। কিন্তু কাচিনসহ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিয়ানমারের কৌশল মার খাচ্ছে। এসব বিদ্রোহীরা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ।
সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে ‘বাফার সুবিধা’ মনে করে আসছে চীন। যদিও জান্তা সরকারের সময় থেকেই রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে বেইজিং। নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে বিদ্রোহীদের বিপক্ষে মিয়ানমারকে সহায়তার প্রস্তাব দেয় চীন। কিন্তু মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাচিন গ্র“পের বাণিজ্য রয়েছে। চীনের ইউনান প্রদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা নিয়ে ধনী গ্র“পে পরিণত হয়েছে বিদ্রোহীরা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি করাতে বেইজিং তাই চাপ প্রয়োগ করবে না। ২০০৯ সাল থেকেই ওই অঞ্চলে চীনের ভূমিকা রহস্যজনক ও বিতর্কিত। ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি নামক বিদ্রোহীরা চীনা মুদ্রা ও চীনা পণ্য ব্যবহার করে। তাদের সৈন্যসংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। তবে এসব বিষয় বরাবরই অস্বীকার করে প্রকাশ্যে বিদ্রোহীদের বিরোধিতা করছে চীন। কেননা আঞ্চলিক রাজনীতি ও তেল-গ্যাস রুট ঠিক রাখতে হলে নাইপিডোকে বৈরী অবস্থানে রাখা যাবে না।
কয়েক দশকের সামরিক জান্তা শাসন শেষে ২০১১ সালে মিয়ানমারে এক ধরনের আধা-সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অর্ধেক বেসামরিক ধাঁচের এই সরকার মিয়ানমারকে বিশ্বের জন্য উন্মুক্তকরণ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সংস্কারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। দীর্ঘকাল বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এই ভূখণ্ডের সামনে এগোনোর পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতিগত সংঘাত। ভারত ও চীন সীমান্তে সুদীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের ইতিহাস অনেক লম্বা। গত মাসে ওই সংঘাত নতুন করে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ৫০ সৈন্য ও ৭০ জনের বেশি কোকাং বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। কোকাংসহ মিয়ানমারের বহু নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার দাবিতে দশকের পর দশক ধরে সংগ্রাম করছে। এছাড়া দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় এই বিদ্রোহীরা। সাম্প্রতিককালে ভারত ও চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তি হওয়ায় এই সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। নেইপিডো সরকারের সঙ্গে সঙ্গে বাহ্যিক সুসম্পর্ক দেখালেও বেইজিং ও নয়াদিল্লি নিজেদের স্বার্থে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা কিংবা ইন্ধন অব্যাহত রেখেছে।
গত দশকের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়। ভারত মহাসাগরীয় এলাকার ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় ‘লুক ইস্ট পলিসি’র আলোকে এ চুক্তি করে নয়াদিল্লি। এর আগ পর্যন্ত জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও বহির্সীমান্তের সব গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে ভারত সমর্থন করে এসেছে। ১৯৮৮ সালের চীন আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে ভারতের ভূমি ব্যবহারেও অন্ধ অনুমোদন পেয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা। কিন্তু ২০০৪ সালের প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী ভারত সীমান্তের চীনা গোষ্ঠীকে নির্মূলের দায়িত্ব নেয় নয়াদিল্লি। অন্যদিকে মিয়ানমারে লুকিয়ে থাকা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় বিদ্রোহীদের ধ্বংস করতে রাজি হয় নাইপিডো। এই যৌথ অভিযানের ধারাবাহিতকায় ২০১২ সালে চীন বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। কিন্তু কাচিনসহ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিয়ানমারের কৌশল মার খাচ্ছে। এসব বিদ্রোহীরা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ।
সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে ‘বাফার সুবিধা’ মনে করে আসছে চীন। যদিও জান্তা সরকারের সময় থেকেই রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে বেইজিং। নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে বিদ্রোহীদের বিপক্ষে মিয়ানমারকে সহায়তার প্রস্তাব দেয় চীন। কিন্তু মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাচিন গ্র“পের বাণিজ্য রয়েছে। চীনের ইউনান প্রদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা নিয়ে ধনী গ্র“পে পরিণত হয়েছে বিদ্রোহীরা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি করাতে বেইজিং তাই চাপ প্রয়োগ করবে না। ২০০৯ সাল থেকেই ওই অঞ্চলে চীনের ভূমিকা রহস্যজনক ও বিতর্কিত। ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি নামক বিদ্রোহীরা চীনা মুদ্রা ও চীনা পণ্য ব্যবহার করে। তাদের সৈন্যসংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। তবে এসব বিষয় বরাবরই অস্বীকার করে প্রকাশ্যে বিদ্রোহীদের বিরোধিতা করছে চীন। কেননা আঞ্চলিক রাজনীতি ও তেল-গ্যাস রুট ঠিক রাখতে হলে নাইপিডোকে বৈরী অবস্থানে রাখা যাবে না।
No comments