ভারতে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে কী হবে?
জনমত জরিপ বলছে, মধ্য ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রায় নিশ্চিতভাবেই ভারতের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। অবশ্য দলটি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি টেকসই জোট সরকার গড়তে পারবে—এমন সম্ভাবনাও কম। আর ভারতের ছোট দলগুলো এখন সেই রকম পরিস্থিতির জন্যই অপেক্ষা করছে। বড় কোনো রাজনৈতিক দল আগামী মে মাসে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ছোট দলগুলোর নেতারাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন। তাঁরা নির্বাচন-পরবর্তী জোট সরকার গঠনের জন্য দর-কষাকষির পথে যাবেন। আর সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা মোদি গত সোমবার বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই সরকারের আসন্ন বাজেটের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে এবারের বাজেট হচ্ছে ‘দশকব্যাপী অবক্ষয় ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত সরকারি নীতির চূড়ান্ত প্রকাশ’। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটিকে কয়েক মাসের মধ্যেই সঠিক পথে নেতৃত্ব দিতে পারবেন—এ রকম আত্মবিশ্বাস একাধিক বক্তব্যের মাধ্যমে দেখিয়েছেন মোদি। কিন্তু বিচ্ছিন্ন ছোট দলগুলোর সমন্বয়ে বিজেপির একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড়িয়ে যেতে পারে। ওই দলগুলোর কয়েকটি সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছে রাজধানী নয়াদিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায়। মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে ব্যর্থ হলে পদটি কার দখলে যাবে, সেটিই ছিল তাদের আলোচনার বিষয়।
বিশ্লেষকদের ধারণা, বড় দুই দল কংগ্রেস ও বিজেপির বাইরে সম্ভাব্য ‘তৃতীয় ফ্রন্ট’ সরকার গঠন করলেও তা ভঙ্গুর প্রকৃতির হবে। আর তাতে দেশে কোনো কাঠামোগত সংস্কার বা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে। ভারতের শীর্ষস্থানীয় জনমত জরিপ বিশেষজ্ঞ রাজীবা করনদিকার বলেন, মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না বলেই ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন। কিন্তু এ ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। মোদির সাফল্যের যথেষ্ট সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। বর্তমানে তাঁর সম্ভাবনা ২০ শতাংশ হলেও এটি বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তবে ভারতের রাজনীতির গতিধারা নিয়ত পরিবর্তনশীল। তাই আগামী কয়েক মাসে যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী পদে বিকল্প হিসেবে সামনে চলে আসতে পারে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার নাম। স্থানীয় ছোট রাজনৈতিক দলগুলো এমনটাই মনে করছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে সে অনুযায়ী কিছু প্রচার কার্যক্রমও দেখা যাচ্ছে। বর্তমান জোট সরকারের প্রধান দল কংগ্রেসের রয়েছে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ভারতের ক্ষমতায় থাকার অভিজ্ঞতা। তবে দেশটির রাজনীতিতে দলটির প্রভাব ক্রমশ কমে আসছে—এ কথা স্বীকার করার পক্ষে যথেষ্ট কারণ ও যুক্তি রয়েছে। অবশ্য বিকল্প সরকারগুলো একাধিকবার ক্ষমতায় এলেও দীর্ঘ সময় টিকে থাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি।
No comments