সেতু কেলেঙ্কারির পাঁকে নিউজার্সির গভর্নর
রাজনৈতিক কারণে ইচ্ছাকৃত যানজট সৃষ্টি করে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি। এ কেলেঙ্কারির নাম হয়েছে ‘ব্রিজগেট’। ফলে আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য এ প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজ দলের ভেতরেই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, সাধারণ জনমতও ক্রিস্টির প্রতিকূলে। ক্রিস ক্রিস্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত নির্বাচনের আগে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। নিজ অঙ্গরাজ্যের সব মেয়রের সমর্থন আদায়ে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। নিউইয়র্ক-নিউজার্সির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থাপনকারী ওয়াশিংটন সেতুসংলগ্ন শহর ফোর্ট লির মেয়র মার্ক সোকোলিচকেও চাপ দেওয়া হয়। তবে ডেমোক্রেটিক দলের সমর্থক সোকোলিচ রিপাবলিকান গভর্নর ক্রিস্টিকে সমর্থন দেননি। ফলে তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গভর্নর অফিস থেকে প্রভাব খাটিয়ে নির্মাণকাজের অজুহাতে ব্যস্ত কর্মদিবসে ওয়াশিংটন সেতুর কয়েকটি লেন বন্ধ রাখা হয়। ফলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয় সেখানে। ভোগান্তিতে পড়ে জরুরি বিভাগের গাড়িগুলোও। গভর্নর ক্রিস্টির দপ্তরের কিছু ই-মেইল বার্তা গত মাসে প্রকাশ হয়ে পড়ে, যাতে লেন বন্ধ রাখার ব্যাপারে গভর্নরের দপ্তর থেকে কলকাঠি নাড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।
তবে গভর্নর দাবি করেছেন, বিষয়টি তাঁর অজ্ঞাতসারে ঘটেছে। সংবাদ সম্মেলন করে তিনি রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে গভর্নরের বিশেষ সহকারীকে। সেতুর লেন বন্ধ রাখার সরাসরি নির্দেশ যে ক্রিস্টিই দিয়েছিলেন, এমন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তিনি আদৌ জানতেন না তাও বিশ্বাস করছেন না কেউ। ব্রিজগেট নামে পরিচিতি পাওয়া এ কেলেঙ্কারি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে হাজির হতে গভর্নর ক্রিস্টির নির্বাচনী প্রচারণা কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পরই ক্রিস্টির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়া যাবে। গভর্নর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তদন্তে তিনি সহযোগিতা করে যাবেন। এ ঘটনা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে রিপাবলিকান দল। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে মোকাবিলায় গভর্নর ক্রিস্টির জনপ্রিয়তাকে বড় করে দেখা হচ্ছিল। তবে কেলেঙ্কারিতে জড়ানো ক্রিস্টির জনপ্রিয়তা এখন নিম্নমুখী। সাধারণ জনমতে তাঁর জনপ্রিয়তা ৬৮ শতাংশ থেকে এক মাসে ৫৩ শতাংশে নেমে এসেছে। উদারনৈতিক রিপাবলিকান হিসেবে ক্রিস্টি এই কেলেঙ্কারি সামাল দিতে না পারলে ২০১৬ সালেও হোয়াইট হাউস রিপাবলিকানদের নাগালের বাইরে থেকে যাবে বলে খোদ দলের মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।
No comments