কাশ্মীরে ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা
ভারতে জম্মুর মান্দাল এলাকায় বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে তাউয়ি নদীর ওপর নির্মিত সেতুর একাংশ। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তীরে দাঁড়িয়ে নিরুপায় স্থানীয় মানুষ। গত শনিবার তোলা ছবি. এএফপি |
উত্তর-পশ্চিম ভারতের কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় লাখ লাখ মানুষের জীবন চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। এ ছাড়া ব্যাপক সম্পদহানিও ঘটছে। বলা হচ্ছে, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে বন্যা পরিস্থিতি গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। খবর এনডিটিভি ও ডনের। ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্যায় ১০টি শহরের কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে সেনানিবাসসহ কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী সেনাসদস্যরা বলছেন, এবারের বন্যা পরিস্থিতি গত বছর উত্তরাখন্ডের অতিবর্ষণজনিত বন্যার মতোই ভয়াবহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল জম্মুর বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে ঝিলম নদীর বাঁধ ভেঙে পানি শ্রীনগরে ঢুকে পড়েছে। এ জন্য শহরের কিছু অংশ তলিয়ে গেছে। অনেক বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইন অচল হয়ে পড়ে। শহরের অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়া লোকজন সাহায্য পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। রাজ্যে বন্যায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ১৫০-এ উঠেছে। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ গতকাল রোববার জানান, জম্মুতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও কাশ্মীরে, বিশেষ করে শ্রীনগরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তবে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে তিনি জনগণের কাছে আহ্বান জানান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীনগরে ৪০-৫০টি নৌকা পাঠানো হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। হেলিকপ্টার ও বিমানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ এদিকে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সিন্ধু ও পাঞ্জাব প্রদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের অবস্থান ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের খুব বেশি দূরে নয়। অভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধিই দুই দেশের বন্যার কারণ। পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, প্রদেশ দুটিতে বন্যার অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় এ পর্যন্ত দেশটিতে ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, শুকুরে সিন্ধু নদ ও গুড্ডু ব্যারাজে পানির উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে। সেই হিসাবে ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর ব্যাপক বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে সরকারকে বলা হয়েছে।
No comments